এ কথা শুনিয়া সহচরী-আগে
কহে বাজিকর-রায়।
“আমি কিছু জানি তন্ত্র মন্ত্র যত
দেবঘাত আছে গায়।।”
সহচরী দাসী কহিতে লাগিল
“শুন বাজিকর তোরা।
যদি বা পারহ ভাল করিবারে
পাবে খাসা জামাজোড়া ।।
বহু রত্ন পাবে রাজার গোচরে
কতেক রজত দান।”
কহে বাজিকর — “অনেক জানিয়ে
সন্ধান বিধান আন।।”
“ভাল ভাল”, বলি দাসী গেলা চলি
কহিতে রাজার কাছে।
করযোড় করি করিছে গোহারী
“এক নিবেদন আছে।।
যেই বাজিকর তোমার দুয়ারে
খেলায় নাটের ছায়া।
সেই জন কহে– ‘বহু মন্ত্র জানি
নাটীকা দেখিতে কায়া।।
সেই কোন দেব দেখিয়া অন্তরে
ভয় সে মানিল চিতে ।
সেই সে নির্ঘাত দেব অপঘাত
পাইল ঝরকা হৈতে।।
তাহারে দেখিলে ভাল করি দিব
ইহাতে নাহিক আন।
রাজার গোচরে বোলহ আমারে
কহিনু তোমার স্থান’।।”
শুনি বৃকভানু পুলকিত তনু
“অনত সেই সে গুণী।
করুক গেয়ান যে হয় বিধান
তারে ডাক দিয়া আনি।।”
গিয়া সেই দাসী বাহিরে প্রবেশি
ডাকিয়া আনিল তারে।
অতি কুতূহলে সুবল চলিল
লয়ে গেল অন্তঃপুরে।।
গিয়া সে সুবল রাধারে গোচরে
ধরিল তাহার নাড়ী।
নানা সেই তন্ত্র মন্ত্র আরোপিয়া
প্রকার প্রবন্ধে ঝাড়ি ।।
চণ্ডীদাস কহে— শুনহে সুবল
আর আছে কিছু দোষ।
বীজমন্ত্র কহে শ্রবণ ভিতরে
তবে হবে পরিতোষ ।।