যমুনা কিনারে

সোলহ সহস গোপি মহ রাণি

সোলহ সহস গোপি মহ রাণি।
পাট মহাদেবি করবি হে আনি।।
কোলি পঠওলহ্নি জত অতিরেক।
উচিতহু ন রহল তহ্নিক বিবেক।।
সাজনি কী কহব কাহ্ন পরোখ।
বোলি ন করিঅ বড়াকাঁ দোখ।।
অব নিত মতি জদি হরলহ্নি মোরি।
জানলা চোরে করব কী চোরি।।
পুরবাপরে নাগরকাঁ বোল।
দূতি মতি পাওল গএ ওল।।

অন্তঃকথন:
এমনই প্রেমের ধারা মাধবের, মান দিয়ে ভালোবেসে, মধুর বচনে শ্রীমতীতে বশ করে তারপর ভুলে যান! আক্ষেপ ভিন্ন রাধারানীর আর কিই বা করার তখন! মাধবকে ভালোবেসে তারপর তাঁর আচরণে বেদনাহত হয়ে রাধারানী তাই আক্ষেপ সখীর কাছে করে বলছেন, সে আমায় বলল ষোলো সহস্র গোপীর মধ্যে আমিই তার রাণী! আমাকে নিয়ে এসে সে পাটরানী করবে! এই সব কত কত কথা সে বলে পাঠালো আমাকে! সবই অতিরিক্ত কথা, সবই বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলা কথা, সেসব কথার একটিও সে রাখলো না! সজনি, কানাইএর পরোক্ষে আর কিই বা বলবো? বড় লোকের দোষ তো বলতে নেই! সে আমার নীতি ও বুদ্ধি হরণ করে নিল সখী! আমি সব জেনে বুঝে তারই প্রেমে পাগলিনি হলাম, এখন জানা চোরের চুরিতে কি আর করব! কাকেই বা দোষ দেব! সেই নাগর আমায় এতবার এতরকম কথা বলল আর তার পর এমন কাজই করল যে তার পূর্বাপর আচরণের কথা শুনে দূতীর অবধি বুদ্ধি লোপ পেল! আক্ষেপানুরাগের এই পদে রাধারানী যেমন কানাই এর আচরণে মর্মাহত তেমনই তাঁর নিজের বুদ্ধিহীনতায় অনুতপ্ত! কিন্তু এসবই তো প্রেমের রীতি! এসবের মধ্য দিয়ে মাধবের প্রতি শ্রীমতীর প্রেমের আর্তিই প্রকাশিত!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী