গোকুল-নগর ভেল চমৎকার
দেখিআ শরীর তার।
ভয়ে মহাভয় পাইল সকল
দেখ অদ্ভুত আর।।
রাক্ষসীর বক্ষ- স্থলেতে বসিয়া
নন্দের নন্দন শিশু।
একি পরমাদ বিষম সম্বাদ
চরিত বুঝিব কিছু।।
সভে এই বালা তিন দিন হৈলা
ইহার কৌতুক এত।
এমন রাক্ষসী কেমতে বধিল
এ কথন কব কত ।।
সন্দেহ লাগিল সভার অন্তরে
‘একি একি হল্য’ বলে।
গিআ নন্দরাণী ‘বাছা, বাছা’ বলি
ছাআল করিলা কোলে।।
‘মরি বালাই লঞা নিছনি লইঞা
এ কোন ধরন তোর।’
পুত্র কোল করি জসদা সুন্দরী–
‘কিমোন হইল মোর।।’
শুনি নন্দঘোষ ধাইঞা আইল
‘পুত্র পুত্র’ করি বলে ।
“ও মোর দুলাল, বাছনি, ” বলিয়া
তুরিত করিলা কোলে।।
“দেব হৃষিকেশ অচ্যুত, মাধব,
গোবিন্দ বাউল হরি।
এ সব দেবতা রাখহ ছাআলে
মারিল এ হেন বোরি।।”
পুত্র কোলে করি জসদা সুন্দরী
চুম্বন করিছে মুখে।
হরস হইঞা এ নন্দ-জসদা
শিশু সুতাঅল সুখে।।
দুগ্ধ পিআছিল জসদা জননী
সন্দেহ লাগিল মনে।
এমত ছাআল এ হেন রাক্ষসী
মারিল আপন মনে।।
এ মেনে মানুষ- শরীর না হএ
দেবের শকতি জানি।
গোলোক-ইশ্বর জানিল অন্তরে
চণ্ডিদাস ইহা জানি।।