শ্রীশ্রী বক্রেশ্বর-পণ্ডিত-ঠাকুরের সূচক-কীর্ত্তন

(হেরা পঞ্চমী)
(আষাঢ়-শুক্লাষষ্ঠী)

—-০—-

‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই গৌর হরিবোল’’
‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।


—-০—-


‘‘আরে মোর কুলমণি, কেবল প্রেমের খনি,’’

কেবল প্রেমের খনি

আরে মোর কুলমণি—কেবল প্রেমের খনি,
বক্রেশ্বর পণ্ডিত ঠাকুর—কেবল-প্রেমের খনি
তাতে,–কেবলার গণ করি’ মানি—কেবল প্রেমের খনি

নৈলে,–তার ঘরে কি গৌর থাকে

গৌর-প্রেমে ধনী না হলে—তার ঘরে কি গৌর থাকে
প্রেমে ধনী না হলে—তার ঘরে কি গৌর থাকে
আরতিতে সদা স্থিতি না হলে—তার ঘরে কি গৌর থাকে

আমার,–গৌরগণ সব ব্রজজন

এসেছে,–নবরস করিতে আস্বাদন—আমার,–গৌরগণ সব ব্রজজন

বক্রেশ্বর কেবল প্রেমের খনি

তাতে,–কেবলার গণ করি’ মানি—বক্রেশ্বর কেবল প্রেমের খনি[মাতন]

‘‘আরে মোর কুলমণি, কেবল প্রেমের খনি,
বক্রেশ্বর পণ্ডিত ঠাকুর।
অদ্ভুত চরিত্র তাঁর, কহে হেন সাধ্য কার,
জীবে যাঁর করুণা প্রচুর।।’’

জীবে যাঁর করুণা প্রচুর

বক্রেশ্বর পণ্ডিত ঠাকুর-জীবে যাঁর করুণা প্রচুর

[মাতন]

‘‘বুঝিতে না পারে কেহ, অত্যন্ত উদার যেঁহ,
শ্রীগৌরচন্দ্রের কৃপামাত্র।’’

শ্রীচৈতন্যের কৃপাপাত্র

বক্রেশ্বর পণ্ডিত ঠাকুর—শ্রীচৈতন্যের কৃপাপাত্র

‘‘দুঃখ সব যায় ক্ষয়, ব্রহ্মাণ্ড হয় পবিত্র
যাঁর নাম স্মরণেই মাত্র।।’’

ব্রহ্মাণ্ড হয় পবিত্র

বক্রেশ্বর নাম স্মরণ মাত্র—ব্রহ্মাণ্ড হয় পবিত্র

[মাতন]

‘‘মহাপ্রভুর শ্রীচরণ, কমল-ভ্রমর-মন,’’

আমার,–বক্রেশ্বর পণ্ডিত গোসাঞি

গৌরচরণে ভ্রমর বটে—আমার,–বক্রেশ্বর পণ্ডিত গোসাঞি

যাঁর,–মন-ভ্রমর সদাই মত্ত

শ্রীচৈতন্য-চরণকমলে—যাঁর,–মন-ভ্রমর সদাই মত্ত
গৌর-চরণকমল-মধু-পানে—যাঁর,–মন ভ্রমর সদাই মত্ত

‘‘কৃষ্ণপ্রেম-বিহ্বল সদাই।’’

মহাপ্রভুর,–চরণ-কমল-মধু-পানে

‘‘কৃষ্ণপ্রেম-বিহ্বল সদাই।
দেবাসুর আদি যত, যাঁর নৃত্যে বিমোহিত,
ভাবাবেশ বুঝন না যায়।
পুলক হুঙ্কার লম্ফ, স্বেদ হাস্য অশ্রু কম্প,
মুর্চ্ছা আনন্দাদি নিরন্তর।
সঙ্কীর্ত্তন-মাঝে মত্ত, যে করে অদ্ভুত নৃত্য,
একভাবে চব্বিশ-প্রহর।।’’

যে করে অদ্ভুত নৃত্য

সঙ্কীর্ত্তন-মাঝে হয়ে মত্ত—যে করে অদ্ভুত নৃত্য
হয়ে,–ভাবভূষণে বিভূষিত—যে করে অদ্ভুত নৃত্য

নৃত্য করেন বক্রেশ্বর

একভাবে চব্বিশ-প্রহর—নৃত্য করেন বক্রেশ্বর

নৃত্য করেন অদ্ভুত

হয়ে,–ভাবভূষণে বিভূষিত—নৃত্য করেন অদ্ভুত

তা দেখে হয় বিমোহিত

দেবাসুর-আদি যত—তা দেখে হয় বিমোহিত

দেবাসুরের কথা কিবা বলব

মহা,–‘‘প্রভু যাঁর নৃত্যকালে, ভুজ তুলি’ হরি বলে,’’

আনন্দেতে মত্ত হইয়া

বক্রেশ্বরের নৃত্য দেখিয়া—আনন্দেতে মত্ত হইয়া

আমার,–মহাপ্রভু মহা সুখী

বক্রেশ্বরের নৃত্য দেখি’—আমার,–মহাপ্রভু মহা সুখী

আমার,–গৌরহরি উনমত

দেখি’ যাঁর মধুর-নৃত্য—আমার,—গৌরহরি উনমত
সর্ব্বরসতত্ত্ব-সীমা—আমার,–গৌরহরি উনমত

ভুজ তুলি’ হরি বলে

বক্রেশ্বরের নৃত্য হেরে—ভুজ তুলি হরি বলে
আনন্দেতে মত্ত হয়ে—ভুজ তুলি’ হরি বলে

‘‘চতুর্দ্দিকে বুলয়ে ধাইয়া।’’

পাগল হয়ে বেড়ায় রে

বাহু তুলে হরি বলে—পাগল হয়ে বেড়ায় রে

গৌর,–ফিরে যেন পাগল হইয়া

কি যেন,–অভিলষিত-ধন পাইয়া—গৌর,–ফিরে যেন পাগল হইয়া

কি দেখে ফিরে পাগল হইয়া
গৌর,–কেন ফিরে পাগল হইয়া

অভিলষিত-ধন পাইয়া—গৌর,–কেন ফিরে পাগল হইয়া

প্রভু আমার,–বাহু তুলে হরিবোলে

বক্রেশ্বরের নৃত্যকালে—প্রভু আমার,–বাহু তুলে হরিবোল

বুঝি,–মিলেছে তাঁর বাঞ্ছিত ফল

নৈলে,—কিসে এত হল পাগল—বুজি,–মিলেছে তাঁর বাঞ্ছিত ফল

‘‘পুনঃ প্রভু গৌরহরি, বক্রেশ্বর-পানে হেরি,’’

গৌর,–দেখে যেন কি নব-মাধুরী

বক্রেশ্বর-পানে হেরি’—গৌর,–দেখে যেন কি নব-মাধুরী

‘‘গান করে প্রেমে মত্ত হইয়া।।’’

না জানি কি ভোগে মাতিয়া

বক্রেশ্বরের নৃত্য দেখিয়া—না জানি কি ভোগে মাতিয়া

প্রভু,–আনন্দেতে গান করে

বক্রেশ্বর নৃত্য করে—প্রভু,–আনন্দেতে গান করে

‘‘বক্রেশ্বর যতক্ষণ, নৃত্য করে ততক্ষণ,
বেত্র হস্তে লইয়া গৌরচন্দ্র।’’

পাছে,–নৃত্য বাধা পড়ে বলে

নিজ-প্রাণ বক্রেশ্বরের—পাছে,–নৃত্য বাধা পড়ে বলে

যতক্ষণ নৃত্য করে

বক্রেশ্বর প্রেমভরে—যতক্ষণ নৃত্য করে
প্রভু বেত্র হস্তে ফিরে—যতক্ষণ নৃত্য করে

চারিদিকে বেড়ায় ধাইয়া

বেত্র হস্তে লইয়া—চারিদিকে বেড়ায় ধাইয়া

অনুভব কর ভাই রে

ভাবনিধির এই ব্যবহার—অনুভব কর ভাই রে

বেত্র হস্তে ফিরে গৌরহরি

বক্রেশ্বরের,–নৃত্য-বাধা দূর করি’—বেত্র হস্তে ফিরে গৌরহরি

যেন,–অপূর্ণ-সাধ মিটাইছে

এই,–সেবাসুখ কখনও পায় নাই—যেন, অপূর্ণ-সাধ মিটাইছে

‘‘বেত্র হস্তে লইয়া গৌরচন্দ্র।
করিয়া যতেক প্রীতি, লোক করে এক-ভিতি,’’

আমার প্রভুর কত প্রীতি

ঠাকুর-বক্রেশ্বরের প্রতি—আমার প্রভুর কত প্রীতি

সবারে এক-পাশ করে

গৌরচন্দ্র বেত্র হস্তে—সবারে এক-পাশ করে
নৃত্যে বাধা পড়ে আছে—তাই,–সবারে এক-পাশ করে
‘নৃত্যে বাধা পড়ে আছে’—
আমার,–প্রাণ-সম-বক্রেশ্বরের—নৃত্যে বাধা পড়ে পাছে

তাই,–সবারে এক-পাশ করে

‘‘উপজয়ে সবার আনন্দ।।’’

সবার জুড়াইছে আঁখি

বক্রেশ্বরে প্রভুর স্নেহ দেখি’—সবার জুড়াইছে আঁখি

আজ,–বক্রেশ্বরের সেবাকারী

জগৎসেব্য গৌরহরি—আজ,–বক্রেশ্বরের সেবাকারী
তার,–নৃত্যের বাধা দূর করি’—আজ,–বক্রেশ্বরের সেবাকারী

আনন্দ আর ধরে না

যত প্রাণ গৌরগণের—আনন্দ আর ধরে না
বক্রেশ্বরের নৃত্য দেখে—আনন্দ আর ধরে না

পারিষদগণের মনে আনন্দ

জগৎসেব্যের দেখি’ সেবাননন্দ—পারিষদগণের মনে আনন্দ

বক্রেশ্বরে কেন এত প্রীতি
কি জানি কি ভোগ করে

বক্রেশ্বরের নৃত্য হেরে—কি জানি কি ভোগ করে
রসভোগী গৌর আমার—কি জানি কি ভোগ করে
ভোগ ছাড়া থাকে না রে—কি জানি কি ভোগ করে

অনুভব কর ভাই রে

শ্রীগুরু-চরণ হৃদে ধরে—অনুভব কর ভাই রে
এই লীলার গূঢ়-রহস্য—অনুভব কর ভাই রে
এই গূঢ়-রঙ্গ লীলা—অনুভব কর ভাই রে

কেন প্রভুর এত আবেশ

বক্রেশ্বরের নৃত্য দর্শনে—কেন প্রভুর এত আবেশ

ভাবনিধির কেন এত চেষ্টা

বক্রেশ্বরের নৃত্য পড়ে না বাধা–ভাবনিধির কেন এত চেষ্টা

নিশ্চয়,–কিছু বিশেষ ভোগ আছে

নৈলে,–প্রভুর এত আগ্রহ কিসে—নিশ্চয়,–কিছু বিশেষ ভোগ আছে

ভোগ ছাড়া থাকে না

বড় ভোগী গৌর আমার—ভোগ ছাড়া থাকে না

শ্রীগুরু-প্রেরণায় প্রাণে এই ত’ জাগে

প্রভু কি ভোগ বক্রেশ্বরের নৃত্য—শ্রীগুরু-প্রেরণায় প্রাণে এই ত’ জাগে

এ যে,–আশ’—মিটান লীলা রে

অশেষ-বিশেষে আশ মিটাইছে—এ যে,–আশ-মিটান লীলা রে

ব্রজে রাস-নৃত্যরঙ্গে
পাগল করিল ব্রজবধূকে

কত নৃত্যভঙ্গী দেখায়ে—পাগল করিল ব্রজবধূকে

তাদের,–পাগল হওয়াই দেখিল বটে

কিন্তু,–নিজ-নটন ভোগ হয় নাই নিজের—তাদের,–পাগল হওয়াই-

দেখিল বটে
আবার মুগ্ধ করিছে

সঙ্কীর্ত্তন-নৃত্যে কতজনে—আবার মুগ্ধ করিছে

ভক্তগণের মুগ্ধতা দেখেছে
নৃত্য-মাধুরীর কথাও শুনেছে

ভক্তগণের মুখ হতে—নৃত্য-মাধুরীর কথাও শুনেছে

কখনও ত দেখে নাই

আপন,–নৃত্য-মাধুরী প্রাণ গৌরহরি—কখনও ত’ দেখে নাই
ভক্তমুখে শুনেছে বটে—কিন্তু,–কখনও ত’ দেখে নাই

শুনে অবধি লোভ ছিল

আমার,–নটন-মাধুরী আমি দেখব—শুনে অবধি লোভ ছিল
আমার,–নটন আমি দেখব বলে—শুনে অবধি লোভ ছিল

মনে হয় আস্বাদন করি

কেমন আমার নটন-মাধুরী—মনে হয় আস্বাদন করি

আজ,–সেই বাসনা পূর্ণ হল

বক্রেশ্বরের নৃত্য দর্শনে—আজ,–সেই বাসনা পূর্ণ হল
দেখিয়া বক্রেশ্বরের নৃত্য—আজ,–সেই বাসনা পূর্ণ হল

[মাতন]
ও ত’ নয় বক্রেশ্বরের নটন

তাঁর—বুকে নাচে শচীনন্দন—ও ত’ নয় বক্রেশ্বরের নটন

নাচে বক্রেশ্বরের বুকে

নাটুয়া-মুরতি গৌর-সুন্দর—নাচে বক্রেশ্বরের বুকে

বক্রেশ্বরের বুকে আছে
বক্রেশ্বরের হৃদ্‌বিহারী

কীর্ত্তন-লম্বট গৌরহরি—বক্রেশ্বরের হৃদবিহারী

[মাতন]
বক্রেশ্বরের হৃদিনাথ

ফিরে গোরা নটরাজ—বক্রেশ্বরের হৃদিনাথ

তাই,–পেয়েছে অদ্ভুত নৃত্য-শকতি

বক্রেশ্বর গুণমণি—তাই,—পেয়েছে অদ্ভুত নৃত্য-শকতি
তাঁর,–হৃদে বসেছে নাটুয়া—মুরতি—তাই,–পেয়েছে অদ্ভুত নৃত্য-শকতি

আমার,–কীর্ত্তন-লম্পট গৌরহরি

বক্রেশ্বরের হৃদবিহারী—আমার,–কীর্ত্তন-লম্পট গৌরহরি

[মাতন]
আজ,–আস্বাদিছে নিজ-নটন-মাধুরী
ভোগ করে নিজ-নটন-মাধুরী

বড় ভোগী গৌর আমার—ভোগ করে নিজ-নটন-মাধুরী
বক্রেশ্বরের নৃত্য হেরি’—ভোগ করে নিজ-নটন-মাধুরী

[মাতন]
তাই,–প্রভু আমার এত মত্ত

আস্বাদিছে আপন-নৃত্য—তাই,–প্রভু আমার এত মত্ত

তাই-ফিরে প্রভু বেত্র করে

আপন-মাধুরী ভোগের তরে—তাই,—ফিরে প্রভু বেত্র করে
অবাধে,–নিজ-নটন ভোগের তরে—তাই,–ফিরে প্রভু বেত্র করে

নৃত্যে বাধা হলে পরে

আপনার ভোগ্য বক্রেশ্বরের—নৃত্যে বাধা হলে পরে

আপন-ভোগে বাধা পড়বে
তাই ফিরে ব্যস্ত হয়ে

ভোক্তা গৌর বেত্র করে—তাই ফিরে ব্যস্ত হয়ে
ভোগ্য-বক্রেশ্বরে ঘিরে—তাই ফিরে ব্যস্ত হয়ে

তাই,–ফিরে প্রভু বেত্র করে

আপন-মাধুরী ভোগের তরে—তাই,–ফিরে প্রভু বেত্র করে

তার,–হৃদয়ে যে গৌর আপনি নাচে

ও ত,’—বক্রেশ্বরের নৃত্য নয়—তার,–হৃদয়ে যে গৌর আপনি নাচে

তার হৃদয়ে গৌর নাচে
আপন,–নৃত্য-মাধুরী ভোগ করে

বক্রেশ্বরের নটন হেরে—আপন,–নৃত্য-মাধুরী ভোগ করে

আজ,–আস্বাদিছে নিজ-নটন-মাধুরী

বক্রেশ্বরের হৃদে নৃত্য করি’—আজ,–আস্বাদিছে নিজ-নটন-মাধুরী
বক্রেশ্বরের নৃত্য হেরি’ গৌরহরি—আজ,–আস্বাদিছে নিজ-নটন-মাধুরী

তাই নাচিছে আনন্দ-ভরে

তার নটনে আপন-নটন হেরে—তাই নাচিছে আনন্দ-ভরে
অপূর্ণ-সাধ পূরণ অবেশে—তাই নাচিছে আনন্দ-ভরে

ফিরিছে গোরা নটরাজ

বক্রেশ্বরের হৃদিনাথ—ফিরিছে গোরা নটরাজ
তাঁর—স্ব-মাধুরী আস্বাদন কাজ—ফিরিছে গোরা নটরাজ

আপন,–নটন-মাধুরী ভোগের আশে
গৌরহরি যায় ছুটে

নিতাই আমার যেখানে নাচে—গৌরহরি যায় ছুটে
নিতাই-নটন তাঁরই নটন বটে—গৌরহরি যায় ছুটে

যেন,—নিতাই এর দোসর ঠাঁই

বক্রেশ্বরের নটন ভাই—যেন,–নিতাই এর দোসর ঠাঁস
প্রভুর,—বক্রেশ্বরে এত প্রীতি তাই—যেন,—নিতাইএর দোসর ঠাঁই

‘‘বক্রেশ্বর স্থির হৈলে, প্রভু ধরি’ রাখে কোলে’’

কত-গুণের প্রভু রে

আমার,–শচীদুলাল গৌরহরি—কত গুণের প্রভু রে

অপরূপ ভোগ করে

বক্রেশ্বরে হৃদে ধরে—অপরূপ ভোগ করে

আজ,–আপনি আপনায় বুকে ধরে

বক্রেশ্বরে আপনার মাধুরী হেরে—আজ,–আপনি আপনায় বুকে ধরে

বুকে ধরে ছাড়তে নারে

নিজ-অঙ্গ-সঙ্গ ভোগ করে—বুকে ধরে ছাড়তে নারে

মনে মনে বলে রে
ধন্য সেই বিধি ধন্য

যে নিরমিল বক্রেশ্বর অঙ্গ—ধন্য সেই বিধি ধন্য

‘‘তাহার অঙ্গের ধূলা লইয়া।
সে ধূলা আপন-অঙ্গে লেপন করয়ে রঙ্গে,
নেত্রজলে অভিষিক্ত হইয়া।।’’

বালাই লয়ে মরে যাই

ভকত-বাৎসল্য-লীলার—বালাই লয়ে মরে যাই

অপরূপ ভোগময় লীলা
আস্বাদিছে গৌরহরি

ভক্ত-পরশিতে-রজে কি মাধুরী—আস্বাদিছে গোর

আস্বাদনের বালাই লয়ে মরি

অশেষ-বিশেষে নিজ-মাধুরী—আস্বাদনের বালাই লয়ে মরি
রসময়-গৌরহরির –আস্বাদনের বালাই লয়ে মরি
রসময়-গৌরহরি—আস্বাদনের বালাই লয়ে মরি

কেবল,–আস্বাদনের লীলা রে

মহা,–ভাবনিধি—গৌরাঙ্গ-লীলা—কেবল,–আস্বাদনের লীলা রে

কেবল ভোগের খেলা রে

নিগূঢ়-গৌরাঙ্গ-লীলা—কেবল ভোগের খেলা রে

আহা,–জুড়ালাম জুড়ারাম বলে
প্রভু,–লেপন করে নিজ-অঙ্গে

বক্রেশ্বরের অঙ্গ-ধূলা লয়ে—প্রভু,–লেপন করে নিজ-অঙ্গে

মাখয়ে আপন-অঙ্গে

বক্রেশ্বরের অঙ্গ-ধূলা—মাখয়ে আপন-অঙ্গে

অঙ্গের ধূলা মাখে অঙ্গে

প্রভু আমার করি’ কতরঙ্গে—অঙ্গের ধূলা মাখে অঙ্গে
নেত্র-জলে সিক্ত হয়ে—অঙ্গের ধূলা মাখে অঙ্গে

বালাই লয়ে মরে যাই

নিগূঢ়-গৌরাঙ্গ-লীলার—বালাই লয়ে মরে যাই
অশেষ-বিশেষে আস্বাদনের—বালাই লয়ে মরে যাই
মহা,–ভোগময়-গৌরলীলার—বালাই লয়ে মরে যাই

আজ ভোগী ভোগ করিছে

নিজ,–অঙ্গ-ধূলায় কি মাধুরী আছে—আজ ভোগী ভোগ করিছে

আস্বাদ ত’ পেয়েছে

নটিনীগণের অঙ্গ-ধূলার—আস্বাদ ত’ পেয়েছে

আজ,–ভোগ করে গোরা রাঙ্গিয়া

জড়াজড়ি-অঙ্গের ধূলা—আজ,–ভোগ করে গোরা রঙ্গিয়া

দুনয়নে বারি ঝরে

বক্রেশ্বরের অঙ্গ-ধূলা মেখে—দুনয়নে বারি ঝরে
জুড়ালাম জুড়ালাম বলে—দুনয়নে বারি ঝরে

আবার বুঝি অভাব জাগে
আশা বুঝি মিটছে না রে

লালসা যে চলল বেড়ে—আশা বুঝি মিটছে না রে

আশা বুঝি আসতে হবে

‘‘নেত্রজলে অভিষিক্ত হইয়া।।
প্রভু, –ভাব সমাধিয়া অতি, কহে বক্রেশ্বর প্রতি,
মুখ্য এক পাখা তুমি মোরে।
যদি আর এক পাখা পাঙ, আকাশে উড়িয়া যাঙ,
ঐছে কত কহে নাহি ওর।।’’

বালাই লয়ে মরে যাই

বক্রেশ্বরে গৌর-প্রীতির—বালাই লয়ে মরে যাই

আকাশে উড়িয়া যাই

যদি আর এক পাখা পাই—আকাশে উড়িয়া যাই

যদি আর এক পাই পাখা

ওহে বক্রেশ্বর তোমার মত—যদি আর এক পাই পাখা
তুমি মোর এক পাখা—যদি আর এক পাই পাখা

[মাতন]
তবে,—আকাশে উড়িয়া যাই

‘‘ঐছে কত কহে নাহি ওর।।
হেন বক্রেশ্বর যাকে, করুণা করয়ে তাকে,
চৈতন্য-চরণ-ধন মিলে।’’

অনায়াসে গৌর-চরণ মিলে

বক্রেশ্বরের কৃপা হলে—অনায়াসে গৌর-চরণ মিলে

[মাতন]

‘‘চৈতন্-চরণ-ধন মিলে।
কি হব মহিমা তাঁর, মো হেন পাপী দুরাচার,
কত দীন-হীন উদ্ধারিলে।।
নরহরি অকিঞ্চন, করে এই নিবেদন,
কৃপা কর মো হেন পামরে।
বৃথা জন্ম গোঁয়াইনু, ভক্তিমর্ম্ম না বুঝিনু,
মজিলাম এ ভব-সংসারে।।’’

এইবার আমায় কৃপা কর

বক্রেশ্বর-পণ্ডিত-ঠাকুর—এইবার আমায় কৃপা কর

এই কর কৃপা করি’

ওহে ঠাকুর বক্রেশ্বর—এই কর কৃপা করি’
গৌর-চরণ,–হৃদে ধরি গুণে ঝুরি—এই কর কৃপা করি’

এইবার কৃপা কর হে

বক্রেশ্বর পণ্ডিত-ঠাকুর—এইবার কৃপা কর হে

পণ্ডিত,–বক্রেশ্বর এই কৃপা কর

গৌর-চরণ-ধনে ধনী কর—পণ্ডিত বক্রেশ্বর এই কৃপা কর

এই,–কৃপা কর ঠাকুর বক্রেশ্বর

পাব গৌর প্রাণেশ্বর—এই,–কৃপা কর ঠাকুর বক্রেশ্বর

তোমার চরণ হৃদে ধরে

গৌর-চরণ হৃদে স্ফুরে—তোমার চরণ হৃদে ধরে

যেন,–পাই তোমার প্রাণেশ্বর

হা পণ্ডিত বক্রেশ্বর—যেন,–পাই তোমার প্রাণেশ্বর
প্রাণ গৌর বিশ্বম্ভর—যেন—পাই তোমার প্রাণেশ্বর

[মাতন]
যেন,–গৌর-নটন হৃদে স্ফুরে

তোমার চরণ হৃদে ধরে—যেন,–গৌর-নটন হৃদে স্ফুরে

[মাতন]

—-০—-


অতঃপর ‘‘কোথা বা লুকালে’’ ইত্যাদি মহাজনী আক্ষেপ কীর্ত্তন


… … … … …
… … … … …
… … … … …


মহাজনী আক্ষেপ-কীর্ত্তনের কিঞ্চিৎ বিশেষ —

… … … … …
… … … … …
… … … … …

আরে হা,– ‘‘তাহা মুঞি না পাইনু দেখিতে।’’
দেখিতে ত’ পেলাম নাকো

কত-শত-ধারা প্রবাহিত হল—দেখিতে ত’ পেলাম নাকো
‘কত-শত-ধারা প্রবাহিত হল’—
এই গম্ভীরা-নিকুঞ্জ হতে—কত-শত-ধারা প্রবাহিত হল
যার,–এক-বিন্দুতে জগৎ ডুবাল—কত-শত-ধারা প্রবাহিত হল

দেখিতে ত’ পেলাম নাকো
কোথা আছ ঠাকুর বক্রেশ্বর

লয়ে গৌর প্রাণেশ্বর—কোথা আছ ঠাকুর বক্রেশ্বর

[মাতন]
এসেছি বড় আশা করে

বক্রেশ্বর তোমার ঘরে—এসেছি বড় আশা করে
দেখাও তোমার গৃহবাসী গোরারে—এসেছি বড় আশা করে

ভয় নাই আমরা লয়ে যাব না
একবার দেখব
কথা যে কইছ না
কোথা বা লুকালে

সঙ্কীর্ত্তনে নাচতে নাচতে—কোথা বা লুকালে
সঙ্কীর্ত্তনে নাচতে নাচতে—
এই লক্ষ্মী-বিজয়-দিনে—সঙ্কীর্ত্তনে নাচতে নাচতে

কোথা বা লুকালে
হায় কারে বলব দুঃখের কথা
হায় রে,–কিছুই দেখতে পেলাম না রে

আমার প্রাণ-গৌরাঙ্গের,–কীর্ত্তন-নটন-লীলা—কিছুই দেখতে পেলাম না রে
হায় রে আর,–কারে বলব দুঃখের কথা –কিছুই দেখতে পেলাম না রে
ও,–‘‘গমন-নটন-লীলা’’

আ’মরি,–গমন-নটন-লীলা

ওগো আমাদ্বার,–শচীদুলান প্রাণ গৌরাঙ্গের—আ’মরি,–গমন-নটন-লীলা
ও,–

‘‘গমন-নটন-লীলা, বচন সঙ্গীত-কলা,

কিছুই দেখতে পেলাম না রে
দেখা শুনা হল না

কি দুঃখের কথা,–তখন জনম হল না—দেখা শুনা হল না
গমনে নটন বচনে গান—দেখা শুনা হল না

… … … … …
… … … … …
… … … … …
… … … … …


হায়,–তখন না হৈল জন্ম,’’
ভাই রে,–দুঃখের কথা কারে বা বলব—তখনে না হৈল জন্ম

নিশিদিশি জ্বলছে হিয়া

সেই লীলা অদর্শন শেলে—নিশিদিশি জ্বলছে হিয়া
‘সেই লীলা অদর্শন শেলে’
শ্রীগুরু-গৌর-গৌরাঙ্গগণের—সেই লীলা অদর্শন শেলে

নিশিদিশি জ্বলছে হিয়া

পাঁজর পুড়ে ঝাঁঝর হল—নিশিদিশি জ্বলছে হিয়া
‘পাঁজর পুড়ে ঝাঁঝর হল’—
আর কারে বা দেখাব বল—পাঁজর পুড়ে ঝাঁঝর হল

নিশিদিশি জ্বলছে হিয়া

হা,– ‘‘প্রভু সনাতন রূপ, রঘুনাথ ভট্টযুগ,
কোথা গেলে,–ভূগর্ভ শ্রীজীব লোকনাথ।’’

ওগো,–তোমার সবে কোথা বা গেলে

আমাদের,–কাল-কলির কবলে ফেলে—ওগো,–তোমরা সবে কোথা-

বা গেলে
প্রাণ,–গৌর লয়ে কোথা বা গেলে
তোমাদের,–কত না খুঁজেছি

হা প্রভু রূপ সনাতন—তোমাদের,–কত না খুঁজেছি
আমরা সব ভাই ভাই মিলে—তোমাদের,–কত না খুঁজেছি
ভাই ভাই মিলে ব্রজবনে গিয়ে—তোমাদের,–কত না খুঁজেছি
ব্রজবনে,–তোমাদের বসতি-স্থানে গিয়ে—তোমাদের,–কত না খুঁজেছি

কত না ডেকেছি

কোথায় আছ,–রূপ সনাতন বলে—কত না ডেকেছি
কোথায় আছ,–ভট্টযুগ শ্রীজীব গোসাঞি বলে—কত না ডেকেছি
কোথায় আছ,–লোকনাথ ভূগর্ভ গোসাঞি বলে—কত না ডেকেছি
সেই রাধাকুণ্ড-তীরে গিয়ে—কত না ডেকেছি
কোথায় আছ,–দাস গোসাঞি বলে—কত না ডেকেছি

এই ত রাধাকুণ্ড-তীর

কোথায় আছ দাস গোসাঞি—এই ত রাধাকুণ্ড-তীর

[মাতন]

… … … … …
… … … … …
… … … … …
… … … … …

তাহলে এক-তিল কি প্রাণ থাকত

যদি মনুষ্যত্ব থাকত—তা হলে,–এক-তিল কি প্রাণ থাকত

… … … … …
… … … … …
… … … … …
… … … … …


প্রাণ গৌর-লীলা দর্শনে বঞ্চিত হয়ে—এক-তিল কি প্রাণ থাকত
সে সুখময়-সঙ্গ হারাইয়ে—এক-তিল কি প্রাণ থাকত
‘সে সুখময়-সঙ্গ হারাইয়ে’—
পরম-করুণ শ্রীগুরুদেবের—সে সুখময়-সঙ্গ হারাইয়ে

এক-তিল কি প্রাণ থাকত

… … … … …
… … … … …


এখন,– ‘‘অন্নজল বিষ খাই,’’ তবু,–‘‘মরিয়া নাহিক যাই,’’

এখনও অন্ন-জল রুচিছে

কি বলব দুর্দ্দৈবের কথা—এখনও অন্ন-জল রুচিছে
একে একে সবাই ছেড়ে গেছে—এখনও অন্ন-জল রুচিছে
‘একে একে সবাই ছেড়ে গেছে’—
আমার বলতে যাঁরা ছিল—একে একে সবাই ছেড়ে গেছে
কারে বলব দুঃখের কথা—একে একে সবাই ছেড়ে গেছে
আমাদের,–নিজ-স্বতন্ত্রতা-দোষে—একে একে সবাই ছেড়ে গেছে
যাঁরা,–মুখ দেখ দুঃখ বেছে নিত—একে একে সবাই ছেড়ে গেছে

এখনও অন্ন-জল রুচিছে
বাহু পসারি’ বুকে ধরিত

মুখ মলিন দেখলে তাঁরা—বাহু পসারি বুকে ধরিত
‘মুখ মলিন দেখলে তাঁরা’—
কেন কি হয়েছে আয় আয় বলে—মুখ মলিন দেখলে তাঁরা
বাহু পসারি হিয়ায় ধরিত একে একে সব চলে গেল

… … … … …
… … … … …


‘‘তবে যদি যাও সেই ভাল।।’’

এখন,–গেলেই ত’ ভাল রে

এখনও ভালয় ভালয়—এখন,–গেলেই ত’ ভাল রে

কোথা বা আছ হে

পরম-করুণ শ্রীগুরুদেব—কোথা বা আছ হে
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—কোথা বা আছ হে

যেন,–ব্যাকুল হয়ে কাঁদতে পারি

গৌরগুণ সঙরি গৌর বলে,–যেন,–ব্যাকুল হয়ে কাঁদতে পারি
গৌরগুণ সঙরি গুমরি গুমরি—যেন,–ব্যাকুল হয়ে কাঁদতে পারি
তোমাদের চরণ হৃদে ধরি’ –যেন,–ব্যাকুল হয়ে কাঁদতে পারি

কোথা বা আছ হে
হা শ্রীগুরুদেব
কিছুই ত জানতাম না

কে আমি আমার কি কর্ত্তব্য—কিছুই ত জানতাম না
সংসার-কূপে ডুবে ছিলাম—কিছুই ত জানতাম না

কৃপা করে টেনে তুলিলে
নিজ-গুণে টেনে তুলিলে

সংসার-কূপ হতে–নিজ-গুণে টেনে তুলিলে
কৃপারজ্জু কেশে বেঁধে—নিজ-গুণে টেনে তুলিলে
শ্রীগুরু-রূপে দেখা দিয়ে—নিজ-গুণে টেনে তুলিলে

কর্ত্তব্য বুঝাইলে

গৌর-গোবিন্দ-ভজন—কর্ত্তব্য বুঝাইলে
‘গৌর-গোবিন্দ-ভজন—কর্ত্তব্য বুঝাইলে
‘গৌর-গোবিন্দ-ভজন’—
জগদ্‌গুরু-নিতাই—পদাশ্রয়ে—গৌর-গোবিন্দ-ভজন

কর্ত্তব্য বুঝাইলে
কিছুই ত’ জানতাম না

কোথা নীলাচল কে জগন্নাথ—কিছুই ত জানতাম না
কোথা নীলাচল কে জগন্নাথ’—
নীলাচলে গৌরের কিবা লীলা—কোথা নীলাতল কে জগন্নাথ

কিছুই ত’ জানতাম না
সঙ্গে করে লয়ে এলে

রথযাত্রায় নীলাচলে—সঙ্গে করে লয়ে এলে

গৌর-লীলা ভোগ করালে

নিজ-গুণে লয়ে এসে—গৌর-লীলা ভোগ করালে

গৌর-লীলা জানাইলে

ভাবাবেশে কীর্ত্তন-রঙ্গে—গৌর-লীলা জানাইলে

দেখাবে বলে বলেছিলে
কিন্তু –ফাঁকি দিয়ে লুকাইলে
লুকাইয়ে কর্‌ছ খেলা

গৌর লয়ে এই নীলাচলে—লুকাইয়ে করছ খেলা
ত্রিকাল-সত্য-লীলায়—লুকাইয়ে করছ খেলা
নিরজনে প্রাণগৌর লয়ে—লুকাইয়ে করছে খেলা

এসেছি বড় আশা করে

তোমার-কৃপা-আশা ধরে—এসেছি বড় আশা করে
ভাই ভাই ভাই মিলে—এসেছি বড় আশা করে
তোমাদের ত্রিকাল-সত্য-লীলা জেনে—এসেছি বড় আশা করে

তোমারই শ্রীমুখে শুনেছি
অদ্যাপিও সেই লীলা হয়
বড় সাধ দেখব বলে

তাই,–এসেছি বড় আশা করে—বড় সাধ দেখব বলে
শ্রীরথাযাত্রায় গৌরি-বিহার—বড় সাধ দেখব বলে

বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে

তোমার,–ভক্ত-সঙ্গে মিলন-লীলা—বড়,—সাধ ছিল দেখব বলে
‘তোমার,–ভক্ত-সঙ্গে মিলন-লীলা।’—
আঠার-নালার পথে—তোমার,–ভক্ত-সঙ্গে মিলন-লীলা।

বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে

রাঘবের,–ঝালি-সমর্পণ-লীলা—বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে
গুণ্ডিচা-মার্জ্জন-লীলা—বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে
চলে যেছে,–কুঞ্জ-সজ্জা-আবেশে—বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে
চলে যেছে—কুঞ্জ-সজ্জা—আবেশে’—
পরাণ-বঁধু আসবে বলে—চলে যেছে,–কুঞ্জ-সজ্জা—আবেশে

বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে
তোমায়,–দেখিতে ত’ পেলাম না ।

গুণ্ডিচা-মার্জ্জন হল বটে—তোমার,–দেখিতে ত’ পেলাম না

ফিরে এলাম কেঁদে কেঁদে
আবার,–রথের আগে দেখব বলে
এলাম নিশি-পরভাতে

বড় সাধ দেখব বলে—এলাম নিশি-পরভাতে

‘‘নাচে শচীনন্দন, দেখে রূপ সনাতন,’’

… … … … …
… … … … …
… … … … …

রথের আগে সেই মুরতি—বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে
রাধাভাবে গৌর নাচে—বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে
‘রাধাভাবে গৌর নাচে—বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে
পরাণ-বঁধূ পাইনু বলে—রাধাভাবে গৌর নাচে

[মাতন]
বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে
বড় আশা ছিল মনে
তোমায়,–দেখব গৌর-কিশোরী-সনে

শ্রীজগন্নাথের রথের আগে—তোমায়,–দেখব গৌর-কিশোরী-সনে

জগন্নাথ গেলেন গুণ্ডিচায়

কই,–দেখতে পেলাম না তোমায়—জগন্নাথ গেলেন গুণ্ডিচায়
কই,–দেখা দিলেননা গোরারায়—জগন্নাথ গেলেন গুণ্ডিচায়

দেখিতে ত’ পেলাম না

যাঁরে,—দেখব বলে নীলাচলে এলাম—দেখিতে ত’ পেলাম না

তাঁর দেখা ত’ পেলাম না
হতাশ হয়ে ফিরে এলাম

ভাই ভাই মিলে কেঁদে কেঁদে—হতাশ হয়ে ফিরে এলাম

আবার মনে আশা জাগল
প্রাণগৌর দেখতে পাব

শ্রীগোপীনাথের আগে—প্রাণগৌর দেখতে পাব
নিতাই-চাঁদের ভিক্ষার উৎসবে—প্রাণগৌর দেখতে পাব

আবার,—গিয়েছিলাম আশা করে

কাল শ্রীগোপীনাথের ভবনে—আবার,–গিয়েছিলাম আশা করে

বড় সাধ দেখব বলে
এনেছেন নিতাই মাথায় বয়ে

সুগন্ধি তণ্ডুল গৌড় হতে—এনেছেন নিতাই মাথায় বয়ে

দিয়েছেন পণ্ডিত-গদাধরে
গদাধর রন্ধন করে
ডাকিবেন প্রাণে প্রাণে

নিতাই গদাই দুই জনে—ডাকিবেন প্রাণে প্রাণে

এস এস প্রাণেশ্বর

হয়ে তুমি একেশ্বর—এস এস প্রাণেশ্বর

[মাতন]
আসি তাঁদের আকর্ষণে

প্রভু বিনা নিমন্ত্রণে—আসি’ তাঁদের আকর্ষণে

ডাকিবেন টোটার দ্বারে

গদাধর ও-গদাধর বলে—ডাকিবেন টোটার দ্বারে

সসম্ভ্রমে আসবেন গদাধর
বড় আশা ছিল প্রাণে

সেই ডাক শুনব কাণে—বড় আশা ছিল প্রাণে

আসি’ প্রভু টোটা-গোপীনাথে
তিনজন করবেন ভোজন

গোপীনাথের ভোগমন্দিরে—তিনজনে করবেন ভোজন

ভোজন করবেন কত প্রেমরঙ্গে

নিতাই-গদাধর-সঙ্গে—ভোজন করবেন কত প্রেমরঙ্গে

বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে

মহাপ্রসাদ-ভোজন-রঙ্গ—বড়,–সাধ ছিল দেখব বলে

মহোৎসব হল বটে

শ্রীগোপীনাথের আগে—মহোৎসব হল বটে

দেখিতে ত’ পেলাম না

গোপীনাথের আগে সেই লীলা—দেখিতে ত’ পেলাম না

দেখতে পেলাম না প্রাণগৌরাঙ্গ

হল বটে ভোজন-রঙ্গ—দেখতে ত’ পেলাম না প্রাণগৌরাঙ্গ

কেঁদে কেঁদে ফিরে এসেছি
আজ আবার আশা জাগছে

লক্ষ্মী-বিজয়-দিনে—আজ আবার আশা জাগছে
আজ হেরা-পঞ্চমীতে—আজ আবার আশা জাগছে

যাবেন,–জগন্নাথের রথের আগে

লক্ষ্মীদেবী নিজগণ-সাথে—যাবেন,–জগন্নাথের রথের আগে

করিবেন কত ভর্ৎসনা

জগন্নাথে লক্ষ করি’—করিবেন কত ভর্ৎসনা।

সেই লীল-রঙ্গ দেখি’
জিজ্ঞাসিবেন গৌরহরি

এ কি প্রেমরহস্য লক্ষ্মীদেবীর—জিজ্ঞাসিবেন গৌরহরি

শ্রীবাস তখন নারদ-আবেশে
লক্ষ্মীর প্রেমমহিমা বর্ণন করবেন
তা শুনি স্বরূপ গোসাঞি
আবেশে করিবেন বর্ণনা

গোপীনাথের প্রেমের মহিমা—আবেশে করিবেন বর্ণনা

হবেন প্রেমে উনমত

তা শুনি প্রাণগৌরাঙ্গ—হবেন প্রেমে উনমত

দেখাইও সেই গৌরাঙ্গে

কোথা আমার পাগলা প্রভু—দেখাইও সেই গৌরাঙ্গে
শ্রীবাস-স্বরূপাদি-সঙ্গে—দেখাইও সেই গৌরাঙ্গে
রাধা-প্রেমমহিমা পরসঙ্গে—দেখাইও সেই গৌরাঙ্গে

তা দেখে,–গাইব মোরা প্রেমস্বরে

জয় জয় প্যারী রাধে—তা দেখে,—গাইব মোরা প্রেমস্বরে

আরও আশা মনে জাগছে
যাব গুণ্ডিচা-মন্দিরে
নয়ন-ভরে দেখব মোরা

আক্ষেপ,–অনুরাগে ভোরা গোরা’—
শ্রীজগন্নাথের সম্মুখে—আক্ষেপ—অনুরাগে ভোরা গোরা

দেখিব সেই প্রাণগোরা

সপরিকরের খেলা—দেখিব সেই প্রাণগোরা

রাধাভাবে করবেন আক্ষেপ উক্তি

কেন এমন হল বলে—রাধাভাবে করবেন আক্ষেপ উক্তি
‘কেন এমন হল বলে’—
আমার সোণার-বরণ বঁধু—কেন এমন হল বলে

রাধাভাবে করবেন আক্ষেপ উক্তি
দেখিতে ত’ পেলাম না

কেঁদে কেঁদে ফিরে এলাম—দেখিতে ত’ পেলাম না

যদি এনেছ কৃপা করে

কাশীমিশ্র তোমার ঘরে—যদি এনেছ কৃপা করে

একবার দেখাও হে

তোমার গৃহবাসী গোরাশশী—একবার দেখাও হে
কোথা ঠাকুর বক্রেশ্বর—একবার দেখাও হে
এই গম্ভীরার গুপ্তনিধি—একবার দেখাও হে

পরম-করুণ শ্রীগুরুদেব
এই বাসনা পূরায়ো

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—এই বাসনা পূরায়ো

কৃপা পাবার পাত্র নই

আজ্ঞা পালন করি নাই—কৃপা পাবার পাত্র নই
স্বতন্ত্ররী অভিমানী—কৃপা পাবার পাত্র নই

যদি এনেছ কৃপা-আকর্ষণে

রথযাত্রাকালে টেনে—যদি এনেছ কৃপা-আকর্ষণে
অদোষ-দরশী স্বভাবে-যদি এনেছ কৃপা-আকর্ষণে

একবার দেখা দিও
তুমি ত তার সঙ্গে থাকবে
কত সান্ত্বনা বাক্য বলবে

দাঁড়াইয়া গৌর-পাশে—কত সান্ত্বনা বাক্য বলবে
সহচরী আবেশে—কত সান্ত্বনা বাক্য বলবে

কেঁদো না আর প্রাণ-কিশোরী

তোমারই কাছে তোমার বংশীধারী—কেঁদো না আর প্রাণ-কিশোরী

[মাতন]
একবার দেখা দাও

পারণ গৌরাঙ্গগণ—একবার দেখা দাও
কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—একবার দেখা দাও

হৃদিপটে এঁকে নেব

শ্রীগুরু-গৌরাঙ্গ-বিহার—হৃদিপটে এঁকে নেব

আর,–পাগল হয়ে বেড়াব

আমরা,–হৃদিপটে এঁকে নেব—আর,–পাগল হয়ে বেড়াব
ভাই ভাই ভাই মিলে—পাগল হয়ে বেড়াব
ভাই ভাই এক প্রাণে—পাগল হয়ে বেড়াব
গৌরপ্রেমের পাগল হয়ে—দেশ-বিদেশে বেড়াব
গৌরগণে ঝুরে ঝুরে—পাগল হয়ে বেড়াব
তোমার চরণ হৃদে ধরি’—পাগল হয়ে বেড়াব

যেন,–ব্যাকুল হয়ে গাইতে পারি

তোমার চরণ হৃদে ধরি’—যেন,—ব্যাকুল হয়ে গাইতে পারি
তোমার,—কৃপাদত্ত নামাবলী—যেন,—ব্যাকুল হয়ে গাইতে পারি

এই,—নাম যেখানে পাগল সেখানে

এই–নাম সদা কর গানে—এই,–নাম যেখানে পাগল সেখানে

[মাতন]
যারে দেখব তারে বলব

‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
জপ হরে কৃষ্ণ হরে কাম।।’’
নিতাই-গৌর-হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।
‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।’’



অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ