শ্রীশ্রী যমুনা-পুলিন কীর্ত্তন

শ্রীশ্রীরাধারমণো জয়তি

শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই গৌরহরি বোল।
ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম ।।

[মাতন]

ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম রাধে

জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

[মাতন]

জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
জপ,–রাম রাম হরে হরে—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
রমে রামে মনোরমে—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

[ঝুমুর]

শ্রীরাধারমণ রাম—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম রাধে

আমার,–নিতাই-গুণমণি ভজ
ভাই রে,–আমার নিতাণ গুণমণি

আমি,–কি জানি গুণ কত বা বাখানি—ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি

যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি

আচণ্ডালের দ্বারে দ্বারে গিয়ে—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দন্তে,—তৃণ ধরি করি যোড়পাণি—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দুনয়নে,–বহে ধারা যেন সুরধুনী—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি

ওরে, ভাই রে আমার নিতাই সুন্দর

তার,–গৌরপ্রেমে গড়া কলেবর—ওরে,–ভাই রে আমার নিতাই সুন্দর

নিতাই আমার,–গোরারসে গর-গর
নিতাই আমার,–গোরাভাবে সদাই বিভোর
জানে না নিতাই আপন কি পর

গৌরপ্রেম,–মদিরা পানে হয়ে বিভোর—জানে না নিতাই আপনি কি পর

নিতাই আমার,–আচণ্ডালে ধেয়ে করে কোর

আ’মরি প্রেমবাহু পসারিয়ে—নিতাই আমার,–আচণ্ডালে ধেয়ে করে কোর

বলে ভাই,–বিনামূলে আমি হব তোর

তোর,–পাপ-তাপের বোঝা নিয়া—বলে ভাই,–বিনামূলে আমি হব তোর
একবার,–মুখে বল ভাই ‘গৌর’ ‘গৌর’—বলে ভাই,–বিনামূলে আমি

হব তোর
নিতাই আমার,–গৌর’ বলতে হারায় ঠউর

নিতাইচাঁদের,–দুনয়নে বহে অবিরত লোর—নিতাই আমার,–

‘গৌর বলতে হারায় ঠউর
চাঁদ’—নিতাই আমার শুদ্ধস্বর্ণ

গৌর-অনুরাগ-সোহাগায় শোধন-করা—চাঁদ,–নিতাই আমার শুদ্ধস্বর্ণ

আ’মরি,–ধারায় পরশমণির বর্ণ

যারে তারে পরশ করে—আ’মরি,–ধারায় পরশমণির বর্ণ

আ’মরি,–কে কোথায় শুনেছে

সোনা ছুঁলে পরশ হয়—আ’মরি,–কে কোথায় শুনেছে

জগজনে এই তো জানে

পরশ ছুঁলে সোনা হয়—জগজনে এই তো জানে

সে তো,–যারে তারে সোনা করত নারে
সে ও তো ধাতুর বিচার করে

আ’মরি পরশমণি বলে যারে—সে ও তো ধাতুর বিচার করে

এ-যে,–বিপরীত গতি রে

আমার,–প্রাণ-গৌরাঙ্গের প্রেমরাজ্যে—এ-যে, বিপরীত গতি রে

সোনা ছুঁলে পরশ হয়
আ’মরি,–যারে তারে পরশ করে

আমার,–নিতাই-সোনা পরশ করে—আ’মরি,–যারে তারে পরশ করে

আ’মরি,–পরশিতেও হয় না

এমনি আমার নিতাই-সোনা—পরশেরও অপেক্ষা রাখে না

শুধু,–মুখে বলা বা কাণেতে শোনা

আমার নিতাই-সোনার নাম—শুধু,–মুখে বলা বা কাণেতে শোনা

বলিলেই হয় বা শুনিলেই হয়

হেলায় শ্রদ্ধায়,–নিতাই নিতাই নিতাই নিতাই—বিলেলেই হয় বা শুনিলেই হয়

অমনি,–চিত্তদর্পণ মার্জ্জিত হয়

নিতাই নিতাই বলতে শুনতে—অমনি,—-চিত্তদর্পন মার্জ্জিত হয়
অনাদিকালের,–দুর্ব্বাসনা—মালিন্য ক্ষালিত হয়ে—অমনি,–চিত্তদর্পণ

মার্জ্জিত হয়
অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে

পরশমণির খনি—অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে
‘পরশমণির খনি’—
ও-সে অপ্রাকৃত—পরশমণির খণি
মহা,–ভাব-প্রেম-রসময়—পরশমণির খণি
অখিল,–লাবণ্য-মাধুর্য্য-আলয়—পরশমণির খণি

অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে
গৌর,–হৃদয়ে উদয় হয়

নিতাই নিতাই বলতে শুনতে—গৌর,–হৃদয়ে উদয় হয়
কীর্ত্তন-নাটুয়া-বেশে—গৌর,–হৃদয়ে উদয় হয়
কীর্ত্তন-নাটুয়া-বেশে—গৌর,–হৃদয়ে উদয় হয়
‘কীর্ত্তন—নাটুয়া-বেশে’—
রসাবেশে হেসে হেসে—কীর্ত্তন-নাটুয়া-বেশে

[মাতন]
গৌর,–হৃদয়ে উদয় হয়
নিশিদিশি গুণেতে কাঁদায়
প্রাকৃত-ভোগ-বাসনা ঘুচায়

গৌর হৃদয়ে,–উদয় হয়ে গুণে কাঁদায়ে—প্রাকৃত-ভোগ-বাসনা ঘুচায়

প্রাকৃত,–দেহাভিমান যায় রে দূরে

দারুণ-সংসার,–বন্ধনের একমাত্র কারণ—প্রাকৃত,–দেহাভিমান যায় রে দূরে
গৌরগু ঝুরে ঝুরে—প্রাকৃত,–দেহাভিমান যায় রে দূরে

আর কোনও উপায় নাই রে

দেহাভিমান ঘুচাইবার—আর কোনও উপায় নাই রে
গৌর-গুণে কাঁদা বিনে—আর কোনও উপায় নাই রে

[মাতন]
এই,–দেহাভিমান যায় রে দূরে
শ্রীরাধাদাসী-অভিমান হয় রে

গৌর-গুণে ঝুরে ঝুরে—শ্রীরাধাদাসী অভিমান হয় রে

যুগল-রূপে দেখা দেয় রে

রাই-কানু-মিলিত গৌর –যুগল-রূপে দেখা দেয় রে
হৃদি-মণি-মন্দিরে—রাধাশ্যাম-রূপে দেখা দেয় রে

তখন,–বলে দেন ইঙ্গিত করে

পরমকরুণ শ্রীগুরদেব—তখন,–বলে দেন ইঙ্গিত করে

নিশিদিশি জপ কর

‘হরে কৃষ্ণ রাম’ নাম—নিশিদিশি জপ কর
হৃদয়ে ‘যুগল’ স্মঙর—নিশিদিশি জপ কর

নিত্যালীলা দেখতে পাবে
নিত্যলীলা দেখতে পায় রে

শ্রীগুরু-আজ্ঞায় নাম জপে—নিত্যলীলা স্ফুর্ত্তি পায় রে
রাধাদাসী-অভিমানে—নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে
শ্রীযমুনা-পুলিন-বনে—নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে

ভাবাবেশে গান করে

ও—‘‘যমুনা-পুলিন কেশীঘাট,
আরে ও বংশীবট রে।’’

আরে ও বংশীবট রে [ঝুমুর]

‘‘যমুনার তীরে নীরে বিহরই,’
ভাগ্যবতী শ্রীযমুনার—তীরে নীরে

ভাগ্যবতী শ্রীযমুনা
তীরে নীরে বিহরত

গোধন-পালন-রঙ্গে—তীরে নীরে বিহরত
সমবয়ো-বাল-সঙ্গে—তীরে নীরে বিহরত
নব-নটবর-ভঙ্গে—তীরে নীরে বিহরত
‘‘যমুনার তীরে নীরে বিহরই,
ও-সে—রসময় শ্যাম নট রে।।’’

বিহরে,–রসময় শ্যাম নট রে

[মাতন]

আ’মরি—‘‘ধীরসমীরে বংশীস্বরে’’
বিহরত বনমালী—ধীরসমীরে

বিহরত বনমালী

ধীরসমীরে যমুনাতীরে—বিহরত বনমালী

মন-সাধে সদাই সাধে
শ্যাম-নাগরের সাধনৃ-যন্ত্র

সরল-বাঁশের বাঁশী—শ্যাম-নাগরের সাধন-যন্ত্র

সাধে রাধা-নাম ইষ্টমন্ত্র
আ’মরি,–মন-সাধে সদাই সাধে

জয় রাধে শ্রীরাধে রাধে—আ’মরি,–মন-সাধে সদাই সাধে

বংশীবটে সদাই রটে

ধীরসমীরে যমুনাতটে—বংশীবটে সদাই রটে
অকপটে শ্যাম-নটে—বংশীবটে সদাই রটে

বাঁশী বড় ভাগ্যবতী

জয় শ্রীসরলা বংশী—বাঁশী বড় ভাগ্যবতী

শ্যামের,—অধর-সুধা পান করে

শ্যাম-নাগর,–কত আদরে অধরে ধরে—শ্যামের,–অধর-সুধা পান করে

‘রাধা’ নাম-সুধা উগারে

শ্যামের,–অধর-সুধা পান করে—‘রাধা’ নাম-সুধা উগারে

বাঁশী,–সঙ্কেত করে মিলন করায়

জয়,–‘রাধে’—‘রাধে’ বলে বেজে—বাঁশী,–সঙ্কেত করে মিলন করায়
বংশী দূতী হয়ে—বাঁশী,–সঙ্কেত করে মিলন করায়

বাঁশীর,–যুগল-মন্ত্রে উপাসনা

শ্যামের,–অধরে থাকে ‘রাধা’ বলে—বাঁশীর,–যুগল-মন্ত্রে উপাসনা

‘‘ধীরসমীরে বংশীস্বরে,


সদা—‘রাধা’ নাম রটে রে।’’

সদা,–‘রাধা’ নাম রটে-রে [ঝুমুর]

আবার—‘‘দান-ছলে বিহরই,’’
রাই-অঙ্গ-পরশের আশে—দান ছলে

কাল ভাল হবে বলে

ব্রজে,–সবাই কাল কাল বলে—তাই,–কাল ভাল হবে বলে
আমাদের,–গৌরঙ্গিণীর অঙ্গ-পরশে—কাল’ ভাল হবে বলে

দানঘাটে মহাদানী
বলে,–দে ‘দান’ দে ‘দান’ গোপি

বাহু পসারিয়ে পথ আগুলিয়ে—বলে,–দে ‘দান’ দে ‘দান’ গোপি
আ’মরি,–‘‘দান-ছলে বিহরই
শ্রীগোবর্দ্ধন-তটে রে।।’’

শ্রী,–গোবর্দ্ধন-তটে রে [ঝুমুর]

শ্রী,–‘‘নন্দনন্দন বংশী-বদন
আমাদের প্রাণ-রাধারমণ-নন্দনন্দন

আমাদের প্রাণ রাধারমণ

ওগো,–কিশোরীকিঙ্করী মোরা—আমাদের প্রাণ রাধারমণ

আমাদের,–‘‘প্রাণ-রাধারমণ, রমণী-মনোমোহন
শ্রীবৃন্দাবন-বনদেবা।
অভিনব-রাস,- রসিকবর নাগর,
নাগরীগণ-কৃত-সেবা।।
ব্রজপতি-দম্পতি,- হৃদয়-আনন্দন,
নন্দন নবঘন শ্যাম।
নন্দীশ্বর পুর, পুরট-পটাম্বর,
রামানুজ গুণধাম।।
শ্রীদাম-সুদাম,- সুবল-সখা সুন্দর,
চন্দ্রক-চারু-অবতংস।
গোবর্দ্ধন-ধর, ধরণী-সুধাকর,
মুখরিত-মোহন-বংশ।।
কালিয়-দমন, গমন জিতি কুঞ্জর,
কুঞ্জ রচিত রতি-রঙ্গ।’’


শ্রী,–‘‘নন্দনন্দন বংশীবদন,

ও-সে,–কালিয়া কপট রে
ও-সে,—কালিয়া কপট রে [ঝুমুর]

আমাদের,–‘‘ঠাকুরাণী ভানুনন্দিনী’’
আমাদের,–ঐ গরবে হৃদয় ভরা—আমাদের
আমরা,–ঐ গরবে গরব করি—আমাদের ঠাকুরাণী
আমরা,–ঐ গরবে সদাই ফিরি—আমাদের ঠাকুরাণী

ওগো,–গরবিণীর দাসী মোরা
কিশোরী-কিঙ্করী মোরা

আমরা রাইএর, রাই আমাদের—কিশোরী-কিঙ্করী মোরা

ওগো,–আমাদের রাই রতনমণি

সহজে,–বিংশতি-ভাব-ভূষণে বিভূষিণী—ওগো,–আমাদের রাই রতনকলি
প্রতি,–অঙ্গে শোভে আভরণ বহুমণি—ওগো,–আমাদের রাই রতনমণি

রাই আমাদের রমণী-মণি

গোপিনী-সীমান্তিনী—রাই আমাদের রমণী-মণি

রাই আমাদের,–বরজ-মুকুটমণি
রাই আমাদের,–মাধুর্য্য-কাদম্বিনী

ত্রিধারা-বর্ষণকারিণী রাই—রাই আমাদের,–মাধুর্য্য-কাদম্বিনী

শ্যাম-নাগর-স্নাতকারিণী

ত্রিধারা-বর্ষণকারিণী রাই—শ্যাম-নাগর-স্নাতকারিণী
পূবর্বাহ্নে মধ্যাহ্নে সায়াহ্নে—শ্যাম-নাগর-স্নাতকামিণী
কারুণ্য-তারুণ্য—লাবণ্যামৃত-ধারায়—শ্যাম-নাগর-স্নাতকারিণী

রাই আমাদের,–কৃষ্ণলীলা-শিখরিণী

ব্রজবধূ-মরালিনী-জীবনী-রাই আমাদের,–কৃষ্ণলীলা-শিখরিণী

রাই আমাদের,–কৃষ্ণপ্রেম-তরঙ্গিণী
রাই আমাদের,–মহাভাব-স্বরূপিণী

ধীর-ললিতের মনোহারিণী রাই—রাই আমাদের,–মহাভাব-স্বরূপিণী

রাই আমাদের,–প্রেমময়ী-ঠাকুরাণী

আমাদের,–‘‘ঠাকুরাণী ভানুনন্দিনী,
তাঁর,–বাস যাবটে রে।।’’

ও তাঁর,–বাস যাবটে রে [ঝুমুর]

আমরা,—‘‘সখীর অনুগা হয়ে,’’
গুরুরূপা,–সখীর অনুগা হয়ে,

সদা—‘‘র’ব রাই-নিকটে রে।’’

সদা,–র’ব রাই-নিকটে রে

[ঝুমুর]

আমরা,–‘‘নিত্যলীলায় সেবা করব,
গুরুরূপা-সখীর ইঙ্গিত পেয়ে—নিত্যলীলায়
‘‘নিত্যলীলায় সেবা করব,
ছাড়িয়া কপট রে।।’’

ও-সে,–ছাড়িয়া কপট রে [ঝুমুর]

‘‘গোকুল-মঙ্গল বংশী বাজলে,
জয় রাধে শ্রীরাধে বলে—গোকুল-মঙ্গল
‘‘গোকুল-মঙ্গল বংশী বাজলে,
রাই সাজাব ঝট রে।’’

আমরা,–রাই সাজব ঝট রে [ঝুমুর]

আমরা—‘‘কিশোরী-সনে অভিসারে,’’
হেলে দুলে প্রেমতরঙ্গে—কিশোরী-সনে
শ্যাম-বঁধুর কথা-পরসঙ্গে—কিশোরী-সনে
‘‘কিশোরী-সনে অভিসারে,
যাব,–শ্রীকালিন্দী-তটে রে ।।’’

যাব,–শ্রীকালিন্দী-তটে রে [ঝুমুর]

‘‘নিকুঞ্জবনে মাধবী-তলে,
মিলাব,–কিশোরী শ্যাম-নটে রে।’’

মিলাব,–কিশোরী শ্যাম-নটে রে [ঝুমুর]

তাতে,–‘‘দারিদ্রে পাইবে যেন,’’
আমরা,–কিশোরী মিলাব শ্যাম-েনটে—দারিদ্রে
তাতে,–‘‘দারিদ্রে পাইবে যেন,
হেম-পূর্ণ-ঘটে রে ।।’’

হেল-পূর্ণ-ঘটে রে [ঝুমুর মাতন]

‘‘দু’করে চামর ঢুলা’ব,’’
গুরুরূপা-সখীর ইঙ্গিত পেয়ে—দুকরে
‘‘দু’করে চামর ঢুলা’ব,

দোঁহে,–হেরি একদিঠে রে।’’

দোঁহে,—হেরি একদিঠে রে [ঝুমুর]

আমাদের,–‘‘রাই-মুখ শুকাইলে,
তাম্বুল যোগাব সম্পূটে রে।।’’

তাম্বুল যোগাব সম্পুটে রে [ঝুমুর]

‘‘রাই-মুখের আধ-তাম্বুল,’’
শ্রী,–ললিতার পাশে দাঁড়ায়ে দেখব—রাই-মুখের
‘‘রাই-মুখের আধ-তাম্বুল,
কাড়ি খাবে শযযাম-নট রে।”

কাড়ি খাবে শ্যাম-নট রে [ঝুমুর]

হবে,–‘‘মেঘ-বিজুরী জড়াজড়ি,

লাগিবে,–চাতক চকোরে হট রে।।’’

লাগিবে,–চাতক চকোরে হট রে [ঝুমুর]

‘‘চাতক বলবে আমার নবঘন,

আর,–চকোর বলবে চাঁদ রে।’’
আর,–চকোর বলবে চাঁদ রে [ঝুমুর]

‘‘পুচ্ছ পসারি’ ময়ূর ময়ূরী,


তারা,–যুগল দেখে যুগল হবে—পুচ্ছ পসারি’

‘‘পুচ্ছ পসারি ময়ূর ময়ূরী,


পাছে, বাদী ‘যুগল’ ভাঙ্গবে বলে—পুচ্ছ পসারি’

তারা,–রুধিবে কুঞ্জ-বাট রে।’’

তারা,–রুধিবে কুঞ্জ-বাট রে [ঝুমুর]

‘‘দূরে যাবে সখী, শিখণ্ড, পীতবাস,’’


সখীগণ দূরে যাবে,–কুঞ্জে আসবে

‘‘দূরে যাবে সখী, শিখণ্ড, পীতবাস,
কুঞ্জে পড়িবে কবাট রে।।’’

কুঞ্জ পড়িবে কবাট রে

আমরা,–‘‘কুঞ্জ ঘিরে ফিরে ফিরে,’’
জয়,–রাধা রাধারমণ বলে—কুঞ্জ ঘিরে
‘‘কুঞ্জ ঘিরে ঘিরে ফিরে,
করব সবে নট রে।’’

করব সবে নট রে [ঝুমুর]

আমাদের,–‘‘রাই-অঙ্গ-ছটা লেগে,’’
গবাক্ষ দিয়ে চেয়ে দেখব—রাই-অঙ্গ

‘‘রাই-অঙ্গ-ছটা লেগে,
গৌর হবে শ্যাম-নট রে।।’’

গৌর হবে শ্যাম-নট রে [ঝুমুর]
আমার,–গরব করে বলব

আমাদের রাধে—আমরা,–গরব করে বলব

আমাদের রাধে আমাদের রাধে

আমাদের,–প্রেমময়ী গরবিণী—আমাদের রাধে

[মাতন]

শ্রী—‘‘রাধে শ্যাম নবঘন মনোচোরা।
রাই-অঙ্গ-ছটা লেগে শ্যাম হল গোরা।।’’

তোরা,–দেখে যা সজনি

নিকুঞ্জেতে এ কি রঙ্গ—তোরা,–দেখে যা সজনি
‘নিকুঞ্জেতে এ কি রঙ্গ’—
শ্যাম হল গৌরাঙ্গ—নিকুঞ্জেতে এ কি রঙ্গ

[মাতন]

‘‘রাই-অঙ্গ-ছটা লেগে শ্যাম হল গোরা।।
আজ,–নাগরালি ভুলে হল রাধাভাবে ভোরা।’’

আজ আর,–মনে নাই মনে নাই

গোপী-সনে রাস-বিলাস—আজ আর,–মনে নাই মনে নাই
আপনি যে,–নাগরেন্দ্র-শিরোমণি তা—আজ আর,–মনে নাই মনে নাই
আপনি যে,–রসিকেন্দ্র-চূড়ামণি তা—আজ আর,–মনে নাই মনে নাই
ভাবিনী বরণ ধরায়েছে তা—আজ আর,–মনে নাই মনে নাই

আজ,–‘‘নাগরালি ভুলে হল রাধাভাবে ভোরা।
ঐ দেখ,–হা কৃষ্ণ হা কৃষ্ণ বলে দুনয়নে ধারা।।’’

শ্যাম নাগর কাঁদছে

দেখ সখি চেয়ে দেখ—শ্যাম নাগর কাঁদছে
বিরহিণীর মত আজ—শ্যাম নাগর কাঁদছে

বালাই লয়ে মরে যাই

আমাদের,–প্রেমময়ী কি মাধুরী—বালাই লয়ে মরে যাই

আপন-বরণ ধরালে

কালিয়া-কুটিল-নাগরে—আপন-বরণ ধরালে
উহার ভিতরে বাহিরে—আপনি-বরণ ধরালে

শ্যামাঙ্গ গৌরাঙ্গ কৈলে
বিভাবিত কৈলে

আপনার ভাবে ধনী—বিভাবিত কৈলে

বিবর্ত্ত দেখ গো

দেখ দেখ দেখ প্রেমের—বিবর্ত্ত দেখ গো
নাগর নাগরী হল—বিবর্ত্ত দেখ গো

[মাতন]
শ্যাম-নাগর কাঁদছে

বিরহিণীর মত আজ—শ্যাম-নাগর কাঁদছে

বিরাম নাই বিরাম নাই

অবিরল প্রেমধারার—বিরাম নাই বিরাম নাই
যেন,–শ্রাবণ-মেঘেরই ধারা—বিরাম নাই বিরাম নাই

বুঝি,–ভাসাবে ধরা গো

ধারার ধারা দেখে মনে হয়—বুঝি,–ভাসাবে ধরা গো

প্রেমধারায় ভাসাবে ধরা

ঐ,—মোহন-মূরতি গোরা—প্রেমধারায় ভাসাবে ধরা

[মাতন]

‘‘হা কৃষ্ণ হা কৃষ্ণ বলে দুনয়নে ধারা।
প্রাণ-ভরে গাও সবে গোরা গোরা গোরা।।’’
গৌর আমার আগা গোড়া গোরা গোরা গোরা।।

আমাদের,–জীবনে মরণে গতি

রাই-কানু মিলিত মূরতি—আমাদের,–জীবনে মরণে গতি

[মাতন]

‘‘রাধা-মাধব-যুগল-উজ্বল-রস।
যুগল-উজ্বজারস, প্রেম-উজ্বল-রস

রাধা-মাধব—যুগল-উজ্জ্বল-রস
[মাতন]

যুগল-উজ্বজা-রস, প্রেম-উজ্বল-রস।।
আমরা সবে রাধার দাসী যুগল মোদের সরবস।
আমরা,–রাই কানু মিলাবার লাগি ঘর করেছি পরবাস।
যুগল-সেবা করব বলে সার করেছি বনবাস।
যুগলে সুখ দিবার লাগি রাতি করেছি দিবস।।
আমরা রাইএর সেবা-দাসী শ্যাম রাধার প্রেমে বশ।
রাধাপ্রেমে আস্বাদিতে শ্যামের হল অভিলাষ।।
তাই—রাধা-ভাব-কান্তি অঙ্গিকরি’ গৌররূপে নদে বাস !
রাই-কানু-মিলিত গোরা প্রেম করিলা পরকাশ।।’’

নইলে,–কে বা জানত

যদি,–গৌরাঙ্গ না হত—নইলে—কেবা জানত
শ্রীরাধা মহিমা—নইলে,—কে বা জানত
রসসিন্ধু-সীমা—নইলে,–কে বা জানত

কার বা গোচর হত

বৃন্দা-বিপিন-মাধুরী—কার বা গোচর হত
ভাবের ভকতি—কার বা গোচর হত
ভাবের ভকতি’—
বরজ-যুবতি—ভাবের ভকতি

কার বা গোচর হত
কে বা জানত

প্রবেস-চাতুরী-সার—কে বা জানত
‘প্রবেশ-চাতুরী-সার’—
গোপীভাবে ব্রজলীলায়—প্রবেশ-চাতুরী-সার

[মাতন]
কে বা জানত

রাই-কানু-মিলিত গোরা প্রেম করিলা পরকাশ।।
নিত্যানন্দ-দ্বারে ঘরে ঘরে রাধাপ্রেম হল প্রকাশ।
যদি—প্রেমধনে ধনী হবে হও রে নিত্যানন্দের দাস।।
নিতাই-দাসের দাস হয়ে যুগল-প্রেমেতে ভাস।
নিতাই-দাসের দাস হয়ে যুগল-গৌরাঙ্গ-প্রেমেতে ভাস।।’’
‘‘ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’

[মাতন]

গৌরহরি বোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।

[মাতন]

——-

প্রেমসে কহো শ্রীরাধে শ্রীকৃষ্ণ বলিয়ে—
প্রভু-নিতাই-শ্রীচৈতন্য-শ্রীঅদ্বৈত-শ্রীরাধারাণীকী জয় !
প্রেমদাতা-পরমদয়াল-পতিতপাবন-শ্রীনিতাইচাঁদকী জয় !
করুণাসিন্ধু-গৌরভক্তবৃন্দকী জয় !
শ্রীশ্রীনাম-সঙ্কীর্ত্তনকী জয় !
শ্রীখোল-করতালকী জয় !
শ্রীনবদ্বীপ-ধামকী জয় !
শ্রীনীলাচল-ধামকী জয় !
শ্রীবৃন্দাবন-ধামকী জয় !
চারি-ধামকী জয় !
চারি সম্প্রদায়কী জয় !
পরমকরুণ-শ্রীগুরুদেবকী জয়!
প্রেমদাতা-পরমদয়াল-পতিতপাবন—
শিশুপশুপালক-বালকজীবন-শ্রীমদ্‌রাধারমণকী জয় !

শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই গৌরহরি বোল।

——-



অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ