‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
প্রাণের ঠাকুর রাধারমণ—পরমকরুণ শ্রীগুরুদেব
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—পরমকরুণ শ্রীগুরুদেব
কোথা নীলাচল কে জগন্নাথ—কিছুই তো জানতাম না
সংসার-কূপ হতে তুলে এনে—কৃপা করে টেনে আনিলে
কেশে ধরে নিজগুণে—কৃপা করে টেনে আনলে
ভাবাবেশে কীত্তনরঙ্গে—গৌরলীলা জানাইলে
ফাঁকি দিয়ে লুকাইলে—দেখাব বলে বলেছিলে
এই মধুর শ্রীনীলাচলে—লুকাইয়ে করছ খেলা
প্রিয়গণ সঙ্গে নিয়ে—লুকাইয়ে করছ খেলা
ত্রিকালসত্য-গৌরলীলায়—লুকাইয়ে করছ খেলা
আমরা ভাই ভাই মিলে
তোমারই কৃপা-ইঙ্গিতে—এলাম আমরা ভাই ভাই মিলে
প্রাণগৌরলীলা দেখব বলে—এলাম আমরা ভাই ভাই মিলে
হেন দিনে কোথা প্রভু শ্রীরাধারমণ।।’’
প্রাণগৌর-গুণ গাইতে গাইতে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
হেলে দুলে প্রেমতরঙ্গে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
ভাই ভাই ভাই মিলে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
রাঘবের,–অনুরাগের কথা কইতে কইতে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
ওহে,–নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—তেমনি করে এস প্রভু
তোমার প্রিয়গণ সঙ্গে লয়ে—কেমনি করে সে প্রভু
বাহু পসারিয়ে শকতি সঞ্চারিয়ে—তেমনি করে এস প্রভু
বাহু পসারিয়ে হিয়ায় ধরে—শকতি সঞ্চার কর
তেমনি করে,–কর মোদের শকতি সঞ্চার
হৃদয়ে,–গৌরলীলা স্ফূর্ত্তি হোক্ সবার—তেমনি করে,–কর মোদের শকতি সঞ্চার
সঙ্গে সঙ্গে গাই মোরা—ভাবাবেশে গাও তুমি
তোমার আনুগত্যে গাই মোরা—ভাবাবেশে গাও তুমি
প্রাণভরে গাই মোরা—ভাবাবেশে গাও তুমি
তোমার আলিঙ্গনে লীলিাস্ফুর্ত্তিতে—প্রাণভরে গাই মোরা
তোমার বদন হেরে লীলাস্ফুর্ত্তিতে—প্রাণভরে গাই মোরা
নীলাচলে আইল রাঘব কাঁদিয়া কাঁদিয়া।।’’
দয়মন্তীর,–দত্ত-দ্রব্যের ঝালি মাথে—যায় রাঘব কেঁদে কেঁদে
ঝালি মাথে—নীলাচল পথে—যায় রাঘব কেঁদে কেঁদে
হা,–প্রাণ শচীদুলাল বলে—রাঘব ভাসে নয়ন-জলে
ঝালি মাথে নীলাচল পথে—যায় রাঘব কেঁদে কেঁদে
ঝালি মাথে নীলাচল-পথে—‘হা গৌর’ বলে রাঘব কাঁদে
গৌর বলে কাঁদতে কাঁদতে—রাঘব,–যায় নীলাচল-পথে
প্রণমিয়া শ্রীমন্দিরে—আসি’ রাঘব সিংহদ্বারে
আসি’ রাঘব সিংহদ্বারে—যারে দেখে সুধায় তারে
নীলাচল-বাসী দেখি কাতরে শুধায়।।’’
বয়ান ভাসে নয়ান-নীরে—যারে দেখে সুধায় তারে
করজোড়ে আসি কাতরে—যারে দেখে সুধায় তারে
দময়ন্তী,–দত্ত-দ্রব্য ঝালি মাথায় করে—যারে দেখে সুধায় তারে
কোন পথে যাব গো—বলে,–দয়া করে বলে দাও
জনে জনে রাঘব সুধায়—কোন পথে যাব গে
বলে দাও নীলাচল-বাসী—কোন পথে যাব গো
কাশীমিশ্রালয়ে আমি—কোন পথে যাব গো
বলে দাও গো দয়া করে—আমি,–যাব কাশীমিশ্রের ঘরে
দেখিব যে প্রাণ-গোরারে—যাব কাশীমিশ্রের ঘরে
কোন পথে,–কোথা গেলে তার দেখা পাব—বলে দাও গো দয়া করে
বলে দাও গো নীলাচলবাসী—কোন পথে গেলে দেখা পাব
নাম যার শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য।’’
গৌরবরণ নবীন-সন্ন্যাসী—কোন পথে গেলে তার দেখা পাব
নবীন-সন্ন্যাসী কিশোর বয়স—কোন পথে গেলে তার দেখা পাব
আমার,–শচীসূত গুণধান—যার,–শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য নাম
দেখব প্রাণের গৌরহরি—যাব কাশীমিশ্রের বাড়ী
নিভৃত-গম্ভীরা—ঘরে—দেখব আমার প্রাণগোরা
আসি’ কাশীমিশ্রের দ্বারে—রাঘব সুধায় করযোড়ে
যারে কাছে দেখে তারে—রাঘব সুধায় করয়োড়ে
করযোড়ে রাঘব সুধায়—এই কি কাশীমিশ্রের বাড়ী
তোমরা বলে দাও প্রতিবাসী—এই কি কাশীমিশ্র্রের বাড়ী
পাগল হয়ে ছুটছে সব নর-নারী—এই কি কাশীমিশ্রের বাড়ী
ঐ যে,–ছুটছে সব নর-নারী—তোমরা, বলে দাও প্রতিবাসী
‘ঐ যে,–ছুটিছে সব নর-নারী’—
এখানে কি, বসতি করেন গৌরহরি—ঐ যে, ছুটছে সব নর-নারী
বলে,–কোথা প্রাণ-গৌরহরি—কেঁদে কেঁদে যায় দলে দলে
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য বলে—কেঁদে কেঁদে যায় দলে দলে
কেঁদে কেঁদে যায় দলে দলে গৌর দেখা দাও বলে
দয়া করে লয়ে চল
কোথা আছ,–কাশীমিশ্র্রালয়বাসী দয়া করে লয়ে চল
আমরা,–দেখব প্রাণের গৌরহরি—আমাদের,–লয়ে চল ত্বরা করি
তোমরা কি গম্ভীরাবাসী—বল বল,–কোথা প্রাণ-গোরাশশী
তোমরা কি, কাশীমিশ্রালয় বল বল,–কোথা প্রাণ-গোরাশশী
জগবাসীর প্রাণগোর—একবার দেখব মোরা
নদেবাসীর প্রাণগোরা—একবার দেখব মোরা
লয়ে চল সঙ্গে করে
গৌর দেখব নয়ন-ভরে—লয়ে চল সঙ্গে করে
আসি’ রাঘব গম্ভীরার দ্বারে—ব্যাকুল হয়ে কাঁদে রে
কোথা প্রাণ-বিশ্বম্ভর বলে—ব্যাকুল হয়ে কাঁদে রে
আমরা,–গৌড় হইতে আসিয়াছি দেখিতে তোমায়।।’’
কোথা প্রাণ-বিশ্বম্ভর বলে—এই,–গম্ভীরার দ্বারে রাঘব ডাকে
বলে,–কোথা আছ প্রাণগোরা—দু’নয়নে বহে ধারা
এই ত গম্ভীরা ঘর—বলে,–কোথা আছ বিশ্বম্ভর
গৌড় হতে আসিয়াছি দেখিতে তোমায়।।’’
প্রাণগৌর তোমায় দেখব বলে—আমরা এলাম সবাই মিলে
হরিবোলা রসের বদন—বহুদিন তো দেখি নাই
চাঁদ বিনে চকোর উপবাসী আছে—দাঁড়াও রসের বদন হেরি
চাঁদ-বদন না হেরিয়ে—চকোর-আঁখি উপবাসা আছে
বারেক করুণা করি দেহ দরশন।।’’
যদি,–নিজগুণে এনেছ টেনে—একবার দেখা দাও
‘যদি,–নিজগুণে এনেছ টেনে’—
ব্রজ-গৌড়-মণ্ডল হতে—যদি,–নিজগুণে এনেছ টেনে
বলাৎকারে এনেছ টেনে—আসি নাই আমরা আপন-মনে
যদি,–এনেছ টেনে বলাৎকারে—একবার,–দেখা দাও দয়া করে
তোমার কৃপা আকর্ষণে-সবাই তো এসেছে
শ্রীগৌড়-মণ্ডল হতে—সবাই তো এসেছে
যাঁদের,–পরায়েছ প্রেমের ফাঁসী তোমার,–অনুগত সব দাস-দাসী
তাঁদের আনুগত্যে আমরা এসেছি—তারা আগে আগে এসেছে
আচার্য্যরত্ন, আচার্য্যনিধি শ্রীবাসাদি ধন্য।।
বাসুদেব দত্ত মুরারি গুপ্ত গঙ্গদাস।
শ্রীমান্ সেন শ্রীমান্ পণ্ডিত অকিঞ্চন কৃষ্ণদাস।।
মুরারি পণ্ডিত গরুড় পণ্ডিত বুদ্ধিমন্ত খাঁন।’’
প্রাণগৌর তোমায় দেখবে বলে—সবাই তো এসেছে
তোমার চাঁদমুখ দেখবে বলে—সবাই তো এসেছে
ঐ রসের বদন দেখবে বলে—সবাই তো এসেছে
হাসিমাখা—হরিবোলা, রসের বদন দেখবে বলে—সবাই তো এসেছে
সঞ্জয় পুরুষোত্তম পণ্ডিত ভগবান।।
শুক্লাম্বর শিবানন্দ আর যত জন।
সবাই আইলা নাম কে করে গণন।।
কুলীন-গ্রামী খণ্ডবাসী বসু রামানন্দ।’’
বসু রামানন্দ পট্টডুবি লয়ে এসেছেন
খণ্ডবাসী সঙ্গে লয়ে—এসেছেন ঠাকুর নরহবি
প্রাণগৌর তোমা বিনে—তারা তো আন জানে না
আইলা দেখিতে সবে তুয়া মুখচন্দ্র।।’’
সবাই তো এসেছে
এসেছে দত্ত উদ্ধারণ—সবাই তো এসেছে
সপ্তগ্রামবাসী সঙ্গে লয়ে,–এসেছে দত্ত উদ্ধারণ—সবাই তো এসেছে
এসেছে কালিদাস ঝড়, ঠাকুর—সবাই তো এসেছে
দয়মন্তী-দত্ত দ্রব্য যতনে লইয়া।’’
বাৎসল্যবতী দয়মন্তী—যতন করে দিয়েছেন
সম্বৎসর ভোগ করবে বলে—যতন করে দিয়েছেন
বাৎসল্য-প্রেমে হয়ে বিভোর—দিয়াছেন নানা উপহার
আইলাম নীলাচলে ঝালি সাজাইয়া।।
তোমা না দেখিয়ে সবে বিষাদে মগন
একবার দেখা দাও শ্রীশচীনন্দন।।’’
শচীদুলাল প্রাণগৌর—একবার দেখা দাও
নিজগুণের সাধ মিটাও—একবার দেখা দাও
এই গম্ভীরার দ্বারেতে আসি’—এত বলি রাঘব পণ্ডিত
মনোভাব বুঝি তুমি দিজ গৌরাঙ্গে রে।।
দময়ন্তী দেবী সাক্ষাৎ বাৎসল্যের মূর্ত্তি।
দিয়াছেন গৌরাঙ্গে করি যত আত্তি।।’’
বাৎসল্য-মাখা দ্রব্য যত—দিয়াছেন কত দ্রব্য
দিয়াছেন দেবী দময়ন্তী—বাৎসল্য-মাখা দ্রব্য যত
এই গম্ভীরার দ্বারে রাঘব বলে—ধর ধর লও হে গোবিন্দ
বৎসরেক প্রভু যেন করেন উপভোগ।।’’
তুমি,–সময় জেনে যোগাইও—ধর ধর লও হে গোবিন্দ
দময়ন্তীর, দত্ত ভোগ্য দ্রব্য সকল—ধর ধর লও হে গোবিন্দ
এই গম্ভীরার দ্বারে রাঘব বলে—ধর ধর লও হে গোবিন্দ
নেবু আদা আম্র কলি বিবিধ প্রকার।।’’
সময় জেনে যোগাইও
সেবা পেয়েছ কাছে থাক—সময় জেনে যোাগাইও
চূর্ণ করি দিয়াছেন পুরাণ শুকুতা।।’’
প্রাণ-গৌরাঙ্গে রতি অতি—বাৎসল্যবতী দময়ন্তী
বাৎসল্যভাবে দিয়াছেন—পেটে আম হবে বলে
আমদোষ নাশিবে বোলে—বাৎসল্যভাবে দিয়াছেন
শুকুতা বলি’ অবজ্ঞা না করিহ চিতে।
শুকুতায় যে প্রীতি প্রভুর নহে পঞ্চামৃতে।।
ধনিয়া, মহুরী তণ্ডুল চূর্ণ করিয়া।
লাড়ু বাঁধ দিয়াছেন চিনি পাক দিয়া।।
শুঁটিখণ্ড লাড়ু হয় আমপিত্ত হর।
পৃথক পৃথক বাঁধা আছে কুথলি ভিতর।।‘’
সময় জেনে যোগাাইও—ধর ধর লও হে গোবিন্দ
শারিরীক অবস্থা বুঝি—সময় জেনে যোগাইও
কত নাম লব যত প্রকার আচার।।
নারিকেল-খণ্ড আর লাড়ু গঙ্গাজল।
চিরস্থায়ী খণ্ড বিকার দিয়েছে সকল।।’’
এই গম্ভীরার দ্বারে রাঘব বলে—ধর ধর লও হে গোবিন্দ
দিয়াছেন বড় বড় কুথলিতে ভরি।।
কতক চিঁড়া হুড়ুম করি ঘৃতেতে ভাজিয়া।
চিনি পাকে লাড়ু কৈল কর্পূরাদি দিয়া।।
শালি-তণ্ডুল-ভাজা চূর্ণ করিয়া।
ঘৃতসিক্তে লাড়ু কৈল চিনি পাক দিয়া।
কর্পূর মরিচ এলাচ লবঙ্গ রসবাস।
চূর্ণ করি লাড়ু কৈল পরম সুবাস।।’’
এই,–গম্বীরার দ্বারে রাঘব বলে—ধর ধর লও হে গোবিন্দ
ঐছে নানা দ্রব্য দিল সহস্র প্রকাস।।’’
পাপড়ী করিয়া দিল গন্ধ দ্রব্য দিয়া।।
কহিতে না পারি নাম কতেক প্রকার।
দিয়াছেন দময়ন্তী প্রীতি-উপহার।।’’
দময়ন্তীর প্রীতির দ্রব্য—ধর ধর লও হে গোবিন্দ
মাথায় করে আমি ধন্য
প্রভুর দেবার দ্রব্য—মাথায় করে আমি ধন্য
যতন করিয়া সব করাইও ভোজন।
যেমতে পায়েন প্রীতি শ্রীশচীনন্দন।’’
অবসর জানি দিও প্রাণ-বিশ্বম্ভর।।’’
সদাই প্রভুর কাছে থাক—তোমার ভাগ্যের সীমা নাই
প্রভুর,–কাছে থাক সেবা কর—তোমার ভাগ্যের সীমা নাই
প্রভুর,–সঙ্গে থাকব সেবা করব—আমার ভাগ্যে হল না
ভোজন-গৃহের কোণে গোবিন্দ রাখিল।।’’
ত্রিকাল-সত্য-লীলায়—ঝালি,–সমর্পিলেন রাঘব-পণ্ডিত
গৌরের,–সেবার জন্য যতন করে—রাখিলেন গোবিন্দদাস
ভোজন-গৃহের কোণে—রাখিলেন গোবিন্দদাস
ত্রিকাল-সত্য গৌর-লীলা—ভাগ্যবান জনে দেখিলেন
দাঁড়ায়ে ছিলেন এক পাশে
অতিদৈন্যে শ্রীধর পণ্ডিত—দাঁড়ায়ে ছিলেন এক পাশে
থোড়,–মোচার ঝালি মাথায় লয়ে—দাঁড়ায়ে ছিলেন এক পাশে
স্বভাবে দীনভাবে—দাঁড়ায়ে ছিলেন এক পাশে
কেমন করে দিব আমি
এই সামান্য থোড় মোচা—কেমন করে দিব আমি
কত দুখাদ্য সুস্বাস্য দ্রব্য—এনেছেন রাঘব পণ্ডিত
দেবী দময়ন্তীর দত্ত দ্রব্য—এনেছেন রাঘব পণ্ডিত
নানাবিধ উপহার—এনেছেন রাঘব পণ্ডিত
কেমন করে দিব আমি
এই সামান্য থোড় মোচা—তার আগে,–কেমন করে দিব আমি
ব্যাকুল হয়ে ডাকছেন
শ্রীধর-পণ্ডিত আপন স্বভাবে—ব্যাকুল হয়ে ডাকছেন
ঝালি—মাথে শ্রীধর কাঁদে—কোথা বা আছ হে
আপন-স্বভাবে শ্রীধর ডাকেন—কোথায় আছ নিমাই পণ্ডিত
নদীয়ার বাজারে—আর কেন যাওনা তুমি
আমি নিতুই চাই পথ পানে,–আর কেন যাওনা তুমি
থোড়,–মোচা লয়ে বাজারে বসে—আমি,–নিতুই চাই পথ-পানে
কতক্ষণে আসবে বলে—আমি,–নিতুই চাই পথ-পানে
‘কতক্ষণে আসবে বলে’—
চিতচোর শচীনন্দ–কতক্ষণে আসবে বলে
কতক্ষণে আসবে বলে
তাই,–চেয়ে থাাকি পথ-পানে
তুমি,–হাত হতে নিবে কাড়ি
থোড় মোচা জোর করি—তুমি,–হাত হতে নিবে কাড়ি
দেখতে পাই না গোরাশশী—থোড়,–মোচা লয়ে বাজারে বসি
দেখিতে তো পাই না
সুধা’লাম নদীয়া বাসিরে
বহুদিন না দেখতে পেয়ে—সুধালাম নদীয়াবাসিরে
গৌর কেন আসে না বাজারে—সুধালাম নদীয়াবাসিরে
তুমি এসেছ নীলাচলে—তারা সবাই বলে দিলে
সবাই আসছেন তাঁদের সঙ্গে—তাই আমি এসেছি,
থোড় মোচা মাথায় লয়ে—তাই আমি এসেছি
প্রাণ-শচীদুলালিয়া—আর কি নদে যাহে না
আমার—হাত হতে থোড় মোচা—তেমনি করে কেড়ে নেবে না
আমার,–হাত হতে কেড়ে লয়ে—তেমনি করে নাচবে না
আমার হাত হতে,–থোড় মোচা কেড়ে লয়ে—তেমনি করে নাচবে না
এলাম নীলাচলপুরে
বহুদিন পথ দেখে—এলাম নীলাচলপুরে
থোড়,–মোচার ঝালি মাথার করে—এলাম নীলাচলপুরে
কোথা প্রাণ-শচীদুলাল—তেমনি করে কেড়ে নাও
হাসিমুখে আমার পানে চেয়ে—তেমনি করে কেড়ে নাও
বুঝি,–তাই এসেছ নদে ছেড়ে
ইচ্ছা করে দিই নাই বলে—বুঝি,–তাই এসেছ নদে ছেড়ে
নিতুই নিতুই যোগাইব
আমি থাকলাম এই নীলাচলে—নিতুই নিতুই যোগাইব
এই কাশীমিশ্রের ঘরে—আমি,–নিতুই দিব থোড় মোচা
আর,–কেড়ে নিতে হবে না—আমি,–নিতুই দিব থোড় মোচা
নিতুই দিব থোড় মোচা—প্রাণ-গৌর তোমার সেবার লাগি
কোথা প্রাণ-শচীনন্দন
একবার দেখা দাও—কোথা প্রাণ-শচীনন্দন (মাতন)
এই সে গম্ভীরার দ্বার
ত্রিকালসত্য-লীলায়—আজ একবার দেখা দাও
কোথা গৌর প্রাণ-গৌর—আজ একবার দেখা দাও
ত্রিকাল-সত্য-লীলায়—ঝালি সমর্পিলেন শ্রীধর পণ্ডিত
আজও হতেছেন সেই লীলা
সবাই এসেছেন নীলাচলে
শ্রীগৌড়মণ্ডল-বাসী—সবাই এসেছেন নীলাচলে
দময়ন্তী-দত্ত ঝালি লয়ে—এসেছেন রাঘব পণ্ডিত
থোড়,–মোচার ঝালি মাথায় লয়ে—এসেছেন শ্রীধর পণ্ডিত
অঙ্গীকার করেছেন প্রভু—করেছেন ঝালি সমর্পণ
দময়ন্তী-দত্ত প্রীতির উপহার—অঙ্গীকার করেছেন প্রভু
তোমাদের প্রীতি উপহার—অঙ্গীকার করেছেন প্রভু
শ্রীরাঘবের ঝালির প্রীতে—একবার দেখা দাও
শ্রীধরের ঝালির প্রীতে—একবার দেখা দাও
বড় আশা করে এসেছি মোরা—একবার দেখা দাও
গৌর প্রাণ গোর—একবার দেখা দাও
তোমার,–গৃহবাসী গোরাশশী—একবার দেখাও হে
কোথা আছ কাশীমিশ্র—একবার দেখাও হে
কোথা আছ গোবিন্দদাস—একবার দেখাও হে
শচীমায়ের পোষ্য পাখী—দেখব মোরা গোরাশশী
তোমাদের পাখী তোমাদের থাকবে—ভয় নাই আমরা লয়ে যাব না
ঐ চিতচোরা মূরতিখানি—শুধু একবার দেখব
তোমাদের গৌর তোমাদের থাকবে—শুধু একবার দেখব
কি দিয়ে তাঁরে বেঁধে রাখবে—ভয় নাই আমরা লয়ে যাব না
ভালবাসিতে পারি নাই বলে—তাই এসেছে পালাইয়ে
তাতেও সুখী মোরা
গৌর,–এখানে থেকে সুখ পায়—তাতেও সুখী মোরা
ঐ রসের বদন কিনা—আমাদের আর কিবা আছে
ঐ হরিবোলা রসের বদন—শুধু একবার দেখব
নিত্যলীলায় কাছে থাক
তুমি ত এখানে আছ—নিত্যলীলায় কাছে থাক
প্রকটলীলা দেখাবে বলে—ফাঁকি দিয়ে লুকাইলে
‘প্রকটলীলা দেখাবে বলে’—
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—প্রকটলীলা দেখাবে বলে,
যদি,–কৃপাকর্ষণে এনেছ টেনে
আমরা তো আসি নাই—কৃপাকর্ষণে এনেছ টেনে
‘আমরা তো আসি নাই’—
অহৈতুকী-কৃপা-স্বভাবে,–নিজগুণে এনেছ টেনে—আমরা তো আসি নাই
পরমকরুণ শ্রীগুরুদেব—একবার দেখাও হে
কণক রুচির গৌর
সর্ব্বচিত্তৈক চৌর
প্রকৃতি মধুর দেহ
পূর্ণ লাবণ্য গেহ
সৌন্দর্য্যের সার মাধুর্য্যের পার
মহাভাবের আধার—সৌন্দর্য্যের সার মাধুর্য্যের পার
তোমার,–গৃহবাসী গোরাশশী—একবার দেখাও হে
তবে কি গৌর দেখাবে না
হায়,–আর কার কাছে যাব
কে প্রাণ-গৌর দেখাইবে—আর কার কাছে যাব
শ্রীগৌড়মণ্ডল হতে—তোমরা,–সবাই তো এসেছ
প্রভু-নিতাই-অদ্বৈত-সাথে—শ্রীগৌড়মণ্ডল হতে
বিহরিছ প্রাণ-গৌর-সনে
এই কাশীমিশ্রালয়ে—বিহরিছ প্রাণ-গৌর-সনে
কোথায় আছ প্রভু-নিতাই—একবার দেখাও হে
কোথায় আছ সীতানাথ—একবার দেখাও হে
কোথায় আছ ঠাকুর-নরহরি—একবার দেখাও হে
সে চিতচোরা মুরতি-খানি—একবার দেখাও হে
প্রাণ-গৌর দেখালে না—কৈ,–কেউতো কথা কইলে না
আমরা একবার দেখব
হৃদি-পটে এঁকে লব
ভকত-বাৎসল্য-লীলা—হৃদি পটে এঁকে লব
শ্রীগুরু-গৌরাঙ্গের বিহার—হৃদি পটে এঁকে লব
হা-গৌর প্রাণ-গৌর বলে—বসে বসে কাঁদব
চিতচোর-চূড়ামণি—একবার দেখা দাও
যাক সব ঘরে ফিরে—তোমা ধনে হৃদে ধরে
মায়াবন্ধন ঘুচুক সবার—তোমা লয়ে করুক সংসার
হা-গৌর প্রাণ-গৌর বলে—ঘরে ঘরে সবাই ঝুরুক
জগবাসী নর-নারী—ঘরে ঘরে সবাই ঝুরুক
এই ধ্যান, এই জপ, এই লব নাম।।’’
ভাই ভাই ভাই মিলে—প্রাণভরে গান করুক
রাঘব-শ্রীধরের সেবার বাধ্য—জয় প্রাণ শচীসূত
এই নিবেদন শ্রীচরণে—কাল একবার দেখা দিও
গুণ্ডিচা মার্জ্জন-কালে—কাল একবার দেখা দিও
শ্রীগুরুদেবের সঙ্গে—দেখব তোমার মার্জ্জন-রঙ্গ
প্রাণে প্রাণে বলি গোরা গোরা—দেখব তোমার মার্জ্জন-লীলা।(মাতন)
তোমার গুণ্ডিচা-মার্জ্জন-লীলা—নয়নভরে দেখব মোরা
বল গিয়ে নর-নারীকে—যাও নগরে নগরে
তোমরা,–যেও নীলাচল বাসী—কাল হবে গুণ্ডিচা মার্জ্জন
গৌর-আজ্ঞা শিরে ধরি’—বল সবে গৌরহরি
দেখাব সবে গোরাশশী—যেও নীলাচলবাসী
‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাইগৌরহরিবোল।।’’