যমুনা নিকট যথা বংশীবট
অতি সে সুন্দর থল।
নানা পক্ষিগণ তরুগণ তাতে
ধরে নানা ফুল ফল।।
নানা পুষ্প ফুটে পরিমল উঠে
কেতকি চামেলি কুন্দ।
নাগেশ্বর আদি নানা সে কুসুম
চাঁপা পারুলির গন্ধ।।
গুলাল দুলাল ঝাঁটি গজকুন্দ
কিংশুক আমলা কত।
কদম্ব দোসারি শোভা অতি বড়
লাখে লাখে ফুল যত।।
হংস হংসিনী চক্রবাক অতি
চকোর চকোরী ডাকে ।
কতেক চামরী ভ্রমরা ভ্রমরী
গুঞ্জরিছে লাখে লাখে।।
তরুলতা আর লবঙ্গ লতায়ে
বেষ্টিত মাধবী-তরু।
সেইখানে নব নাগর কালিয়া
মোহন মুরতি ধরু।।
সেহেন মুরতি জলধর অতি
হেলিয়া মাধবী-তলা।
চূড়ার টালনি বঙ্কিম চাহনি
ভুবন করেছে আলা।।
বিনোদিয়া চূড়া মালতিয়া বেড়া
ময়ূর-শিখণ্ড উড়ে।
ভালে সে চন্দন চাঁদ বিরাজিত
কে হেন বাঁধিল চূড়ে।।
নাসিকার আগে মাণিকের চুলি
গজমতি তাহে দোলে।
ত্রিভঙ্গ- ভঙ্গিম ভঙ্গিমা হইয়া
দাঁড়ায়ে মাধবীতলে।।
গলে বনমালা কিবা করে আলা
দোলই হিয়ার মাঝে।
অলিকুল মত্ত লাখে লাখে কত
সতত তাহে বিরাজে।।
পীত পরিধান বিনোদ বন্ধান
চরণে নূপুর বায়।
পঞ্চধ্বনি শুনি মগন মেদিনী
মধুর মুরলী গায়।।
চণ্ডীদাস কহে অনুপ অপার
সুখের নাহিক ওর।
এবে সে এ বেশে যুবতী ভুলিল
মরমে হইল ভোর।।