জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
সূচকের গৌরচন্দ্র
ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
শ্রীরাধাকৃষ্ণ,–প্রেমবিকারের বারিময়—প্রেমসিন্ধু গোরারায়
বহে শত শত ধারা
শ্রী,–কৃষ্ণলীলামৃতসার—বহে শত শত ধার
নিরন্তর,–যাহা হইতে দশদিকে—বহে শত শত ধার
নানাভাব-রত্নালয়—আ’মরি,–অক্ষয় পারাবার
(আ’মরি,–মহাভাব রত্নালয়—অক্ষয় পারাবার)
ওরে ভাই রে আমার,–আমার নিতাই তরঙ্গ—হেলে দুলে খেলায় রে
ওরে ভাই রে আমার,–গৌরপ্রেমসিন্ধুহিয়ায়—হেলে দুলে খেলায় রে
(আ’মরি,–কতই না গরব করে—হেলে দুলে খেলায় রে)
‘‘তাতে—‘‘প্রেম উথলিয়া পড়ে’’
আ’মরি রে,–করুণা-বাতাস-পরশে—প্রেম উথলিয়া পড়ে,
আ’মরি,–করুণা-বাতাস-পরশে—প্রেম উথলিয়া পড়ে,
আ’মরি,–করুণা-বাতাস-পরশে’—
আমার,–নিতাই-তরঙ্গাসনে—অদ্বৈত,–করুণা-বাতাস-পরশে
ওরে ভাই রে আমার,–আমার,–নিতাই-তরঙ্গসনে—করুণা-বাতাস পরশে
‘‘প্রেম উথলিয়া পড়ে,’’
আমার,–শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেমসিন্ধু—উথলিয়া ভাসায় রে
গৌর,–প্রেমসিন্ধু উথলিয়া—প্রেমজলে ডু-বায় রে
আ’মরি,–স্থাবর জঙ্গম গুল্মলতা—প্রেমজলে ডু-বায় রে
আহা,–‘‘প্রেম উথলিয়া পড়ে, জগত হাফাল ছাড়ে,’’
ওকি আহা-মরি,–‘‘তাপতৃষ্ণা সবাকার নাশে।।’’
গৌর,–প্রেমসিন্ধু উদ্বেলিত—সেই’—প্রেমজলে সিঞ্চিত করে
নিতাই-তরঙ্গ-যোগে উছলিত—সেই,–প্রেমজলে সিঞ্চিত করে
করুণা,–বাতাস-পরশে উদ্বেলিত—সেই,–প্রেমজলে সিঞ্চিত করে
ওকি আহা-মরি,–‘‘তাপতৃষ্ণা সবাকার নাশে।।’’
ও ভাই দেখ দেখ,–‘‘নিতাই চৈতন্য দয়াময়।’’
ওরে ভাই রে আমার এমন,–পরম-করুণ প্রেমদাতা—হয় নাই আর-হবার নয় রে
‘এমন—পরম-করুণ প্রেমদাতা’—
আমার,–প্রভু নিতাই প্রাণ গৌরাঙ্গের মত—এমন,–পরম-করুণ প্রেমদাতা
আমার,–নিতাই-গৌরাঙ্গের মত—এমন,–পরম-করুণ প্রেমদাতা
ও ভাই,–বড় অবতার রে
বড় অবতার রে
ওরে ভাই রে আমার,–প্রভু নিতাই প্রাণ গৌরাঙ্গ—বড় অবতার রে
আ’মরি,–পতিতেরে বিলাওল প্রেমেরই ভাণ্ডার রে।।’’
আ’মরি—যারে তারে যেচে দিল
চির,–অনর্পিত-প্রেমধন—যারে তারে যেচে দিল
গিয়ে,–আচণ্ডালের দ্বারে দ্বারে – যারে তারে যেচে দিল
‘গিয়ে,–আচণ্ডালের দ্বারে দ্বারে’—
দন্তে তৃণ, গলবাসে করজোড়ে—গিয়ে,–আচণ্ডালের দ্বারে দ্বারে
প্রেম দিল আচণ্ডালে
আপনাকে,–সম্বন্ধের বন্ধনে বাঁধা—প্রেম দিল আচণ্ডালে
আপনাকে,–পুত্র, সখা, প্রাণ-পতি করা—প্রেম দিল আচণ্ডালে
আপনাকে,–বশ করে অধীন করা—প্রেম দিল আচণ্ডালে
আয় আয়,–কে নিবি আমায় কিনিবি বলে—প্রেম দিল আচণ্ডালে
ও ভাই,–বড় অবতার রে
ও ভাই দেখ দেখ,–আমার,–‘‘নিতাই চৈতন্য দয়াময়।’’
আহা,–‘‘ভক্ত-হংস-চক্রবাকে, তাঁরা,–পিব পিব বলি ডাকে,’’
তাতে,–‘‘ডুবি রূপ সনাতন,’’
ওরে ভাই রে আমার,–গৌরপ্রেমসিন্ধু-মাঝে—ডুবি রূপ সনাতন
এই,–দুর্ব্বাসনা-তরঙ্গময়-সংসার—সাঁতার ভুলে ডুবেছিল
কেমন করে,–ডুবতে হয় তাই দেখাবার লাগি—সাঁতার বুলে ডুবেছিল
কেমন করে,–ডুবতে হয় তাই জানাবার লাগি—সাঁতার ভুলে ডুবেছিল
‘কেমন করে,–ডুবতে হয় তাই জানাবার লাগি’—
শ্রী,–শিক্ষাগুরুরূপী তাঁরা—কেমন করে,–ডুবতে হয় তাই জানাবার লাগি
এই,–গৌরপ্রেমসিন্ধু-মাঝে—তাঁরা,–সাঁতার ভুলে ডুবেছিল
ওহে ও প্রাণ,–গৌরাঙ্গ যা’ কর বলে—সাঁতার ভুলে ডুবেছিল
(প্রাণ,–গৌর হে যা’ কর বলে—সাঁতার ভুলে ডুবেছিল)
‘প্রাণ,–গৌর হে যা’ কর বলে’—
আমি তোমার হলাম—প্রাণ,–গৌর হে যা’ কর বলে
নইলে,–ডুবা ত’ যায় না
সংসার-সাঁতার না ভুলিলে—ডুবা ত’ যায় না
দুর্ব্বাসনা—তরঙ্গময় এই,–সংসার-সাঁতার না ভুলিলে—ডুবা ত’ যায় না
আমি তোমার না হইলে—ডুবা ত’ যায় না
কায়মনোবাক্যে না বিকালে—ডুবা ত’ যায় না
‘কায়মনাবাক্যে না বিকালে’—
আমি তোমার হলাম বলে—কায়মনোবাক্যে না বিকালে
ওকি আহা-মরি,–‘‘যতনে গাঁথিল তার মালা।’’
ওরে ভাই রে আমার,–গৌরপ্রেমসিন্ধুমাঝে—আ’মরি,–ডুব দিয়ে রত্ন তুলে
প্রাণ গৌর হে যা’ কর বলে,–ডুব দিয়ে রত্ন তুলে
‘প্রাণ গৌর হে যা’ কর বলে’—
এবার আমি তোমার হলাম—প্রাণ গৌর হে যা’ কর বলে
ওকি আহা-মরি, ‘‘যতনে গাঁথিল তার মালা।’’
আ’মরি,–‘‘ভক্তিসূত্রে গ্রন্থি করি,’’
এ রতন,–অন্য সূত্রে গাঁখা যায় না—
‘‘ভক্তিসূত্রে গ্রন্থি করি,’’
এ মালা—অন্য সূত্রে গাঁথা যায় না—
দূরে যাবে ত্রিতাপের জ্বালা।।’’ ভাই রে।।
এ যে—পর তর মালা—মালা,–পর রে তর রে
বিশুদ্ধ,—ভকতিসিদ্ধান্ত-রত্নমালা—মালা,–পর রে তর রে
‘বিশুদ্ধ—ভকতিসিদ্ধান্ত-রত্নালা’—
গৌর,–প্রেমসিন্ধুতে ডুব্ দিয়ে তোলা—বিশুদ্ধ, ভকতিসিদ্ধান্ত রত্নমালা
শ্রী,–রূপ-সনাতন-ডুব্ দিয়ে তোলা—বিশুদ্ধ,–ভকতিসিদ্ধান্ত রত্নমালা
শ্রী,–রূপ-সনাতন-ডুবারুপ তোলা—বিশুদ্ধ,–ভকতিসিদ্ধান্ত-রত্নালা
মালা,–পর রে তর রে
কৃষ্ণে,–সুদৃঢ় মতি হবে—মালা,–পর রে তর রে
‘‘সিদ্ধান্ত করিতে কভু না কর অলস। রে !
সিদ্ধান্তে লাগয়ে কৃষ্ণে সুদৃঢ়মানস।।’’ রে !!
আহা,–‘‘লীলারস সঙ্কীর্ত্তন,’’
ওরে ভাই রে আমার,–গৌরপ্রেমসিন্ধুমাঝে—
‘‘লীলারস সংকীর্ত্তন,’’
শ্রীরাধাকৃষ্ণ,–লীলারস-সঙ্কীর্ত্তন-পদ্ম—নিশিদিশি বিকসিত
যত,–ভক্ত-হংস-চক্র বাক্–যার,–মৃণাল খেয়ে জীবন ধরে
আমার,–নিতাই-তরঙ্গে নেচে নেচে—কেউ বা ডুবে কেউ সাঁতারে
‘আমার,–নিতাই-তরঙ্গে নেচে নেচে’—
করুণা-বাতাসে হেলে দুলে—আমার,–নিতাই-তরঙ্গে নেচে নেচে
যে,–সাঁতারে সে ব্রজলীলা ভোগ করে
যে,–ডুবে যায় সে নদীয়ালীলা পায়
এ ত’,–দুটী লীলা নয় রে
ব্রজলীলা আর নদীয়ালীলা—এ ত’,–দুটী লীলা নয় রে
তার,–উপরে ভাসে ব্রজলীলা
আর,–ডুবিলে নদীয়া-লীলা—তার,–উপরে ভাসে ব্রজলীলা
করুণা-বাতাস-পরশে,–নিতাই-তরঙ্গে নেচে নেচে—যে,–ডুবে যায়-
গৌরলীলায় সেই ডুবতে পারে
ঠাকুর,–নরোত্তম বলেছেন—গৌরলীলায় সেই ডুবতে পরে
যে,–রাধামাধব-অন্তরঙ্গ হবে—গৌরলীলায় সেই ডুবতে পারে
মহারাস-বিলাসের—সে, -পরিণতি ভোগ করে
দেখে,–নিত্য মিলনে নিত্য বিরহ
দেখে,–মিলনে দুই রসের খেলা
আমার,–নিগূঢ় গৌরাঙ্গলীলা—মিলনে,–মিলা অমিলা রসের খেলা
হেরে,–রাই কানু একাকৃতি
স্বর্ণপঞ্চালিকা-ঢাকা নীলমণি—রাই কানু একাকৃতি
মহাভাব রসরাজ—রাই কানু একাকৃতি
ব্রজের,–অপূর্ণসাধ পূরাইতে—কিন্তু,–বিপরীত-ভাবে অবস্থিতি
নাগরী নাগর, নাগর নাগরী—রাই কানু, কানু রাই
(রমণী রমণ, রমণ রমণী-রাই কানু, কানু রাই)
যা’ দেখে,–রামরায় মূরছিত—রাই কানু, কানু রাই
গোদাবরী-তীরে যা’ দেখে—রামরায় মূরছিত
বিবর্ত্ত-বিলাস-রঙ্গ দেখে—রামরায় মূরছিত
নানা,–বিবর্ত্তে বিলাস-রঙ্গ দেখে—রামরায় মূরছিত
মহা,–রাসবিলাসের পরিণতি—এ যে,–গম্ভীরার গুপ্তনিধি
আহা,–‘‘লীলারস-সঙ্কীর্ত্তন, বিকসিত পদ্মবন,’’
ওকি আহা-মরি,–‘‘জগত ভরিল যার বাসে।’’
আহা,–‘‘ফুটিল কমলবন, মাতিল ভ্রমরগণ’’
‘সঙ্কীর্ত্তন-কমলের গন্ধ পেয়ে’—
গৌর-প্রেমসিন্ধুতে বিকসিত–লীলারস—সঙ্কীর্ত্তন-কমলের গন্ধ পেয়ে
ভকত-ভ্রমর যত—তারা,–দলে দলে ছুটল
‘ভকত-ভ্রমর যত’—
প্রেমমধু-পানে লুব্ধচিত—ভকত-ভ্রমর যত
গৌর গুণ্ গুণ্ গুণ্ গুণ্ রবে—তারা, দলে দলে ছুটল
‘গৌর গুণ্ গুণ্ গুণ্ গুণ্ রবে’—
প্রেমমধু পিবে বলে—গৌর গুণ্ গুণ্ গুণ্ গুণ্ রবে
‘প্রেমমধু পিবে বলে’—
গৌরলীলা,–রস-সঙ্কীর্ত্তন-কমলের—প্রেমমধু পিবে বলে
হায় রে,–‘‘পাইয়া বঞ্চিত কৃষ্ণদাসে।।’’
গৌর-প্রেমসিন্ধুতে,–লীলারস-পদ্ম ফুটল বটে—কিন্তু আমার,–মনভ্রমর-মাতল না রে
গৌর-প্রেমসিন্ধুতে,–লীলারস-সঙ্কীর্ত্তন-কমল ফুটল বটে—কিন্তু আমার, মনভ্রমর-
গৌর-প্রেমসিন্ধুতে,–লীলারস-সঙ্কীর্ত্তন-কমল ফুটল বটে—কিন্তু আমার,–
বিষয়- কেতকীফুলে মজে রইল—কীর্ত্তন-কমলেতে মাতল না রে
‘বিষয়- কেতকীপুলে মজে রইল’—
বাসনা,–কণ্টকাঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়েও—বিষয়-কেতকীফুলে মজে রইল
প্রেম-মধু পিয়ে ধন্য হত—কীর্ত্তন-কমলেতে মাতল না রে
এমন,–প্রেমসিন্ধু-অবতারে—হায় হায়,–আমি এবার বঞ্চিত হলাম
(এমন,–প্রেমসিন্ধু-অবতারে—আমি,–প্রেমদনে বঞ্চিত হলাম)
এমন,–বিশ্বম্ভর-অবতারে—আমি,–প্রেমধনে বঞ্চিত হলাম
আমার,–নামে রুচি হল না রে—আমি,–প্রেমধনে বঞ্চিত হলাম
(জগত ভাসল প্রেমের বন্যায়—আমি কেবল বঞ্চিত হলাম)
আমি,–অভিমান-মঞ্চে বসে রইলাম—আমার,–একবিন্দু পরশ-হল না রে
‘অভিমান-মঞ্চে বসে’ রইলাম—
ধনী মানী কুলীন পণ্ডিত—এই,–অভিমান-মঞ্চে বসে’ রইলাম
আমি রইলাম বাকী রে
(জগত ভাসল প্রেমের বন্যায়—কেবল,–আমি রইলাম বাকী রে)
এমন,–প্রেমসিন্ধু-অবতারে—কেবল,–আমি রইলাম বাকী রে
শ্রীগুরুবৈষ্ণবে দিয়ে ফাঁকি-প্রেম পেতে রইলাম বাকী
আপন-দুর্দ্দৈব- দোষে—প্রেমধনে বঞ্চিত হলাম
এমন,–গোরাপহুঁ না জভিলাম’—
ভক্ত-পদধূলি ভূষণ করে—এমন,–গোরাপহুঁ না ভজিলাম
শ্রীশ্রীগৌরচন্দ্র
করুণা বাতাস চারিপাশে।
প্রেম উথলিয়া পড়ে, জগত হাফাল ছাড়ে,
তাপতৃষ্ণা সবাকার নাশে।।
দেখে দেখ নিতাই চৈতন্য দয়াময়।
ভক্ত-হংস-চক্রবাকে, পিব পিব বলি ডাকে,
পাইয়া বঞ্চিত কেন হয়।
ডুবি রূপ সনাতন, তোলে নানা রত্নধন,
যতনে গাঁথিল তার মালা।
ভক্তি-সূত্রে গ্রন্থি করি, লহ জীব কন্ঠ-ভরি,
দূরে যাবে ত্রিতাপের জ্বালা।।
লীলারস-সঙ্কীর্ত্তন, বিকশিত পদ্মবন,
জগত ভরিল যার বাসে।
ফুটিল কমলবন, মাতিল ভ্রমরগণ,
পাইয়া বঞ্চিত কৃষ্ণদাসে।।