রাই কহে–“শুন, মরম সজনি,
পীরিতে যাহার চিত।
এবে এত দুখ নহে কোন সুখ
কেমন ধরল রীত।।
পীরিতি কে জানে এমন ধরণ
প্রথমে আছিল ভাল।
শেষে হেন করে নাহিক সংসারে
ভাবিতে পরাণ গেল।।
কি দোষ দেখিয়া সেই হেন পিয়া
মধুপুর দূর দেশ।
স্ত্রীবধ-পাতক ভয় না গণল
হইল পরাণ শেষ।।
আর কি এমন হইব মিলন
সে হেন পিয়ার সনে।
তাহার কারণ পীরিতি আক্ষেপ
করিল আপন মনে।।”
“তারে মিছা রোষ কার নহে দোষ
আপন করমহীন।
যবে শুভদশা মিলয়ে সভার
পাইবে তাহার চিন।।
দেবে কহে হেদে দেয়সি কহল
গণিল অনেক সাধে।
তুরিতে আওব সে নব নাগর
শুনহ সুন্দরী রাধে।।”
একথা শুনিঞা হরষ হইয়া
কহেন একটী বাণী।।–
“কবে গিয়েছিলে দেয়াসির ঘর
আমিত নাহিক জানি।।
নন্দরাজপুরে আছেন দেয়াসি
জানহ তাহার নাম।
বুঝহ কি রীতি ইহার যুগতি
তুরিতে আয়ব ঠাম।।”
রাধার বচনে এক নব রামা
তুরিতে চলিয়া গেল।
নব বিবরণ কানুর কারণ
কহিতে মোহিত ভেল।।
“শুন গো দেআসি, কানুর প্রেয়সি–
আয়লুঁ তোমার কাছে।
বুঝহ কারণ কেমন ধরণ
যেবা তোর মনে আছে।
দেবী আরাধিয়া হেদে দেয়াসিনি,
শিরেতে চড়াহ ফুল।”
চণ্ডিদাস কহে — শুন বিনোদিনী,
বিহি হব অনুকূল ।।