শ্রীশ্রী নিত্যানন্দ-মহিমা কীর্ত্তন (৩)

শ্রীশ্রীরাধারমণো জয়তি


(১৩২৪ সাল ১২ই বৈশাখ বুধবার, শীলবাটীতে ২৪ প্রহর উপলক্ষে)

শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।
‘‘ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম ।।’’ [মাতন]

ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম রাধে

আমার,–নিতাই-গুণমণি ভজ
ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি

আমি,–কি জানি গুণ কত বা বাখানি—ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি

যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি

আচণ্ডালের দ্বারে দ্বারে গিয়ে—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দন্তে,–তৃণ ধরি’ করি’ যোড়পানি—যেচে, –বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দুনয়নে,–বহে ধারা যেন সুরধুনী—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি

ভাই রে আমার নিতাই সুন্দর

ও তার,–গৌরপ্রেমে গড়া কলেবর—ভাই রে আমার নিতাই সুন্দর

নিতাই আমার,–গোরারসে গর-গর
গোরাভাবে সদাই বিভোর
জানে না নিতাই আপন কি পর

গৌরপ্রেম,–মদিরা-পানে হয়ে বিভোর—জানে না নিতাই আপন কি পর

নিতাই আমার,–শ্রীচৈতন্যচাঁদের চোকর
নিতাই আমার,–গোরাপদ্মে,– গোরাপদ্ম মত্ত-মধুকর

প্রেমে,–মধুপানে সদাই বিভোর—নিতাই আমার,–গোরাপদ্মে মত্ত-মধুকর

ভাই রে—নিতাই রঙ্গিয়া আমার

ও,–শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-বিনোদিয়া—ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার
আমরি,–গোরারসে রসিয়া—ভাই রে,–নিতা রঙ্গিয়া আমার
আমরি,–গৌরপ্রেমে উন্মাদিয়া—ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার

নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া

গলবাসে দন্তে তৃণ ধরিয়া—নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া

নিতাই আমার,–আচণ্ডালে বলে কাঁদিয়া

গলবাসে দন্তে তৃণ ধরিয়া—নিতাই আমার,–আচণ্ডালে বলে কাঁদিয়া

আমি,–বিনামূলে যাব বিকাইয়া

তোদের,–পাপ-তাপের বোঝা নিয়া—আমি,–বিনামূলে যাব বিকাইয়া
একবার,–গৌরহরি বলে আমায় লও কিনিয়া—আমি,–বিনামূলে যাব বিকাইয়া

নিতাই আমার,–এত বলি’ পড়ে ঢলিয়া
নিতাই আমার,–চলে যেতে পড়ে ঢলিয়া

আমার,–গৌরহরি ভজ বলিয়া—নিতাই আমার,–চলে যেতে পড়ে ঢলিয়া
রামাই-গৌরদাস, ধরে বাহু পসারিয়া—নিতাই আমার,–চলে যেত পড়ে ঢলিয়া

ভাই রে,–আমার নিতাই নয়ন-তারা

ও-সে,–গৌরপ্রেমে আত্মহারা—ভাই রে,–আমার নিতাই নয়ন-তারা
নিতাই আমার, গৌরপ্রেমে পাগল-পারা—ভাই রে,–আমার নিতাই নয়ন-তারা

নিতাই আমার,–নিশিদিশি গায় গোরা গোরা

দুনয়নে বহে শত-ধারা—নিতাই আমার,–নিশিদিশি গায় গোরা গোরা

ভাই রে,–আমার প্রভু নিত্যানন্দ
আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ

আমর,–ঐ গরবে হৃদয়ে ভরা—আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
আমি,–ঐ গরবে সদা ফিরি—আমার,—প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ

চাঁদ,–নিতাই আমার শুদ্ধস্বর্ণ

‘‘ভকতি-রতনখনি, উঘাড়িয়া প্রেমমণি,’’

যার সন্ধান কেউ জানতে না
যা—গোলকেও গোপনে ছিল
যা,–ব্রহ্মাদির‍ও সুদুর্ল্লভ
‘‘নিজ-গুণ সোণাতে মুড়িয়া।’’
আমার নিতাই গুণমণি
ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি

‘‘উত্তম অধম নাই, যারে দেখে তার ঠাঁই,’’

অদোষদরশী নিতাই

অযাচিত-কৃপাকারী—অদোষদরশী নিতাই

‘‘দান কৈল জগত ভরিয়া।।’’
যারে তারে পরাইল

নাম,–চিন্তামণির মালা গেঁথে—যারে তারে পরাইল

‘‘স্মঙরি নিতাই-গুণ, কেমন করয়ে মন,
আমি,–তাহা কি কহিতে পারি ভাই।’’ রে !

আমার,–মন জানে আর আমি জানি

নিতাই,–গুণ স্মঙরি কেমন করে—আমার,–মন জানে আর আমি জানি

যদি,–‘‘লাখে লাখে হয় মুখ, তবে সে মনের সুখ,
আমার,–ঠাকুর-নিতাইর গুণ গাই।।’’ রে !!

দারুণ বিধি সৃজন জানে না
কখনও বুঝি শুনে নাই

যে বিধি গড়েছে মোদের—কখনও বুঝি শুনে নাই
নিতাই-গুণমণির গুণ—কখনও বুঝি শুনে নাই

তার কি দেয় একটা বদন

যার,–গাইতে সাধ নিতাই-গুণ—তার কি দেয় একটা বদন

আজ,–শ্রীগুরু-বৈষ্ণবের কৃপায়
ভাই ভাই মিলেছি এক ঠাঁই
প্রাণভরে গাই রে

নিতাই-গুণমণির গুণ—প্রাণভরে গাই রে

নিতাই নিতাই নিতাই বল ভাই

বসুধা-জাহ্নবা-প্রাণ—নিতাই নিতাই নিতাই বল ভাই

[মাতন]
কুলের দেবতা নিতাই

গরব করে বল ভাই—কূলের দেবতা নিতাই

[মাতন]
আমার নিতাই রে

কুলের দেবা—আমার নিতাই রে

নিতাই আমার শুদ্ধস্বর্ণ

গৌর,–অনুরাগ-সোহাগায় শোধন করা—নিতাই আমার শুদ্ধস্বর্ণ

ধরায় পরশমণির বর্ণ

যারে তারে পরশ করে—ধরায় পরশমণির বর্ণ

পরশিতেও হয় না
জগ-জনে এই ত’ জানে

পরশ ছুঁলে সোণা হয়—জগ-জনে এই ত’ জানে

যারে তারে সোণা করতে নারে

পরণমণি বলে যারে—যারে তারে সোণা করতে নারে

সেও-ত’ ধাতুর বিচার করে

পরশমণি বলে যারে—সেও-ত’ ধাতুর বিচার করে

বিপরীত গতি রে

আমার,–শ্রীগৌরাঙ্গের প্রেমরাজ্যে—বিপরীত গতি রে

সোণা ছুঁলে পরশ হয়
পরশিতেও হয় না

এমনি আমার নিতাই-সোণা—পরিশিতেও হয় না

পরশেরও অপেক্ষা রাখে না
মুখে বলা বা কাণেতে শোনা

আমার নিতাই-সোণার নাম—মুখে বলা বা কাণেতে শোনো

বললেই হয় বা শুনলেই হয়

নিতাই নিতাই নিতাই নিতাই—বললেই হয় বা শুনলেই হয়
হেলায় শ্রদ্ধায় নিতাই নিতাই—বললেই হয় বা শুনলেই হয়

অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে

নিতাই নিতাই বলতে শুনতে–অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে
চিত্তদর্পণ মার্জ্জিত হয়ে –অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে

চিত্তদর্পণ মার্জ্জিত হয়

দুবর্বসনা-মালিন্য—পূর্ণ—চিত্তদর্পণ মার্জ্জিত হয়
নিতাই নিতাই বলতে শুনতে—চিত্তদর্পণ মার্জ্জিত হয়

হৃদয়ে জাগে রে

পরশমণির খনি—অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে
‘পরশমণির খনি’—
ও-সে অপ্রাকৃত—পরশমণির খনি
মহা,–ভাব-প্রেম-রসময়—পরশমণির খনি
অখিল,–লাবণ্য-মাধুর্য্য-আলয়—পরশমণির খনি

হৃদয়ে জাগে রে

মূর্ত্তিমান হয়ে খনি—হৃদয়ে জাগে রে
‘মূর্ত্তিমান্ হয়ে’—
কীর্ত্তন-নাটুয়া-বেশে—মুর্ত্তিমান্ হয়ে

হৃদয়ে জাগে রে

রসরাজ-গৌরাঙ্গ-নট—হৃদয়ে জাগে রে
‘রসরাজ—গৌরাঙ্গ-নট’—
সঙ্কীর্ত্তন-সুলম্পট—রসরাজ গৌরাঙ্গ নট

হৃদয়ে গৌর উদয় হয়

নিতাই নিতাই বল্তে শুন্তে—হৃদয়ে গৌর উদয় হয়

পরাণ,–গৌরাঙ্গ-শ্রীমুখের কথা ভাই
শ্রীমুখে বলেছেন গৌরহরি

‘‘মুখেও যে জন বলে মুঞি নিত্যানন্দ—দাস। রে !
সে,–নিশ্চয় দেখিবে আমার স্বরূপ-প্রকাশ।। রে !!
গোপীগণের যেই প্রেম কহে ভাগবতে। রে !
আমার,–একলা নিত্যানন্দ হইতে পাইবে জগতে ।। রে !!
সংসারের পার হইয়া ভক্তির সাগরে। রে !
যে ডুবিবে সে ভজুক আমার নিতাইচাঁদেরে।।’’ রে !!

বাহু তুলে বলেন গৌরহরি
সে আমার আমি তার

আমার,–নিতাই সর্ব্বস্ব যার—সে আমার আমি তার

[মাতন]
গৌরাঙ্গ-শ্রীমুখের কথা
গৌর-বশীকরণ—মন্ত্র

প্রভু-নিত্যানন্দের নাম—গৌর-বশীকরণ-মন্ত্র

হৃদয়ে উদয় হয়

নিতাই নিতাই বলতে গৌর—হৃদয়ে উদয় হয়

নিশিদিশি গুণেতে কাঁদায়

হৃদয়ে গৌর উদয় হয়ে—নিশিদিশি গুণেতে কাঁদায়

প্রাকৃত-ভোগ-বাসনা ঘুচায়

উদয় হয়ে গুণেতে কাঁদায়—প্রাকৃত-ভোগ-বাসনা ঘুচায়

ভাব-ভূষণে ভূষিত করে

যা’,–চতুর্দ্দশ-ভুবনে অভাব—সেই,–ভাব-ভূষণে ভূষিত করে
কম্প-অশ্রু-পুলকাদি—ভাব-ভূষণে ভূষিত করে
‘কম্প-অশ্রু-পুলকাদি’—
গৌর গৌর বলতে বলতে—কম্প-অশ্রু-পুলকাদি

ভাব-ভূষণে ভূষিত করে

গোপী,–ভাবামৃতে লুব্ধ করে—ভাব-ভূষণে ভূষিত করে

ভাবামৃতে লুব্ধ করে
দেহাভিমান যায রে দূরে

গৌর-গুণে ঝুরে ঝুরে—দেহাভিমান যায় রে দূরে
দারুণ-সংসার,–বন্ধনের একমাত্র কারণ—এই,–দেহাভিমান যায় রে দূরে

গৌর গুণে ঝুরে ঝুরে
সেই কথা প্রকট করে

‘‘একলা পুরুষ কৃষ্ণ আর সব নারী।’’ রে !

ভাবামৃতে লুব্ধ করে

বরজ-গোপিকার—ভাবামৃতে লুব্ধ করে

রাধাদাসী-অভিমান হয়

গৌর-গুণে ঝুরে ঝুরে—রাধাদাসী-অভিমান হয়
দেহ-স্মৃতি থাকে না—রাধাদাসী-অভিমান হয়

দেখে হৃদি-মণি-মন্দিরে

রাধাদাসী-অভিমান পেয়ে—দেখে হৃদি-মণি-মন্দিরে

যুগল-রূপে দেখা দেয় রে

রাধাদাসী-অভিমান দিয়ে—গৌর,–যুগল-রূপে দেখা দেয় রে

রাধাশ্যাম-রূপে দেখা দেয় রে

হৃদি-মণি-মন্দিরে—রাধাশ্যাম-রূপে দেখা দেয় রে

ইঙ্গিত করেন কৃপা করে

পরম-করুণ শ্রীগুরুদেব—ইঙ্গিত করেন কৃপা করে

যদি,–ভোগ করতে চাও রে
নিশিদিশি জপ কর

‘হরে কৃষ্ণ’ নাম-মালা—নিশিদিশি জপ কর
রাধাদাসী-অভিমান—নিশিদিশি জপ কর
হৃদয়ে যুগল স্মঙর—নাম-মালা,–নিশিদিশি জপ কর

জপ,–‘‘হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
জপ,– হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ।।’’

নিশিদিশি জপ কর
গুরুর কৃপায় জপে সাধক

‘হরে কৃষ্ণ রাম’ নাম—গুরুর কৃপায় জপে সাধক
রাধাদাসী-অভিমানে—‘হরে কৃষ্ণ’ নাম জপে সাধক

আরোপেতে লীলা হেরে
নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে

মধুর-শ্রীবৃন্দাবনে—নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে
যমুনা-পুলিন-বনে—নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে
নিভৃত-নিকুঞ্জ-মাঝে—নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে

যুগল-বিলাস হেরে

গুরুরূপা-সখীর আনুগত্যে—যুগল-বিলাস হেরে

লয়ে যায় তার করে ধরে

শ্রীরাস-মণ্ডলে—লয়ে যায় তার করে ধরে

ইঙ্গিত করে দেখাইয়ে দেয়
ঐ একবার চেয়ে দেখ
মূরতি ধরেছে

তোমার জপা-নাম-মালা—মূরতি ধরেছে

মূরতিমন্ত নাম-মালা

শ্রীরাস-মঙ্গলে দেখ—মূরতিমন্ত নাম-মালা

বলিবার কথা নয় ভাই

সাধক-হিয়ার গুপ্ত-নিধি-বলিবার কথা নয় ভাই

একমাত্র ভোগ্য-নিধি
অনেকেই ত’ জপ কর

অষ্টোত্তর-শত-মালা—অনেকেই ত’ জপ কর

গুরু-কৃপায় সাধক দেখে

নাম-মালার মূরতি—গুরু-কৃপায় সাধক দেখে

মাঝে দেখে সুমেরু

জড়াজড়ি কিশোরী-কিশোরী—মাঝে দেখে সুমেরু

চারিদিকে নামের মালা
নামের মালা ব্রজবালা

সুমেরু-যুগলকিশোর-ঘিরে—নামের মালা ব্রজবালা

মাঝে মাঝে চিকণ-কালা

নামের মালা ব্রজবালা—মাঝে মাঝে চিকণ-কালা
নামের মালা ব্রজবালা—গ্রন্থিরূপে চিকণ-কালা

মূরতিমন্ত নাম-মালা

শ্রীরাসমণ্ডলে দেখে—মূরতিমন্ত নাম-মালা

দেখ্‌তে দেখ্‌তে কিছুই দেখে না
কোন মূরতি দেখ্‌তে পায় না

রাধা, কৃষ্ণ, গোপী-মণ্ডলী—কোন মূরতি দেখ্‌তে পায় না

দেখে,–অপরূপ এক গৌরবর্ণ

অকস্মাৎ প্রকাশ—দেখে,–অপরূপ এক গৌরবর্ণ

কোন মূরতি দেখা যায় না

সেই,–গৌরবর্ণের প্রভাবেতে—কোন মূরতি দেখা যায় না

তখন অত্যন্ত উৎকণ্ঠা বাড়ে
কিছু পরে দেখতে পায়

শ্রীগুরু-কৃপায়—কিছু পরে দেখতে পায়

আবির্ভাব এক নব-মূরতি

ব্রজে কখনও দেখি নাই—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
মাখামাখি পুরুষ-প্রকৃতি—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
কিশোরী-বরণ কিশোর-গঠন—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
রাই-এর বরণ শ্যামের গঠন—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
যুগল—উজ্জ্বল-রস-নির্য্যাস—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
মহাভাব-প্রেমরস-ঘনাঘৃতি—আবির্ভাব এক নব-মূরতি

মূরতিমন্ত প্রেমবৈচিত্ত্য

নিত্য-মিলনে নিত্য-বিরহ—মূরতিমন্ত প্রৈমবৈচিত্ত্য

মিলনে দুই-রসের খেলা

অপরূপ-মূরতিতে—মিলনে দই-রসের খেলা
মিলনে মিলা অমিলা—মিলনে দুই-রসের খেলা

বিলাস-বিবর্ত্ত লীলা
আশ-মিটান মূরতি রে

প্রাণ-রাধা—রাধারমণের—আশ-মিটান মূরতি রে

বিলাস-বিবর্ত্ত-মূরতি

রাস-বিলাসের পরিণতি—বিলাস-বিবর্ত্ত-মূরতি
ব্রজের,–অপূর্ণ-সাধ পুরাইতে—বিলাস-বিবর্ত্ত-মূরতি
রাই কানু, কানু রাই—বিলাস-বিবর্ত্ত-মূরতি

[মাতন]
সে যে আমার গৌর-মূরতি

আবির্ভাব এক নব-মূরতি—সে যে আমার গৌর-মূরতি

[মাতন]
শত শত বিকাশ রে

গৌরাঙ্গ-মূরতিতে—শত শত বিকাশ রে
শ্রীরাধাগোবিন্দ-লীলার–শত শত বিকাশ রে

তাই লিখেছেন কবিরাজ

‘‘কৃষ্ণলীলামৃত-সার, তার শত শত ধার,
দশদিকে বহে যাহা হইতে। রে !
সে চৈতন্য-লীলা হয়, সরোবর অক্ষয়,
মনোহংস চরাহ তাহাতে।।’’ রো ! !

সে যে আমার গৌর-মূরতি
গুরুর কৃপায় সাধক দেখে
পরিণতি গৌর-মূরতি
ব্রজ দেখে নদীয়া

গৌরাঙ্গ-মূরতি দেখেই—ব্রজ দেখে নদীয়া

শ্রীরাসণ্ডল শ্রীবাস-অঙ্গন
মাঝে নাচে শচীনন্দন

সঙ্কীর্ত্তন-রাসস্থলীর—মাঝে নাচে শচীনন্দন

চারিদিকে ঘিরে নাচে

সখা-সখী-মিলিত পরিকর—চারিদিকে ঘিরে নাচে

যুগলে যুগলে খেলা

মধুর-গৌরাঙ্গ-লীলা—যুগলে যুগলে খেলা

গৌরাঙ্গ যুগল রে
পরিকর‍ও যুগল রে
এক সখা এক সখী মিলে
এক একটি পরিকর
কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে
সকলেই উন্মত্ত
ঊথলিছে প্রেমতরঙ্গ
দেখতে দেখতে ভেসে গেল

সুরধনীর দুই-কূল—দেখতে দেখতে ভেসে গেল
অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ—প্রেমবন্যায় ভেসে গেল

গুরু-কৃপায় সাধক দেখে
চৌদ্দ-ভুবন ভেসে যায়

শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেমবন্যায়—চৌদ্দ-ভুবন ভেসে যায়

[মাতন]
বিকাইছে গোরার পায়

দিব্য-দৃষ্টে সাধক দেখে—বিকাইয়ে গোরার পায়
জগতের নর-নারী—বিকাইছে গোরার পায়
প্রেমধন পাবার লাগি’—বিকাইছে গোরার পায়

অপরূপ গৌরাঙ্গ-লীলা

শুনিলে গলয়ে শিলা—অপরূপ গৌরাঙ্গ-লীলা

‘‘অদ্যাবধি সেই লীলা করে গৌর-রায়। রে !
কোন কোন ভাগ্যবান দেখিবারে পায়।।’’ রে !!

প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠ্‌ছে

সেই লীলা স্মঙরিয়ে—প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠ্‌ছে

চন্দন-যাত্রা আরম্ভ হল

মধুর-শ্রীনীলাচলে—চন্দন-যাত্রা আরম্ভ হল

সাজিছেন গৌরাঙ্গ-গণ
সাজিছেন সেন শিবানন্দ

ঘাটি সমাধান করবেন বলে—সাজিছেন সেন শিবানন্দ

সাজিছেন বসু রামানন্দ

কৃষ্ণের পট্টডোরী লয়ে—সাজিছেন বসু রামানন্দ

সাজিছেন রাঘব-পণ্ডিত

প্রভুর,–প্রিয় ঝালি—দ্রব্য লয়ে—সাজিছেন রাঘব-পণ্ডিত

প্রাণ উচাটন সবার

কতক্ষণে যাব বলে—প্রাণ উচাটন সবার

‘শচীমাতার আজ্ঞা লইয়া, সকল ভকত ধাইয়া,
সবে,–চলিলেন নীলাচলপুরে।’’


দাও মা পদধূলি দাও
তোমার,–প্রাণদুলালে দেখতে যাব—দাও মা পদধূলি দাও

কেঁদে কেঁদে বলছেন শচী-মা

নরহরির দুটি করে ধরে—কেঁদে কেঁদে বলছেন শচী-মা

এই,–দ্রব্য আমার নিমাইকে দিও
সদাই তুমি কাছে থেকে

ক্ষুধা পেলে খেতে দিও—সদাই তুমি কাছে থেকো

‘‘শ্রীনিবাস হরিদাস, অদ্বৈত-আচার্য্য-পাশ,
মিলিলা সকল সহচরে।।’’

আমরা,–প্রাণ-গৌর দেখতে যাব
চল শান্তিপুর নাথ
চলিলেন সব গৌরাঙ্গগণ
আহার নাই নিদ্রা নাই
নিশিদিশি কাঁদে রে

সোণার গৌর প্রভু বলে—নিশিদিশি কাঁদে রে

চলিলেন,–গৌরাঙ্গগণ নদ-নদী

গৌর-সিন্ধুতে মিশ্‌বে বলে—চলিলেন,–গৌরাঙ্গগণ নদ-নদী

প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠছে
কে আমাদের লয়ে যাবে
দেখাইবে জল-কেলি

নরেন্দ্রতীরে—দেখাইবে জল-কেলি

মধুর রথযাত্রা—লীলা
অপরূপ মিলন-রঙ্গ

আঠার-নালার পথে—অপরূপ মিলন-রঙ্গ

কিছুই ত’ জানতাম না
জগদগুরু নিত্যানন্দ
কৃপা করে তুলে এনেছ

গুরুরূপে দেখা দিয়ে—কৃপা করে তুলে এনেছে

সঙ্গে করে লয়ে গেছ

মধুর-শ্রীনীলাচলে—সঙ্গে করে লয়ে গেছ

ভাবাবেশে করেছ কীর্ত্তন

নীলাচলে গৌর-লীলা—ভাবাবেশে করেছ কীর্ত্তন

সেই লীলা প্রকট জেনে
আনন্দে ডুবে গেছি মোরা
কি বলব দুঃখের কথা
সকল-সুখেই বঞ্চিত হলাম
কিছুতেই দেখতে পেলাম না

‘‘শ্রী-গৌরাঙ্গের সহচর, শ্রীবাসাদি গদাধর,
নরহরি মুকুন্দ মুরারি।
সঙ্গে স্বরূপ রামানন্দ, হরিদাস প্রেমকন্দ,
দামোদর পরমানন্দ-পুরী।।
যে সব করিলা লীলা, শুনিলে গলয়ে শিলা,
তাহা মুঞি না পাইনু দেখিতে।’’

কিছুতেই দেখতে পেলাম না

প্রেমপুরুষোত্তম-লীলা—কিছুই দেখতে পেলাম না
প্রেমোন্মত্তকারী লীলা—কিছুই দেখ্‌তে পেলাম না
পাষাণ-গলান-লীলা—কিছুই দেখতে পেলাম না।

হায়,–‘‘তখনে না হইল জন্ম, এবে ভেল ভববন্ধ,
সে না শেল রহি গেল চিতে।।
হা,–প্রভু সনাতন রূপ, রঘুনাথ ভট্ট-যুগ,
ভূগর্ভ শ্রীজীব লোকনাথ
এ সকল প্রভু মেলি, যে সব করিলা কেলি,
বৃন্দাবনে ভক্তগণ-সাথ।।’’

গৌর-লীলা তার গণের খেলা
কিছুই দেখতে পেলাম না

এবে,–‘‘সবে হৈল অদর্শন, শূন্য ভেল ত্রিভুবন,
অন্ধ ভেল সবাকার আঁখি।
কাহারে কহিব দুঃখ, আর,–না দেখার ছার মুখ,
আছি যেন মরা পশু-পাখী।।’’
‘‘অন্ন-জল বিষ খাই, তবু-মরিয়া নাহিক যাই,
ধিক্‌ ধিক্‌ নিলাজ পরাণ।।’’

কি সুখে বা আছে রে

গুরু-গৌরাঙ্গ-বৈমুখী পরাণ—কি সুখে বা আছ রে

গেলেই ত’ ভাল রে

হা গুরু গৌরাঙ্গ বলে—গেলেই ত’ ভাল রে

হা,–পরম-করুণ শ্রীগুরুদেব
শুনেছি তোমার শ্রীমুখে
যেখানে হয় নামযজ্ঞ
সেখানেতে নিত্য প্রকট

সাঙ্গোপাঙ্গে শ্রীগৌরাঙ্গ—সেখানেতে নিত্য প্রকট

আজ,–তিন-দিন গত হয়
মনে মনে কতই খুঁজেছি
এই ত নামযজ্ঞ
কৈ কৈ তারা কৈ
কৈ প্রাণের গৌরহরি
কোথা হে নিত্যানন্দ
কোথা শ্রীবাস নরহরি
একবার দেখা দাও

হা শ্রীগুরুদেব—একবার দেখা দাও
এই নামযজ্ঞ-স্থলে—একবার দেখা দাও
সাঙ্গোপাঙ্গে গৌর লয়ে—একবার দেখা দাও

প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠছে
প্রেমের হাট ভেঙ্গে যাবে

নিশি পরভাত হলেই—প্রেমের হাট ভেঙ্গে যাবে

একবার দেখা দাও
প্রতি-হৃদে উদয় হও

সঙ্কীর্ত্তন-রাস প্রকট করে—প্রতি-হৃদে উদয় হও

হাট যেন ভেঙ্গ না

সঙ্কীর্ত্তন-সুখের—হাট যেন ভেঙ্গ না

প্রেমের হাট ধরি হৃদে
চলিব সংসারের পথে
দুঃখের লেশ,–মোদের স্পর্শ করবে না
আর এক নিবেদন নিতাই
সকল সুখেই বঞ্চিত মোরা
জুড়াবার,–আর কোন উপায় নাই
আশাবারির আশায় আছি
শুনেছি শ্রীগুরু—শ্রীমুখে
শ্রীমুখে বলেছেন গৌরহরি

এই,–‘‘পৃথিবীর মধ্যে আছে যত দেশ গ্রাম। রে !
সর্ব্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম।।’’ রে !!

সে দিনের আর কদিন বাকী
তোমাকই ত’ দিয়াছেন ভার

‘বিশ্বম্ভর’ নাম পুরণের—তোমাকেই ত’ দিয়াছেন ভার

আমরা দেখতে পাব না কি
সে দিনের আর কদিন বাকী
এই বাসনা পূরাও নিতাই
কোন গুণে সে গৌর পাব

সনাতনের সাধনের ধন—কোন্‌ গুণে সে গৌর পাব
রঘুনাথের সাধ্যনিধি—কোন্‌ গুণে সে গৌর পাব

গৌর পাবার কোন আশা নাই
এই বাসনা পূবাও নিতাই
যেখানে যাব দেখতে পাব
ঘরে ঘরে সবাই ঝুরছে

হা,—সোণার গৌর প্রভু বলে—ঘরে ঘরে সবাই ঝুরছে

[মাতন]

এস আমার প্রভু নিতাই তেমনি করে আবার এস
নাম-প্রেমে জগৎ মাতাও জগ-ভরি উঠুক রোল
গৌরহরি হরিবোল—জগ-ভরি উঠুক রোল

[মাতন]

————-

‘‘ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’ [মাতন]



অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ