যমুনা কিনারে

শুন গো বড়াই হেথা

শুন গো বড়াই হেথা।
কহ কহ শুনি সে জন কেমন
তার পরসঙ্গ কথা।।
কোন নাম তার সে কোন দেবতা
সে কেনে ঘাটেতে বসি।
বড়াই কহিছে এখনি জানিবে
সঙ্গে আছে তার বাঁশী।।
বাঁশীর নিশান জানিয়া তখন
হাসি বিনোদিনী রাধা।
”তাসনে কিসের পরিচয় মোর
কি আর করহ বাধা”।।
”সে জন চাতুরী তাহার মাধুরী
তার নাম কালা কানু।।
বা চাহে তা দেই ইথে আন নাই
অতি সে রসের তনু।।”
রাধা বলে শুন ”বড়াই বেদনী
চলিতে না চলে পা ।”
বড়াই বলিছে রাই পানে চেয়ে
”তোমার রসের গা।।
বুড়ীরে কি বল যে বল সে বল
বুড়ীর নাহিক লাজ।
যুবতী জনারে পরশিতে তনু
চলই দানের মাঝ।।”
চণ্ডীদাস বলে গিয়া দান ছলে
ভেটহ নাগর রায়।
শ্যাম সুনাগর রসের সাগর
কদম্ব তরুর ছায়।।

অন্তঃকথন:
পদটি দান পর্যায়ভুক্ত। 'ওগো বড়াই, শোনো গো এদিকে। বল, বল শুনি, সে কেমন? তার প্রসঙ্গে কথা বল। কি বা তার নাম? সে কোন দেবতা? কোন ঘাটে তার বাস?' বড়াই বললে, 'এখনি জানবে। তার সঙ্গে আছে বাঁশী।' বাঁশীর নিশান জেনে বিনোদিনী রাই তখন মৃদু হাসলেন ( তিনি বুঝেছেন বড়াই কৃষ্ণের কথাই বলছেন।) 'তার সঙ্গে আমার আর কিসেরই বা পরিচয়।' ‘সে জন অতি চতুর, ততোধিক মধুর। নাম তার কালা কানু। যা চায় তা ই দিতে হয়। এর অন্যথা হয় না। অতি রসময় তনু তার’। রাধা বলে, 'ওগো বড়াই, পা দুখানি যে আর চলে না।' রাই-এর দিকে তাকিয়ে বড়াই বলে, 'তোমার রসের দেহ । বুড়িকে যা বলার তা বল। এ বুড়ির লাজ নেই গো। যুবতীর অঙ্গ সুখ অনুভব করতে চলো তবে দানের মাঝে।' চণ্ডীদাস বলে,' দানের ছলে গিয়ে সাক্ষাৎ করো নাগরের সঙ্গে। শ্যাম যে সুনাগর, রসের সাগর। রয়েছে কদম্ব ছায়াতলে।'

পদকর্তা:চণ্ডীদাস
রাগ:বরাড়ি
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:মুনমুন ঘোষ

সন্ধিনী