যমুনা কিনারে

বদন সরোরুহ হাসে নুকওলহ

বদন সরোরুহ হাসে নুকওলহ
তেঁ আকুল মন মোরা।
উদিতেও চন্দা অঁমিঅ ন মুঞ্চএ
কী পিবি জিউত চকোরা।।
মানিনি দেহ পলটি দিঠি মেলা।
সগরি রয়নি জদি কোপহি গমওবহ
কেলি রভস কোন বেলা।।
তোর নয়ন এঁ পথহু ন সঞ্চর
অজুগুত কহ ন জাই।
অরুন কমলকে কন্তি চোরওলহ
তেঁ মনে রহলি লজাই।।
কামিনি কোপে মনোরথ জাগল
বিদ্যাপতি কবি গাবে।
জএমতি দেই বর সন গহি সঙ্কর
বুঝএ সকল রস ভাবে।।

অন্তঃকথন:
খণ্ডিতা রাধিকার ক্রোধবাক্যে মাধবের মনে পূর্বাধিক আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হল। মাধব মানময়ী রাধারানীর কাছে অনুনয় করে বলছেন, তুমি অমন অনুপম বদন কমল হেসে লুকিয়ে নিলে তা দেখে আমার মন অস্থির হয়ে উঠল। চন্দ্র উদিত হয়েও যদি অমৃত না ঝরায় তবে চকোর কি পান করে বাঁচে বলো? মানিনী, আবার ফিরে চক্ষের মিলন দান করো! সমস্ত রাত যদি কোপেই কাটাবে তবে কেলি-আনন্দ কখন হবে? তোমার নয়ন যে আমার দিকে ফিরে চায় না, এও নেহাত অযৌক্তিক বলা যায় না অবশ্য! তোমার ওই আরক্ত নয়ন অরুণ ও কমলের কান্তি চুরি করেছে তাই মনে লজ্জিত হয়ে নত হয়ে রয়েছে? বিদ্যাপতি কবি কৃষ্ণের মনোরথ বুঝতে পেরে গাইছেন, কামিনীর কোপে মাধবের মনে মনোরথ জাগ্রত হল!! তারপর তিনি জয়মতী দেবী এবং শঙ্করের জয়গান গেয়ে বলছেন, জয়মতী দেবী, যিনি শঙ্করকে পতিত্বে বরণ করেছেন তিনি অনুভবে সকল রস বোঝেন! জয়মতী দেবী এবং শঙ্কর সম্ভবত কোন রাজসভাসদ বা উচ্চবর্গীয় সম্ভ্রান্ত ছিলেন যাঁরা বিদ্যাপতির গুণগ্রাহী।

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী