করযুড়ি কহে ধনি শুন দেব দিনমণি
জনম সেবন কৈলুঁ তোর।
ধনজন পরিবার সব হবে ছারখার
এই সে কপালে ছিল মোর।।
দিনমণি কর অবধান।
পতি যদি মরি যাবে তবে মোর কিনা হবে
কোন কাজে রাখিব পরাণ।।
দেবর ননদ মোরা বাসে যেন আঁখিতারা
শাশুড়ী সোহাগ করে সদা।
এসব মরিয়া যাবে আমারে দেখিতে হবে
এ তাপে কেমনে জীবে রাধা।।
বিষাদে বিষণ্ণ মন ডাকে সতী নারায়ণ
বটু চাটু করে তার পাশে।
রাধার বদন দেখি বিকল হইল সখি
বিকট কপট দেব হাসে।।
ধনির বিনয় শুনি কহে দেব দিনমণি
প্রসন্ন হইলুঁ তোর তরে।
ধনে জনে পূর্ণ হৈয়া থাক সতী পতি লৈয়া
আপদ নহিবে তোর ঘরে।।
দেব দয়াময় দেখি আনন্দ হইল সখী
ধনী বৈসে আসন ভিড়িয়া।
নাগর মোহিনী ধনী পূজে দেব দিনমণি
বটু দেয় সুমন্ত্র পড়িয়া।।
ধূপদীপ গন্ধমালা দিয়া দেব পূজে বালা
আর কত শত উপহার।
বটু সুখে মন্ত্র পড়ে সঘনে হুঙ্কার ছাড়ে
দেখি বুড়ি হৈল চমৎকার।।
নানা উপহারে ধনী পূজা কৈলা দিনমণি
অবশেষে মাগে এক বর।
যদি হৈলা অনুকূল পড়ুক মাথার ফুল
তবে সে ঘুচয়ে সব ডর।।
হাসি দেব মাথা নাড়ে ঝর ঝর ফুল পড়ে
হুলাহুলি দেয় নারীগণে।
দেখিয়া দেবের মুখ বাঢ়িল সভার সুখ
আশিস মাগয়ে জনে জনে।।
সভার শিরে দিয়া হাত বটু করে আশীর্ব্বাদ
জনম আয়তি হৈয়া থাক।
এই দেব নিরঞ্জন পূরক সভার মন
নৈবেদ্য প্রসাদ কিছু চাখ।।
বসনে বান্ধিল সব না রাঁখিল এক লব
লইয়া চলিল আন বনে।
হিয়ায় সামাইল ডর কাঁপে বুড়ী থর থর
আয়ান আসান পাইল মনে।।
পুতেরে ঠারিয়া বুড়ি পলাইল গুড়ি গুড়ি
পথ বিপথ নাহি মানে।
উলটি পালটি চায় বসন না রহে গায়
রাধিকা দেখয়ে পাছে বনে।।
দোঁহে আসি বৈসে ঘরে রাইকে প্রশংসা করে
মাথায় আঘাত সদা মারে।
নিষেধ করিল মায় একথা না কহ কায়
ঘরে আইলে মানাইও সভারে।।
শেখর হাসিয়া কয় আর কিছু নাহি ভয়
মোর বোলে কর পরতীত।
বিলাস মন্দিরে চল কৌতুকে পাশক খেল
সকলে সুথির কয় চীত।।