যমুনা কিনারে

অভিনব কোমল সুন্দর পাত

অভিনব কোমল সুন্দর পাত।
সবারে বনে জনি পহিরল রাত।।
মলয়-পবন ডোলএ বহু ভাতি।
অপন কুসুম রস অপনে মাতি।।
দেখি দেখি মাধব মন উলসম্ভ।
বিরিদাবন ভেল বেকত বসন্ত।।
কোকিল বোলএ সাহর ভার।
মদন পাওল জগ নব অধিকার।।
পাইক মধুকর কর মধু পান।
ভমি ভমি জোহএ মানিনি মান।।
দিসি দিসি সে ভমি বিপিন নিহারি।
রাস বুঝাবএ মুদিত মুরারি।।
ভনই বিদ্যাপতি ই রস গাব।
রাধা-মাধব অভিনব ভাব।।

অন্তঃকথন:
বৃন্দাবনে মধুঋতু সমাগত। বৃক্ষে বৃক্ষে অভিনব, কোমল, সুন্দর রক্তাভ নবীনপত্র, মনে হচ্ছে সমস্ত বন যেন রক্তবর্ণ বসন পরিধান করেছে। কুসুমের ওপর দিয়ে মলয় পবন নানারূপে প্রবাহিত হচ্ছে, মনে হচ্ছে কুসুম যেন নিজের রসে নিজেই মেতে উঠেছে। প্রকৃতিতে এই চাঞ্চল্য দেখে মাধবের মন উল্লসিত হয়ে উঠল, বৃন্দাবনে বসন্ত ব্যক্ত হল! সহকার শাখায় কোকিল গান গাইছে, মদন যেন জগতে নতুন অধিকার পেয়েছেন! বসন্তের দূত মধুকর মধুপান করছে, ফুলে ফুলে ঘুরে ঘুরে সে যেন মানিনীর মান অন্বেষণ করছে। দৌত্য করবে বলে দিকে দিকে ঘুরে, বিপিন পরিদর্শন করে হৃষ্ট মাধবকে বোঝাচ্ছে যে বাসন্তী রাসের সময় সমাগত! বিদ্যাপতি গাইছেন, বসন্তের আগমনে এই রাস এ রাধামাধবের অভিনব ভাব!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী