এক দিন গোচারণে সকল সখা সনে
বসি এক তরুয়ার ছায়।
নন্দের নন্দন হরি কহে কিছু মৌন ধরি
সুবল সখার পানে চায়।।
সখা হে, কহ দেখি কি করি উপায়।
হিয়া করে কেন মত সহিতে না পারি এত
নিরন্তর জ্বলিছে হিয়ায়।।
হৃদয়ের কথা জান আমার বচন শুন
কহ দেখি আমার যবম।
মরম ব্যথিত তুমি কি আর বলিব আমি
নয়ানে হয়েছে এক ভ্রম।।
অপূর্ব্ব সে অকস্মাতে দেখিল নয়ানভিতে
পূর্ব্বাপরে যা দেখিল ভাই।
শুন সখা মন দিয়া যেমন করিছে হিয়া
শ্রবণ-পরশ কিছু কই।।
পূর্ব্বাপর যা দেখিল তাহা কিছু রাগ হইল
সেই রূপ পূর্ব্বরাগ হল।
পূর্ব্বরাগ আগি হেন জ্বলিয়া উঠিছে যেন
ইহার উপায় কিছু বল।
সেই হৈতে তনু মোর মরমে হয়েছে ভোর
তনু মন সব হৈল চল।।
আচম্বিতে পর দিনে ধবলী চলিলা বনে
গেল বৃকভানুপুর দিয়া।
দেখিল ধবলী নাই খুঁজিল অনেক ঠাঁই
অনুসারে চলিল পাঁজিয়া।।
দেখি সে খুরের চিহ্ন রহি যাই ভিন্ন ভিন্ন
পদ অনুসারে গেল চলি।
বৃকভানুপুর বনে আনের ধেনুর সনে
ধবলী মিলিয়া গেল ভালি।।
তাঁহা যে দেখিল ভাই অকথ্য কথন এই
কহিতে উঠয়ে মনে রাগি।
ছায়া ছাড়িয়া আসি সঙ্গে সহচরী দাসী
কনক গাগরি লই কাঁখে।
ধনীর রূপের ছটা কোটী চাঁদ জিনি ঘটা
কত সুধা বরিখয়ে মুখে।।
স্বপ্ন সম দেখি তারে ছায়ার সমান পুবে
মোর অঙ্গে আভা আসি বাজে।
চণ্ডীদাস কহে তাথে শুন প্রভু যদুনাথে
এ কথা বুঝিবে আন কাজে। ।