দেখ দেখ সখি চাহিয়া দু আঁখি
কিশোর-কিশোরী-শোভা।
যেমন ঘনেতে বিজরি বেঢ়ল
কি দেখি বরণ-আভা।।
সখীগণ কহে– “হেন মনে লয়ে
মেঘ আসি কিবা নামে।
গগন হইতে আসি আচম্বিতে
কলপ -তরুর ঠামে।।”
কোন সখী কহে– “এই ঘন নহে
ও দেখি শ্যামের দেহা।
বিজরি বলিয়া দেখিলে ভালিয়া
ওরূপ কিশোরী সেহা।।
যার অপরূপ দেখিনু স্বরূপ
কহিলে কি জানি কি হয়।
দুহু অনুপাম বেশের আভাতে
বৃন্দাবন শোভাময়।।
এক তরুবর কালিয়া বরণ
আর তরুবর গোরা।
বড় অদভুত কি হেতু ইহার
বিচারি কহ না তোরা।।”
সখীর বচনে আর সখী তাহে
চাহিল বনের পানে।
দেখিল বেকত আধ সে গউর
আধ সে কালিয়া সনে।।
এক সখী ছিল চেতন গোয়ালী
বিচারি কহিছে তায়।
“এ কথা কহিতে কাহার শকতি
কে না পরতীত যায়।।
রসের সায়র রূপের দরিয়া
তাহে আছে এক সুধা।
সেই সুধা আনি বিহি সে রাখিল
বেকত করিয়া জুদা।।
আর কূপ মাঝে সে ছিল অমিয়া
লইল যতন করি।
সেই দুই সুধা বিহি সে আনন্দে
রাখল একক ধরি।।”
চণ্ডীদাস কহে— অপার চাতুরী
কে জন বুঝিবে ইহা
বিহি সে রসিয়া তাহাতে পশিয়া
গড়ল দোঁহার দেহা।।