চিতান–সখি সনে স্ব ভবনে বসে আছেন রাই।
এমন সময় কালে, জয়রাধা শ্রীরাধাবলে, বংশীধ্বনি করিলেন কানাই।
লহর–শুনে সেই বাঁশরী ধৈর্যহারা রাই কিশোরী,
পড়িলেন ঢলে, অম্নি ধেয়ে সখি সকলে,
কোলে তুলে রাই রতনে,জিজ্ঞাসে মধুর বচনে,
এমন হলে কি কারণে, বল্‌ গো মন খুলে।।
মিল–ললিতার গলে ধরি কমলিনী কয়
নারীর প্রাণে আর কত সয়, নিদারুণ বাঁশীর আকর্ষণ।
মহড়া–আর যেন বাজায় না বাঁশী শ্যামকে যেয়ে কর গো বারণ।
ধুয়া–শুনলে শ্যামের মোহন বাঁশী, আমি যে কি সুখে ভাসি, তোরা জানিস্‌ নে।
দারুণ শ্যামের বাঁশী পশিয়া প্রাণে,
কুলমান কলঙ্কের ভয়, লজ্জা ধৈর্য আর যত হয়,
সকলি মোর কাড়িয়া লয়, আমি হই পাগলীর মতন।।
খাদ–পরাধিনী নারী আমি, ঘরে গুরুজন।।
লহর–যদি ননদিনী, কৃষ্ণ প্রেমের বিবাদিনী
শুনে এ সকল, তবে হবে বড় অমঙ্গল,
আমায় দেখলে ধৈর্য হারা অম্নি হাতে লবে খাড়া,
দায় হবে রক্ষা করা জীবন কেবল।
মিল–দারুণ প্রেমের ফাঁসী, বাঁশী নিদারুণ,
কুল নারী করিতে খুন, কোন বিধি করিল গঠন।
ঝুমুর–সখি আর সহিত নারী, শ্যামের বাঁশী হৈল প্রাণের বেরী।।
পরাণ ধরিয়া টানে, নিষেধ বাধা নাই মানে, বলনা কি করি।
শুনিলে সে ধ্বনি, শুন গো সজনি, বুঝি না বাঁচি কি মরি।।
পরচিতান–সুধা বিষে, আছে মিশে বাঁশরী রবে।
আমার যে যন্ত্রণা, প্রাণে জানে আর কেউ জানে না
বল্‌ সখি কি উপায় হবে ?
লহর –বাঁশীর মিঠাতে প্রাণ, আকুল করে থাকে না জ্ঞান,
বিষে পুড়ে যায়, এখন হবে বল কি উপায়,
মনে কয় যে দিবানিশি, শুনি শ্যামের মধুর বাঁশী,
মধুর সঙ্গে বিষে আসি, পরাণ পোড়ায়।