রথ আরোহণ কৃষ্ণ বলরাম
চলয়ে অক্রূর সাথে ।
শিঙ্গাবাঁশী-রবে পাষাণ দ্রবয়ে
এই-রঙ্গ [চলে] পথে।।
নানা সুবাসিত বিচিত্র মোদক
মিষ্টান্ন শাকরি চিনি।
ছেনা চাঁপাকলা ছাঁচি সিতামিশ্রী
দুগ্ধ আবর্ত্তন ঘনি।।
স্নান আচরিল ভাই দুই জনে
সেই সে যমুনা-নীরে।
এ সব ভোজন করি দুইজন
উঠিল রথের পরে।।
কর্পূর তাম্বূল বদনে দেওল
বেশ বনাওল তায়।
বেশ করে অতি এ দুই মূরতি
করল অক্রূর রায়।।
তাহাতে অধিক বেশ বনাওলি
ধরণী পুলক মানি।
গগন হইতে দেবগণ মোহে
পাতালের যত ফণী।।
তিন লোক দেখি পুলক মানিল
মোহিত অক্রূর রায়।
কাঁদিতে কাঁদিতে অতি পুলকিত
ধরিয়া পড়ল পায়।।
কহে দুই ভাই — “শুনহ এথাই
করহ সিনান সেবা।
স্নান আচরিয়া যাইব চলিয়া
পূজহ আপন দেবা।।”
শুনিয়া অক্রূর বচন মধুর
প্রভুর আরতি পেয়া।
যমুনার জলে নামি কুতূহলে
নামি হরষিত হয়া।।
অক্রূর ডুবিলা জলের ভিতরে
রামকৃষ্ণ দুই দেখি।
বড় অদভুত জলের ভিতর
লখিল কেমন লখি।।
বিস্মিত মানল আপন অন্তরে
উঠল মস্তক তুলি।
যমুনার কূলে রথের উপরে
মেখে রামবনমালী।।
পুনরপি ডুবি জলের ভিতরে
তথা দেখি দুটি ভাই।
বিস্মিত হইয়া তুরিতে উঠিয়া
চরণে পড়ল যাই।।
“তুমি দেব হরি ইবে সে জানল
মুই কি জানব তোমা।”
চণ্ডীদাস বলে– “যব অবহেলে
বরিখে কতই প্রেমা।।”