যমুনা কিনারে

আজে তিমির দহ দীস ছড়লা

আজে তিমির দহ দীস ছড়লা ।
আজে দিঘর ভএ দিবস বঢ়লা।।
আজে অকথ ভেল পরিজন কথা।
আরতি ন রহএ উচিত বেথা।।
এ সখি এ সখি ফললি সুবেলা।
নিঅর আএল পিআ লোচন মেলা।।
বিরহে দগধ মন কত দুর ধওলা।
মাগল মনোরথ কওনে সখি পওলা ।।
কত খন ধরব জাইতে জিব রাখি ।
আসা বাঁধ পড়ল মন সাখি।।
ভনই বিদ্যাপতি সুন সজনী।
বালভু সুন ভেল মহঘি বজনী।।

অন্তঃকথন:
মাধব শ্রীমতীর মনে প্রেমের জাগরণ ঘটিয়ে এখন দর্শন অবধি দেন না। দূতী এসে মাধবকে বুঝিয়ে বলছেন, হে কানাই তুমি বিধির বশীভূত হয়ে তার সঙ্গ ত্যাগ করলে, কিন্তু দর্শনের সাধ তো হয় বলো! সময়গুণে না হয় মধু অমিল হতে পারে , সবাই সে মধু হয়তো পায় না কিন্তু সুগন্ধে কে বাধা দিতে পারে, সৌরভ তো সবাই উপভোগ করে? তোমার অধর মধু যদি তুমি নাই বা দাও, তবু দর্শনে বঞ্চিত করো কেন? মাধব তোমার স্নেহ বড় কঠিন, শ্রীমতী তোমার বিরহব্যাধিতে মূর্ছিত হয়ে পড়েছে, তার প্রাণ সংশয়! দেখো, জগতে তো কতই অগ্রগণ্যা নাগরী আছে, তাদের অন্তরে কত কত গুপ্ত প্রেমও আছে, কিন্তু সহস্র মুদ্রা দিলেও কি সে রস ও সে বয়স কি তুমি পাবে? অর্থাৎ দূতী বলছেন, মাধব যা তোমার তাকে অবহেলা কোরো না, সময় চলে গেলে সহস্র মুদ্রাতেও এ প্রেম মিলবে না।

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী