যুগল চরণ প্রীতি পরম আনন্দ তথি
রতি প্রেম হউ পরবন্ধে।।
কৃষ্ণ নাম রাধানাম উপাসক রস ধাম
চরণে পড়িয়া পরানন্দে।।
মনের স্মরণ প্রাণ মধুর মধুর ধাম
বিলাস যুগল স্মৃতি সার।
সাধ্য সাধন এই ইহা বিনে আর নাহি
এই তত্ত্ব সর্ব-রতি সার।।
জলদ সুন্দর কান্তি মধুর মধুর ভাঁতি
বৈদগধি অবধি সুবেশে।
পীত বসন ধর অভরণ মণিবর
মোর চন্দ্র করু কেশে।।
মৃগমদ চন্দন কুমকুম পরিলেপন
মোহন মূরতি তিরিভঙ্গ।
নবীন কুসুমাবলি শ্রীঅঙ্গে শোভয়ে ভালি
মধুলোভে ফিরে মত্তভৃঙ্গ।।
ঈষৎ মধুর স্মিত বৈদগধি লীলামৃত
লুব্ধল ব্রজবধূ বৃন্দে।
চরণ কমল পর মণিময় নূপুর
নখমণি ঝলমল চন্দ্রে।।
নূপুর মরালধ্বনি শুনি রাধা ঠাকুরাণী
শুনিঞা রহিতে নারে ঘরে।
হৃদএ বাজয়ে রতি যেন মনে পতি সতী
কুলের ধরম যায় দূরে।।
গোবিন্দ শরীর সত্য তাঁহার সেবক নিত্য
বৃন্দাবন-ভূমি তেজময়।
শীতল করুণা কর কল্পতরু গুণধর
তরুণ…সে নাচয়।।
পূর্ণচন্দ্র সম জ্যোতি চিদানন্দময় মূর্তি
মহানন্দ দরশন-লোভা।
গোবিন্দ আনন্দময় নিকটে বনিতাচয়
বিহরে মধুর অতি শোভা।
ব্রজপুর বনিতার চরণ আগুসার
মনেতে হইয়া অতি লোভা।।
একত্র সকল সখি মনে হৈয়া কৌতুকী
করু মন একান্ত করিয়া।
অন্যবোল গণ্ডগোল নাঞি শুনি উতরোল
রাখ প্রেম হৃদএ ধরিয়া।।
পাপপুণ্যময় দেহী সকল অনিত্য এহি
কাজ না সহিব মিছা লব।
মরিলে যাইবে কোথা না পাই ইহাতে ব্যথা
নিতি কর তবু কার্য্য মন্দ।।
রাজার যে রাজ্যপাট যেন নাটুয়ার নাট
দেখিতে দেখিতে কিছু নয়।
হেন মায়া করে যেই পরম ঈশ্বর সেই
তারে মন সদা কর ভয়।।
পাপে না করিহ মন অধম যে পাপিজন
তারে মন দূরে পরিহর।
পুণ্য যে সুখের ধাম তার না লইহ নাম
পুণ্য মুক্তি দূরে ত্যাগ কর।।
প্রেমভক্তি সুধানিধি তাহে ডুব নিরবধি
আর যত ক্ষার নিধি প্রায়।
নিরন্তর সুখ পাবে সকল সন্তাপ যাবে
সব তত্ত্ব কহিল উপায়।।
অন্য পরশ যেন নহে কদাচিত হেন
ইহাতে হইবে সাবধান।
রাধাকৃষ্ণ গুণ গান এই সে পরম ধ্যান
আর না করিহ পরিণাম।।
কর্মজ্ঞানী মিছা ভক্ত না হবে তাহে অনুরক্ত
শুদ্ধ ভজনে কর মন।
ব্রজজন যেনা রীত তাহে হবে অনুরত
এই সে পরম তত্ত্ব ধন।।
প্রার্থনা করিহ সদা শুদ্ধভাবে প্রেমকথা
নামমন্ত্রে করিয়া অভেদ।
আস্তিক করিয়া মন ভজ রাঙা দুচরণ
পানে (?) পাপ হবে পরিচ্ছেদ।।
রাধাকৃষ্ণ চরণ কমলে বলি যাঙ।
তোমা নাম শুভ শুনি ভক্তমুখে পুনি পুনি
পরম আনন্দ সুখ পাঙ।।
হেমতনু গোরী রাই দেখি দরশন চাই
রোদন করিত অভিলাষে।
জলনিধি ঢল ঢল অঙ্গ অতি মনোহর
রূপে ভুবন পরকাশে।।
সখিগণ চারি পাশে সেবা করে অভিলাষে
পরশে সভার সুখ ধরে।
এই মন প্রাণ মোর হইব সে রসে ভোর
নরোত্তম সদাই বিহরে।।