যমুনা কিনারে

পিয় বিরহিনি অতি মলিনি

পিয় বিরহিনি অতি মলিনি
বিলাসিনি কোনে পরি জীউতি রে।
অবধি ন উপগত মাধব
অব বিস পিউতি রে।।
আতপচর বিধু রবিকর।।
চরন কি পরসহ ভীমারে।
দিন দিন অবসন দেহ।
সিনেহক সীমারে।।
পহর পহর জুগ জামিনী
জামিনী জগইতে রে।
মূরছি পরএ মহি মাঁঝ
সাঁঝ সসী উগইতে রে।।
বিদ্যাপতি কহ সবতঁহ
জান মনোভব রে।
কেও জনু অনুভব জগজন
বিরহ পরাভব রে।।

অন্তঃকথন:
মাধব বিহনে শ্রীমতীর অঙ্গ মলিন, দেহ ক্ষীণ,প্রাণ বুঝি আর থাকে না!। সখী রাধারানীর কষ্টের কথা বলতে গিয়ে বলছেন,আহা আমাদের রাধারানী প্রিয়বিরহে এমন মলিন দশায় কেমন করে বাঁচবে? মাধবের ফিরে আসার সময় পেরিয়ে গেল, তবু মাধব এলো না, এবার রাই বুঝি বিষপানই করবে! চাঁদের আলো তার কাছে তপ্ত তপনের কিরণের মতো বোধ হয়! গায়ে চাঁদের আলোর অল্প ছোঁয়াও তার অতি ভয়ঙ্কর লাগে। দেহ দিন দিন অবসন্ন হয়ে পড়ছে। এই বুঝি প্রেমের শেষ সীমা, বিরহের অন্তিম অবস্থা! রাতের পর রাত জেগে থাকে রাই আমাদের, এক এক প্রহর তার কাছে এক যুগতুল্য দীর্ঘ বোধ হয়! সন্ধ্যাগগনে শশীর উদয় হলে, এমন রাতের অভিসারের কথা স্মরণ করে রাধারানী ভূমিতে মুর্চ্ছিত হয়ে পড়েন। বিদ্যাপতি বলছেন, মদনের পরাক্রমের কথা তো সকলেই জানে, আহা জগতের কাউকে যেন বিরহ যন্ত্রণা অনুভব করতে না হয়।

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী