যমুনা কিনারে

হৃদয় কপট ভেল নহি জানি

হৃদয় কপট ভেল নহি জানি।
পর পেঅসি দেলিহ আনি।।
সুপুরুষ বচন সময় বেবহার।
খত খরি আদএ সীচসি খাব।।
আবে হমে কাহ্ন বোলব কী বোল।
হাথক রতন হরাএল মোর।।
ককে পরতারণি নাগরি নারি।
বচন কৌসল ছলে দেব মুরারি।।
পলটি পচাবহ তহ্নিকে ঠাম।
কেও জনু মাধব তঠমা জাহ।
সে আবে অপন মনোরথ চাহ।।
লঘু কহিনী ভল কইইতে আন।
দেলে পাইঅ কে নহি জান।।
ভনই বিদ্যাপতীত্যাদি।

অন্তঃকথন:
মাধব কোনওভাবে রাধারানীকে রুষ্ট করেছেন, এখন মান ভাঙাতে দূতীর শরণাপন্ন হয়েছেন। কিন্তু দূতীও মাধবের আচরণে ক্ষিপ্ত, তাই রাধারানীর পক্ষ নিয়ে মাধবকে তিরস্কার করে বলছেন, তোমার হৃদয় যে এমন কপট তা না জেনে আমি পরের প্রেয়সীকে তোমার কাছে এনে দিয়েছিলাম। বড় ভুল হয়ে গেছে। সুপুরুষ যে কথা দেয় সেই কথা সময়মত কাজেও প্রমাণ করে। আর তুমি তো তীরক্ষতে নুন ছিটিয়ে দিলে। কানাই এখন আর তুমি আমায় কী বলতে এসেছ? আমার হাতে যে রাধিকা-রতন ছিল তা তো তুমি নিজের দোষেই হারিয়ে দিলে। হে দেব মুরারি, তুমি কীসের জন্য বচনকুশলী নাগরী নারীকে প্রতারণা করলে? এখন আবার ফের তাঁর কাছে যেতে চাও? তুমি ভেবেছটা কী? কেউ যেন মাধবকে গ্রামে ঢুকতে না দেয়! হরি এখন যদি তুমি অনুরাগী হয়ে তার কাছে যাও তাহলে সেও তার মনোরথ পূরণ করবে, তোমাকে উপেক্ষা করবে! অন্যের কাহিনিকে লঘু করে বলতে ভালো লাগে। সখী বলতে চাইছেন তুমি এখন নিজের চাহিদা বড় করে দেখছ আর রাধারানীর দুঃখকে লঘু করছ। কিন্তু যেমনটি দেওয়া যায় তেমনটিই পাওয়া যায় একথা কে না জানে!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী