হাসিয়া নাগর চতুর-শেখর
যতনে আনল তরি।
চাপায়ে রাধারে সবারে সুধায়-
“খেয়া দেয়া আছে ভারি।।
একে একে করি সবে পার করি
আমার এ না’টি ভাঙ্গা।
পাছে দরিয়াতে ডুবহ বেকতে
মোটা আছে কার গা।।
ক্ষীণ যার গায় চড়’সিয়া নায়
সবারে করিব পার।
মোর কাছে থোহ বচন শুনহ
যত আভরণ ভার।।”
রাধা বলে- “ভাল দানের বিচার
বিষম দানীর লেঠা।
কুজন-সংহতি কুবচন অতি
বড়াই কণ্টক কাঁটা।।
বড়াই-চরিত অতি বিপরীত
যা কহে তা শুনে দানী।
আভরণ মাগে এ বড়ি বিষম
কি হেতু নাহিক জানি।”
ভয়ে মনোদুঃখ সবাই বিমুখ
হইল বিষম বড়ি।
“ইহার উপায় কহ কহ দেখি
শুন গো বড়াই বুড়ি।।”
নৌকার উপরে সবা চড়াইয়া
চালাতে লাগিল তাই।
কেরয়াল বাহি যায় আন পথে
কহে বিনোদিনী রাই-
“ও পথে বাহিছ চলে তরিখানি
এ দিকে রহয়ে পথ।
এত দিনে জানি তোমার চরিত
বড় কর অনুরথ।।
দরিয়া যে দিকে বাহ কেরয়াল
মাঝারে মকর ভাসে।”
“ফের কেরয়াল শুন নন্দলাল,”-
কহে দ্বিজ চণ্ডীদাসে।।