‘‘ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম ।।’’ [মাতন]
ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম রাধে
ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি
আমি,–কি জানি গুণ কত বা বাখানি—ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি
আচণ্ডালের দ্বারে দ্বারে গিয়ে—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দন্তে,–তৃণ ধরি’ করি’ যোড়পানি—যেচে, –বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দুনয়নে,–বহে ধারা যেন সুরধুনী—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
ও তার,–গৌরপ্রেমে গড়া কলেবর—ভাই রে আমার নিতাই সুন্দর
গোরাভাবে সদাই বিভোর
জানে না নিতাই আপন কি পর
গৌরপ্রেম,–মদিরা-পানে হয়ে বিভোর—জানে না নিতাই আপন কি পর
নিতাই আমার,–গোরাপদ্মে,– গোরাপদ্ম মত্ত-মধুকর
প্রেমে,–মধুপানে সদাই বিভোর—নিতাই আমার,–গোরাপদ্মে মত্ত-মধুকর
ও,–শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-বিনোদিয়া—ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার
আমরি,–গোরারসে রসিয়া—ভাই রে,–নিতা রঙ্গিয়া আমার
আমরি,–গৌরপ্রেমে উন্মাদিয়া—ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার
গলবাসে দন্তে তৃণ ধরিয়া—নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া
গলবাসে দন্তে তৃণ ধরিয়া—নিতাই আমার,–আচণ্ডালে বলে কাঁদিয়া
তোদের,–পাপ-তাপের বোঝা নিয়া—আমি,–বিনামূলে যাব বিকাইয়া
একবার,–গৌরহরি বলে আমায় লও কিনিয়া—আমি,–বিনামূলে যাব বিকাইয়া
নিতাই আমার,–চলে যেতে পড়ে ঢলিয়া
আমার,–গৌরহরি ভজ বলিয়া—নিতাই আমার,–চলে যেতে পড়ে ঢলিয়া
রামাই-গৌরদাস, ধরে বাহু পসারিয়া—নিতাই আমার,–চলে যেত পড়ে ঢলিয়া
ও-সে,–গৌরপ্রেমে আত্মহারা—ভাই রে,–আমার নিতাই নয়ন-তারা
নিতাই আমার, গৌরপ্রেমে পাগল-পারা—ভাই রে,–আমার নিতাই নয়ন-তারা
দুনয়নে বহে শত-ধারা—নিতাই আমার,–নিশিদিশি গায় গোরা গোরা
আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
আমর,–ঐ গরবে হৃদয়ে ভরা—আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
আমি,–ঐ গরবে সদা ফিরি—আমার,—প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
যা—গোলকেও গোপনে ছিল
যা,–ব্রহ্মাদিরও সুদুর্ল্লভ
ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি
অযাচিত-কৃপাকারী—অদোষদরশী নিতাই
নাম,–চিন্তামণির মালা গেঁথে—যারে তারে পরাইল
আমি,–তাহা কি কহিতে পারি ভাই।’’ রে !
নিতাই,–গুণ স্মঙরি কেমন করে—আমার,–মন জানে আর আমি জানি
আমার,–ঠাকুর-নিতাইর গুণ গাই।।’’ রে !!
কখনও বুঝি শুনে নাই
যে বিধি গড়েছে মোদের—কখনও বুঝি শুনে নাই
নিতাই-গুণমণির গুণ—কখনও বুঝি শুনে নাই
যার,–গাইতে সাধ নিতাই-গুণ—তার কি দেয় একটা বদন
ভাই ভাই মিলেছি এক ঠাঁই
প্রাণভরে গাই রে
নিতাই-গুণমণির গুণ—প্রাণভরে গাই রে
বসুধা-জাহ্নবা-প্রাণ—নিতাই নিতাই নিতাই বল ভাই
গরব করে বল ভাই—কূলের দেবতা নিতাই
কুলের দেবা—আমার নিতাই রে
গৌর,–অনুরাগ-সোহাগায় শোধন করা—নিতাই আমার শুদ্ধস্বর্ণ
যারে তারে পরশ করে—ধরায় পরশমণির বর্ণ
জগ-জনে এই ত’ জানে
পরশ ছুঁলে সোণা হয়—জগ-জনে এই ত’ জানে
পরণমণি বলে যারে—যারে তারে সোণা করতে নারে
পরশমণি বলে যারে—সেও-ত’ ধাতুর বিচার করে
আমার,–শ্রীগৌরাঙ্গের প্রেমরাজ্যে—বিপরীত গতি রে
পরশিতেও হয় না
এমনি আমার নিতাই-সোণা—পরিশিতেও হয় না
মুখে বলা বা কাণেতে শোনা
আমার নিতাই-সোণার নাম—মুখে বলা বা কাণেতে শোনো
নিতাই নিতাই নিতাই নিতাই—বললেই হয় বা শুনলেই হয়
হেলায় শ্রদ্ধায় নিতাই নিতাই—বললেই হয় বা শুনলেই হয়
নিতাই নিতাই বলতে শুনতে–অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে
চিত্তদর্পণ মার্জ্জিত হয়ে –অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে
দুবর্বসনা-মালিন্য—পূর্ণ—চিত্তদর্পণ মার্জ্জিত হয়
নিতাই নিতাই বলতে শুনতে—চিত্তদর্পণ মার্জ্জিত হয়
পরশমণির খনি—অমনি,–হৃদয়ে জাগে রে
‘পরশমণির খনি’—
ও-সে অপ্রাকৃত—পরশমণির খনি
মহা,–ভাব-প্রেম-রসময়—পরশমণির খনি
অখিল,–লাবণ্য-মাধুর্য্য-আলয়—পরশমণির খনি
মূর্ত্তিমান হয়ে খনি—হৃদয়ে জাগে রে
‘মূর্ত্তিমান্ হয়ে’—
কীর্ত্তন-নাটুয়া-বেশে—মুর্ত্তিমান্ হয়ে
রসরাজ-গৌরাঙ্গ-নট—হৃদয়ে জাগে রে
‘রসরাজ—গৌরাঙ্গ-নট’—
সঙ্কীর্ত্তন-সুলম্পট—রসরাজ গৌরাঙ্গ নট
নিতাই নিতাই বল্তে শুন্তে—হৃদয়ে গৌর উদয় হয়
শ্রীমুখে বলেছেন গৌরহরি
সে,–নিশ্চয় দেখিবে আমার স্বরূপ-প্রকাশ।। রে !!
গোপীগণের যেই প্রেম কহে ভাগবতে। রে !
আমার,–একলা নিত্যানন্দ হইতে পাইবে জগতে ।। রে !!
সংসারের পার হইয়া ভক্তির সাগরে। রে !
যে ডুবিবে সে ভজুক আমার নিতাইচাঁদেরে।।’’ রে !!
সে আমার আমি তার
আমার,–নিতাই সর্ব্বস্ব যার—সে আমার আমি তার
গৌর-বশীকরণ—মন্ত্র
প্রভু-নিত্যানন্দের নাম—গৌর-বশীকরণ-মন্ত্র
নিতাই নিতাই বলতে গৌর—হৃদয়ে উদয় হয়
হৃদয়ে গৌর উদয় হয়ে—নিশিদিশি গুণেতে কাঁদায়
উদয় হয়ে গুণেতে কাঁদায়—প্রাকৃত-ভোগ-বাসনা ঘুচায়
যা’,–চতুর্দ্দশ-ভুবনে অভাব—সেই,–ভাব-ভূষণে ভূষিত করে
কম্প-অশ্রু-পুলকাদি—ভাব-ভূষণে ভূষিত করে
‘কম্প-অশ্রু-পুলকাদি’—
গৌর গৌর বলতে বলতে—কম্প-অশ্রু-পুলকাদি
গোপী,–ভাবামৃতে লুব্ধ করে—ভাব-ভূষণে ভূষিত করে
দেহাভিমান যায রে দূরে
গৌর-গুণে ঝুরে ঝুরে—দেহাভিমান যায় রে দূরে
দারুণ-সংসার,–বন্ধনের একমাত্র কারণ—এই,–দেহাভিমান যায় রে দূরে
সেই কথা প্রকট করে
বরজ-গোপিকার—ভাবামৃতে লুব্ধ করে
গৌর-গুণে ঝুরে ঝুরে—রাধাদাসী-অভিমান হয়
দেহ-স্মৃতি থাকে না—রাধাদাসী-অভিমান হয়
রাধাদাসী-অভিমান পেয়ে—দেখে হৃদি-মণি-মন্দিরে
রাধাদাসী-অভিমান দিয়ে—গৌর,–যুগল-রূপে দেখা দেয় রে
হৃদি-মণি-মন্দিরে—রাধাশ্যাম-রূপে দেখা দেয় রে
পরম-করুণ শ্রীগুরুদেব—ইঙ্গিত করেন কৃপা করে
নিশিদিশি জপ কর
‘হরে কৃষ্ণ’ নাম-মালা—নিশিদিশি জপ কর
রাধাদাসী-অভিমান—নিশিদিশি জপ কর
হৃদয়ে যুগল স্মঙর—নাম-মালা,–নিশিদিশি জপ কর
জপ,– হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ।।’’
গুরুর কৃপায় জপে সাধক
‘হরে কৃষ্ণ রাম’ নাম—গুরুর কৃপায় জপে সাধক
রাধাদাসী-অভিমানে—‘হরে কৃষ্ণ’ নাম জপে সাধক
নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে
মধুর-শ্রীবৃন্দাবনে—নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে
যমুনা-পুলিন-বনে—নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে
নিভৃত-নিকুঞ্জ-মাঝে—নিত্যলীলা স্ফূর্ত্তি পায় রে
গুরুরূপা-সখীর আনুগত্যে—যুগল-বিলাস হেরে
শ্রীরাস-মণ্ডলে—লয়ে যায় তার করে ধরে
ঐ একবার চেয়ে দেখ
মূরতি ধরেছে
তোমার জপা-নাম-মালা—মূরতি ধরেছে
শ্রীরাস-মঙ্গলে দেখ—মূরতিমন্ত নাম-মালা
সাধক-হিয়ার গুপ্ত-নিধি-বলিবার কথা নয় ভাই
অনেকেই ত’ জপ কর
অষ্টোত্তর-শত-মালা—অনেকেই ত’ জপ কর
নাম-মালার মূরতি—গুরু-কৃপায় সাধক দেখে
জড়াজড়ি কিশোরী-কিশোরী—মাঝে দেখে সুমেরু
নামের মালা ব্রজবালা
সুমেরু-যুগলকিশোর-ঘিরে—নামের মালা ব্রজবালা
নামের মালা ব্রজবালা—মাঝে মাঝে চিকণ-কালা
নামের মালা ব্রজবালা—গ্রন্থিরূপে চিকণ-কালা
শ্রীরাসমণ্ডলে দেখে—মূরতিমন্ত নাম-মালা
কোন মূরতি দেখ্তে পায় না
রাধা, কৃষ্ণ, গোপী-মণ্ডলী—কোন মূরতি দেখ্তে পায় না
অকস্মাৎ প্রকাশ—দেখে,–অপরূপ এক গৌরবর্ণ
সেই,–গৌরবর্ণের প্রভাবেতে—কোন মূরতি দেখা যায় না
শ্রীগুরু-কৃপায়—কিছু পরে দেখতে পায়
ব্রজে কখনও দেখি নাই—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
মাখামাখি পুরুষ-প্রকৃতি—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
কিশোরী-বরণ কিশোর-গঠন—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
রাই-এর বরণ শ্যামের গঠন—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
যুগল—উজ্জ্বল-রস-নির্য্যাস—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
মহাভাব-প্রেমরস-ঘনাঘৃতি—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
নিত্য-মিলনে নিত্য-বিরহ—মূরতিমন্ত প্রৈমবৈচিত্ত্য
অপরূপ-মূরতিতে—মিলনে দই-রসের খেলা
মিলনে মিলা অমিলা—মিলনে দুই-রসের খেলা
আশ-মিটান মূরতি রে
প্রাণ-রাধা—রাধারমণের—আশ-মিটান মূরতি রে
রাস-বিলাসের পরিণতি—বিলাস-বিবর্ত্ত-মূরতি
ব্রজের,–অপূর্ণ-সাধ পুরাইতে—বিলাস-বিবর্ত্ত-মূরতি
রাই কানু, কানু রাই—বিলাস-বিবর্ত্ত-মূরতি
আবির্ভাব এক নব-মূরতি—সে যে আমার গৌর-মূরতি
গৌরাঙ্গ-মূরতিতে—শত শত বিকাশ রে
শ্রীরাধাগোবিন্দ-লীলার–শত শত বিকাশ রে
দশদিকে বহে যাহা হইতে। রে !
সে চৈতন্য-লীলা হয়, সরোবর অক্ষয়,
মনোহংস চরাহ তাহাতে।।’’ রো ! !
গুরুর কৃপায় সাধক দেখে
পরিণতি গৌর-মূরতি
ব্রজ দেখে নদীয়া
গৌরাঙ্গ-মূরতি দেখেই—ব্রজ দেখে নদীয়া
মাঝে নাচে শচীনন্দন
সঙ্কীর্ত্তন-রাসস্থলীর—মাঝে নাচে শচীনন্দন
সখা-সখী-মিলিত পরিকর—চারিদিকে ঘিরে নাচে
মধুর-গৌরাঙ্গ-লীলা—যুগলে যুগলে খেলা
পরিকরও যুগল রে
এক সখা এক সখী মিলে
এক একটি পরিকর
কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে
সকলেই উন্মত্ত
ঊথলিছে প্রেমতরঙ্গ
দেখতে দেখতে ভেসে গেল
সুরধনীর দুই-কূল—দেখতে দেখতে ভেসে গেল
অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ—প্রেমবন্যায় ভেসে গেল
চৌদ্দ-ভুবন ভেসে যায়
শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেমবন্যায়—চৌদ্দ-ভুবন ভেসে যায়
দিব্য-দৃষ্টে সাধক দেখে—বিকাইয়ে গোরার পায়
জগতের নর-নারী—বিকাইছে গোরার পায়
প্রেমধন পাবার লাগি’—বিকাইছে গোরার পায়
শুনিলে গলয়ে শিলা—অপরূপ গৌরাঙ্গ-লীলা
কোন কোন ভাগ্যবান দেখিবারে পায়।।’’ রে !!
সেই লীলা স্মঙরিয়ে—প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠ্ছে
মধুর-শ্রীনীলাচলে—চন্দন-যাত্রা আরম্ভ হল
সাজিছেন সেন শিবানন্দ
ঘাটি সমাধান করবেন বলে—সাজিছেন সেন শিবানন্দ
কৃষ্ণের পট্টডোরী লয়ে—সাজিছেন বসু রামানন্দ
প্রভুর,–প্রিয় ঝালি—দ্রব্য লয়ে—সাজিছেন রাঘব-পণ্ডিত
কতক্ষণে যাব বলে—প্রাণ উচাটন সবার
সবে,–চলিলেন নীলাচলপুরে।’’
দাও মা পদধূলি দাও
তোমার,–প্রাণদুলালে দেখতে যাব—দাও মা পদধূলি দাও
নরহরির দুটি করে ধরে—কেঁদে কেঁদে বলছেন শচী-মা
সদাই তুমি কাছে থেকে
ক্ষুধা পেলে খেতে দিও—সদাই তুমি কাছে থেকো
মিলিলা সকল সহচরে।।’’
চল শান্তিপুর নাথ
চলিলেন সব গৌরাঙ্গগণ
আহার নাই নিদ্রা নাই
নিশিদিশি কাঁদে রে
সোণার গৌর প্রভু বলে—নিশিদিশি কাঁদে রে
গৌর-সিন্ধুতে মিশ্বে বলে—চলিলেন,–গৌরাঙ্গগণ নদ-নদী
কে আমাদের লয়ে যাবে
দেখাইবে জল-কেলি
নরেন্দ্রতীরে—দেখাইবে জল-কেলি
অপরূপ মিলন-রঙ্গ
আঠার-নালার পথে—অপরূপ মিলন-রঙ্গ
জগদগুরু নিত্যানন্দ
কৃপা করে তুলে এনেছ
গুরুরূপে দেখা দিয়ে—কৃপা করে তুলে এনেছে
মধুর-শ্রীনীলাচলে—সঙ্গে করে লয়ে গেছ
নীলাচলে গৌর-লীলা—ভাবাবেশে করেছ কীর্ত্তন
আনন্দে ডুবে গেছি মোরা
কি বলব দুঃখের কথা
সকল-সুখেই বঞ্চিত হলাম
কিছুতেই দেখতে পেলাম না
নরহরি মুকুন্দ মুরারি।
সঙ্গে স্বরূপ রামানন্দ, হরিদাস প্রেমকন্দ,
দামোদর পরমানন্দ-পুরী।।
যে সব করিলা লীলা, শুনিলে গলয়ে শিলা,
তাহা মুঞি না পাইনু দেখিতে।’’
প্রেমপুরুষোত্তম-লীলা—কিছুই দেখতে পেলাম না
প্রেমোন্মত্তকারী লীলা—কিছুই দেখ্তে পেলাম না
পাষাণ-গলান-লীলা—কিছুই দেখতে পেলাম না।
সে না শেল রহি গেল চিতে।।
হা,–প্রভু সনাতন রূপ, রঘুনাথ ভট্ট-যুগ,
ভূগর্ভ শ্রীজীব লোকনাথ
এ সকল প্রভু মেলি, যে সব করিলা কেলি,
বৃন্দাবনে ভক্তগণ-সাথ।।’’
কিছুই দেখতে পেলাম না
অন্ধ ভেল সবাকার আঁখি।
কাহারে কহিব দুঃখ, আর,–না দেখার ছার মুখ,
আছি যেন মরা পশু-পাখী।।’’
‘‘অন্ন-জল বিষ খাই, তবু-মরিয়া নাহিক যাই,
ধিক্ ধিক্ নিলাজ পরাণ।।’’
গুরু-গৌরাঙ্গ-বৈমুখী পরাণ—কি সুখে বা আছ রে
হা গুরু গৌরাঙ্গ বলে—গেলেই ত’ ভাল রে
শুনেছি তোমার শ্রীমুখে
যেখানে হয় নামযজ্ঞ
সেখানেতে নিত্য প্রকট
সাঙ্গোপাঙ্গে শ্রীগৌরাঙ্গ—সেখানেতে নিত্য প্রকট
মনে মনে কতই খুঁজেছি
এই ত নামযজ্ঞ
কৈ কৈ তারা কৈ
কৈ প্রাণের গৌরহরি
কোথা হে নিত্যানন্দ
কোথা শ্রীবাস নরহরি
একবার দেখা দাও
হা শ্রীগুরুদেব—একবার দেখা দাও
এই নামযজ্ঞ-স্থলে—একবার দেখা দাও
সাঙ্গোপাঙ্গে গৌর লয়ে—একবার দেখা দাও
প্রেমের হাট ভেঙ্গে যাবে
নিশি পরভাত হলেই—প্রেমের হাট ভেঙ্গে যাবে
প্রতি-হৃদে উদয় হও
সঙ্কীর্ত্তন-রাস প্রকট করে—প্রতি-হৃদে উদয় হও
সঙ্কীর্ত্তন-সুখের—হাট যেন ভেঙ্গ না
চলিব সংসারের পথে
দুঃখের লেশ,–মোদের স্পর্শ করবে না
আর এক নিবেদন নিতাই
সকল সুখেই বঞ্চিত মোরা
জুড়াবার,–আর কোন উপায় নাই
আশাবারির আশায় আছি
শুনেছি শ্রীগুরু—শ্রীমুখে
শ্রীমুখে বলেছেন গৌরহরি
সর্ব্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম।।’’ রে !!
তোমাকই ত’ দিয়াছেন ভার
‘বিশ্বম্ভর’ নাম পুরণের—তোমাকেই ত’ দিয়াছেন ভার
সে দিনের আর কদিন বাকী
এই বাসনা পূরাও নিতাই
কোন গুণে সে গৌর পাব
সনাতনের সাধনের ধন—কোন্ গুণে সে গৌর পাব
রঘুনাথের সাধ্যনিধি—কোন্ গুণে সে গৌর পাব
এই বাসনা পূবাও নিতাই
যেখানে যাব দেখতে পাব
ঘরে ঘরে সবাই ঝুরছে
হা,—সোণার গৌর প্রভু বলে—ঘরে ঘরে সবাই ঝুরছে
এস আমার প্রভু নিতাই তেমনি করে আবার এস
নাম-প্রেমে জগৎ মাতাও জগ-ভরি উঠুক রোল
গৌরহরি হরিবোল—জগ-ভরি উঠুক রোল
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’ [মাতন]