প্রথম বৈশাখ, রাধার মনে শোক, দারুণি রবির জ্বালা।
নূতন অবলা, আমা ছাড়ি গেলা, মথুরা নগরে কালা।।
গোকুল নগরে, প্রতি ঘরে ঘরে, ফিরিব যোগিনী হৈআ।
যে ঘরে পাইব, আপনা বন্ধুআ, বান্ধিব (আনিব ?) বসন দিআ।।
জ্যৈষ্ঠ মাসেতে, রাধার ব্রজেতে, চাতকী সুনাদ করে (বোলে ?)।
পাইয়া গোপিনী প্রভু শিরোমণি, রহিয়াছে কুতূহলে।।
আষাঢ়ে বরিষা, জলে চরে হংসা, হংসিনী করএ জোড়।
ঘোরতর করি, যামিনী ছটরি, হেরিতে নয়ান ভোর।।
শ্রাবণে শ্রীমতী, করিয়া ভকতি, কৃষ্ণ পদ মনে স্মরি।
গেল প্রাণ নাথ, করিয়া অনাথ, ছাড়িয়া অবলা নারী।।
ভাদ্রেতে পূর্ণিমা, স্বর্গেতে চন্দ্রিমা, দেখিতে উঝল আতি।
দেখিতে সাদরে, পিরীতি করিআ, নিকটে নাহিক পতি।।
আশ্বিনে রজনী, জলে কুমুদিনী, দেখিতে লাগ এ শোভা।
পুরুষ নিঠুর, রহিল মধুপুর, কি মোর জীবন প্রভা।।
কার্তিকে কুমারী, থাকে ব্রজপুরী, কাকুতি মিনতি সার।
গেল প্রাণ নাথ, করিয়া অনাথ, কি ফল জীবন আর।।
অগ্রাণ মাসেতে, ভোগে নানা শাইল, যৌবন বিলাইব কারে।
নূতন কামিনী, রসের যামিনী, কেমতে রহিব ঘরে।।
পউষেতে কামিনী, ডিঘল যামিনী, দারুণ হেমন্ত রিত।
আমি একাশ্বর, নাহিক দোসর, সদা এ (বা জ্বালাএ) দগধে চিত।।
মাঘেতে পঞ্চমী, জগতের স্বামী, বসন্ত হইল রাজা।
গেল প্রাণ নাথ, করিয়া অনাথ, যৌবনে করিতুম্‌ পূজা।।
ফাল্গুন মাসেতে, রাধার ব্রজেতে, জ্বলিল মনের আগুনি।
দারুণ কোকিলে, বৃন্দাবনে বোলে, পাষাণ বিদরেশুনি।।
চৈত্র মধু মাস, পূরাইল বার মাস, হীন হাসিমের বাণী।
কাকুতি করিয়া, কৈলে আরাধন, আসিয়া মিলিব পুনি।।