ব্রহ্মা মহেশ্বর কহেন উত্তর–
“শুনহ ধরণী, বোল।
নারীরূপ ধরি জাহ জথা বলি
ক্ষীরোদ-সায়র কোল।।
জথা ভগবান্‌ অনন্ত-শয়ন
সেখানে চলহ তুমি।
তোমারো গোচরে সব বিবরণ
কহিতে কহিব আমি।।”
এ বোল শুনিতে বসুমতী চিতে
আনন্দ হইলা বড়ি ।
দুইজন কাছে বিনতি করিঞা
চরণ ধরিয়া পড়ি ।।
দুই দেব যায় ক্ষীরোদের সায়
জথাই ঈশ্বর আছে।
হোথা দুইজনে বসুমতী সনে
চলিলা তাঁহার কাছে।।
গাভীরূপ ধরি চলিল ধরণী
দুহার পাছেতে গড়ি।
চলিলা জেখানে অনন্ত-শয়নে
সেখানে যাইয়া পড়ি।।
ক্ষীরোদ-সায়রে পরম ঈশ্বরে
বৈকুণ্ঠ-বৈভব তেজি।
অনন্ত-উপরে প্রভু ভগবানে
আছয়ে নিদ্রায় মজি।।
লক্ষ্মীদেবী করে চরণ সেবন
নিদ্রায় বিভোল প্রভু।
হেনক সময় জাই বসুমতী
কাতর হইয়ে তভু।।
লক্ষ্মীদেবী তারে পুছিতে লাগিল–
“কেনবা আইলে গাবি।
কি নিমিত্তে কাজ কহ না উত্তর
নিজের অন্তরে ভাবি।।”
কহিতে লাগিল সেই গাভীবর
লক্ষ্মীর আদেশে কয়।
চণ্ডীদাসে বলে বড়ই অদ্ভুত
শ্রবণ পাতিয়া রয়।।