যমুনা কিনারে

জহিআ কাহ্ন দেল তোহে আনি

জহিআ কাহ্ন দেল তোহে আনি।
মনে পাওল ভেল চৌগুন বানি।।
আবে দিনে দিনে পেম ভেল থোল।
কএ অপরাধ বোলব কত বোল।।
অবে তোহি সুন্দরি মনে নহি লাজ।
হাথক কাকন অরসী কাজ।।
পুরুসক চঞ্চল সহজ সভাব।
কএ মধুপান দহও দিস ধাব।।
একহি বেরি তঞে দূর কর আস।
কূপ ন আবএ পথিকক পাস।।
গেলে মান অধিক হোঅ সঙ্গ।
বড় কএকী উপজাওব রঙ্গ।।

অন্তঃকথন:
শ্রীমতী মান করেছেন। মাধব ফিরে গেছেন বিফল মনোরথ হয়ে! মাধব চলে যেতে কলহান্তরিতা রাধিকা, আপন ভুল বুঝতে পেরে আক্ষেপে মগ্ন! এই সকল ঘটনাবলী দেখে দূতী শ্রীমতীর ওপর ক্ষুব্ধ, তিনি রাধিকাকে বলছেন, যখন তোমার কাছে প্রথম কানাইকে এনে দিলাম, তোমার আনন্দ দেখে মনে হয়েছিল আমি আমার কাজের চতুর্গুণ বানি পেলাম! আর এখন দিনে দিনে তোমার প্রেম হ্রাস পেল! অপরাধ করে ফেলে এখন আর কত সাফাই গাইবে! সুন্দরি, এখনো তোমার লজ্জা হল না? হাতের কাঁকন কি কখনো আয়নায় দেখতে হয়? তুমি যে অপরাধ করেছ, সেকি বুঝতে পারছো না? আয়নায় দেখলে বুঝবে? পুরুষের স্বভাব সহজেই চঞ্চল হয়, ভ্রমরের মত মধুপান করতে দশদিকে ছুটে বেড়ায়! মাধব ফিরে এসে তোমায় সাধ্য সাধনা করবেন এ আশা তুমি ত্যাগ কর! কূপ কখনো পথিকের কাছে আসে না, তৃষ্ণার্ত পথিককেই কূপের কাছে যেতে হয়! মাধবও তেমনি তোমার তৃষ্ণা মেটাতে নিজে থেকে আসবেন না একথা জেনে রেখো! মান গেলে তবেই অধিক সঙ্গ লাভ করা যায় রাই! অভিমান ত্যাগ না করলে মিলন হয় না, তেমনই মান ভঙ্গ হলে মিলন অধিকতর সুখের হয়! মান করে নিজেকে বড় প্রমাণ করে তুমি কি রঙ্গ দেখাতে চাও? দূতী বলতে চাইছেন অধিক মানে শ্রীমতীর কোন লাভই হবে না বরং তিনি প্রেমসুখ থেকে বঞ্চিতই হবেন কেবল!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী