বার মাসে ছয় রিত (ঋতু) জানিও নিশ্চয়। এক রাগে রিতে দুই মাস পাইআছ এ ।।
কৈয় কৈয় প্রাণ রিত রাধার সম্বাদ। নিমায়া নিঠুর হৈয়া গেল প্রাণনাথ।।
পুষ্পল মাসেতে রিত পড়য়ে শিশির। কৃষ্ণ বিনে চিত মোর হইল চৌচির।।
হেমন্তের রিত বহে দীঘল যামিনী। কৃষ্ণ বিনে কি রূপে বঞ্চিমু অভাগিনী।।
মাঘল মাসেতে রিত ন’গুণ পড়ে জাড়। ছাড়ি গেল প্রাণকৃষ্ণ কি গতি আমার।।
বহি যাএ মালব রাগ শ্যাম ব্রজে নাই। কৈয় কৈয় রাগ রিত মাধবের ঠাঁই।।
ফাল্গুন মাসেতে রিত বহে রে বসন্ত। হেনই সময়ে মোর ছাড়ি গেল কান্ত।।
রস রঙ্গে নর নারী ফাউএ খেলাএ । আমার প্রাণের কৃষ্ণ রহিল কোথাএ ।।
চৈত্রল মাসেতে পতি গেল দিগান্তর। ছাড়ি দেল প্রাণের নাথ না লৈল খবর।।
বহি যাও বসন্ত কাল কি হৌক উপায়। পিয়ার বিচ্ছেদ খেদ সহন না যাএ।।
বৈশাখ মাসেতে রিত বহেরে নিদাঘ। গাহিতে সুস্বর অতি মল্লার সুরাগ।।
শতদল কমল মোর বিকাশ। মোহর ভোমরা কৃষ্ণ নাই মোর পাশ।।
জ্যৈষ্টল মাসেতে রিত তাপিত তপন। কস্তুরী কুঙ্কুম অঙ্গে লাগে হুতাশন।।
এই আম কাঁঠাল পাকা খাএ সর্বজন। বহি যাও নিদাঘ রিত কি ফল জীবন।।
আষাঢ়ে পাহুক রিত বহে অনিবার। হেনই সময়ে কৃষ্ণ রৈল মধুপুর।।
ছাড়ি গেল প্রাণের পিয়া দিগদিগান্তর। অনাথিনী হইয়া নারী আছি একশ্বর।।
শ্রাবণ মাসেতে রিত বরিষা নির্ভর। দারুণি কোড়ার ডাকে দগধে অন্তর।।
শ্রীরাগ গাহিতে শ্যাম নাহি বৃন্দাবন। কৃষ্ণের বিচ্ছেদ খেদে তেজিমু জীবন।।
ভাদ্রেতে ভদ্রিকা তিথি দিবস রজনী। তাপিত হইআ আছি রাধা অভাগিনী।
শরতের রিত বহে হিল্লোল গাহে গীত। শ্রীনন্দের নন্দন বিনে শান্ত নহে চিত।।
আশ্বিন মাসেতে রিত বরিষা অবশেষ। মুই হতভাগীর কান্ত গেল কোন দেশ।।
বহি যাএ শরদ্‌ রিত কি উপায় করিমু। যথা গেল প্রাণনাথ তথা চলি যাইমু।।
কার্তিকে শিশির বহে প্রচণ্ড উদয় শশী। নায়ালি যৌবনের ভারে পাঞ্জর যাএ খসি।।
অভাগী নারীর যৌবন কাঞ্চা রসের ভরা। মজিল কমলপুষ্প না আইল ভ্রমরা ।।
আগ্রাণ মাসেতে রিত নীবন তুণ্ডল। সর্ব নয়া খাএ সবে কৌতুকে বহুল।।
মধু মিষ্ট লাগে মোর গরল সকল । বহি যাএ কর্ণাট রাগ জীবন বিফল।।
বসু বেদ মাসে রাধা না পূরিল আশ। হীন কমর আলী কহে এই রিতের বার মাস।।
বার মাসে পদ বন্ধ করিলুম রচন। অপরাধ পাইলে খেমিবা গুণিগণ।।
যেব গাহে যেবা শুনে রিতের বারমাস। সর্বত্রে কুশল তার আপদ বিনাশ।।