শ্রীশ্রী রথযাত্রা কীর্ত্তন

‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই গৌরহরিবোল।’’
‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’

‘‘আজুরে শ্রীজগন্নাথের শ্রীগুণ্ডিচা গমন।
হায়রে,–হেন দিনে কোথা প্রভু শ্রীরাধারমণ।।’’

আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা

প্রাণগৌরলীলা গাইতে গাইতে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
‘প্রাণগৌরলীলা গাইতে গাইতে’—
শ্রীজগন্নাথের রথের সম্মুখে—প্রাণগৌরলীলা গাইতে গাইতে

আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা

কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—কার সঙ্গে যাব মোরা
গৌরের,–ভাবোল্লাস-লীলা গাইতে গাইতে—কার সঙ্গে যাব মোরা

আজ,–একবার এস হে

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—একবার এস হে
নিতাই-গৌর-প্রেমাবেশে—একবার এস হে
তোমার,–নিজগণ সঙ্গে লয়ে—একবার এস হে
ভাবাবেশে কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—একবার এস হে

তেমনি করে এস হে

নিজগণ সঙ্গে লয়ে—তেমনি করে এস হে
‘নিজগণ সঙ্গে লয়ে’—
নবদ্বীপ গোবিন্দ গোকুল চৈতন্য—নিজগণ সঙ্গে লয়ে

তেমনি করে এস হে
তেমনি করে চল প্রভু

প্রাণগৌরলীলা গাইতে গাইতে—তেমনি করে চল প্রভু
তোমার,–প্রিয়গণ—সঙ্গে কীর্ত্তন-রঙ্গে –তেমনি করে চল প্রভু
ভাবাবেশ,–গৌরলীলা গাইতে গাইতে –তেমনি করে চল প্রভু
ভাবাবেশে—কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—তেমনি করে চল প্রভু
‘ভাবাবেশে,–কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে’—
বাহু দুলাইয়া পদে পদ ছানিয়া’—ভাবাবেশে,–কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে

তেমনি করে চল প্রভু

তোমার আনুগত্যে যাই মোরা’—তেমনি করে চল প্রভু
‘তোমার আনুগত্যে যাই মোরা’—
গৌরলীলা গাইতে গাইতে—তোমার আনুগত্যে যাই মোরা

তেমনি করে চল প্রভু
তেমনি করে গাও তুমি

তোমার আনুগত্যে গাইব মোরা—তেমনি করে গাও তুমি
তোমার পিছে পিছে গাইব মোরা-–তেমনি করে গাও তুমি

চল প্রাণের রাধারমণ

ভাবাবেশে,–গৌরমুখোদ্‌গীর্ণ-কথা কইতে কইতে—চল, প্রাণের রাধারমণ

তোমার,–পিছে পিছে যাই
মোরা ভাবাবেশে গাইবে তুমি

মহাভাবনিধি হৃদে ধরে—ভাবাবেশে গাইবে তুমি
তোমার আনুগত্যে গাইব মোরা—ভাবাবেশে গাইবে তুমি

‘‘কিশোরী আবেশ আমার শ্রীশচীনন্দন।
স্বরূপ রামানন্দে বলে মধুর বচন।।’’

বলে,–ও- ললিতে ও বিশাখে

স্বরূপ-রামরায়ের কর ধরি’ বলে—ও ললিত ও বিশাখে

চল সখি ত্বরা করি

আজ,–ব্রজে বিজয়ী শ্যাম-নাগর—চল সখি ত্বরা করি

ব্রজে বিজয়ী শ্যামনাগর

বুহদিন পরে আজ—ব্রজে বিজয়ী শ্যামনাগর।

(শ্রীঝাঁজপিটা মঠ হইতে যাত্রা)

চল যাই দেখি গিয়া

ও-ললিতে ও বিশাখে—চল যাই দেখি গিয়া
ব্রজ—বিজয়ী শ্যামনাগর—চল যাই দেখি গিয়া

(মাতন)

(রথের সম্মুখে কীর্ত্তন)

আবেশে বলে গোরারায়

স্বরূপ-রামারায়ের করে ধরি’—আবেশে বলে গোরারায়

বলে দেখ দেখ প্রাণসখি
হেলে দুলে আসছে

আমাদের প্রাণ রাধারমণ—হেলে দুলে আসছে
রথোপরি বংশীধারী—হেলে দুলে আসছে
নব-অনুরাগ-হিল্লোলে—হেলে দুলে আসছে
আজ,–নবরসের হিল্লোলে—হেলে দুলে আসছে
গোপীর,–মনোরথ পূরাবে—হেলে দুলে আসছে
রসময় শ্যামনাগর—হেলে দুলে আসছে

রথে চড়ে আসছে

রাধারমণ বংশীধারী রথে চড়ে আসছে
গোপীর মনোরথ পূরাইতে—রথে চড়ে আসছে

আসিছে,–রথে চড়ে হেলে দুলে

গোপীর মনোরথ পূরাবে বলে—আসিছে,–রথে চড়ে হেলে দুলে

(মাতন)
আস্‌ছে ব্রজের মনমথ

পূরাইতে গোপীর মনোরথ—আসছে ব্রজের মনমথ

(মাতন)
তখন,–আবেশে রামরায় বলে

ভাবনিধি-গোরার মরম জেনে—তখন,–আবেশে রামরায় বলে

আবেশে রামরায় করে গানে

ভাবনিধি-গোরার মরম জেনে—আবেশে রামরায় করে গান

আমাদের,–‘‘শ্রীরাধারমণ,রমণীমনমোহন,
শ্রী,–বৃন্দাবন—বনদেবা।’’

ঐ,— আসছে প্রাণের রাধারমণ

শ্রীবৃন্দাবিপিন-বিহারী—ঐ,–আসছে প্রাণের রাধারমণ
রসময় বংশীধারী—ঐ,–আসছে প্রাণের রাধারমণ

‘‘শ্রী-বৃন্দাবন-বনদেবা।
অভিনব রাস, রসিকবর নাগর,
ব্রজ,–নাগরীগণকৃত-সেবা।’’

নিতুই নিতুই নব নব

আমাদের, প্রাণ রাধারমণ—নিতুই নিতুই নব নব

নব নব বিভ্রমশালী

বৃন্দা,–বিপিন-বিহারী বনমালী—নব নব বিভ্রমশালী
বরজ,–যুবতী-কুলে দিতে কালী—নব নব বিভ্রমশালী

(মাতন)

‘‘অভিনব রাস, রসিকবর নাগর,
ব্রজ,–নাগরীগণকৃত-সেবা।।’’

ঐ,–হেলে দুলে আসছে

সেই প্রাণের রাধারমণ—ঐ,–হেলে দুলে আসছে

ঐ,–রথে চড়ে আসছে
আসছে ব্রজের মনমথ

ব্রজগোপীর,–পূরাইতে মনোরথ—আসছে ব্রজের মনমথ

(মাতন)
ব্রজ,–নাগরীগণকৃত—সেবা।
নিশিদিশি সেব্যমান

ব্রজনগরীগণকৃত—নিশিদিশি সেব্যমান

গোপাল-চূড়ামণি

গোপস্ত্রী-পরিবেষ্টিত—গোপাল-চূড়ামণি

ব্রজ,–‘‘নাগরীগণকৃত-সেবা।।
ব্রজপতি দম্পতি, হৃদয়-আনন্দন,’’

মা-যশোদার নীলমণি

আবেশে রামরায় বলে—মা-যশোদার নীলমণি

দণ্ডে দশবার খায় নবনী

বিশুদ্ধ-বাৎসল্য-প্রেমার বশে—দণ্ডেদ দশবার খায় নবনী

এসগো মা-যশোদে
এস লয়ে ক্ষীর-নবনী

তোমার নীলমণি এল ব্রজে—এস লয়ে ক্ষীর-নবনী
তোমার,–এল প্রাণের নালমণি—এস লয়ে ক্ষীর-নবনী

(মাতন)
দেখে যা মা ও-যশোদে

তোর নীলমণি ব্রজে এল—দেখে যা মা ও-যশোদে

ত্বরাকরি আয় মা-যশোদে

তোর,–নীলমণিকে ননী দিতে—ত্বরা করি আয় মা-যশোদে

(মাতন)

‘‘ব্রজপতি-দম্পতি, হৃদয়-আনন্দন,
নন্দন নবঘনশ্যাম।’’

মা-যশোদার নীলমণি

ঐযে,–হেলে দুলে আসছে—মা-যশোদার নীলমণি

(মাতন)
নন্দহৃদি আনন্দদ

শ্যাম-নবজলদ—নন্দহৃদি আনন্দদ

ত্বরায় এস নন্দরায়

আবেশে বলে রামরায়—ত্বরায় এস নন্দরায়
ব্রজে এল শ্যামরায়—ত্বরায় এস নন্দরায়

নয়নাভিরাম

বরজবাসীগণ—নয়নাভিরাম
নবঘনশ্যাম—নয়নাভিরাম

ব্রজাকাশে উদয় হল

ব্রজের,–ভাগ্যবেশে শ্যামজলদ—ব্রজাকাশে উদয় হল
ভাসাবে ডুবারে বলে—ব্রজাকাশে উদয় হল
‘ভাসাবে ডুবাবে বলে’–

(মাতন)

লীলামৃত বরিষণে—ভাসাবে ডুবাবে বলে

ব্রজাকাশে উদয় হল
শ্যামজলদ উদয় হল

নবজীবন দিবে বলে—শ্যামজলদ উদয় হল
‘নবজীবন দিবে বলে’—
বিরহে মৃতপ্রায়-ব্রজজনে—নবজীবন দিবে বলে
লীলামৃত সিঞ্চিত করে—নবজীবন দিবে বলে

শ্যামজলদ উদয় হল

ভাসাবে ডুবাবে বলে—শ্যামজলদ উদয় হল

(মাতন)

দেখ সখী ব্রজাকাশে—শ্যাম-জলদ উদয় হল
ব্রজ,–ভাসাবে ডুবাবে বলে—শ্যামজলদ উদয় হল
ব্রজবনে,–নবজীবন দিবে বলে—শ্যামজলদ উদয় হল

(মাতন)
নবজীবন দিবে ব্রজজনে

লীলামৃত বরিষণে—নবজীবন দিবে ব্রজজনে

(মাতন)

‘‘নন্দন নবঘনশ্যান।
নন্দীশ্বরপুর, পুরট-পটাম্বর,’’

ঐ,–আসছে ব্রজের কালশশী

নন্দীশ্বর-পুরবাসী—ঐ,–আসছে ব্রজের কালশশী
গোপীর,–বিরহ-তামস-বিনাশী—আসছে ব্রজের কালশশী

পীতাম্বরধর

শ্যামসুন্দর—পীতাম্বরধর

যাইগো শোভার বালাই যাই

শ্যামসুন্দর—পীতাম্বরধর
যাইগো শোভার বালাই যাই
ঐ হেলে দুলে আসছে—যাইগো শোভার বালাই যাই
শ্যাম-অঙ্গে পীতাম্বর—যাইগো শোভার বালাই যাই

যাইগো শোভার বালাই যাই
যেন,–থিরবিজুরি জড়িত নবঘনে

শ্যাম-অঙ্গে পীতাম্বর—যেন,–থিরবিজুরি—জড়িত নবঘনে

‘‘নন্দীশ্বর পুর, পুরট পটাম্বর,
রামানুজ গুণধাম।।’’

বলরামের ছোটভাই

ঐযে রথে চড়ে আসছে—বলরামের ছোটভাই
আসছে ব্রজের কানাই—বলরামের ছোটভাই

আদর করে সদাই ডাকে

কা-কা-কানাইয়া—আদর করে সদাই ডাকে
‘কা-কা-কানাইয়া’—
আরে আরে মেরা ভেইয়া—কা-কা-কানাইয়া

(মাতন)
আদর করে সদাই ডাকে

‘‘রামানুজ গুণধাম।।’’

হেলে দুলে আসছে

লীলামৃতে ডুবাবে বলে—হেলে দুলে আসছে
মনোরথ পুরাইবে বলে—হেলে দুলে আসছে

‘‘রামানুজ গুণধাম।।’’
শ্রীদাম-সুদাম, সুবল-সখা সুন্দর,’’

কোথা আছে শ্রীদামসখা

আসছে তোমার প্রাণসখা—কোথা আছে শ্রীদামসখা
শ্যাম ত্রিভঙ্গ-বাঁকা—কোথা আছে শ্রীদামসখা

হেলে দুলে আসছে

দেখ্‌ সখী চেয়ে দেখ্‌–হেলে দুলে আসছে
শ্রীদামের উচ্ছিষ্ট-ভোজী—হেলে দুলে আসছে

শ্রীদামের উচ্ছিষ্ট-ভোজী

বিশুদ্ধ-সখ্য—প্রেমার বশে—শ্রীদামের উচ্ছিষ্ট-ভোজী

খেতে খেতে বেঁধে রাখে

বনফল মিঠলাগ্‌লে—খেতে খেতে বেঁধে রাখে

বলে,–আর তো খাওয়া হল না

এযে বড় মিঠলাগ্‌ল—বলে,–আর তো খাওয়া হল না
আধ থাক্‌ ভাই-কানাইকে দিব—বলে,–আর তো খাওয়া হল না

ধড়ার,–আঞ্চলে বেঁধে রাখে

কত যতন করে ধড়ার—অঞ্চলে বেঁধে রাখে

ছুটে এসে তুলে দেয়

বামকরে গলা জড়ায়ে ধরে—চাঁদমুখে তুলে দেয়

বলে,–ধর ধর খাও কানাই

বড়-মিঠ-ফল—খারে আমার প্রাণকানাই
মিঠলেগেছে তাই খেতে পারি নাই—খারে আমার প্রাণকানাই

শ্রীদামের উচ্ছিষ্ট-ভোজী
ঐ রথে চড়ে আসছে
আবেশে রামরায় বলে
কোথায় আছ শ্রীদামসখা

ঐ,–এলো তোমার প্রাণসখা—কোথায় আছ শ্রীদামসখা

(মাতন)
আবেশে রামরায় বলে
ঐরথে চড়ে আসছে

‘‘শ্রীদাম-সুদাম, সুবল-সখা সুন্দর’’

সুবলসখা কোথা তুমি

ব্রজে এল শ্যামগুণমণি—সুবলসখা কোথা তুমি

সুবলের মরমসখা

শ্যাম ত্রিভঙ্গ-বাঁকা—সুবলের মরমসখা
আমাদের,–রাই-বিরহে প্রাণ-রাখা—সুবলের মরমসখা

(মাতন)
ব্রজরাখালের পরাণ

কালিয়-দমন শ্যাম—ব্রজরাখালের পরাণ

(মাতন)
ঐ রথে চড়ে আসছে

কালিয়-দমন শ্যাম—ঐ রথে চড়ে আসছে

‘‘শ্রীদাম-সুদাম, সুবল-সখা সুন্দর,
চন্দ্রক-চারু-অবতংস।’’

ঐ,–বিনোদ বিনোদ বিনোদ দোলে

আবেশে রামরায় বলে—ঐ,–বিনোদ বিনোদ বিনোদ দোলে
দেখ্‌ সখি চেয়ে দেখ্‌–ঐ,–বিনোদ বিনোদ বিনোদ দোলে
বিনোদিয়ার বিনোদ-চূড়া—ঐ,–বিনোদ বিনোদ বিনোদ দোলে
ঐ,–বিনোদ-বায়ে, বিনোদ-বরিহা—ঐ,–বিনোদ বিনোদ বিনোদ দোলে

মূরছি-পড়ে ভূমিতলে

ঐ,–চূড়ার দোলন দেখে মদন—মূরছি-পড়ে ভূমিতলে

ঐ,–মকর-কুণ্ডল দোলে,

যুগল-কর্ণে—ঐ,–মকর-কুণ্ডল দোলে

কুণ্ডল দোলে গো

মকরাকৃতি—কুণ্ডল দোলে গো

মুখ ব্যাদান করে দোলে

ঐ,–মকরাকৃতি-কুণ্ডল—মুখ ব্যাদান করে দোলে
মনোমীন গিলিবে বলে—মুখ ব্যাদান করে দোলে
‘মনোমীন গিলিবে ব’লে—
বরজ-ললনার মনোমনি গিলিবে বলে

(মাতন)
মুখ ব্যাদান করে দোলে

গোবিন্দের কানের মকরকুণ্ডল—মুখ ব্যাদান করে দোলে;

আস্ত আস্ত মানুষ গেলে

কাঁচা পাকা বাছে না—আস্ত আস্ত মানুষ গেলে

শিখি,–‘‘চন্দ্রক-চারু-অবতংস।
গোবর্দ্ধন-ধর, ধরণী-সুধাকর,’’

আসছে ব্রজের গিরিধারী

গিরিধারী নাম সার্থক কর্‌তে—আস্‌ছে ব্রজের গিরিধারী
ধরতে গোপার বিরহ-গিরি—আসছে ব্রজের গিরিধারী

(মাতন)
বামকরে গিরিধরা

ব্রজবাসী রক্ষা করা—বামকরে গিরিধরা

বরজ-সুধাকর

লীলামৃত-রসপুর—বরজ-সুধাকর

তাপ বিমোচন

নন্দকুল-চন্দ্রমা—তাপ-বিমোচন
ব্রজতরুণী—লোচন-তাপ-বিমোচন

(মাতন)
ব্রজকাশে উদয় হল

বরজ-সুধাকর—ব্রজাকাশে উদয় হল
সুধা পিয়াইবে বলে—ব্রজাকাশে উদয় হল
‘সুধা পিয়াইবে বলে’—
উপবাসী গোপীর আঁখিচকোরে—সুধা পিয়াইবে বলে

ব্রজাকাশে উদয় হল

দেখ্ সখি চেয়ে দেখ্ – ব্রজাকাশে উদয় হল

ব্রজের চাঁদ উদয় হল

দুঃখনিশা পোহাইল—ব্রজের চাঁদ উদয় হল
পিয়াস মিটাবে বলে—ব্রজের চাঁদ উদয় হল
‘পিয়াস মিটাবে বলে’—
ব্রজগোপী-চকোরিণীর—পিয়াস মিটাবে বলে
প্রেমসুধা বরিষণে—পিয়াস মিটাবে বলে
লীলামৃত বরিষণে—পিয়াস মিটাবে বলে

শ্যামজলদ উদয় হল

দেখ সখি ব্রজাকাশে—শ্যামজলদ উদয় হল
বিরহ-অগ্নি নিবাবে বলে—শ্যামজলদ উদয় হল
‘বিরহ-অগ্নি নিবাবে’ বলে—
লীলামৃত বরিষণে—বিরহ-অগ্নি নিবাবে বলে

শ্যামজলদ উদয় হল

পিয়াস মিলিবে বলে—শ্যামজলদ উদয় হল
‘পিয়াস মিটাবে বলে’—
ব্রজগোপী-চকোরিণীর—পিয়াস মিটাবে বলে
প্রেমসুধা বরিষণে—পিয়াস মিটাবে বলে

শ্যামজলদ উদয় হল
সিঞ্চে চৌদ্দভুবনে

লীলামৃত বরিষণে—সিঞ্চে চৌদ্দভুবনে

ব্রজের চাঁদ উদয় হল
বরজ-সুধাকর

ব্রজাকাশে শোভা পায়—বরজ-সুধাকর
লীলামৃত-রসপূর—বরজ-সুধাকর

পিয়াইবে ব্রজজনে

লীলামৃত বরিষণে—পিয়াইবে ব্রজজনে

(মাতন)

‘‘গোবর্দ্ধনধর, ধরণী-সুধাকর,
মুখরিত মোহনবংশ’’

ঐযে,–আসছে প্রাণের রাধারমণ

আবেশে রামরায় বলে—ঐযে,–আসছে প্রাণের রাধারমণ

মৃত-ব্রজ পাইল প্রাণে

ঐযে শ্যামের বাঁশী বাজে—মৃত-ব্রজ পাইল প্রাণে
মোহন-মুরলী-গানে—মৃত-ব্রজ পাইল প্রাণে

বেণুবাদনপর

নবকৈশোর নটবর—বেণুবাদনপুর
গোপবেশ বেণুকর—বেণূবাদনপর
‘গোপবেশ বেণুকর’—
নবকৈশোর নটবর—গোপবেশ বেণুকর

(মাতন)
বেণুবাদনপর
সেই তো আস্‌ছে

যে বেণু বাজাইত—সেই তো আসছে
রথোপরি হেলেদুলে—সেই তো আস্‌ছে

যে,–বেণু বাজাইত

ধীরসমীরে যমুনাতীরে—যে,–বেণু বাজাইত
বংশীবটতটে—যে,–বেণু বাজাইত
‘বংশীবটতটে’—
ধীর-সমীরে যমুনা-নিকটে—বংশীবটতটে

যে,–বেণু বাজাইত

ললিত-ত্রিভঙ্গঠামে—যে,–বেণু বাজাইত
‘ললিত—ত্রিভঙ্গঠামে’—
বংশীবটহেলনে—ললিত—ত্রিভঙ্গঠামে

যে,–বেণু বাজাইত
বেণু বাজায় গো

মধুর-পঞ্চমতানে—বেণু বাজায় গো
ললিত-ত্রিভঙ্গঠামে—বেণু বাজায় গো

চৌদ্দভুবন আকর্ষিত

প্রাণবঁধুর বেণুরবে—চৌদ্দভুবন আকর্ষিত
সেই মধুর বেণুরবে—চৌদ্দভুবন আকর্ষিত

প্রাণ পনে প্রাণ টেনে

সে মধুর বেণুরবে—প্রাণ পনে প্রাণ টানে

জগবাসীর প্রাণ টানে

বেণুর ধ্বনি পশি শ্রবণে—জগবাসীর প্রাণ টানে
ধ্বনি,–পশিয়া মরমস্থানে—জগবাসীর প্রাণ টানে
যমুনা-পুলিন-পানে—জগবাসীর প্রাণ টানে

লক্ষ্মীদেবীর প্রাণ টানে
যোগী যোগ ভুলে গো

মুনিজনার ধ্যান টলে—যোগী যোগ ভুলে গো
মোহন-মুরলী-গানে—যোগী যোগ ভুলে গো

হয়,–সচল অচল অচল সচল

মুখোদ্গীর্ণ বেণুরবে—হয়,–সচল অচল অচল সচল

পবনের গতি রোধ হয়
গিরিরাজ চলে গো

পবনের গতি স্থির হয়—গিরিরাজ চলে গো

হয়,–সচল অচল অচল সচল

তরল কঠিন কঠিন তরল—হয়–, সচল অচল অচল সচল

যমুনার জল কঠিন হয়

মোহন-বেণুগানে—যমুনার জল কঠিন হয়

পাষাণ গলিয়া যায়

যমুনার জল ঘন হয়—পাষাণ গলিয়া যায়

(মাতন)

মোহন-মুরলীরবে—পাষাণ গলিয়া যায়

বিপরীত-ধর্ম্ম ধরে

মোহন-মুরলী-স্বরে—বিপরীত-ধর্ম্ম ধরে

হয়,–তরুলতা পুলকিত

মুরলীর গানে—হয়,–তরুলতা পুলকিত

হয়,–পুষ্পিত ফলিত

নব নব ফুল ফলে—হয়,–পুষ্পিত ফলিত

হয়,–শুষ্কতরু মুঞ্জরিত

মুরলীর গানে—হয়,–শুষ্কতরু মুঞ্জরিত

যমুনা উজান চলে

মোহন-মুরলী-রোলে—যমুনা উজান চলে
উত্তাল-তরঙ্গ-ছলে—নেচে নেচে উজান চলে

(মাতন)
মকর-মীন নাচে গো

যমুনার জলে হেলে দুলে—মকর-মীন নাচে গো

(মাতন)

‘যমুনার জলে হেলে দুলে’—
মোহন-মুরলী-রোলে—যমুনার জলে হেলে দুলে

(মাতন)
মকর-মীন নাচে গো
ত্যজি নিজ কুলে গো

ধায়,–কাননে ব্রজকামিনী—ত্যজি নিজ কুলে গো
‘ধায়,–কাননে ব্রজকামিনী’—
প্রাণবল্লভ কৃষ্ণ বলে—ধায় কাননে ব্রজকামিনী

(মাতন)
ত্যজি নিজ-কূলে গো
আসছে প্রাণের রাধারমণ

ব্রজগোপীর মনোহরণ—আসছে প্রাণের রাধারমণ

‘‘মুখরিত মোহন বংশ।’’

সেই ত আসছে

‘‘কালীয়-দমন, গমন জিতি কুঞ্জর,’’

সার্থক করতে আসছে

কালীয়-দমন নাম—সার্থক করতে আসছে
কাম-কালীয় দমন করে—সার্থক করতে আসছে

নিশিদিশি জ্বলছে

ফণীর দংশনে—নিশিদিশি জ্বলছে
বিরহ-ফণীর দংশনে—নিশিদিশি জ্বলছে

দমন করতে আসছে

আজ ব্রজে কালীয়-দমন—দমন করতে আসছে
ব্রজ-গোপীর বিরহ-ফণী—দমন করতে আসছে

‘‘কালিয়-দমন, গমনজিতি কুঞ্জর,
কুঞ্জরচিত রতিরঙ্গ।’’

আবার খেলা খেল্‌বে

নিকুঞ্জ-বিহারী এল—আবার খেলা খেল্‌বে

আবার সুখে বিহরিবে

আমাদের কিশোরীসনে—আবার সুখে বিহরিবে

(মাতন)
আসছে প্রাণের রাধারমণ
সাক্ষাৎ মন্মথ মনমথ

ব্রজগোপীর প্রাণনাথ—সাক্ষাৎ সন্মথ মনমথ

মন্‌মথের মন মথে

চড়ি গোপীর মনোরথে—মনমথের মন মথে

আবেশে রামরায় বলে
ঐ,–আসছে ব্রজের মন্‌মথ

গোপীর মনোরথ পূরাইত—ঐ,–আস্‌ছে ব্রজের মন্‌মথ

‘‘কুঞ্জরচিত রতিরঙ্গ।’’

অপ্রাকৃত নবীনমদন

আমাদের প্রাণ রাধারমণ—অপ্রাকৃত নবীনমদন

নাম ধরে মদনমোহন

কন্দর্প-দর্পহারী—নাম ধরে মদনমোহন
রাস-রসবিহারী—নাম ধরে মদনমোহন

কেলিরস-বিনোদিয়া

নাগর রসিয়া—কেলিরস-বিনোদিয়া

কেলিরস-তৎপর

রাস-রসিকবর—কেলিরস-তৎপর

কেলিরস-ভূপতি

শৃঙ্গার-রসময়-মূরতি—কেলিরস-ভূপতি

(মাতন)

হেলে দুলে আসছে—কেলিরস-ভূপতি

আবেশে রামরায় বলে
ঐ,–রথে চড়ে আসছে
বালাই লয়ে মরে যাই

কিবা রথের মাধুরী—বালাই লয়ে মরে যাই

শুনি’ রামরায়ের বাণী

শ্রীগৌরাঙ্গগুণমণি—শুনি’ রামারায়ের বাণী

(মাতন)
রামরায়ের কথা শুনে
ভাবাবেশের গৌর নাচে
কিশোরী-আবেশে ভোরা

ভাবনিধি-গৌরাঙ্গ আমার—কিশোরী-আবেশে ভোরা

গৌর নাচে রাধাভাবে

শ্রীজগন্নাথের রথের আগে—গৌর নাচে রাধাভাবে

(মাতন)

‘‘নীলাচলে জগন্নাথরায়।’’

আনন্দের আর সীমা নাই

রথযাত্রায় নীলাচলে—আনন্দের আর সীমা নাই

আমরি—‘‘নীলাচলে জগন্নাথরায়।
গুণ্ডিচা মন্দিরে চলি যায়।।
অপরূপ রথের সাজনী।
তাহে চড়ি যায় যদুমণি।।
দেখিয়া আমার গৌরহরি।’’

এই—রথের আগে দাঁড়াইয়া

কিশোরীভাবে ভোরা গোরা—এই,–রথের আগে দাঁড়াইয়া

‘‘দেখিয়া আমার গৌরহরি।
নিজগণ লইয়া এক করি’।।’’

আমার,–গৌরাঙ্গকিশোর

রথে দেখি’ প্রাণ-বংশীধারী—আমার,–গৌরাঙ্গকিশোরী
লয়ে পরিকর সব সহচরী—আমার,–গৌরাঙ্গকিশোরী

‘‘মাল্যচন্দন সবে দিয়া।’’

উল্লাসে সাজল সবে
সাজ্‌লো সবে নবোল্লাসে

দেখি’ গৌরের কিশোরী-আবেশ—সাজ্‌লো সবে নবোল্লাসে
মনোমত ভাবোল্লাসে–সাজ্‌লো সবে ভাবোল্লাসে

সাজ্‌লো—গৌরগণ সব গোপনারী

মাল্যচন্দন পরি’—সাজ্‌লো—গৌরগণ সব গোপনারী

‘‘মাল্যচন্দন সবে দিয়া।
জগন্নাথ-নিকটে যাইয়া।’’

পরিকর-ঘেরা গৌরহরি

যেন,–সহচরী-মাঝে রাইকিশোরী—পরিকর-ঘেরা গৌরহরি
যেন,–সহচরী-মাঝে ভানুদুলারী—পরিকর-ঘেরা গৌরহরি

করে লীলা গৌরহরি

‘‘জগন্নাথ-নিকটে যাইয়া।।
রথ-বেড়ি সাত-সম্প্রদায়।’’
কীর্ত্তন করয়ে গোরারায়।।’’

হল পৃথক্‌ পৃথক্‌ মণ্ডলী

শ্রীজগন্নাথের রথ-ঘেরি’—হল পৃথ্‌ক পৃথ্‌ক মণ্ডলী
করল,–বরজ-আলিমণ্ডলী ঘেরি’—হল পৃথক পৃথক মণ্ডলী
সবারি মাঝে ভানুদুলারী—হল পৃথক্‌ পৃথক্‌ মণ্ডলী

‘‘রথ-বেড়ি—সাত-সম্প্রদায়।’’

সবাই আনন্দে নাচে গায়

রথ-বেড়ি সাত-সম্প্রদায়—সবাই আনন্দে নাচে গায়

(মাতন)
নেচে নেচে নেচে যায়

ভাবাবেশে গোরারায়—নেচে নেচে নেচে যায়
গৌরাঙ্গ-কিশোরী আমার—নেচে নেচে নেচে যায়
প্রেমদিঠে জগন্নাথ-বদন চায়—নেচে নেচে নেচে যায়

‘‘রথ—বেড়ি সাত-সম্প্রদায়।’’

যেন,–সাত-রথিয়া সাত-সম্প্রদায়

ললিতা-যুথ আছে সেবায়—যেন,–সাত রথিয়া সাত-সম্প্রদায়

(মাতন)

‘‘কীর্ত্তন করয়ে গোরারায়।।’’

ভাব-অনুকূল গান গায়

যত পরিকর মেলি’—ভাব-অনুকূল গান গায়
ভাবনিধি-গোরারায়—ভাব-অনুকূল গান গায়

(মাতন)

‘ভাবনিধি-গোরারায়’—
যত পরিকর মেলি’—ভাবনিধি-গোরারায়

ভাব-অনুকূল গান গায়

ভাবনিধির বদন চেয়ে—ভাব-অনুকূল গান গায়

আবেশে বলে গোরারায়

ঐ জগন্নাথের বদন চেয়ে—আবেশে বলে গোরারায়
স্বরূপ,–রামরায়ের করে ধরি’—আবেশে বলে গোরারায়

শুন শুন প্রাণসখী

‘‘আমি সে ত পরাণনাথ পাইনু।
যার লাগি মদন-দহনে দহি গেনু।।’’

আমার,–এই ত সেই পারণবঁধু

যার লাগি সদা ঝুরে মরি—এই …. সেই পরাণবঁধু

এত বলি,’—গৌর নাচে হেলে দুলে

জগন্নাথের রথের আগে—গৌর নাচে হেলে দুলে
গৌর-কিশোরী নাচে হেলে দুলে(মাতন)
পরাণনাথ পাইনু বলে—গৌর-কিশোরী নাছে হেলে দুলে

[মাতন]

‘‘আজানুলম্বিত বাহু তুলি’।
ঘন ঘন হরি হরি বলি’।।’’

নাচে গৌরাঙ্গ-কিশোরী

জগন্নাথের রথের আগে—নাচে গৌরাঙ্গ-কিশোরী
শ্রীজগন্নাথের বদন চেয়ে—নাচে গৌরাঙ্গ-কিশোরী

‘‘ঘন ঘন হরি হরি বলি’।।
গগন ভেদিল সেই ধ্বনি।
অন্য আর কিছুই না শুনি।।’’

গগন ভেদি’উঠিল রোল

কেবল,–হরি হরি হরিবোল—গগন ভেদি’ উঠিল রোল(মাতন)

আনন্দের পাথার বয়ে যায়

রথযাত্রায় এই নীলাচলে—আনন্দের পাথার বয়ে যায়

কীর্ত্তনে বিহরে গোরারায়
কীর্ত্তন করয়ে গোরারায়

‘‘আজানুলম্বিত বাহু তুলি’।
ঘন ঘন হরি হরি বলি’।।’’

জগন্নাথের,–বদন চেয়ে বলে হরি

রাধাভাবে ভোরা গৌরহরি—বদন চেয়ে বলে হরি
অঙ্গপুলকে ভোর নয়নে বারি—বদন চেয়ে বলে হরি

‘‘আজানুলম্বিত বাহু তুলি’।
ঘন ঘন হরি হরি বলি’।।’’

যেন,–আনন্দ-উল্লাস-ধ্বনি

মুখে হরিবোল ধ্বনি শুনি—আনন্দ-উল্লাস-ধ্বনি
গৌর-হরির মুখে হরিবোল-ধ্বনি—আনন্দ-উল্লাস-ধ্বনি
পরাণনাথ পাইনু বলে—আনন্দ-উল্লাস ধ্বনি

ঘন উঠে হরিহরি বুলি
প্রকট হইল ভাবাবলী

আমার,–শ্রীগৌরাঙ্গের প্রতি অঙ্গে—প্রকট হইল ভাবাবলী
মুখে হরিবোল বুলি—প্রকট হইল ভাবাবলী

(মাতন)
হরিবোল হরিবোল

উল্লাসে গৌরহরি বলে—হরিবোল হরিবোল
যা শুনে সবে হইল পাগল—হরিবোল হরিবোল

গগন ভেদিল সেই ধ্বনি
হল,–চৌদ্দভুবন আকর্ষিত

গৌর,–মুখোদ্গীর্ণ-নামের রোলে—হল,–চৌদ্দভুবন আকর্ষিত

উঠিল রোল ব্রহ্মাণ্ড ভেদি’
প্রাণপণে প্রাণ টানিল

নামের ধ্বনি পশিয়া কাণে—প্রাণপণে প্রাণ টানিল
পশিয়া মরম-স্থানে—প্রাণপণে প্রাণ টানিল

গৌর-মুখোদ্গার্ণ-নামের ধ্বনি

পশিয়া মরম-স্থানে—গৌর-মুখোদ্গার্ণ নামের ধ্বনি

প্রাণপণে প্রাণ টানিল
জগবাসীর প্রাণ টানিল

শ্রীনীলাচল-পানে—জগবাসীর প্রাণ টানিল

‘‘ঘন ঘন হরি হরি ধ্বনি।
অন্য আর কিছুই না শুনি।।’’

গগন ভেদি’ উঠিল রোল

হরি হরি হরিবোল—গগন ভেদি’ উঠিল রোল

(মাতন)
সকলি হইল নামময়

গৌণ-মুখোদ্গার্ণ-নাম শুনে—সকলি হইল নামময়
অন্যকথা কেহ না কয়—সকলি হইল নামময়

‘‘নিতাই অদ্বৈত হরিদাস।
নাচে বক্রেশ্বর শ্রীনিবাস।’’

সবারি মুখে মৃদুহাস
সে হাসি নয় প্রেমোচ্ছাস

পরাণ-গৌরাঙ্গগণের—সে হাসি নয় প্রেমোচ্ছাস

সবারি মুখে মৃদুহাস

দেখি’ গোরার ভাবোল্লাস—সবারি মুখে মৃদুহাস

(মাতন)
আছে নিতাই কাছে কাছে

ভাবাবেশে গৌর নাচে—আছে নিতাই কাছে কাছে

দুদিকে দুজন আছে

হরিদাস আছে পাছে—দু’দিকে দু’জন আছে
ভাবাবেশে গৌর নাচে—দু’দিকে দু’জন আছে

দু’দিকে দু’জন আছে

প্রভু নিতাই আর সীতানাথ—দু’দিকে দু’জন আছে
আজানুলম্বিত-বাহু-পসারি’—দু’দিকে দু’জন আছে

বাহু-পসারি’ আগুলিছে

প্রাণ-গৌর ঢলে পড়ে আছে—তাই,–বাহু-পসারি’ আগুলিছে (মাতন)

হরিদাস আছে পাছে
নিতাই নাচে কাছে কাছে

হেমদণ্ড-বাহু পসারিয়ে—নিতাই নাচে কাছে কাছে
প্রাণগৌর ঢলে পড়ে আছে—তাই,–নিতাই নাচে কাছে কাছে (মাতন)

আজ,–সীতানাথ হরি বলে

গৌরাঙ্গবদন হেরে’—আজ,–সীতানাথ হরি হলে

‘‘নিতাই অদ্বৈত হরিদাস,
নাচে বক্রেশ্বর শ্রীনিবাস।।’’

অনিমিখে বদন চেয়ে

রাধাভাবে ভোরা প্রাণগৌরাঙ্গের—অনিমিখে বদন চেয়ে

‘‘নাচে বক্রেশ্বর শ্রীনিবাস।।
মুকুন্দ স্বরূপ রামরায়।’’

গৌর, বদন-পানে চেয়ে আছে

অনিমিখে প্রাণ—গৌরাঙ্গের—বদন পানে চেয়ে আছে
ভাব জেনে গান কর্‌বে বলে—বদন পানে চেয়ে আছে
‘ভাব জেনে গান করবে বলে’—
ভাবনিধি-প্রাণগৌরাঙ্গের—ভাব জেনে গান করবে বলে
মুখেতে ভাবের বিকাশ হলে—ভাব জেনে গান করবে বলে

বদন-পানে চেয়ে আছে

‘‘মুকুন্দ স্বরূপ রামরায়।
মন বুঝি উচ্চৈঃস্বরে গায়।।’’

ভাব-অনুকূল গান করে

ভাবনিধির ভাব পুষ্টির লাগি’—ভাব-অনুকূল গান করে
মন বুঝি উচ্চৈঃস্বরে—ভাব-অনুকূল গান করে
ভাবনিধির মরম জেনে—ভাব-অনুকূল গান করে
ভাবনিধির মরম জেনে’—
‘চেয়ে রসের বদন-পানে—ভাবনিধির মরম জেনে

ভাব-অনুকূল গান করে
সবে নিযুক্ত নিজ-সেবায়

মুকুন্দ স্বরূপ রামরায়—সবে নিযুক্ত নিজ-সেবায়
ভাব-অনুকূল-রস গায়—সবে নিযুক্ত নিজ-সেবায়

ভাব বুঝি করে রসে গান

হেরি,’—ভাবনিধির চাঁদ-বয়ান ভাব বুঝি করে রস গান

‘‘মুকুন্দ স্বরূপ রামরায়।
মন বুঝি উচ্চৈঃস্বরে গায়।।’’

যাতে,–সুখ পায় গোরা—গুণমণি

নব-কোকিলা-জিনি’ কণ্ঠ শুনি’—সুখ পায় গোরা-গুণমণি

সবাই,–কোকিলা-কলভাষিণী

আমার,–গৌরগণ সব ব্রজরমণী—সবাই,–কোকিলা-কলভাষিণী (মাতন)

‘‘মন বুঝি উচ্চৈঃস্বরে গায়।।
গায়,–গোবিন্দ মাধব বাসুঘোষ।
যার গানে অধিক সন্তোষ।
বসু-রামানন্দ নরহরি।
গদাধর-পণ্ডিতাদি করি।।’’

তাঁরা—আস্বাদিছে নবমাধুরী

দেখে,’—কিশোর হয়েছে কিশোরী—তাঁরা,–আস্বাদিছে নবমাধুরী
‘কিশোর হয়েছে কিশোরী’
আজ,–জগন্নাথের বদন হেরি’—কিশোর হয়েছে কিশোরী

তাই,–আস্বাদিছে নব মাধুরী

‘‘বসু-রামানন্দ নরহরি।‘’

আস্বাদিছে নরহরি

নাগর নাগরী হয়ে যে মাধুরী—আস্বাদিছে নরহরি
কিশোরীর প্রেম-মাধুরী—আস্বাদিছে নরহরি

বলছে,–মধুমতী-নরহরি

গদাধর-কিশোরীর চিবুক ধরি’—বলছে, মধুমতী—নরহরি

তোর,–মাধুরীর বালাই লয়ে মরি

ওগো প্রাণ রাইকিশোরী—তোর,–মাধুরীর বালাই লয়ে মরি

বলে,–কি মাধুরী মরি মরি

‘বলিহারি যাই রাইকিশোরী’—
নাগরে কৈলি নাগরী—বলিহারি যাই রাইকিশোরী

বলে,–কি মাধুরী মরি মরি

বঁধুকে বরণ ধরাইলি—বলে,–কি মাধুরী মরি মরি

‘‘বসু-রামানন্দ নরহরি।
গদাধর-পণ্ডিত করি।।’’

আস্বাদিচ্ছেন গদাধর

কাছে থেকে বদন চেয়ে—আস্বাদিছেন গদাধর

বলে,–কি শোভা হয়েছে মরি মরি

গৌর-পানে চেয়ে বলে—কি শোভা হয়েছে মরি মরি
পরাণ,–বঁধু আমার বরণ ধরি’—কি শোভা হয়েছে মরি মরি

‘‘গদাধর-পণ্ডিতাদি করি।।
দ্বিজ-হরিদাস বিষ্ণুদাস।
যা সবার গানেতে উল্লাস।।
এই মত কীর্ত্তন-নর্ত্তনে।
কতদূর করিলা গমনে।।
এ সবার পদরেণু আশ।
নিরখয়ে বৈষ্ণবের দাস।।’’

গৌর নাচে হেলে দুলে

শ্রীজগন্নাথের রথের আগে—গৌর নাচে হেলে দুলে
পরাণ-বঁধু পাইনু বলে—গৌর নাচে হেলে দুলে

আজ,–জগন্নাথ ধেয়ে চলে

গৌরমাধুরী আস্বাদিবে বলে—জগন্নাথ ধেয়ে চলে

কখনও ত’ দেখে নাই

আপন-স্বরূপে কি মাধুরী—কখনও ত’ দেখে নাই

আস্বাদে নাই নিজ-মাধুরী
তা হতে অধিক মাধুরী

রাই-সঙ্গে জড়াজড়ি—তা হতে অধিক মাধুরী

জগন্নাথ হল মুগ্ধ

রাই-জড়িত-স্বরূপ দেখে—জগন্নাথ হল মুগ্ধ

আজ,–পাগল হয়ে ছুটে রে

সেই,–নব-মাধুরী ভোগ করিতে—পাগল হয়ে ছুটে রে

গৌর নাচে প্রেম-ভরে

‘‘আপনি নাচিতে যবে প্রভুর মন হৈল।’’

আগে নাচাইয়া নিজজনে
আজ,–সবাকারে নাচাইয়া

ভাবনিধি—প্রাণগৌর আমার—আজ,–সবাকারে নাচাইয়া
সাত সম্প্রদায় করি’—আজ,–সবাকারে নাচাইয়া

নিজগণে নাচাইয়া

‘‘আপনি নাচিতে যবে প্রভুর নাম হৈল।’’

এযে বড় বিরোধ কথা

আপনি না নাচিলে কি নাচানো যায়—এযে বড় বিরোধ কথা

তবে,–কেমন করে নাচাইল

আপনি নাচিল না—তবে,–কেমন করে নাচাইল

প্রতি-প্রাণে নেচেছে গোরা

ভিতরে ভিতরে নেচেছে গোরা—প্রতি-প্রাণে নেচেছে গোরা

তাঁরা সবাই নেচেছে

নাটুয়া-গৌর হৃদে ধরে—তাঁরা সবাই নেচেছে

আবার গৌরের,–বাহিরে নাচিতে সাধ হয়েছে

ভিতরে নাচি নাচাইয়া—বাহিরে নাচিতে সাধ হয়েছে
জগৎ নাচাবে বলে—আবার গৌরের,–বাহির নাচিতে সাধ হয়েছে

‘‘আপনি নাচিতে যবে প্রভুর মন হৈল।


গৌর আমার,–সাতসম্প্রদায় সব একত্র করিল।।’’

মন-সাধে নাচ্‌বে বলে

সব-পরিকর-মিলি’—মন-সাধে নাচ্‌বে বলে

নাচ্‌বে বলে সবার সাথে

একত্র কৈল সম্প্রদায় সাত—নাচ্‌বে বলে সবার সাথে

‘‘উদ্দীপ্ত নৃত্যে প্রভু ছাড়িয়া হুঙ্কার।
চক্রভ্রমি ভ্রমে যেন আলাত আকার।।’’

আবেশে নাচে গোরারায়

এক করি’ সাত সম্প্রদায়—আবেশে নাচে গোরারায়
জগন্নাথের বদন চেয়ে—আবেশে নাচে গোরারায়
হুঙ্কার গর্জ্জন করি’—আবেশে নাচে গোরারায়
আলাত-চক্রের প্রায়—আবেশে নাচে গোরারায়

উথলিছে আনন্দ-পাথার

বহুদিন পরে বঁধুর বদন হেরে—উথলিছে আনন্দ-পাথার
‘‘চক্রভ্রমি ভ্রমে যেন আলাত আকার।।
নৃত্যে যাঁহা যাঁহা পড়ে প্রভুর পদতল।
সসাগরা শৈলমহী করে টলমল।।’’

ধরণী প্রেমে টলমল করে

শ্রীগৌরাঙ্গ-পদভরে—ধরণী প্রেমে টলমল করে

ধরণী,–টলমল হয় প্রেমার ভরে

প্রাণগৌরাঙ্গ হৃদে ধরে—ধরণী—টলমল হয় প্রেমার ভরে

(মাতন)

মহাভাবনিধি হৃদে ধরে—ধরণী,–টলমল হয় প্রেমার ভরে
বিবর্ত্ত-বিলাস-রঙ্গ হৃদে ধরে—ধরণী,–টলমল হয় প্রেমার ভরে

আজ,–আনন্দ আর ধরে না রে

ভাগ্যবতী-নীলাচল-ভূমির—আজ,–আনন্দ আর ধরে না রে
জড়াজড়ি-মূরতি হৃদে ধরে—আজ,–আনন্দ আর ধরে না রে

‘‘ধরণী প্রেমার ভরে টলমল হয়।
যাঁহা পদ পড়ে ধরু পঙ্কজ-হিয়ায়।।’’

আপনি ফুটে উঠে কমল

যাঁহা পড়ে গোরা—পদতল—আপনি ফুটে উঠে কমল

ধরণী গৌর সেবা করিছে

আপনাকে কঠিন জানি—ধরণী গৌর-সেবা করিছে
কমল হয়ে কোমল হিয়ায় ধরিছে—ধরণী গৌর-সেবা করিছে

(মাতন)
ধরণী,–হৃদয়-কমল বিছায়ে দেয়

গৌরপদ-কমল ধর্‌বে বলে—ধরণী,–হৃদয়-কমল বিছায়ে দেয়

আজি,–জগত হইল প্রেমময়

প্রেমাবতার-নিতাই-গৌরের কৃপায়—আজি,–জগত হইল প্রেমময়

জগভরি’ সব কৈল আলী

ওযে,–নাগরীর নাগরালী—জগভরি’ সব কৈল আলী
শৈলমহী আদি করি’—জগভরি’ সব কৈল আলী

গোপীভাবে বিভাবিত হল

স্বরূপজাগান-স্বরূপের বলে—গোপীভাবে বিভাবিত হল

মহাপ্রেমে মত্ত কৈল

হেমদণ্ড—বাহু তুলে’—মহাপ্রেমে মত্ত কৈল
নাগরের পদতালে—মহাপ্রেমে মত্ত কৈল

কতরূপে করিছে দান

কীর্ত্তন-নটন রঙ্গে—কতরূপে করিছে দান

অনন্ত-ব্রহ্মাণ্ড প্রেমে ভাসে

কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—অনন্ত-ব্রহ্মাণ্ড প্রেমেভাসে

‘‘নৃত্যে যাঁহা যাঁহা পড়ে প্রভুর পদতল।
সসাগরা শৈলমহী করে টলমল।।’’

শৈলমহী টলমল করে

মহাভাবনিধির পদভাবে—শৈলমহী টলমল করে

‘‘স্তম্ভ স্বেদ পুলকাশ্রু কম্প বৈবর্ণ্য।
নানাভাবে বিকার তাহে গর্ব্ব হর্ষ দৈন্য।।’’

গৌর-অঙ্গে হল প্রকট

মহাভাবাবলি যত—গৌর-অঙ্গে হল প্রকট

স্বর্ণবর্ণ হল বিবর্ণ

শ্রীজগন্নাথের বদন চেয়ে—স্বর্ণবর্ণ হল বিবর্ণ

গৌর-অঙ্গে হল বিকাশ

কিশোরী-ভাবেতে ভোরা—গৌর-অঙ্গে হল বিকাশ
নানাভাবাবলী—গৌর-অঙ্গে হল বিকাশ
শ্রীজগন্নাথের বদন চেয়ে—গৌর-অঙ্গে হল বিকাশ
সঞ্চারিভাব সব—গৌর-অঙ্গে হল বিকাশ

গৌর নাচে প্রেমভরে

মহাভাবাবলী-ভূষণ পরে—গৌর নাচে প্রেমভরে

মনসাধে সেবা করে

সাত্ত্বিক-বিকার যত—মনসাথে সেবা করে
বিবর্ত্তে বিলাসময়-অঙ্গে—মনসাধে সেবা করে

কখনও ত’ পায় নাই

স্বভাবেতে পেয়েছে—কখনও ত’ পায় নাই
বিপরীত-স্বরূপেতে—কখনও ত’ পায় নাই

তাই,–মনসাথে সেবা করে
গৌর নাচে প্রেমভরে

দেখিয়া প্রভুর নৃত্য জগন্নাথে হাসে।’

জগন্নাথের আনন্দিত মন

দেখি’ গোরার কীর্ত্তন-নটন—জগন্নাথের আনন্দিত মন

কখনও ত’ দেখে নাই

এই নব-নটনমাধুরী—কখনও ত’ দেখে নাই
জড়াজড়ি-নটন-মাধুরী—কখনও ত’ দেখে নাই

মনে মনে গণে রে

এ কি অপরূপ-প্রকাশ—মনে মনে গণেরে

একে ত যুগল
তাতে আবার বিপরীত
শুধু বিবর্ত্ত নয়

বিবর্ত্তে বিলাস-রঙ্গময়—শুধু বিবর্ত্ত নয়

‘‘দেখিয়া প্রভুর নৃত্য জগন্নাথ হাসে।।
সে আনন্দে ভাসি’ যায যদুনাথ দাসে।।’’

গৌর নাচে প্রেমভরে

‘‘অপরূপ রথ-আগে।
নাচে গোরারায়, সবে মিলি’ গায়
কত শত মহাভাগে।।’’

যেমন নাচে তেমনি গায়

ভাবাবেশে গোরারায়—যেমন নাচে তেমনি গায়
পরিকরগণ ভাব-আনুকূল্য—যেমন নাচে তেমনি গায়
ভাব হৃদয়ে করে উদয়-—যেমন নাচে তেমনি গায়
ভাবনিধির নটন হেরে–যেমন নাচে তেমনি গায়

নাচে গোরারায়, সবে মিলি গায়,
কতশত মহাভাগে।।’’

গান করে অনুরাগে

যত-ভাগ্যবান, গৌরাঙ্গগণ-গান করে অনুরাগে
প্রেমদিঠে চেয়ে গোরার দিকে—গান করি অনুরাগে।

‘‘নাচে গোরারায়, সবে মিলি গায়,
কতশত মহাভাগে।।
ভাবেতে অবশ, কি রাতি দিবস।’’

ভাবে মত্ত গোরশশী

নাহি জানে দিবা নিশি—ভাব মত্ত গোরাশশী

‘‘আবেশে কিছু না জানে।।’’

নাহি জানে দিবা কি রাতি

ভাবনিধি গৌরাঙ্গ আমার—নাহি জানে দিবা কি রাতি
কিবা রাতি কিবা দিন—নাহি জানে দিবা কি রাতি
ভাবে ভোরা প্রাণগোরা—নহি জানে দিবা কি রাতি
মহা,–ভাব-স্বরূপিনীর ভাবে মাতি’—নাহি জানে দিবা কি রাতি

(মাতন)

‘‘ভাবেতে অবশ কি রাতি দিবস,
আবেশে কিছু না জানে।
জগন্নাথ-মুখ, হেরি’ মহাসুখ,
নাচে গর গর মনে।।’’

আবেশে স্বরূপ-রামরায় গায়

ভাব জেনে অনুকূল-পদে—আবেশে স্বরূপ-রামরায় গায়

এই ভাব গোরার মনে

আমার পরাণ-বঁধু পেলাম—এই ভাব গোরার মনে

ভাব জেনে স্বরূপ করে গানে

চেয়ে,–ভাবনিধির বদন-পানে—ভাব জেনে স্বরূপ করে গানে

সেই ত পরাণনাথ পাইলাম

যার লাগি জ্বলিলাম—সেই ত পরাণনাথ পাইলাম

(মাতন)

‘‘জগন্নাথ-মুখ, হেরি’ মহাসুখ,
নাচে, গরগর-মনে।।’’

বলে,–পাইনু বংশীবদনে

রাধাভাবে গোরার এইভাব মনে—বলে,–পাইনু বংশীবদন
রথে জগন্নাথ হেরি’—বলে,–পাইনু বংশীবদনে

‘‘খোল করতাল, কীর্ত্তন রসাল,
ঘন ঘন হরিবোল।’’

ঘন ঘন হরিবোল

সবাই মিলে উচ্চৈঃ বসে—ঘন ঘন হরিবোল
রথের আগে উচ্চরোল—ঘন ঘন হরিবোল
গগনভেদি’ উঠিল রোল—ঘন ঘন হরিবোল

(মাতন)
গগনভেদি’ উঠিল রোল

গৌরমুখোদ্‌গীর্ণ-হরিবোল—গগনভেদি উঠিল রোল

(মাতন)

‘‘জয় জয় ধ্বনি, সুর নর মুনি,
গগনে উঠিল রোল।।’’

যাই গো মোরা বলিহারি

প্রেমাবতার গৌরহরি—যাই গো মোরা বলিহারি
স্বরগে বলে সুর নর নারীযাই গো মোরা বলিহারি

আ’মরি মরি কি মাধুরী

একে রাইকানু জড়াজড়ি—আ’ মরি মরি কি মাধুরী

আজ,–নীলাচলে এ কি হেরি
পথের মাঝে সেই রঙ্গ

যা নিভৃত-নিকুঞ্জে ছিল—পথের মাঝে সেই রঙ্গ

নীলাচল-পথে হল প্রকট

যা নিকুঞ্জে ছিল গুপ্ত—নীলাচল-পথে হল প্রকট

না হবে বা কেন রে

এ যে অতিগূঢ় নীলাচল—না হবে না কেন রে

গুপত-কুঞ্জের গুপত-কুঞ্জ

মধুর-শ্রীবৃন্দাবনের—গুপত-কুঞ্জের গুপত—কুঞ্জ

নবদ্বীপরূপে প্রকট

নিভৃত-কুঞ্জের নিভৃত-কুঞ্জ—নবদ্বীপরূপে প্রকট

তার আবার নিভৃত-উদ্যান

ধরে নীলাচল-নাম—তার আবার নিভৃত-উদ্যান

হেথায়,–নিতুই আছে বেকত

বিবর্ত্তে বিলাসরঙ্গ—হেথায়, নিতুই আছে বেকত

(মাতন)
না হবে বা কেন রে

নীলাচলের এত মাধুরী—না হবে বা কেন রে

‘‘জয় জয়ধ্বনি, সুর নর মুনি,
গগনে উঠিল রোল।।
নীলাচলবাসী, আর নানাদেশী,’’

যারা এসেছে নীলাচলে

গৌর-জগন্নাথের আকর্ষণে—যারা এসেছে নীলাচলে
জগন্নাথ দরশনে—যারা এসেছে নীলাচলে

‘‘নীলাচলবাসী, আর নানাদেশী,’’

আর ত’ কেউ নাই বিদেশী

নীলাচলে এসেছে যদি—আর ত’ কেউ নাই বিদেশী
সকলে যে রাধাদাসী—আর ত’ কেউ নাই বিদেশী

(মাতন)
নৈলে বা আসবে কেন

যদি রাধাদাসী না হলে—নৈলে বা আসবে কেন

নীলাচলে আসবে কেন

বিবর্ত্তে বিলাস-রঙ্গভূমি—নীলাচলে আসবে কেন

‘‘নীলাচলবাসী, আর নানাদেশী,
সবার উথলে হিয়া।’’

সবার আনন্দিত মন

দেখি’ গোরার প্রেম-সঙ্কীর্ত্তন—সবার আনন্দির মন

আ’মরি মরি কি কীর্ত্তন-নটন

দেখি নাই শুনি নাই কখন—আ’ মরি মরি কি কীর্ত্তন-নটন

তা’ হতেও দেখে অধিক মাধুরী

ব্রজনিকুঞ্জে যা দেখে ছিলে—তা’ হতে দেখে অধিক-মাধুরী

সেখানে দু’জনে স্বভাবে ছিল

এ যে দু’জনর স্বভাব হারাইল—সেখানে দু’জনে স্বভাবে ছিল

এখানে যে বিপরীত-রীতি

নাগরী নাগর, নাগর নাগরী—এখানে যে বিপরীত-রীতি

আশ-মিটান লীলাভূমি

এই মধুর-লীলাচল—আশ-মিটান লীলাভূমি
প্রাণরাধা-রাধারমণের—আশ-মিটান লীলাভূমি
বাঞ্ছা-পূর্ত্তি-মূর্ত্তি গোরার—আশ-মিটান লীলাভূমি

নিত্য-মিলনে নিত্য-বিরহ
নিভৃতে, রাই ঢাকা আছে কানাই
বুকে ধরে আছে কিশোরী
তবু বলে কোথা বংশীধারী

‘‘প্রেমের পাথারে, সবাই সাঁতোরে’’

প্রেমপাথারের সবাই সাঁতারে

ভাবনিধি-গৌরাঙ্গ হেরে—প্রেমপাথারের সবাই সাঁতারে

‘‘প্রেমের পাথারে, সবাই সাঁতারে,
কেবল,–দুঃখী যদু অভাগিয়া।।’’

কেবল,—দুঃখি যদু অভাগিয়া

গৌরলীলা না দেখিয়া—কেবল,–দুঃখী যদু অভাগিয়া (মাতন)

সবাই মিলে কৃপা কর গে

রথযাত্রায় নীলাচলবাসী—সবাই মিলে কৃপা কর গো
এই লীলা-পাথারে ডুবে থাকি—সবাই মিলে কৃপা কর গো

এই কৃপা কর সবে

ডুবে থাকি গৌরপ্রেম-পাথারে—এই কৃপা কর সবে

(মাতন)

‘‘লীলাকারী জগন্নাথ।
চলিতে চলিতে, যেয়ে অর্দ্ধপথে,
রথ থামে অকস্মাৎ।।’’

আর ত’ রথ চলে না রে

রথী যে অচল হল—আর ত’ রথ চলে না রে
স্বরূপে অচল ভাবেতে অচল—আর ত’ রথ চলে না রে

জগন্নাথ বিমোহিত

হেরি,’—ভাবে ভোরা শচীসুত—জগন্নাথ বিমোহিত

কেন জগন্নাথ বিমোহিত

সত্য ত দুই এক বটে তবে—কেন জগন্নাথ বিমোহিত

‘‘বাসুদেব ঘোষ কহে জোড়াকরি হাত রে।
যেই গৌর সেই কৃষ্ণ সেই জগন্নাথ রে।’’

তবে কেন মুগ্ধ হয়

যদি তিন এক তনু হয়—তবে কেন মুগ্ধ হয়

কোন মহামাধুরী আছে নিশ্চয়

গৌরাঙ্গ-স্বরূপেতে—কোন মহামাধুরী আছে নিশ্চয়

নৈলে কেন মুগ্ধ হয়
অনুভব কর ভাই

মিলেছি অনুকূল ঠাঁই—অনুভব কর ভাই
শ্রীগুরুচরণ ধরি’ হিয়ায়—অনুভব কর ভাই

আজ জগন্নাথ বিমোহিত
কখনও ত’ দেখে নাই

জগন্নাথ-নন্দনন্দন—কখনও ত’ দেখে নাই
কত মধুর নিজমাধুরী—কখনও ত’ দেখে নাই

আপনার অনুভব নাই

আপনার মাধুরী—আপনার অনুভব নাই

নিজ-প্রতিবিম্ব দেখে

একদিন নিকুঞ্জেতে দর্পণে—নিজ-প্রতিবিম্ব দেখে

শ্যাম বলে,–এ কে বটে
তখন কেউ ইঙ্গিতে বলিলেন

মার্ধুয্যামৃতসার—তখন কেউ ইঙ্গিতে বলিলেন

আমারই মূরতি বটে
শ্যাম বলে,–আমি কি এত সুন্দর
আমাকে আমি আস্বাদিব
যার,–আপন-মাধুরীর অনুবব নাই
কেমন করে তার অনুভব হবে

শ্রীরাধাবামে দাঁড়াল তার কি মাধুরী—কেমন করে তার অনুভব হবে

কেন না সে মুগ্ধ হবে

আপন-স্বরূপে মুগ্ধ যে—কেন না সে মুগ্ধ হবে
রাধাসঙ্গে আপনার মিলিত দেখে—কেন না সে মুগ্ধ হবে

গৌর দেখে তাই মুগ্ধ
এই ত’ গৌরলীলার পূর্ব্বসূত্র
সেই হতে উঠল লালসা
অনেক চেষ্টা করিলেন

নিজ-মাধুরী আস্বাদিতে—অনেক চেষ্টা করিলেন
আপন-কক্ষায় থেকে—অনেক চেষ্টা করিলেন

অনুসন্ধানে মনে করলেন
আমার অধিকার নাই

আমার মাধুরী ভোগে—আমার অধিকার নাই

অনুগত হতে হবে
বিভাভিত হতে হবে

মহাভাব-স্বরূপিনীর ভাবে—বিভাবিত হতে হবে

সেই সাধ মিটাইতে
এসেছে গৌরাঙ্গ-রূপে

রাধাভাব-কান্তি লয়ে—এসেছে গৌরাঙ্গ-রূপে

ধরেছে নাম শচীসূত

সদা রাধাভাবে—ধরেছে নাম শচীসূত

অধিক মাধুরীর বিকাশ

গৌরাঙ্গ-স্বরূপে— অধিক মাধুরীর বিকাশ

তা’ ত’ কখনও দেখে নাই

জগন্নাথ-বংশীবদন—তা’ ত’ কখনও দেখে নাই

ভাবে দেখা যুগল-মুরতি
সে ত’ সহজ ভাবাপন্ন
গৌরাঙ্গ দেখিতে মিলিত-মূরতি
দেখিতে রাইকানু একাকৃতি
কিন্তু বিপরীত ভাবে অবস্থিতি
এ ত’ কখনও দেখে নাই
আজ,–সেই মাধুরী দেখে মুগ্ধ

আপনার গৌরাঙ্গ-স্বরূপে—আজ,–সেই মাধুরী দেখে মুগ্ধ

আজ,–দেখিছে সেই যুগল-নটন

হেরি’ প্রাণ-শচীনন্দন—আজ,–দেখিছে সেই যুগল-নটন

জগন্নাথ মুগ্ধ হৈল

যা’ দেখে নাই তাই দেখে—জগন্নাথ মুগ্ধ হৈল

আপনি অচল হল
জগন্নাথ ডুবে গেল

গৌরস্বরূপে যুগল-মাধুরী হেরে—জগন্নাথ ডুবে গেল
মার্ধুয্যামৃত-পারবারে—জগন্নাথ ডুবে গেল
আপন-গৌরলীলারহস্যে—জগন্নাথ ডুবে গেল

রথী যে অচল হল

আমরি এ কি মাধুরী বলে—রথী যে অচল হল
রথ কেমন করে চলবে বল—রথী যে অচল হল

আজ জগন্নাথ আত্মহারা

দেখি,’—ভাবোল্লাসে ভোরা গোরা—আজ জগন্নাথ আত্মহারা

আজ জগন্নাথ বিমোহিত

দেখি,’—রাই-কানু একীভূত—আজ জগন্নাথ বিমোহিত

আজ মুগ্ধ জগন্নাথ

দেখি’,–নিজ-স্বরূপ রাধাসাথ—আজ মুগ্ধ জগন্নাথ

তাইতে জগন্নাথ মুগ্ধ

জগন্নাথ একলা, গৌর যুগল—তাইতে জগন্নাথ মুগ্ধ

অপরূপ ভোগ রে

নীলচলে রথের আগে—অপরূপ ভোগ রে

শ্রীগুরুদেব,–কৃপা করে জানাইলেন

সচল-অচলের খেলা—শ্রীগুরুদেব,–কৃপা করে জানাইলেন

দুজনে দুজনায় ভোগ করে

‘‘রাধাভাবে গোরা দেখে জগন্নাথে বংশীধারী।
গৌরাঙ্গে জগন্নাথ হেরে যুগল-মাধুরী।।’’

আস্বাদিছে স্বমাধুরী

দুই-স্বরূপে বংশীধারী—আস্বাদিছে স্বমাধুরী

দুই-স্বরূপেই বংশীধারী

জগন্নাথ আর গৌরহরি—দুই-স্বরূপেই বংশীধারী

আস্বাদিছে আপন-মাধুরী

রাধাভাবে ভোরা হরি—আস্বাদিছে আপন-মাধুরী
জগন্নাথদেবের বদন হেরি—আস্বাদিছে আপন-মাধুরী
শ্রীগৌরাঙ্গ-রূপ ধরি’—আস্বাদিছে আপন-মাধুরী

জগন্নাথ-বংশীধারী

আস্বাদিছে যুগল-মাধুরী—জগন্নাথ-বংশীধারী
‘আস্বাদিছে যুগল-মাধুরী’—
গোররসের বদন হেরি’—আস্বাদিছে যুগল-মাধুরী

এসেছে জগন্নাথ-রূপ ধরি’

শ্রীনন্দনন্দন-বংশীধারী—এসেছে জগন্নাথ-রূপ ধরি’
আস্বাদিতে গৌর-যুগল-মাধুরী—এসেছে জগন্নাথ-রূপ ধরি’

শ্যাম প্রকট জগন্নাথ-রূপে

আস্বাদিতে গৌর-স্বরূপে—শ্যাম প্রকট জগন্নাথ-রূপে;

তখন যান নেচে নেচে

ভাবাবেশে কীর্ত্তন-রঙ্গে—তখন যান নেচে নেচে
জগন্নাথরূপে যখন ভোগ—তখন যান নেচে নেচে

আগে দাঁড়ায়ে নাচে গোরা

যুগল-মাধুরী বিকাশ করে—আগে দাঁড়ায়ে নাচে গোরা

নেচে নেচে আগে চলে

জগন্নাথের রথের আগে—নেচে নেচে আগে চলে
রাই কানু মিলিত-স্বরূপে-নেচে নেচে আগে চলে

রথের আগে গৌর নেচে যায়

যুগল-মাধুরী বিকাশ করে–রথের আগে গৌর নেচে যায়
দেখি’ মুগ্ধ জগন্নাথ-শ্যামরায়—রথের আগে গৌর নেচে যায়

আজ,–ধীরে ধীরে যায় রে

দেখ্‌তে দেখ্‌তে জগন্নাথ—আজ,–ধীরে ধীরে যায় রে
‘দেখ্‌তে দেখ্‌তে জগন্নাথ’—
রাধাসঙ্গে মিলিত আপন মাধুরী—দেখ্‌তে দেখ্‌তে জগন্নাথ

আজ,–ধীরে ধীরে যায় রে
জগন্নাথ বিমোহিত
শুধু মুগ্ধ হওয়া নয় গো
কিছু পরে হইলা ক্ষুদ্ধ
বলে,–আমার ভোগ ত’ হল না

প্রাণভরে এ-স্বরূপ কই—আমার ভোগ ত’ হল না

দেখলাম ক্ষণিকের তরে

জড়াজড়ি নটন-মাধুরী—দেখ্‌লাম ক্ষণিকের তরে

এখনি ত’ চলে যাবে

আমার নয়নের আড়াল হবে—এখনি ত’ চলে যাবে

আর ত’ দেখতে পাব না

রথযাত্রা শেষ হলে—আর ত’ দেখ্‌তে পাব না

ক্ষুব্ধ হৈয়া হৈল লুব্ধ
সাধ হল জগন্নাথের চিতে

গৌর-স্বরূপ নিরন্তর ভোগ করিতে—সাধ হল জগন্নাথের চিতে

কেমন করে ভোগ করিব

গৌর-স্বরূপ নিরন্তর—কেমন করে ভোগ করিব

লুব্ধ হয়ে মনে গণে

আমার সাধ মিটবে কেমনে—লুব্ধ হয়ে মনে গণে

কোথা গেলে পূর্ণ হবে

আমার এ বাসনা—কোথা গেলে পূর্ণ হবে

নিরন্তর ভোগ করিব

আমার এই অপরূপ-রূপ—নিরন্তর ভোগ করিব
নিশি দিশি সঙ্গে থাক্‌ব—নিরন্তর ভোগ করিব

লুব্ধ হয়ে মনে গণে
তখন,–পরিকরে দৃষ্টি পড়িল

প্রাণগৌরাঙ্গের—পরিকরে দৃষ্টি পড়িল

জগন্নাথ মনে গণে
তবে সাধ পূর্ণ হবে

গৌর-পরিকর হবে যবে—তবে সাধ পূর্ণ হবে

(মাতন)
অশেষ-বিশেষে ভোগ করিতাম্‌

যদি গৌর-পরিকর হতাম—অশেষ-বিশেষে ভোগ করিতাম্‌
মুগ্ধ-ক্ষুব্ধ-লুব্ধ-মনে—অশেষ-বিশেষে ভোগ করিতাম্

গৌর-পরিকরত্নে জগন্নাথ লুব্ধ
রসরাজ্যের এই ত’ খেলা
দিন দিন বাড়ছে

অবধি ত’ পাচ্ছে না—দিন দিন বাড়্‌ছে

‘‘সুরাসুর-নরে, টানিল রথেরে,
তবু না চলয়ে রথ।’’

কেমন করে রথ চলবে

রথী যে অচল হয়েছে—কেমন করে রথ চল্‌ব
‘রথী যে অচল হয়েছে’—
আপনা হারায়ে গেছে—রথী যে অচল হয়েছে

কেমন করে রথ চল্‌বে

‘‘পড়িছা পূজারী, বেত্র হস্তে করি,’
গালি পাড়ে কত মত।।’’

স্বভাবেতে গালি পাড়ে

তারা সবাই ব্রজপরিকর—স্বভাবেতে গালি পাড়ে
‘তারা সবাই ব্রজপরিকর’—
তারা যে সম্বন্ধের সন্ধনে বাঁধা—তারা সবাই ব্রজপরিকর

স্বভাবেতে গালি পাড়ে

‘‘রাজার আদেশে, জোড়ে দুইপাশে,
শতশত করিবর।
টানে রথ বলে, তথাপি না চলে,
একপদ রথিবর।।’’

কেমন রথ চলবে বল

রথী যে ভাবে অচল হল—কেমনে রথ চলবে বল

কেমন করে রথ চলিবে

রথীকে না চালালে—কেমন করে রথ চলিবে

কর শকতি রথ নাড়ে

যারে,–দেখে মুগ্ধ সে না নাড়ালে—কার শকতি রথ নাড়ে

যার ভাবে রথী বিকল,–সে বল না কেড়ে নিলে—কার শকতি রথ নাড়ে

কেমন করে রথ চলিবে
সেই ত চালাতে পারে

যে অচল করেছে তারে—সেই ত চালাতে পারে

আর তারে কে চালাবে

গৌর না চালালে পরে—আর তারে কে চালাবে

‘‘তবে গোরারায়, রথ পাছে যায়,’’

রথ যে চালাবে বলে

অচলকে সচল করে—রথ যে চালাবে বলে
রথীকে সচল করে—রথ যে চালাবে বলে

‘‘তবে গোরারায়, রথপাছে যায়,
শিরেথে ঠেলিছে রথ।’’

চল চল করি’ ত্বরা

প্রাণে প্রাণে বলে প্রাণগোরা—চল চল করি’ ত্বরা
পারণ বঁধু আমার এই নিকুঞ্জ-মাঝে—চল চল করি’ ত্বরা

মনে মনে গৌরকিশোরী বলে
পথে এসে কেন দাঁড়ায়ে রইলে

চল বঁধু ফিরে চল—পথে এসে কেন দাঁড়ায়ে রইলে
ব্রজ-নিকুঞ্জে ফিরে চল—পথে কেন দাঁড়ায়ে রইলে

আর বিলম্ব সয় না রে

প্রাণগৌরাঙ্গ-কিশোরীর—আর বিলম্ব সয় না রে
কতক্ষণে পুরে যাবে—আর বিলম্ব সয় না রে

তাইতে আর রথ ঠেলে

শীঘ্র ব্রজে যাবে বলে—তাইতে আজ রথ ঠেলে

‘‘বায়ুর বেগেতে নিমেষের মাঝেতে
চলিল যোজন শত।।’’

গৌরকিশোরী রথ ঠেলে

বায়ুবেগে রথ চলে—গৌরকিশোরী রথ ঠেলে

জগন্নাথের আছে কিবা বল

তা গিরি ধরাতে জানা গেছে—জগন্নাথের আছে কিবা

গিরি পড় পড় হল

একবার নয়ন-কোনে হেরে—গিরি পড় পড় হল

গিরি হল পড় পড়

নাচে কর থর থর—গিরি হল পড় পড়
কিশোরীর বদন হেরে—গিরি হল পড় পড়

শ্যামসুন্দরের আছে কি বল

শ্রীরাধা-বল কেবল সম্বল—শ্যামসুন্দরের আছে কি বল

তাইতে রথ চলিল

গৌরকিশোরীর পরশ পেল—তাইতে রথ চলিল

‘‘জয় গৌর বলি’, দুই বাহু তুলি’,
করে রোল যাত্রীগণ।’’

বলে,–জয় জয় গৌরহরি

অচলে সচলকারী—বলে,–জয় জয় গৌরহরি

(মাতন)
বলিহারি যাই গৌরাঙ্গের বল

অচলে করিল সচল—বলিহারি যাই গৌরাঙ্গের বল

(মাতন)

‘‘দুঁহার প্রভাব, করি অনুভব,
যদুর বিস্মিত মন।।’’

দোঁহে দোঁহায় ভোগ করে
গৌরহরি ভোগ করে

রাধাভাবে কৃষ্ণমাধুরী—গৌরহরি ভোগ করে

জগন্নাথ ভোগ করে

একাধারে যুগলমাধুরী—জগন্নাথ ভোগ করে

অপরূপ খেলা ভাই রে

জগন্নাথের রথের আগে—অপরূপ খেলা ভাই রে

দোঁহে লাগে হুড়াহুড়ি

অচল সচল—দোঁহে লাগে হুড়াহুড়ি

‘‘চৌদিকে মহান্ত মেলি, করয়ে কীর্ত্তন কেলি,’’

আনন্দের পাথার বয়ে যায় রে

রথযাত্রায় নীলাচলে—আনন্দের পাথার বয়ে যায় রে

বয়ে যায় রে প্রেমের পাথার

নীলাচলে ব্রজমাধুরীর—বয়ে যায় রে প্রেমের পাথার

‘‘চৌদিকে মহান্ত মেলি, করয়ে কীর্ত্তন কেলি।’’
আমরি—‘‘সাত সম্প্রদায় গায় গীত রে।’’

ভাবনিধির ভাব জেনে

অনিমেষে চেয়ে বদন-পানে—ভাবনিধির ভাব জেনে

গান করে গৌরাঙ্গগণ

আজ,–‘‘সাত সম্প্রদায় গায় গীত রে।’’

গৌরভাবের অনুকূলে

প্রেমস্বরে গান করে সকলে—গৌরভাবের অনুকূলে

ভাবনিধির ভাব-অনুকূলে

গান করে গৌরগণ সকলে—ভাবনিধির ভাব-অনুকূলে

(মাতন)

‘‘যতেক মহন্ত মেলি, করয়ে কীর্ত্তন কেলি,
‘‘সাত সম্প্রদায় গায় গীত রে ।’’

এই রথের আগে দাঁড়াইয়ে

প্রাণ-গৌরাঙ্গের বদন চেয়ে—এই রথের আগে দাঁড়াইয়ে

‘‘সাত সম্প্রদায় গায় গীত রে।
বাজে চতুর্দ্দশ খোল, গগনে উঠিল রোল,
দেখি’ জগন্নাথ আনন্দিতে রে।।’’

দেখি জগন্নাথ বিমোহিত

গৌরাঙ্গ-কীর্ত্তনরঙ্গ—দেখি’ জগন্নাথ বিমোহিত

জগন্নাথ আনন্দে বিভোর

কীর্ত্তন-নটন দেখে—জগন্নাথ আনন্দে বিভোর

(মাতন)
কখনও ত দেখে নাই

কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গ—কখনও ত দেখে নাই
‘কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গ’—
বিবর্ত্তে বিলাসরঙ্গে—কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গ

কখনও ত দেখে নাই
জগন্নাথ আজ আনন্দিত

দেখি’ ভাবেভোরা শচীসুত—জগন্নাথ আজ আনন্দিত

(মাতন)
জগন্নাথ আজ আনন্দিত

দেখি’ গৌরকে ভাবে অলঙ্কৃত—জগন্নাথ আজ আনন্দিত
দেখি’ গৌরকে ভাবে অলঙ্কৃত—জগন্নাথ অজ আনন্দিত
দেখি’ শচীসুত ভাবভূষিত –জগন্নাথ আজ আনন্দিত

(মাতন)

‘‘উনমত নিত্যানন্দ, আচার্য্য অদ্বৈতচন্দ্র,’’

আনন্দ আর ধারে না রে

আজ প্রভু নিতাইচাঁদের—আনন্দ আর ধরে না রে
আজ প্রভু সীতানাথের—আনন্দ আর ধরে না রে
ভাবনিধির ভাব-বিকার হেরে—আনন্দ আর ধরে না রে

‘‘উনমত নিত্যনন্দ, আচার্য্য অদ্বৈতচন্দ্র,
পণ্ডিত শ্রীবাস হরিদাস রে।
এসবারে সঙ্গে করি, মাঝে নাচে গৌরহরি,
ভকতমণ্ডলী চারিপাশে রে।।’’

পারিষদ-তারা ঘিরে

শ্রীগৌরাঙ্গ-শশধরে—পারিষদ-তারা ঘিরে
নবদ্বীপ-সুধাকরে—পারিষদ-তারা ঘিরে

ভুবনমঙ্গল গৌর নাচে

হরি হরি বোল বলে—ভুবনমঙ্গল গৌর নাচে

‘‘হরি হরি বোল বলে, পদভরে মহী টলে,
নয়নে বহয়ে অশ্রুধার রে।’’

আনন্দ আর ধরে না রে

ভাগ্যবতী ধরণীর—আনন্দ আর ধরে রে
ভাবনিধি হৃদে ধরে—আনন্দ আর ধরে না রে

ধরণী আনন্দে টলমল করে

ভাবনিধি হৃদে ধরে—ধরণী আনন্দে টলমল করে

‘‘হরি হরি বোল বলে, পদভরে মহী টলে,
নয়নে বহয়ে অশ্রুধার রে
প্রেমের তরঙ্গরঙ্গ, সুমেরু জিনিয়া অঙ্গ’’

প্রেমতরঙ্গের রঙ্গভূমি

প্রাণগৌরাঙ্গের অঙ্গখানি—প্রেমতরঙ্গের রঙ্গভূমি

‘‘তাহে অষ্ট সাত্ত্বিক বিকার রে।।’’

ভাবভূষণে বিভূষিত

মহাভাবনিধি শচীসুত—ভাবভূষণে বিভূষিত

আজ সাজল গৌরকিশোরী

বংশীধারীর বদন হেরি’—আজ সাজল গৌরকিশোর

‘‘ভাবাবেশে গোরারায়, নাচিতে নাচিতে যায়,’’

পরাণনাথ পাইনু বলে

ধরি’ স্বরূপ-রামরায়ের গলে—পরাণনাথ পাইনু বলে

গৌর নাচে রাধাভাবে

জগন্নাথের রথের আগে—গৌর নাচে রাধাভাবে

‘‘ভাবাবেশে গোরারায়, নাচিতে নাচিতে যায়,’’

গমন-নটন-লীলা

ভাবনিধি-প্রাণগৌরাঙ্গের—গমন-নটন-লীলা

চলে যেতে নেচে যায়

নাটুয়া মূরতি নটনগতি—চলে নেচে যায়
ভাবহিল্লোলে হেলে দুলে—চলে যেতে নেচে যায়
বিংশতি,–ভাবহিল্লোলে হেলে দুলে—চলে যেতে নেচে যায়
নটিনীর শিরোমণি-সাজে—চলে যেতে নেচে যায়
ভাবাবেশে,–নটিনীর শিরোমণি-সাজে—চলে যেতে নেচে যায়

যেন,–সঙ্গীতেতে কথা কহিছে

‘‘গমন-নটন-লীলা, বচন-সঙ্গীত-কলা’’,

চলে যেচে নেচে যায়

‘‘ভাবাবেশে গোরা রায়, নাচিতে নাচিতে যায়,
ধীরে ধীরে চলে জগন্নাথ রে।’’

আর,–জগন্নাথের রথ চলে না

জগন্নাথ অচল রথও অচল—আর,–জগন্নাথের রথ চলে না

জগন্নাথ চলে ধীরি ধীরি

গৌরাঙ্গ-নটন-মাধুরী হেরি’—জগন্নাথ চলে ধীরি ধীরি

জগন্নাথ ধীরে চলে

গৌরমাধুরী পিয়ে পিয়ে—জগন্নাথ ধীরে চলে
গৌরমাধুরী ভোগে ভোরা হয়ে—জগন্নাথ ধীরে চলে
গৌরমাধুরী ভোগে ভারী হয়ে—জগন্নাথ ধীরে চলে

ভাবেতে অবশ অঙ্গ

জগন্নাথ-বংশীধারীর—ভাবেতে অবশ অঙ্গ
হেরি,’—রাইকানু মিলিত গৌরাঙ্গ –ভাবেতে অবশ অঙ্গ

‘‘তাই,–ধীরে ধীরে চলে জগন্নাথ রে।’’

জগন্নাথ বিমোহিত

দেখি,’—ভাবে ভোরা শচীসুত—জগন্নাথ বিমোহিত

অনুভব কর ভাই রে

অনুকূল মিলেছে ঠাঁই—অনুভব কর ভাই রে

মিলেছে সবে ভাই ভাই

ভোগের অনুকূল মিলেছে ঠাঁই—মিলেছ সবে ভাই ভাই

অনুভব কর রে

শ্রীগুরুচরণ হৃদে ধরে—অনুভব কর রে

গৌরলীলা স্মরণ কর

শ্রীগুরুচরণ হৃদে ধরে—গৌরলীলা স্মরণ কর

(মাতন)
অনুভব কর ভাই রে

শ্রীগুরুগৌরলীলা-রহস্য—অনুভব কর ভাই রে

জগন্নাথ বিমোহিত

দেখি’,–গৌর-অঙ্গে ভাবের বিকাশ—জগন্নাথ বিমোহিত

কখনও দেখে নাই

কতমধুর নিজ-মাধুরী—কখনও দেখে নাই
জগন্নাথ-নন্দমন্দন—কখনও দেখে নাই

আপনার মাধুরী আপনার অনুভব নাই
তাইতে,–আর ত রথ চলে না রে

আজ জগন্নাথ হইল মুগ্ধ—তাইতে,–আর ত রথ চলে না রে

অপরূপ রথের বিহার
কেন রথ চলে না রে
কেন মুগ্ধ জগন্নাথ

সত্য তো দুই এক বটে—তবে কেন মুগ্ধ জগন্নাথ

সতই মুগ্ধ বংশীধারী

আপনার মূরতি হেরি’—সতই মুগ্ধ বংশীধারী

তা হলে বিকাশ অধিক মাধুরী

গৌরাঙ্গ-স্বরূপ হেরি’—তা হতে বিকাশ অধিক মাধুরী

গৌর-স্বরূপে যুগল-মাধুরী

জগন্নাথ বংশীধারী—গৌর-স্বরূপে যুগল-মাধুরী

(মাতন)
কখনও তো দেখে নাই

রাধাসঙ্গে তার কি মাধুরী—কখনও তো দেখে নাই

তাই মুগ্ধ জগন্নাথ

দেখি,–নিজস্বরূপ রাধাসাথ—তাই মুগ্ধ জগন্নাথ

অপরূপ ভোগ রে

এই,–রথযাত্রায় প্রাণগৌরাঙ্গের—অপরূপ ভোগ রে

শ্রীগুরুদেব,–কৃপা করে জানাইলেন

‘‘রাধাভাবে গোরা দেখে জগন্নাথে বংশীধারী।
গৌরাঙ্গে জগন্নাথ হেরে যুগল-মাধুরী।।’’

আর রথ চলে না রে
আস্বাদিছে স্বমাধুরী

দুই স্বরূপে বংশীধারী—আস্বাদিছে স্বমাধুরী

দুইস্বরূপই বংশীধারী

জগন্নাথ আর গৌরহরি—দুইস্বরূপই বংশীধারী

আস্বাদিছে আপন মাধুরী

রাধাভাবে ভোরা গোরা—আস্বাদিছে আপন মাধুরী

নন্দনন্দন ভোগ করিছে

রাধাভাবে ভোরা গোরা—নন্দনন্দন ভোগ করিছে

তখন যান নেচে নেচে

জগন্নাথরূপে যখন ভোগ,–তখন যান নেচে নেচে

আগে দাঁড়ায়ে নাচে গোরা

যুগল-মাধুরী বিকাশ করে—আগে দাঁড়ায়ে নাচে গোরা

‘‘ধীরে ধীরে চলে জগন্নাথ রে।।’’

ভাবেতে অবশ অঙ্গ

জগন্নাথ-বংশীধারী—ভাবেতে অবশ অঙ্গ
হেরি’,–রাই কানু মিলিত গৌরাঙ্গ—ভাবেতে অবশ অঙ্গ (মাতন)

আজ,–‘‘ধীরে ধীরে চলে জগন্নাথ রে।

আপনি কেমন কখনো দেখে নাই

আনন্দ বিস্ময় মন—আপনি কেমন কখনো দেখে নাই
জগন্নাথ নন্দনন্দন—আপনি কেমন কখনো দেখে নাই

আপনার মাধুরী আপনার অনুভব নাই
ভাবে দেখো যুগল মূরতি
দেখিত মিলিত-মূরতি
সহজ ভাবাপন্ন নয়
গৌরাঙ্গ দেখিতে যুগল-মূরতি
জগন্নাথ বিবশ চিতে
দেখিতে রাই কানু একাকৃতি
বিপরীত ভাবে উপস্থিতি
রাধাভাবে ভোরা নন্দনন্দন
চাহি’ জগন্নাথ বিমোহিত

দেখি’—রাই কানু একীভূত—চাহি’ জগন্নাথ বিমোহিত (মাতন)

অনুভব নাই নন্দনন্দনের

সহজেই আপন মাধুরী–অনুভব নাই নন্দনন্দনের

দর্পণে আপন-মাধুর দেখি’
আপন-বিম্ব দেখি’ আপনি মুগ্ধ
তাহে,–রাধাসঙ্গে অধিক মাধুরী

সে ত কখনো দেখে নাই—তাহে,–রাধাসঙ্গে অধিক মাধুরী

রাধাসঙ্গে অধিক মাধুরী
আজ,–সেই মাধুরী দেখে মুগ্ধ

আপনার গৌরাঙ্গ-স্বরূপের—আজ,–সেই মাধুরী দেখে মুগ্ধ

তাই,–‘‘ধীরে ধীরে চলে জগন্নাথ রে।’’

আজ,–চলিল না অমনি রহিল

গৌর হেরি’ জগন্নাথ—আজ,–চলিল না অমনি রহিল

রথ,–চলিল না মনে কোরো না
আপনি হল অচল

কেমন করে চল্‌বে রথ—আপনি হল অচল

জগন্নাথ ডুবে গেল

আপন গৌরলীলারহস্যে—জগন্নাথ ডুবে গেল

(মাতন)

‘‘ধীরে ধীরে চলে জগন্নাথ রে।’’

আজ আর রথ চলিল না রে

আজ,–রথের রথা অচল হল—আজ আর রথ চলিল না রে

রথের রথী হল অচল

ভাবনিধি-গৌরাঙ্গ হেরে—রথের রথী হল অচল
আমরি এ কি মাধুরী বলে—রথের রথী হল অচল

জগন্নাথে করিল মুগ্ধ

এই রহস্য ভোগ করাবার লাগি’—জগন্নাথে হল মুগ্ধ

বুঝি জগন্নাথ হল লুব্ধ

লীলাসহস্য ভো কর্‌বে বলে—বুঝি জগন্নাথ হল লুব্ধ

আজ জগন্নাথ আত্মহারা

দেখি’—ভাবোল্লোসে ভোরা গোরা—আজ জগন্নাথ আত্মহারা(মাতন)

‘‘ধীরে ধীরে চলে জগন্নাথ রে।
‘‘আনন্দ বিস্ময় মন, দেখি’ প্রেম-সঙ্কীর্ত্তন,
নিজ-পরিকরগণ-সাধ রে।।’’

জগন্নাথ বিমোহিত

ভাবাবেশে,–গৌরাঙ্গের সঙ্কীর্ত্তন—রঙ্গ দেখে—জগন্নাথ বিমোহিত
নিজ-পরিকর-সনে—জগনাথ বিমোহিত

একলা জগন্নাথ নয় রে
পরিকরও মুগ্ধ হল

গৌরাঙ্গ-নটন দেখে—পরিকরও মুগ্ধ হল

পরিকরও লুব্ধ হল

গৌরাঙ্গ-মাধুরী ভোগের লাগি’—পরিকরও লুব্ধ হল

লোভনীয় লীলা ভাই রে

সপরিকর,–জগন্নাথ-বংশীধারীর—লোভনীয় লীলা ভাই রে
গৌরাঙ্গের কীর্ত্তনরঙ্গ—লোভনীয় লীলা ভাই রে

সপরিকর,–জগন্নাথের চিতচোরা

মহাভাবনিধি প্রাণগোরা—সপরিকর,–জগন্নাথের চিতচোরা

লুব্ধকারী লীলা ভাই রে

নিজ-পরিকর-জগন্নাথের—লুব্ধকারী লীলা ভাই রে

গৌরের,–কীর্ত্তন-নটনরঙ্গ দেখে

আনন্দ বিস্ময় মন, দেখি’ প্রেম-সঙ্কীর্ত্তন,
নিজ-পরিকরগণ-সাথ রে।।’’

আরও,–মুগ্ধ হ’বার কারণ আছে

জগন্নাথ-বংশীধারীর—আরও,–মুগ্ধ হবার কারণ আছে

এখানে আবার,–মদনমোহনের নিত্যত্ব
মদনমোহন,–গৌরাঙ্গস্বরূপে হয়েছে নিত্য প্রকট

হয়ে,–রাধা সঙ্গে সদা মিলিত—মদনমোহন,–গৌরাঙ্গস্বরূপে হয়েছে

নিত্য প্রকট
তখনই তো মদনমোহন

রাধাসঙ্গে যখনই মিলন—তখনই তো মদনমোহন

সে ত বটে শুধুই মদন

রাধা ছাড়া যতক্ষণ—সে ত বটে শুধুই মদন

ব্রজে তার নাই নিত্যত্ব

কখনও মিলন কখনও ভঙ্গ—ব্রজে তার নাই নিত্যত্ব

নাই মদনমোহনের নিত্যত্ব
মদনমোহনের নিত্যত্ব

গৌরাঙ্গস্বরূপে—মদনমোহনের নিত্যন্ত
রাধাসঙ্গে সদা মিলিত—মদনমোহনের নিত্যত্ব

গৌর নিত্য মদনমোহন

মদনমোহনের মনোমোহন—গৌর নিত্য মদনমোহন

তাই,–সপরিকরে জগন্নাথ লুব্ধ

গৌরস্বরূপ ভোগের লাগি’—তাই,–সপরিকরে জগন্নাথ লুব্ধ

কখনও ত’ দেখে নাই

মদনমোহন নাই ধরেছে—কিন্তু,–কখনও ত’ দেখে নাই
মদমোহনের কি মাধুরী—কখন ও ত’ দেখে নাই

মদনমোহন-গৌর দেখে
জগন্নাথ হৈল মুগ্ধ
আরও মুগ্ধের কারণ আছে
শ্রীগুরুকৃপায় এই মনে হতেছে
বিহরিলে ব্রজপুরে

রাসরঙ্গে শ্যামনাগর—বিহরিলে ব্রজপুরে

সে রাসে কে হৈল মুগ্ধ
জন কতক গোপী বৈ ত নয়
এখানে অপরূপ রসের খেলা

সঙ্কীর্ত্তনরঙ্গে গোরার—এখানে অপরূপ রসের খেলা

সবার স্বভাব জেগে উঠল
সেই তত্ত্ব প্রকট হোলো

গোরার,–সঙ্কীর্ত্তনরঙ্গে আজ—সেই তত্ত্ব প্রকট হোলো

একা পুরুষ কৃষ্ণ আর সব নারী
সেই তত্ত্ব প্রকট হোলো
সবাই হলো গোপনারী

গোরার,–সঙ্কীর্ত্তনরঙ্গ হেরি’—সবাই হলো গোপনারী(মাতন)

এখানে,–নাগরালীর পূর্ণত্ব

সঙ্কীর্ত্তনরঙ্গে গোরার—এখানে,–নাগরালী পূর্ণত্ব
জগন্নাথ হৈল মুগ্ধ—দেখি’,–নাগরালীর পূর্ণত্ব

সবাই প্রাণবল্লভ বলে
গৌরাঙ্গে প্রাণবঁধু বলে

নরনারী সবাই মিলে—গৌরাঙ্গে প্রাণবঁধু বলে

এখানে আবার,–মদনমোহনের নিত্যত্ব

তাই,–জগন্নাথ হৈল মুগ্ধ—হেরি’—মদনমোহনের নিত্যত্ব

জগন্নাথ হৈল মুগ্ধ

গোরার,–সঙ্কীত্তর্ন-রাস দেখে—জগন্নাথ হৈল মুগ্ধ
‘গোরার,–সঙ্কীর্ত্তন-রাস দেখে’—
গোপীভাব, প্রকটকরা—গোরার,–সঙ্কীর্ত্তন-রাস দেখে

‘‘আনন্দ বিস্ময় মন, দেখি’ প্রেম-সঙ্কীর্ত্তন,
নিজ-পরিকরগণ-সাথ রে।।’’

আর ত’ রথ চলে না রে
আদেশিলেন নিজগণে

দেখি’ রাজা প্রতাপরুদ্র—আদেশিলেন নিজগণে

‘‘রাজার আদেশে, জোড়া দুই-পাশে,
শত শত করিবর।
টানে রথ বলে, তথাপি না চলে,
একপদ রথবর।’’

সেই ত চালাতে পারে

যে অচল করেথ তারে –সেই ত চালাতে পারে

জগন্নাথও হলেন অচল

গৌরাঙ্গস্বরূপ হেরে—জগন্নাথও হলে অচল

মহাভাবেতে হলেন অচল
আর তারে কে চালাবে

গৌর না চালালে পরে—আর তারে কে চালাবে

‘‘তবে গৌররায়, রথ পাছে যায়,
শিরেতে ঠেলিছে রথ।
বায়ুর বেগেতে, নিমেষ-মাঝেতে,
চলিল যোজন শত।।’’

জগন্নাথের আছে কিবা বল

তা’-গিরিধরাতে জানাগেছে—জগন্নাথের আছে কিবা বল

গিরি পড় পড় হল

একবার নয়ন-কোণে হেরে—গিরি পড় পড় হল

গিরি হল পড় পড়

নাচে কর থরথর—গিরি হল পড় পড়
কিশোরীর বদন হেরে—গিরি হল পড় পড়

শ্যামসুন্দরের আছে কি বল

শ্রীরাধাবল কেবল সম্বল—শ্যামসুন্দরের আছে কি বল

তাই তো রথ চলিল

গৌরকিশোরীর পরশ পেয়ে—তাই তো রথ চলিল

আরও গূঢ় রহস্য আছে

শ্রীগুরুকৃপায় মেনে হতেছে—আরও গূঢ় রহস্য আছে

রথে জগন্নাথ হেরে

কিশোরী-ভাবিত-মতি গোরা—রথে জগন্নাথ হেরে

এই ত মনে ভোগ করে
পেলাম নববৃন্দাবনে

প্রভাস-মিলনে—পেলাম নববৃন্দাবনে

পেলাম বটে বংশীধারী
আশা ত’ মিটল না

ব্রজ-নিকুঞ্জে না পাইয়ে—আশা ত’ মিটল না

তাইতে আজ রথ ঠেলে

আর বিলম্ব সয়না চলে—তাইতে আজ রথ ঠেলে
শীঘ্র ব্রজে যাবে বলে—তাই তে আজ রথ ঠেলে

‘‘দূরে গেল দুঃখে শোক, প্রেমায় ভাসিল লোক,
স্থাবর জঙ্গম পশু পাখী।’’

সবাই প্রেমে উনমত

হেরি’,–বিবর্ত্তমূরতি শচীসুত—সবাই প্রেমে উনমত

আশ-মিটান লীলাভূমি

এই মধুর নীলাচল—আশ-মিটান লীলাভূমি
ব্রজ-নব-যুবক-যুবতীর—আশ-মিটান লীলাভূমি
প্রাণরাধা-রাধারমণের—আশ-মিটান লীলাভূমি
তিনবাঞ্ছাপূর্ত্তি-মূর্ত্তি গোরার—আশ-মিটান লীলাভূমি

নিত্য-মিলনে নিত্য-বিরহ

নিভৃত-গম্ভীরা ঘরে—নিত্য-মিলনে নিত্য-বিরহ

রাইঢাকা আছে কানাই

তবু করে হা রাই হা রাই—রাইঢাকা আছে কানাই

বুকে ধরে আছে কিশোরী

তবু বলে কোথা বংশীধারী—বুকে ধরে আছে কিশোরী

নিগূঢ় গৌরাঙ্গলীলা

মধুর শ্রীনীলাচলে—নিগূঢ় গৌরাঙ্গলীলা

‘‘দূরে গেল দুঃখ শোক, প্রেমায় ভাসিল লোক,
স্থাবর জঙ্গম পশু পাখী।
সে প্রেমবিলাসধাম, যদু কহে অনুপাম,
যে দেখিল সেই তার সাখী।’’

সবার স্বরূপ জেগে উঠ্‌ল

স্থাবর-জঙ্গম-পশু-পাখীর—সবার স্বরূপ জেগে উঠ্‌ল
বাহ্য আবরণ ঘুচে গেল—সবার স্বরূপ জেগে উঠ্‌ল

সবাই হল গোপনারী

হেরি’—রথের আগে গৌরহরি—সবাই হল গোপনারী

আজ সবাই হইল সুখী

ঐ সচল অচলের খেলা দেখি’—আজ সবাই হইল সুখী
যুগলের প্রেমের খেলা দেখি’—আজ সবাই হইল সুখী
সচল অচল মূরতি দেখি’—আজ সবাই হইল সুখী

আমরি কি প্রেমের খেলা

নীলাচলবাসী আত্মহারা—আমরি কি প্রেমের খেলা
‘নীলাচলবাসী আত্মহারা’—
দেখি’ সচল—অচল-চিতচোরা—নীলাচলবাসী আত্মহারা

আমরি কি প্রেমের খেলা
সবাই প্রেমে উনমত

হেরি’ বিবর্ত্তমূরতি শচীসুত—সবাই প্রেমে উনমত

আমরি কি প্রেমের খেলা
সচল দেখি অচল মুগ্ধ
এ খেলা ত আর কোথাও নাই

এ’,–মধুর নীলাচল বিনে ভাই—এ খোল ত আর কোথাও নাই

আজ সবাই হল সুখী

স্থাবর-জঙ্গম-পশু-পাখী—আজ সবাই হল সুখী

আমরি,–প্রেমসুখে হইল সুখী
পরিণতি উপভোগ করে

মহারাস-বিলাসের—পরিণতি উপভোগ করে

প্রেমসুখে হইল সুখী
সে সুখ ত’ কোথাও মিলে না

যতই সাধন করুক না কে—সে সুখ ত’ কোথাও মিলে না

এ ভোগ তো কোথাও মিলে না

মধুর-নীলাচলে না আসিলে—এ ভোগ তো কোথাও মিলে না
‘নীলাচলে না আসিলে’—
স্বরূপের গণ গণ্য হয়ে—নীলাচলে না আসিলে

(মাতন)
এ ভোগ তো কোথাও মিলে না
সে সৌভাগ্য কোথাও মিলে না

বসতি না হইলে—সে সৌভাগ্য কোথাও মিলে না
‘বসতি না হইলে’—
গম্ভীরা—নিকুঞ্জ-মাঝে—বসতি না করিলে

এ সুখ তো কোথাও মিলে না

নীলাচলে না আসিলে—এ সুখ তো কোথাও মিলে না

সবাই সেই সুখে সুখা

করুণাবারিধি গৌর-কৃপায়—সবাই সেই সুখে সুখী

‘‘সে প্রেম বিলাস ধাম, যদু কহে অনুপাম,
যে দেখিল সে তার সাথী।।’’

যে দেখেছে সে ত’ জানে

সে সুখ-বিলাস-ধাম—যে দেখেছে সেই ত’ জানে
প্রকটলীলায় এই নীলাচলে—যে দেখেছে সেই ত’ জানে
‘প্রকটলীলায় এই নীলাচলে’—
জগন্নাথের রথের আগে—প্রকটলীলায় এই নীলাচলে

যে দেখেছে সেই ত’ জানে
তারই ত’ অনুভব আছে

যে দেখেছে গৌরাঙ্গ-বিলাস-মাধুরী—তারই ত’ অনুভব আছে

মধুর গৌরাঙ্গ-লীলা

এই রথযাত্রায় শ্রীনীলাচলে—মধুর গৌরাঙ্গ-লীলা
এই জগন্নাথের রথের আগে—মধুর গৌরাঙ্গ-লীলা

‘‘নাচে শচীনন্দন, দেখে রূপ সনাতন,’’

নাচে শচীনন্দন

শ্রীরাধাভাবে বিভাবিত মন –নাচে শচীনন্দন
এই জগন্নাথের রথের আগে—নাচে শচীনন্দন

নাচে,–রসের গোরা হেলে দুলে

পরাণ-নাথ পাইনু বলে—নাচে,–রসের গোরা হেলে দুলে

গৌর নাচে রাধাভাবে

এই জগন্নাথের রথের আগে—গৌর নাচে রাধাভাবে

(মাতন)
তাই,–দেখে রূপ সনাতন

শ্রীরাধাপ্রেমের কত বল—তাই,–দেখে রূপ সনাতন
শ্রীরাধাপ্রেমের কত বল’—
নাগরে নাগরী কৈল—শ্রীরাধাপ্রেমের কত বল

(মাতন)
তাই,–দেখে রূপ সনাতন

জগন্নাথে রথের আগে—দেখে রূপ সনাতন
মাহরাসবিলাসের পরিণতি–দেখে রূপ সনাতন
মূরতিমন্ত প্রেমবৈচিত্ত্য—দেখে রূপ সনাতন
নিত্য মিলনে নিত্য বিরহ—দেখে রূপ সনাতন

মিলনে দুইরসের খেলা
মিলনে,–মিলা অমিলা রসের খেলা

আজ নিত্য মিলনে দেখে—মিলা আমিলা রসের খেলা

(মাতন)
দেখে রূপ সনাতন

বিলাসবিবর্ত্ত-মূরতি—দেখে রূপ সনাতন
রাই-কানু কানু-রাই—দেখে রূপ সনাতন

মুগ্ধ রূপ-সনাতন-চিত

দেখি’,–মূরতিমন্ত প্রেমবৈচিত্ত্য—মুগ্ধ রূপ-সনাতন-চিত(মাতন)

দেখে রূপ সনাতন

নাচে শচীনন্দন—তাই,–দেখে রূপ সনাতন

আজ,–আনন্দের আর সীমা নাই রে

অনুভব প্রকট হল দেখি’—আজ,–আনন্দের আর সীমা নাই রে
‘অনুভব প্রকট হল দেখি’—
মহারাসবিলাসের পরিণতি—অনুভব প্রকট হল দেখি’

আনন্দের আর সীমা নাই রে

রথের আগে গৌর দেখে—আনন্দের আর সীমা নাই রে

(মাতন)

‘‘নাচে শচীনন্দন, দেখে রূপ সনাতন,
গান করে স্বরূপ দামোদর।’’

ভাবনিধির ভাব জেনে

ভাব-অনুকূল-রস করে গানে—ভাবনিধির ভাব জেনে
চেয়ে,–ভাবনিধির বদন-পানে—ভাবনিধির ভাব জেনে

‘‘গান করে স্বরূপ দামোদর।
গায় রায় রামানন্দ, মুকুন্দ মাধবানন্দ,
বাসুঘোষ গোবিন্দ শঙ্কর।।’’

আজ,–আনন্দেতে গান করে

গোরা-রসের বদন হেরে—আজ,–আনন্দেতে গান করে

প্রভুর দক্ষিণ পাশে, নাচে নরহরি দাসে
বামে নাচে প্রিয় গদাধর।’’

নাচে,–দুইজনে দুইপাশে

নরহরি গদাধর—নাচে,–দুইজন দুইপাশে

নাচে, গোরা ভাবাবেশে

নাচে,–দুইজনে দুইপাশে—নাচে গোরা ভাবাবেশে

(মাতন)
নাচে,–নরহরি হেলে দুলে

রাই জয় জয় রাধে বলে—নাচে,–নরহরি হেলে দুলে

নাচে, নরহরি মধুমতী

মনে আনন্দ অতি—নাচে,–নরহরি মধুমতী
দেখি’ বিপরীত রীতি—নাচে,–নরহরি মধুমতী
নাগর নাগরীয়া লীলা দেখি’—নাচে,–নরহরি মধুমতী

আনন্দেতে নৃত্য করে

দেখি’ অপরূপ বিলাসরঙ্গ—আনন্দেতে নৃত্য করে

নাচে,–নরহরি হেলে দুলে

রাই জয় জয় রাধে বলে—নাচে,–নরহরি হেলে দুলে

নরহরি নাচে মধুমতী আবেশে

গৌরাঙ্গ-কিশোরী-পাশে—নরহরি নাচে মধুমতী আবেশে
আপনার মনোল্লাসে—নরহরি নাচে মধুমতী আবেশে

মধুমতী নাচে মহোল্লাসে

দেখি’ অপরূপ বিলাসে—মধুমতী নাচে মহোল্লসে

নরহরির মনে নাহি আন

গৌরমাধুর্য্যামৃত করে পান—নরহরির মনে নাহি আন

অনুগত-মণ্ডলী করে গান

ঠাকুর শ্রীনরহরির—অনুগত-মণ্ডলী করে গান

উচ্চৈঃস্বরে করে গান

নরহরির বদন চেয়ে—উচ্চৈঃস্বরে করে গান

গায় সবে প্রাণভরি’

গৌরাঙ্গ-লীলা-মাধুরী—গায় সবে প্রাণভরি’

‌‘‘বামে নাচে প্রিয় গদাধর।’’

আনন্দে গদাধর নাচে

নাগর নাগরী হয়েছে দেখে—আনন্দে গদাধর নাচে

গদাধরের আনন্দ অন্তর

দেখি’ প্রভুর ভাবান্তর—গদাধরের আনন্দ অন্তর
দেখি’,–আপনার ভাবে বিভাবিত নাগর—গদাধরের আনন্দ অন্তর

ও,–‘‘বামে নাচে প্রিয় গদাধর।
নাচিতে নাচিতে প্রভু, আউরলাইয়া পড়ে কভু,’’

এলাইয়া পড়িল গো

গৌরাঙ্গ কিশোরী—এলাইয়া পড়িল গো
পেলাম বলে প্রাণবঁধূয়া—এলাইয়া পড়িল গো

‘‘নাচিতে নাচিতে প্রভু, আউলাইয়া পড়ে কভু,
আবেশে ধরয়ে দোঁহার কর।।’’

কি যেন কি বল্‌বে বলে

প্রাণের কথা,–বল্‌বে বলে মনে করে—কি যেন কি বল্‌বে বলে

‘‘নিত্যানন্দমুখ হেরি’, বলে পহুঁ হরি হরি,’’

ও ত’ হরি বলা নয়

প্রভু করে হায় হায়—ও ত’ হরি বলা নয়

মুখে কিছু বলে না

প্রভু কেবল হায় হায় করে—মুখে কিছু বলে না

কি অভাবে করে হায় হায়

ভাবাবেশে গোরা রায়—কি অভাবে করে হায় হায়

ভাব ত কিছু বুঝা না যায়

এখনি পায় এখনি হারায়—ভাব ত কিছু বুঝা না যায়

এই ত আনন্দে নাচিতে ছিল

জগন্নাথের বদন চেয়ে—এই ত আনন্দে নাচিতে ছিল
পরাণবঁধু পেলাম বলে—এই ত আনন্দে নাচিতে ছিল

পেলাম বলে এলাইয়া পড়ে

আমার পরাণবঁধুকে আমি—পেলাম বলে এলাইয়া পড়ে

পরক্ষণেই হায় হায় করে

পেলাম বলে এলায়ে পড়ে—পরক্ষণেই হায় হায় করে (মাতন)

পেয়েও আশা মিটে না রে

পাবার আশা পায় না তাই—পেয়েও আশা মিটে না রে

পেয়েও গোরা হায় হায় করে
আবার কেন হায় হায় করে
বুঝি আশা মিটে নাই
পুনঃ প্রভু করে হায় হায়

নিতাইচাঁদের বদন চেয়ে—পুনঃ প্রভু করে হায় হায়

পেয়ে করে হায় হায়

কি জানি কি পেয়েছে আর কিবা চায়—পেয়ে করে হায় হায়

ভাব ত কিছু বুঝা না যায়

এইপায় এই করে হায় হায়—ভাব ত কিছু বুঝা না যায়

আবার বুঝি অভাব জেগেছে

এখনও বাসনা পূরণ হয় নাই—আবার বুঝি অভাব জেগেছে
জগন্নাথের,–ঐশ্বর্য্যময় রূপ দেখে—আবার বুঝি অভাব জেগেছে

আবার কেন হায় হায় করে

নিতাই-চাঁদের বদন চেয়ে—আবার কেন হায় হায় করে

আবার কেন হায় হায় করে

‘‘নিত্যানন্দ-মুখ হেরি, বলে প্রভু হরি হরি,
হা কৃষ্ণ কৃষ্ণ ডাকে উচ্চৈঃস্বরে।
সঙরি শ্রীবৃন্দাবন, প্রাণ করে উচাটন,’’

সেই ভাবে ভোরা গোরা

রথে জগন্নাথ দেখি—সেই ভাবে ভোরা গোরা

পেয়েছে নব-বৃন্দাবনে

পারিষদ্‌-গোপী-সনে গৌরকিশোরী—যেন,–পেয়েছে নব-বৃন্দাবনে
আপনার প্রাণধনে—যেন,–পেয়েছে নব-বৃন্দাবনে
প্রভাস মিলনে—যেন,–পেয়েছে নব-বৃন্দাবনে

পেয়েও আশা মিট্‌ছে না

‘‘বলে—‘‘সেই তুমি সেই আমি সে নব সঙ্গম
তথাপি আমার মন হরে বৃন্দাবনে।।’’

পেয়েও আশা মিট্‌ল না

পরাণ,–বঁধু তোমায় পেলাম বটে—পেয়েও আশা মিট্‌ব না

তবে দাসীর বাসনা পূরে

যদি,–উদয়করাও ব্রজপুরে—তবে দাসীর বাসনা পূরে
যদি,–‘উদয়করাও ব্রজপূরে’—
ব্রজের জীবন কৃপা করে—যদি,–উদয় করাও ব্রজপুরে
ব্রজের জীবন ব্রজাকাশে—যদি,–উদয় করাও ব্রজপুরে

তবে দাসীর বাসন পুরে
কৃপা করি’ করাও উদয়

ব্রজের জীবন ব্রজাকাশে—কৃপা করি’ কর‍াও উদয়

‘‘সঙরি শ্রীবৃন্দাবনে, প্রাণ করে উচাটন,
আবেশে ধরয়ে রায়ের করে।।’’

ওগো প্রাণ বিশাখিকে
ওগো প্রাণ সহচারী

রামরায়ের করে ধরে বলে—ওগো প্রাণ সহচারী

বলে,–ওগো ওগো মরম সই

মনের কথা তোরে কই—বলে,–ওগো ওগো মরম সই

প্রাণবঁধূকে পেলাম বটে
কিন্তু,–পেয়েও আশা মিট্‌ল না
তবে আমার আশা মিট্‌বে

বঁধুকে,–ব্রজ-নিকুঞ্জে পাব যবে—তবে আমার আশা মিট্‌বে

আবেশে বলে গৌরকিশোরী

তোর,–করে ধরি মিনতি করি’—আবেলে বলে গৌরকিশোরী
মিলায়ে দে গো ত্বরাকরি—আবেশে বলে গৌরকিশোরী
‘মিলায়ে দে গো ত্বরাকরি’—
ব্রজ-নিকুঞ্জে বংশীধারী—মিলায়ে দে গো ত্বরাকরি’
হোক্ আনন্দময় ব্রজপুরী—মিলায়ে দে গো ত্বরাকরি’

তোর,–করে ধরি মিনতি করি
লয়ে চল বংশীধারী

হোক্ আনন্দময় ব্রজপুরী—লয়ে চল বংশীধারী

(মাতন)

‘‘সাঙরি শ্রীবৃন্দাবন, প্রাণ করে উচাটন,
আবেশে ধরয়ে রায়ের করে।।
শ্রীনিবাস হরিদাস, নাচে গায় প্রেভোল্লাস,
প্রভুর সাত্ত্বিক ভাবাবেশ।
ইহ রস প্রেমধন, পাওল জগজন,
গোবিন্দ মাগয়ে এক লেশ।।’’

গোরা নাচে অনুরাগে

জগন্নাথের রথে আগে—গোরা নাচে অনুরাগে

গৌর নাচে নীলাচলে

হরিবোল হরিবোল হরিবোল বলে—গৌর নাচে নীলাচলে

শ্রীগুণ্ডিচার দ্বারে রথারূঢ়
শ্রীশ্রীজগন্নাথ দেখিয়া।
কিশোরী ভাবেতে ভোরা

পরাণ গৌরাঙ্গ আমার—কিশোরী ভাবেতে ভোরা

ভাবোল্লাসে মত্ত হয়ে

নিজগণ সঙ্গে লয়ে—ভাবোল্লাসে মত্ত হয়ে

নাচিতে নাচিতে যায়

ভাবোল্লাসে গোরারায়—নাচিতে নাচিতে যায়

উপনীত গুণ্ডিচাদ্বারে
প্রেমস্বরে বলে গোরা

গুণ্ডিচাদ্বারে জগন্নাথ পেয়ে—প্রেমস্বরে বলে গোরা
জগন্নাথের বদন চেয়ে—প্রেমস্বরে বলে গোরা
ব্রজে কৃষ্ণ পেলাম মেনে—প্রেমস্বরে বলে গোরা

‘‘বহুদিন পরে, বঁধুয়া আইলে,
দেখা না হইত পরাণ গেলে।’’

বেঁচে আছি তাই দেখতে পেলাম

তোমার অদর্শনে বিরহেতে—বেঁচে আছি তাই দেখতে পেলাম
আসবে আসবে এই আশায়—বেঁচে আছি তাই দেখতে পেলাম
ঐ অলকারবৃত-বদন—বেঁচে আছি তাই দেখতে পেলাম
ঐ মুরলী-রঞ্জিত-বদন—বেঁচে আছি তাই দেখতে পেলাম
হাসিয়া বাঁশিয়া বদন—বেঁচে আছি তাই দেখতে পেলাম
‘নীলাচলে না আসিলে’—
স্বরূপের গণে গণ্য হয়ে—নীলাচলে না আসিলে

(মাতন)
এ ভোগ তো কোথাও মিলে না
সে সৌভাগ্য কোথাও মিলে না

বসতি না হইলে—সে সৌভগ্য কোথাও মিলে না
‘বসতি না হইলে’—
গম্ভীরা-নিকুঞ্জ-মাঝে—বসতি না করিলে

এ সুখ তো কোথাও মিলে না

নীলাচলে না আসিলে—এ সুখ তো কোথাও মিলে না

‘‘দেখা না হইত পরাণ গেলে।।
দুঃখিনীর দিন দুঃখেতে গেল।’’
তোমার কোন দোষ নাই বঁধু

সকলই আমার করমের দোষ—তোমার কোন দোষ নাই বঁধু

‘‘মথুরা নগরে ছিলে ত ভাল।।’’

পরাণ বঁধু তুমি ভাল ত ছিলে

যা ছিল তা হল কপালে—পরাণ বঁধু তুমি ভাল ত ছিলে

(মাতন)

‘‘সে সব দুঃখ কিছু না গণি।
তোমারই কুশলে কুশল মানি।।’’

বঁধু,–তোমার সুখেই আমার সুখ হে

আমার দুঃখ আমি গণি না—বঁধু,–তোমার সুখেই আমার সুখ হে
আপন দুঃখে মানি না দুঃখ—বঁধু,–তোমার সুখেই আমার সুখ হে
‘‘সে সব দুঃখ কিছু না গণি।
তোমারই কুশলে কুশল মানি।।
এত যে সহিল অবলা বলে।
ফাটিয়া যাইত পাষাণ হলে।।’’

অবলা বলে এতই সহিল

ফাটিয়া যাইতে হইলে শৈল—অবলা বলে এতই সহিল

(মাতন)
প্রাণ গৌরাঙ্গ-কিশোরী বলে

জগন্নাথের বদন হেরি’—প্রাণ-গৌরাঙ্গ-কিশোরী বলে

অবলা বলে সহিল এত

শৈল হলে ফেটে যেন—অবলা বলে সহিল এত

‘‘ফাটিয়া যাইত পাষাণ হলে।।’’

যা হবার তা হয়ে গেল
সকল দুঃখ দূরে গেল

পরাণ বঁধু ঘরে এল—সকল দুঃখ দূরে গেল

(মাতন)
এখন,–কারো ভয় করি না আমি

এখন,–‘‘গগনে উদয় করুক চন্দ্র।’’

গগন চাঁদ উদয় হও রে

তোমার,–যত কলা থাকে বিকাশ করে গগন চাঁদে উদয় হও রে

বড়ই দুঃখ দিয়েছ মোরে

পূর্ণিমাতে উদয় হয়ে—বড়ই দুঃখ দিয়েছ মোরে
গোকুল চাঁদ ছিল না ঘরে—তাই,–বড়ই দুঃখ দিয়েছ মোরে

(মাতন)
গগন চাঁদ উদয় হও রে
আর ত’ আমি ভয় করি না

গোকুল চাঁদ পেয়েছি ঘরে—আর ত’ আমি ভয় করি না

‘‘গগনে উদয় করুক চন্দ।
মলয় পবন বহুক মন্দ।।’’

বড় দুঃখ দিয়েছ মোরে

মৃদু মন্দ প্রবাহিত হয়ে—বড় দুঃখ দিয়েছ মোরে
মদন মোহন ছিল না ঘরে—বড় দুঃখ দিয়েছ মোরে

(মাতন)
আর ত’ আমি ভয় করি না
মলয় পবন মন্দ বও রে

আমার,–মদন মোহন এল ঘরে—মলয় পবন মন্দ বও রে

‘‘কোকিলা করুক পঞ্চম গান।’’

গাও গাও কোকিলা গাও রে

মধুর পঞ্চম স্বরে—গাও গাও কোকিলা গাও রে

বড়ই তাপ দিয়েছ মোরে

সদাই কুহু কুহু করে—বড়ই তাপ দিয়েছ মোরে
পঞ্চম তারে কুহু স্বরে—বড়ই তাপ দিয়েছ মোরে
পরাণ বঁধু ছিল না ঘরে—বড়ই তাপ দিয়েছ মোরে

আর ডরি না তোমার কুহু স্বরে

এখন,–মদনমোহন পেয়েছি ঘরে—আর ডরি না তোমার কুহু স্বরে

‘‘কোকিলা করুক পঞ্চম গান।
ভ্রমরা সদাই ধরুক তান।।’’

আর ত’ আমি ভয় করি না

মদনমোহন পেয়েছি ঘরে—আর ত’ আমি ভয় করি না
মদনমোহন পেয়েছি ঘরে’—
মদন দরপ দমন হিয়া—মনদমোহন পেয়েছি ঘরে

আর ত’ আমি ভয় করি না

‘‘কোকিলা করুক পঞ্চম গান।
ভ্রমরা সদাই ধরুক তান।।
বাশুলি আদেশে কহে চণ্ডীদাসে।
দুঃখ দূরে গেল সুখ বিলাসে।।’’

সকল দুঃখ দূরে গেল

আমার,–ব্রজের জীবন ব্রজে এল—সকল দুঃখ দূরে গেল

(মাতন)
ভাবাবেশে বলে গৌর-কিশোরী

রামরায়ের করে ধরি’—ভাবাবেশে বলে গৌর-কিশোরী
এই গুণ্ডিচার দ্বারে—ভাবাবেশে বলে গৌর-কিশোরী
জগন্নাথের রথের আগে—ভাবাবেশে বলে গৌর-কিশোরী

ও,–‘‘কি কহব রে সখী আনন্দ ওর।’’

স্বরূপ,–রামরায়ের করে ধরে বল

গৌরাঙ্গ-কিশোরী আমার—স্বরূপ,–রামরায়ের করে ধরে বলে
জগন্নাথের আগে দাঁড়াইয়া—স্বরূপ,–রামরায়ের করে ধরে বলে

‘‘কি কহব রে সখী আনন্দ ওর।
চিরদিনে মাধব মন্দিরে মোর।।’’

প্রাণবঁধু আইল ঘরে

আজ বহুদিন পরে—প্রাণবঁধু আইল ঘরে

কি কব আনন্দ ওর

মাধব মন্দিরে মোর—কি কব আনন্দ ওর

সখী তোরে মিনতি করি

স্বরূপ,–রামরায়ের করে ধরে বলে—সখী তোরে মিনতি করি

কেউ কিছু বলিস না

আমার পরাণ বঁধুকে তোরা—কেউ কিছু বলিস না
বিদেশে গিয়েছিল বলে যেন—কেউ কিছু বলিস না

চেয়ে দেখ বঁধুর মুখপানে
ভয়ে হয়েছে জড় সড়

তোরা কেউ কিছু বলিস বলে—ভয়ে হয়েছে জড় সড়

বঁধুর কোন দোষ নাই

সকলই আমার করম দোষ—বঁধুর কোন দোষ নাই

(মাতন)
সবাই তোষ মধুর সম্ভাষণে

আমার পরাণ বঁধুর সনে—সবাই তোষ মধুর সম্ভাষণে

‘‘চিরদিনে মাধব মন্দিরে মোর।।
পাপ সাধুকর যত দুঃখ দিল।
পিয়া মুখ দরশনে তত সুখ ভেল।।’’

সকল দুঃখ দূরে গেল

বৃন্দাবন—চাঁদের বদন হেরে—সকল দুঃখ দূরে গেল

‘‘আঁচল ভরিয়া যদি মহানিধি পাই।
তবু হাম পিয়া দূরদেশে না পাঠাই।।’’

আর দূরদেশে পাঠাব না

কেহ আনি মহানিধি দিলেও—আর দূরদেশে পাঠাব না
পরাণে পরাণ বেঁধে রাখব—আর দূরদেশে পাঠাব না

‘‘শীতের ওড়োনী পিয়া গিরীষের বা।’’

প্রাণ সই সই রে

তোরা,–মরমি তাই মরম কই—প্রাণ সই সই রে

শুন শুন মরম সই

গৌরাঙ্গ-কিশোরী বলে—শুন শুন মরম সই
স্বরূপ,–রামরায়ের গলা ধরি’ বলে—শুন শুন পরম সই
মরম কথা তোমারে কই—শুন শুন মরম সই

‘‘শীতের ওঢ়োনী পিয়া গিরীষের বা।
বরিষার ছত্র পিয়া দরিয়ার না।।’’

পরান,–বঁধু বিনে আর কেবা আছে

সুখ দিতে রাধার বল—পরাণ,–বঁধু বিনে আর কেবা আছে

কতগুণের বঁধু আমার
শীতে উষ্ণ নিদোঘে শীতল

আমার পরাণ বঁধুর অঙ্গ—শীতে উষ্ণ নিদাঘে শীতল

আর আমার কেবা আছে

আমার বলতে ব্রজমাঝে—আর আমার কেবা আছে
আমার শ্যাম বঁধু বিনে—আর আমার কেবা আছে

পোহাইল দুঃখের নিশি

ঐ হিয়ায় ধরে কালশশী—পোহাইল দুঃখের নিশি

‘‘ভনয়ে বিদ্যাপতি শুন বরনারী।
সুজনক দুঃখ দিন দুইচারি।।’’

গৌরাঙ্গ-কিশোরী বলে
দুঃখ কেবল সুখের লাগি’

সে দুঃখ ত’ দুঃখ নয়—দুঃখ কেবল সুখের লাগি’
এ দুঃখ সুখ বাড়ায়—দুঃখ কেবল সুখের লাগি’

ও ললিতে ও বিশোখে
সবে কর মঙ্গল আচরণ

ব্রজ-মঙ্গল ব্রজে এল—সবে কর মঙ্গল আচরণ

দাঁড়াও সবে সারি সারি

নিজ নিজ যুথ সঙ্গে করি’—দাঁড়াও সবে সারি সারি
নিকুঞ্জের পথে পথে—দাঁড়াও সবে সারি সারি
কুঞ্জে আইল কুঞ্জ-বিহারী—দাঁড়াও সবে সারি সারি

(মাতন)
মধুর গৌরাঙ্গ-লীলা

এই রথযাত্রায় নীলাচলে—মধুর গৌরাঙ্গ-লীলা

প্রাণ গৌরলীলা করালেন কীর্ত্তন

পরম করুণ শ্রীগুরুদেব-প্রাণ গৌরলীলা করালেন কীর্ত্তন
নিজ পারিষদ প্রেরণাতে—প্রাণ গৌরলীলা করালেন কীর্ত্তন

আজ,–প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠ্‌ছে

ত্রিকালসত্য লীলা জেনে—প্রাণ কেঁদে উঠ্‌ছে

এসেছেন সব গৌরাঙ্গগণ
এসেছেন শান্তিপুরনাথ

পরাণ গৌরাঙ্গ-আজ্ঞায়—এসেছেন শান্তিপুরনাথ
গৌড়দেশের ভক্ত লয়ে—এসেছেন শান্তিপুরনাথ
এই,–রথযাত্রায় নীলাচলে—এসেছেন শান্তিপুর

সবাই ত’ মিলেছেন

পরাণ গৌরাঙ্গ-সনে—সবাই ত’ মিলেছেন

এসেছেন শ্রীবাসপণ্ডিত

মালিনীদেবা সঙ্গে লয়ে—এসেছেন শ্রীবাসপণ্ডিত

এসেছেন সেন শিবানন্দ

নিজ,–পরিজন সঙ্গে লয়ে—এসেছেন যেন শিবানন্দ

এসেছেন বসু রামানন্দ

কুলীনগ্রামবাসী সঙ্গেলয়ে—এসেছেন বসু রামানন্দ
প্রভুর,–আদিষ্ট পট্টডুরী লয়ে—এসেছেন বসু রামানন্দ

এসেছেন মুরারী মুকুন্দ
এসেছেন ঠাকুর নরহরি

খণ্ডবাসিগণ সঙ্গে করি’—এসেছেন ঠাকুর নরহরি
প্রাণ গৌরাঙ্গ দেখ্‌ব বলে—এসেছেন ঠাকুর নরহরি

এসেছেন ঠাকুর উদ্ধারণ

সপ্তগ্রামবাসী সঙ্গে লয়ে—এসেছেন ঠাকুর উদ্ধারণ

এসেছেন,–ঝড়ঠাকুর কালিদাস
এসেছেন,–অভিরাম আর পরমেশ্বর দাস
এসেছেন,–সুন্দরানন্দঠাকুর গৌরদাস
সবাই ত’ এসেছেন

সঙ্গে নদীয়াবাসী-সবাই ত’ এসেছেন

এসেছেন শ্রীধর পণ্ডিত

থোড়,–মোচার ঝালি মাথায় লয়ে—এসেছেন শ্রীধর পণ্ডিত

এসেছেন রাঘব পণ্ডিত

দমবন্তী দত্ত ঝালি সাজায়ে—এসেছেন রাঘব পণ্ডিত

করেছেন ঝালি সমর্পণ

গৌর-সেবার লাগি’ গোবিন্দের করে—করেছেন ঝালি সমর্পণ

করেছেন গুণ্ডিচা মার্জ্জন

প্রাণ গৌর লয়ে সবাই মিলে—করেছেন গুণ্ডিচা মার্জ্জন

এসেছি বড় আশা করে
তখন জনম হয় নাই মোদের

যখন হল প্রকট বিহার—তখন জনম হয় নাই মোদের

দেখিতে তো পাই নাই মোরা

স্থাবর-জঙ্গম,–প্রেমো-মত্তকারী-লীলা—দেখিতে তো পাই নাই মোরা
প্রাণ গৌরাঙ্গের,–পাষাণ-গলান লীলা—দেখিতে তো পাই নাই মোরা

নিশিদিশি জ্বলছে হিয়া

সেই,–লীলা অদশর্ন শেল—নিশিদিশি জ্বলছে হিয়া

দগ্ধ প্রাণ জুড়াবে বলে

শ্রীগুরুদেবের কৃপা-প্রেরণায়—দগ্ধপ্রাণ জুড়াব বলে

এসেছি আমরা ভাই ভাই মিলে

শ্রীগুরুদেবের কৃপা প্রেরণায় এসেছি আমরা ভাই ভাই মিলে

বড় সাধ দেখব বলে

শ্রীরথযাত্রায় মধুর বিহার—বড় সাধ দেখব বলে

দেখিতে তো পেলাম না

ঝালি সমর্পণ লীলায় কই—দেখিতে তো পেলাম না

তাঁর দেখা ত’ পেলাম না

ঝালি সমর্পণ হল বটে—তার দেখা ত’ পেলাম না

গৌর দেখতে পেলাম না

কেঁদে কেঁদে ফিরে এলাম—গৌর দেখ্‌তে পেলাম না

আবার মনে আশা জাগ্‌ল

নিশি পরভাত হলে—আবার মনে আশা জাগ্‌ল

আজ গৌর দেখ্‌তে পাব

শ্রীগুণ্ডিচা মার্জ্জন লীলায়—আজ গৌর দেখ্‌তে পাব (মাতন)

দেখিতে তো পেলাম না

গুণ্ডিচা মার্জ্জন হল বটে—দেখিতে তো পেলাম না

অনুভব হল বটে

শ্রীগৌরাঙ্গের আবির্ভাব—অনুভব হল বটে
ভাবোন্মত্ত দশা দেখে—
সমবেত নরনারীর—ভাবোন্মত্ত দশা দেখে

অনুভব হল বটে

এসেছেন প্রাণ গৌর—অনুভব হল বটে

দেখিতে তো পেলাম না

সেই,–হরিবোলা রসের বদন—দেখিতে তো পেলম না
হতাশ হয়ে ফিরে এলাম—দেখিতে তো পেলাম না

আবার মনে আশা জাগ্‌ল

আজ নিশি পরভাতে—আবার মনে আশা জাগ্‌ল

আজ মোরা দেখ্‌তে পাব

জগন্নাথের রথের আগে—প্রাণগৌর দেখ্‌তে পাব
যাই আমরা ভাই ভাই মিলে—প্রাণগৌর দেখতে পাব
‘যাই আমরা ভাই ভাই মিলে’—
গৌরলীলা গান করিতে করিতে—যাই আমরা ভাই ভাই মিলে

প্রাণগৌর দেখ্‌তে পাব
উপনীত হলাম গুণ্ডিচার আগে
কই,–দেখিতে তো পেলাম না

গৌরলীলা গান করিলাম–কই,–দেখিতে তো পেলাম না

একবার দেখাও হে

ও জগন্নাথ-বংশীধারী—একবর দেখাও হে

যদি এনেছ কৃপা করি’

ওহে জগন্নাথ-বংশীধারী—যদি এনেছ কৃপা করি’

দেখাও তোমার গৌরাঙ্গ-মাধুরী

ওহে জগন্নাথ-বংশীধারী—দেখাও তোমার গৌরাঙ্গ-মাধুরী

ওগো, ভাগ্যবান নীলাচলবাসী
গৌরাঙ্গের গণ তোমরা
একবার দেখাও গো

ওগো তোমাদের পায়ে পড়ি—একবার দেখাও গো
চিতচোরা প্রাণগৌরাঙ্গ—একবার দেখাও গো

গুণ্ডিচা-মার্জ্জন শেষ হল
প্রাণ গৌর দেখ্‌তে পেলাম না

কেঁদে কেঁদে ফিরে গেলাম,–প্রাণ গৌর দেখ্‌তে পেলাম না

আবার আশা বুকে জাগ্‌ল

আশ নিশি পরভাতে—আবার আশা বুকে জাগ্‌ল

আজ নিশ্চয় দেখ্‌তে পাব

এই জগন্নাথের রথের আগে—আজ নিশ্চয় দেখ্‌তে পাব
চিতচোরা প্রাণগোরা—আজ নিশ্চয় দেখ্‌তে পাব
কিশোরীভাবিত মতি—আজ নিশ্চয় দেখতে পাব

হায় রে,–‘‘নীলাচলে যব মঝুনাথ।
দেখিব আপনে জগন্নাথ।।
রামরায় স্বরূপ লইয়া।
নিজভাব কহে উঘাড়িয়া।।
হায় রে,–মোর কি হইব হেন দিনে।
সে লীলা কি দেখিব নয়নে।।’’

বলে,–দেখ দেখ প্রাণ সহচরী

রামরায়ের করে ধরি’ বলে—দেখ দেখ প্রাণ সহচরী

এই সেই প্রাণের বংশীধারী

জগন্নাথ দেখায়ে বলে—এই সেই প্রাণের বংশীধারী
যার লাগি আমি ঝুরে মরি—এই সেই প্রাণের বংশীধারী

‘‘মোর কি হইবে হেন দিনে।।
সে কথা কি শুনিব শ্রবণে।।’’

হায়—আমি কি শুন্‌তে পাব

সে হৃৎকর্ণ রসায়ণ কথা—আমি কি শুন্‌তে পাব

পুন কিয়ে জগন্নাথদেবে।
গুণ্ডিচামন্দিরে চলি যাবে।।
‘‘প্রভু মোর সাত সম্প্রদায়।
করিব কীর্ত্তন উভরায়।।
মহানৃত্য কীর্ত্তন-বিলাস।
সাত ঠাঁই হইবে প্রকাশ।।
মোর কি এমন দশা হব।
সে লীলা কি নয়নে হেরিব।।

প্রাণ ভরে দেখ্‌ব মোরা

রথের আগে নাচ্‌বে গোরা—প্রাণ ভরে দে্‌খব মোরা

এই আশায় বুক বেঁধে
এলাম আমরা ভাই ভাই মিলে

পাগলা প্রভু ! তোমায় হৃদে ধরে—এলাম আমরা ভাই ভাই মিলে

আজ একবার দেখা দাও

প্রাণগৌর লয়ে কোথা বিহরিছ—আজ একবার দেখা দাও

আমরা কিছুই তো জান্‌তাম না

কে গৌর, তার কিবা লীলা—আমরা কিছুই তো জান্‌তাম না

নিজগুণে জানাইলে

সঙ্গে করে লয়ে এসে—নিজগুণে জানাইলে

প্রাণ গৌরলীলা ভোগ করালে

ভাবাবেশে কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—প্রাণগৌরলীলা ভোগ করালে

দেখাব বলে বলেছিলে

ফাঁকি দিয়ে লুকাইলে—দেখাব বলে বলেছিলে

লুকাইয়ে করছ খেলা

শ্রীরথযাত্রায় এই নীলাচলে—লুকাইয়ে করছ খেলা
পরাণ নিতাই গৌরাঙ্গ লয়ে—লুকাইয়ে করছ খেলা

আমরা এসেছি তোমারই আকর্ষণে
আজ একবার দেখা দাও

যদি, নিজগুণে এনেছ টেনে—একবার দেখা দাও
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—একবার দেখা দাও

বহুদিন তো দেখি নাই
একবার দেখাও হে

পরম করুণ শ্রীগুরুদেব—একবার দেখাও হে
জগন্নাথের রথের আগে—একবার দেখাও হে
‘জগন্নাথের রথের আগে’—
এই গুণ্ডিচার দ্বারে—জগন্নাথের রথের আগে

একবার দেখাও হে
সেই গৌর দেখাও হে

ভাবোল্লাসে ভোরা গোরা—সেই গৌর দেখাও হে

কোথায় আমার পাগলা প্রভু
গৌর গলয়ে কর্‌ছ খেলা

জগন্নাথের আগে আগে—গৌর লয়ে কর্‌ছ খেলা
‘জগন্নাথের আগে আগে’—
কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—জগন্নাথের আগে আগে

গৌর লয়ে কর্‌ছ খেলা
একবার দেখা দাও

কৃপা করে এনেছ যদি—একবার দেখা দাও
রথের আগে গৌর লয়ে—একবার দেখা দাও

(মাতন)
একবার দেখাও গো

পরমকরুণ শ্রীগুরুদেব—একবার দেখাও গো
জগন্নাথের রথের আগে—একবার দেখাও গো
‘জগন্নাথের রথের আগে’—
এই গুণ্ডিচা দ্বারে—জগন্নাথের রথের আগে

সেই গৌর দেখাও হে

ভাবোল্লাসে ভোরা গৌর—সেই গৌর দেখাও হে

প্রাণগৌর দেখাও হে

পরমকরুণ শ্রীগুরুদেব—প্রাণগৌর দেখাও হে

দেখা দাও প্রাণগৌর সঙ্গে

সব পরিকর লয়ে—দেখা দাও প্রাণগৌর সঙ্গে

দেখাও মোদের প্রাণগৌরাঙ্গে

নিতাই অদ্বৈত সঙ্গে—দেখাও মোদের প্রাণগৌরাঙ্গে
কীর্ত্তন নটনরঙ্গে—দেখাও মোদের প্রাণগৌরাঙ্গে

একবার দেখাও হে

ওহে গৌরপ্রিয়-পরিকর—একবার দেখা হে

কোথা বা আছ হে

গৌর লয়ে এইরথের আগে—কোথা বা আছ হে

একবার দেখাও গো
ভয় নাই আমরা লয়ে যাব না

তোমাদের গৌর তোমাদের থাক্‌বে—ভয় নাই আমরা লয়ে যাব না

গৌর লয়ে কিবা কর্‌বো

দুর্ব্বাসনার কিঙ্কর মোরা—গৌর ল’য়ে কিবা কর্‌বো
কপটতার মূরতি মোরা—গৌর ল’য়ে কিবা কর্‌বো
অভিমানের খনি মোরা—গৌর ল’য়ে কিবা কর্‌বো
ভালবাস্‌তে জানি না—গৌর ল’য়ে কিবা কর্‌বো

কোন্ গুণে গৌরাঙ্গ পাব

সনাতনের সাধনের ধন—কোন্‌ গুণে গৌরাঙ্গ পাব

গৌর পাবার অধিকার নাই
একবার দেখ্‌ব

চিতচোরা মূরতিখানি—একবার দেখ্‌ব

পরীক্ষা কর্‌বো

একবার দেখ্‌বো—পরীক্ষা কর্‌বো

মূরতি কত শকতি ধরে

যার, নামে ঘরের বাহির করে—সেই,–মূরতি কত শকতি ধরে

(মাতন)
কেউ যে কথা কইলে না

তবে কি গৌর দেখাবে না—কেউ যে কথা কইলে না

কার কাছে যাব রে

কেবা গৌর দেখাবে—কার কাছে যাব রে

বল বল ও বলদেব
দয়া করে বলে দাও
কোথা বা নাচ্‌ছেন

রাধাভাবদ্যুতি গোরা—কোথা বা নাচ্‌ছেন
শচীদুলাল প্রাণ-গোরা—কোথা বা নাচ্‌ছেন

বলে দাও সুভদ্রা দেবী

কোথা গেলে গৌর পাব—বলে দাও সুভদ্রা দেবী

বল বল জগন্নাথ

তোমার,–গৌরমুরতি কোথায় আছে—বল বল জগন্নাথ
যা দেখে মুগ্ধ তুমি—সেই মুরতি কোথায় আছে

একবার দেখাও হে

সেই,–চিতচোরা মূরতি-খানি—একবার দেখাও হে
চিতচোর গৌর-কিশোর—একবার দেখাও হে

তুমিও কথা কইলে না
তবে,–আর কার কাছে যাব রে
কে এমন বান্ধব আছে

প্রাণগৌর দেখাইবে—কে এমন বান্ধব আছে

আমার বল্‌তে আর কে আছে
পরমকরুণ শ্রীগুরুদেব
কিছুই ত জান্‌তাম না

কোথা নীলাচল কেবা জগন্নাথ—কিছুই ত জান্‌তাম না

কৃপা করে আনিলেন

রথযাত্রায় সঙ্গে করে—কৃপা করে আনিলেন

গৌরলীলা জানাইলেন

ভাবাবেশে কীর্ত্তনরঙ্গে—গৌরলীলা জানাইলেন

দেখাবে বলে বলেছিলে

ফাঁকি দিয়ে লুকাইলে—দেখাবে বলে বলেছিলে

লুকাইয়ে কর্‌ছ খেলা

শ্রীরথযাত্রায় এই নীলাচলে—লুকাইয়ে কর্‌ছ খেলা
পরাণ,–নিতাই গৌরাঙ্গ লয়ে—লুকাইয়ে কর্‌ছ খেলা

গৌর লয়ে কর্‌ছ খেলা
এনেছ কৃপা-আকর্ষণে

তোমার দাস-দাসীগণে এনেছ কৃপা-আকর্ষণে
রথযাত্রায় নীলাচলে-এনেছ কৃপা-আকর্ষণে

আজ একবার দেখা দাও

পরম করুণ শ্রীগুরুদেব—আজ একবার দেখা দাও
যদি,–নিজগুণে এনেছ টেনে—আজ একবার দেখা দাও
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—আজ একবার দেখা দাও

দেখা দাও এই গুণ্ডিচা-দ্বারে

জগন্নাথের রথের আগে—দেখা দাও এই গুণ্ডিচা-দ্বারে
সপরিকর-গৌর-লয়ে—দেখা দাও এই গুণ্ডিচা-দ্বারে

হৃদিপটে এঁকে ল’ব

শ্রীগুরুগৌরাঙ্গ-বিহার—হৃদিপটে এঁকে লব

প্রাণে প্রাণে স্ফুরণ করাও

ভাবোল্লাসে মিলনরঙ্গ—প্রাণে প্রাণে স্ফুরণ করাও

প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও

ভাবোল্লাসে মিলনরঙ্গ—প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও
‘ভাবোল্লাসে মিলনরঙ্গ’
জগন্নাথ নন্দনন্দন সনে—ভাবোল্লাসে মিলনরঙ্গ

প্রাণে প্রাণে ভোগ করাও

গৌর-কিশোরীর মিলনরঙ্গ—প্রাণে প্রাণেমিলনরঙ্গ
প্রাণে প্রাণে ভোগ করাও
গৌর-কিশোরীর মিলনরঙ্গ—প্রাণে প্রাণে ভোগ করাও
‘গৌর-কিশোরীর মিলনরঙ্গ’—
জগন্নাথ নন্দনন্দন সনে—গৌরকিশোরীর মিলনরঙ্গে

(মাতন)
প্রাণে প্রাণে ভোগ করাও
প্রাণে প্রাণে গাই মোরা

ভাই ভাই ভাই মিলে—প্রাণে প্রাণে গাই মোরা

পাগল হয়ে বেড়াব

ভাই ভাই ভাই মিলে—পাগল হয়ে বেড়াব
নীলাচলের পথে পথে—পাগল হয়ে বেড়াব

প্রাণ ভরে বলবো

‘‘গৌরাঙ্গ রাধা জগন্নাথ নন্দনন্দন।
গুণ্ডিচা-নিকুঞ্জবনে দোঁহাকার হল মিলন।।’’

গৌরকিশোরীর মিলনরঙ্গ

জগন্নাথ নন্দনন্দন সঙ্গে—গৌরকিশোরীর মিলনরঙ্গ

[মাতন]

“গুণ্ডিচা-নিকুঞ্জবনে দোহাঁকার হল মিলন।”

আবেশে বলে সব
চলো গো দিদি ঘরে যাই

যা জানে তা করুক রাই—চল গো দিদি ঘরে যাই
‘যা জানে তা করুক রাই’
আপন পরাণ বঁধু লয়ে—যা জানে তা করুক রাই

[মাতন]

‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে নাম।।
‘‘গৌরহরিবোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।।

‘‘শ্রীগুরুপ্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।।’’


—–০—–



অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ