যমুনা কিনারে

জদি তোরা নহি খন নহি অবকাস

জদি তোরা নহি খন নহি অবকাস।
পরকে জতন কতে দেল বিসবাস।।
বিসবাস কই ককে সুতহ নিচীত।
চারি পহর রাতি ভমত সুচীত।।
কবজোরি পঁইয়া পরি কহবি বিনতী।
বিসরি ন হলবিএ পুরুব পিরিতী।।
প্রথম পহর রাতি রভসে বহলা।
দোসর পহর পরিজন নিন্দ গেলা।।
নিন্দ নিরূপইত ভেল অধরাতি।
তাবত উগল চন্দা পরম কুজাতি।।
ভনই বিদ্যাপতি তখনুক ভাব।
জেহ পুনমত সে জন পয় পাব।।

অন্তঃকথন:
মাধবকে অভিসারের আশ্বাস দিয়েও শ্রীমতী কথা রাখতে পারেননি, মিলনের আশায় মাধবের অনিদ্র রাত্রি কেটেছে বিফল প্রতীক্ষায়। মাধবের দুর্দশা দেখে দূতী এসে শ্রীমতীকে তিরস্কার করে বলছেন, যদি তোর ক্ষণমাত্রও সময় নেই তবে পরের মনে বিশ্বাস জাগালি কেন? কেন তাঁর মনে বিশ্বাস জন্মালি যে তুই অভিসারে যাবি? তাকে বিশ্বাস করিয়ে এখানে তুমি নিশ্চিন্ত মনে ঘুমচ্ছ! সেই সুচিত্ত সহৃদয় তোর আসার পথ চেয়ে রাত্রির চার প্রহর ধরে ঘুরছিল। দূতীর কাছে এই নিদারুণ কথা শুনে শ্রীমতী দূতীকে অনুরোধ করে বলছেন, তাঁর কাছে গিয়ে আমার নামকরে হাত জোর করে পায়ে ধরে অনুনয় করে বলিস যে সে যেন পূর্বের পীরিতি ভুলে না যায়! তাকে বলিস আমার প্রথম প্রহর সকলের কৌতুকে কেটে গেল, দ্বিতীয় প্রহর হলে তবে পরিজনেরা নিদ্রা গেল, তারা ঘুমিয়েছে কিনা একথা বুঝতেই আর্ধেক রাত কেটে গেল, তারপরে যে যাব আমি,কিন্তু ততক্ষণে অত্যন্ত কুজাতি চন্দ্র উদিত হোল। আর যে গোপনে মাধবের কাছে যাওয়ার উপায় রইল না! বিদ্যাপতি সেই তখনকার ভাব বলছেন, যেজন পুণ্যবান সেই কেবল পায়। রাধামাধবের সেই অলৌকিক ভাবের পরশ পুণ্যবান বিনে অন্যে পাবে কি করে!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী