সখি-করে ধরি চলল সুন্দরী
নিকুঞ্জ-মন্দির মাঝে।
গমন মন্থর জিনি করি-বর
চলিতে না পারে লাজে।।
অনঙ্গ-মোহিনী বালা।
অঙ্গের ছটায় সঙ্গিনী-ঘটায়
নিকুঞ্জ করিল আলা।।ধ্রু।।
হসিত বদনে নয়নের কোণে
নাগরের পানে চাঞা।
নীল-নলিনী দিয়া যেন ধনী
নিকুঞ্জে ভেটল গিয়া।।
রাই-প্রতিবিম্ব পাঞা শ্যাম-অঙ্গ
হইল হরিত-আভা।
সব সখীগণ চকিত-নয়ন
দেখিয়া দোহাঁর শোভা।।
অনিমিখে হরি রাধার মাধুরি
নয়নে করয়ে পান।
ভুখিল চকোর যেন সুধাকর
পাইয়া পূরল কাম।।
দুহুঁ দোহাঁ হেরি আনন্দে আগরি
বিহ্বল হইল জনু।
বিশেষে রাধিকা অবশ অধিকা
জড়িমা হইল তনু।।
অবশ হইয়া অঙ্গ হেলা দিয়া
ললিতা-সু্ন্দরী গায়।
সভয়-অন্তর কাঁপে কলেবর
চলিতে না চলে যায়।।
বিশাখা দেখিয়া খেদিত হইয়া
কহে কেনে সুধামুখি।
নাগরে হেরিয়া ভয়ে ভীত হৈয়া
মেলিতে না পার আঁখি।।
যে বন্ধু লাগিয়া সদা তব হিয়া
তিলেক না বান্ধে থেহ।
সে শ্যাম দেখিয়া বিবশ হইয়া
কাঁপিছে সকল দেহ।।
ধন্য অন্য-বামা শ্যামের সুষমা
হেরে হরষিত-মনে।
হাস পরিহাসে নব-নব রসে
বিহরে শ্যামের সনে।।
অতয়ে সুন্দরি ভয় পরিহরি
ধৈরজ ধরহ চিতে।
এত বলি তারে ধরি দুই করে
সোঁপিল শ্যামের হাতে।।
সমাদরে হরি আগে আগুসরি
ধরিয়া ধনীর করে।
পরম-যতনে কুসুম শয়নে
বসাইল ঊরু পরে।।
দুহুঁ রূপ হেরি সকল সুন্দরী
সুখের সায়রে ভাসে।
সে শোভা দেখিয়া কমলের হিয়া
ডুবল আনন্দ-রসে।।