যমুনা কিনারে

বিনোদিনী না কর চতুরপণা

বিনোদিনী না কর চতুরপণা।
ভাঁড়িয়া আমারে হিয়ার মাঝারে
লইয়া যাইছ সোনা।।ধ্রু।।
নিবেদন করি শুন লো সুন্দরি
সহজে তোমরা ধনী।
দধি ঘৃত দেখি যাহ বিলাইয়া
তবে সে মহিমা জানি।।
শ্রীরাধা –
গোয়লা ধরম রাখিতে গোধন
ফিরহ গহন বনে।
পথে লাগি পায়্যা পরনারী লয়্যা
সাধ করিয়াছ মনে।।
সখীগণ –
নাগর নাগরী রসের চাতুরী
শুনি হাসে সখীগণে।
অনুগা হইতে সাধ লাগে চিতে
গোবিন্দদাসিয়া ভণে।

অন্তঃকথন:
রাধাঠাকুরানি ও কৃষ্ণের মধ্যে কথার খেলা ছলছে, আর সেই দেখে সখীরা হাসছেন। কৃষ্ণ রাধাকে বলছেন তুমি চতুরতা করে আমার হৃদয়ে প্রবেশ করে প্রেম সুবর্ণসার নিয়ে যাচ্ছ। এ চতুরতা ছাড় শ্রীমতি, তুমি এমনিতেই (প্রেমধনে) ধনী এখন কিছু দুগ্ধ দধি (অর্থাৎ দধি দুগ্ধস্বরূপ প্রেম) যদি বিতরণ করে যাও তবেই বুঝব তোমার মহিমা। কানু কথার জালে রাধিকার প্রেম ভিক্ষা করছেন। কিন্তু শ্রীমতীও কম যান না। তিনি উত্তর করছেন, তুমি তো গোপসন্তান, তাই গোচারণ করতে বনে ঘুরে বেড়াচ্ছো, আর এখন পথের মাঝে পরনারী দেখে দধি দুগ্ধের নাম করে প্রেমের সাধ করছো! আমি কি কিছু বুঝিনা! রাধিকা ও শ্রীকৃষ্ণের এই কপট রসালাপ শুনে সখীগণ হাসাহাসি করছেন। তাঁদের কাছে তো কিছুই অবিদিত নয়! সখীদের মত ওই প্রেম-ভক্তির পরশ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা এই গানের মধ্যে দিয়ে গোবিন্দদাস চক্রবর্তী ব্যক্ত করে গেছেন।

পদকর্তা:গোবিন্দদাস (চক্রবর্ত্তী)
রাগ:সুরট
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী