জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
১
বল ভাই,—
‘‘জয় রে জয় রে গোরা’’
সবাই মিলে—জয় দাও ভাই
পরম-করুণ শ্রীগুরুদেবের—জয় দাও ভাই
শ্রীগুরু-স্বানন্দদাতার—জয় দাও ভাই
শ্রী,–সঙ্কীর্ত্তন-পিতা গৌরহরির—জয় দাও ভাই
আমাদের,–পাগ্লা প্রভু নিতাইচাঁদের—জয় দাও ভাই
আমাদের,–দয়ানিধি শ্রীসীতানাথের—জয় দাও ভাই
প্রাণ,–গৌরপ্রিয় শ্রীগদাধরের—জয় দাও ভাই
গৌর,–ভক্তাগ্রগণ্য শ্রীশ্রীবাসপণ্ডিতের—জয় দাও ভাই
আমাদের,–পতিত-পাবন শ্রীগৌরাঙ্গগণের—জয় দাও ভাই
হৃদয়ে,–গৌরলীলা স্ফূর্ত্তি পাবে গৌরগণের—জয় দাও ভাই
সাঙ্গোপাঙ্গে প্রাণ-গৌরাঙ্গের –জয় দাও ভাই
মঙ্গল নটন সুঠাম।’’রে !
ভুবন-মঙ্গল গৌর আমার—নাটুয়া মুরতি
আমার,–রসরাজ-গৌরাঙ্গ-নট—নাটুয়া মুরতি
শ্রীরাধাকৃষ্ণ,–প্রণয়-বিকৃতি-আকৃতি গৌর আমার—নাটুয়া মুরতি
যুগল-উজ্জ্বল,–রস-নির্য্যাস-মূরতি গৌর আমার—নাটুয়া মূরতি।
মহাভাব,–প্রেমরস-ঘনাকৃতি গৌর আমার—নাটুয়া মূরতি
আ’মরি,–রাই কানু একাকৃতি গৌর আমার—নাটুয়া মূরতি
স্বর্ণ,–পঞ্চালিকা-ঢাকা-নীলমণি গৌর আমার—নাটুয়া মূরতি
মহা,–রাস-বিলাসের পরিণতি গৌর আমার—নাটুয়া মূরতি
মূরতিমন্ত-প্রেমবৈচিত্ত্য গৌর আমার—নাটুয়া মূরতি
ওগো,–আমার গোরা—নাটুয়া মূরতি
ওগো,–আমার গোরা আমার গোরা আমার প্রাণগোরা—নাটুয়া মূরতি
আমার প্রাণগোরা—নাটুয়া মূরতি
আ’মরি—‘‘মঙ্গল নটন সুঠাম। রে !
আজু,–কীর্ত্তন-আনন্দে,’’
শুভ অধিবাস,–
‘‘কীর্ত্তন-আনন্দে,’’
‘‘শ্রীবাস-রামানন্দে,
মুকুন্দ-বাসু গুণ গান।।’ রে ! !
গোরা,–রসের বদন-পানে চেয়ে—মুকুন্দ-বাসু গানকরে
অনুরাগে ডগমগ হয়ে—মুকুন্দ-বাসু গান করে
আ’মরি,–‘‘মুকুন্দ-বাসু গুণ গান।। রে !!
দ্রাং দ্রাং দ্রিমি দ্রিমি, মাদল বাজত,’’
মুকুন্দ-বাসু গান করে—তার সনে,–মধুর মৃদঙ্গ বাজে
বাজে,–ধিক্ তান্ ধিক্ তান্
মৃদঙ্গ বাজে—ধিক্ তান্ ধিক্ তান্
মৃদঙ্গ বলে,–যে আমার প্রাণ-গৌর না ভজে—ধিক্ তান্ ধিক্ তান্
কত,–গরব করে মৃদঙ্গ বাজে—ধিক্ তান্ ধিক্ তান্
শঙ্খ-করতাল,- ঘন্টা-রব ভেল,
মিলল পদতলে তাল।। রে ! !
গোরার,–কোটি-চন্দ্র-সুশীতল—পদতলে তাল মিলল
নাটুয়া মূরতি—গৌর আমার,–তালে তালে পদ ফেলে
মুকুন্দ-বাসু গান করে—গৌর আমার,–তালে তালে পদ ফেলে
মধুর মৃদঙ্গ বাজে—গৌর আমার,–তালে তালে পদ ফেলে
ভাব-হিল্লোলে হেলে দুলে—গৌর আমার,–তালে তালে পদ ফেলে
আমরি,–‘‘মিলল পদতলে তাল। রে ! !
তখন,–কো দেই গোরা—অঙ্গে, সুগন্ধি—চন্দন,’’
নটন হেরে ভাবে বিভোর হরে,–
‘‘কো দেই গোরা-অঙ্গে, সুগন্ধি চন্দন,
কো দেই মালতীক মাল।’’ রে !
আমরি—অনুরাগে ডগমগি হয়ে—গোরা,–রসের বদন-পানে চেয়ে
‘‘কো দেই মালতীক মাল। রে !
অমনি,–পিরীতি-ফুলশরে,’’
গৌর আমার,–মৃদু হেসে বাঁকা দিঠে চেয়ে—অমনি,–
‘‘পিরীতি-ফুলশরে,’’
‘‘মরম ভেদল,’’
ভাবে সহচর ভোর।।’’ রে ! !
গোরার,–ঈষৎ-কটাক্ষ-ঈক্ষণে—নিজ নিজ স্বভাব জাগ্ল
মহা,–ভাব-বারিধির ভাব-ঈক্ষণে—আজ,–নিজ নিজ স্বভাব জাগ্ল
আমার,–ভাবনিধি প্রাণ-গৌরকে—যার,–যেমন ভাব সে তেমনি দেকে
নিজ নিজ স্বভাবের বলে—যে,–যেমন দেখে সে তেমনি বলে
এবে সে মুরারি গুপ্ত
ও যে,–ত্রেতাযুগে হনুমান—এবে সে মুরারি-গুপ্ত
আস্বাদিতে লীলা গুপত—এবে সে মুরারি-গুপ্ত
যে,–হৃদয়ে চিরে দেখায়েছিল
শ্রী,–সীতারামের যুগলরূপ—যে,–হৃদয় চিরে দেখায়েছিল
বলে,–ওগো তোমরা জান কি
প্রাণ,–গৌর আমার জানকী-বল্লভ—ওগো তোমরা জান কি
তার,–আপন-স্বভাবের বলে—বসু-রামানন্দ বলে
তুমি,–কারে দেখে কি বা বলছ
কেন,–নব-দুবর্বাদল বল্ছ
শ্যাম,–নবঘনে দেখে—কেন,–নব-দুবর্বাদল বল্ছ
এস,–এস মুরারী আমার কাছে এস—বুঝি,ভাল করে দেখ্তে পাও নাই
আমার,–অঙ্গে অঙ্গ হেলাইয়ে—ঐ দেখ মুরারি
উজ্জ্বল,–নীলমণি জ্যোতি উঠ্ছে
স্বর্ণবর্ণ ভেদ করি—উজ্জ্বল,–নীলমণির জ্যোতি উঠ্ছে
দেখ দেখ ঐ,–স্বর্ণবর্ণ ভেদ করি—উজ্জ্বল,–নীলমণির জ্যোতি উঠ্ছে
দেখ দেখ ঐ—ওর,–বাঁকা-আঁখি তার সাক্ষী দিছে
ও যে,–ব্রজললনার চিতচোর—ওর,–বাঁকা-আঁখি তার সাক্ষী দিছে
আছে,–আবরিত রাধার বরণ—গৌর আমার রাধারমণ
রাই-সম্পূটিত বংশীধারী—নাম ধরেছে গৌরহরি
ঠাকুর,–নয়নানন্দের মনে, আন নাহিক জানে,’’
ওগো,–তোমার যে যাই বল না কেনে—আমি মেনে আন জানি না
আমি,–যা দেখি তাই ত’ মানি—আমি,–অনুমানের ধারধারি না
গৌর,–গদাধর ছাড়া রইতে নারে—আমি,–নিশিদিশি এই ত, দেখি
গদাধর,–গৌর বিহনে প্রাণে মরে—আমি,–নিশিদিশি এই ত’ দেখি
ওগো,–তোমরা যে যাই বল না কেনে—আমার,–গদাধরের প্রাণ গৌর
আমি,–কারও কথা শুনতে চাই না—আমার—গদাধরের প্রাণ গৌর
ওগো,–যে যা বলে বলুক না কেনে—আমার, গদাধরের প্রাণ গৌর
আমার,–গদাধরের—প্রাণ গৌর
(২)
নাম-যজ্ঞরম্ভের পরামর্শের দিন—যাই রে দিনের বালাই যাই রে
‘নাম-যজ্ঞারম্ভের পরামর্শের দিন’—
এই,–কলিযুগের একমাত্র ধর্ম্ম—নাম-যজ্ঞারম্ভের পরামর্শের দিন
ও যে,–কেঁদে কেঁদে এনেছে—সেই,–অদ্বৈত-মন্দিরে বসি
‘ও যে,–কেঁদে কেঁদে এনেছে’—
অনশনে গঙ্গাতীরে বসে—ও যে,–কেঁদে কেঁদে এনেছে
আমার,–প্রাণ-কৃষ্ণ এস বলে—ও যে,–কেঁদে কেঁদে এনেছে’
‘আমার,–প্রাণ-কৃষ্ণ এস বলে’—
কলিজীবের দশা বড় মলিন—আমার,–প্রাণ-কৃষ্ণ এস বলে
সেই,–অদ্বৈত-মন্দিরে বসি
যার,–প্রেম-হুঙ্কারে গৌর-অবতার—সেই,–অদ্বৈত-মন্দিরে বসি
আসন,–নাড়াইয়ে নাঢ়া নাম যাঁর—সেই,–অদ্বৈত-মন্দিরে বসি
নিত্যানন্দ করি সঙ্গে, অদ্বৈত বসিয়া রঙ্গে,’’
নাম-যজ্ঞারম্ভের পরামর্শের দিন—আজ,–আনন্দের আর সীমা নাই রে
আজ,–তিন প্রভু এক ঠাঁই—আনন্দের আর সীমা নাই রে
“মহোৎসবের করিলা বিচার।। রে ! !
গৌর আমার,–‘‘মহোৎসবের করিলা বিচার।।’ রে ! !
তাই,–‘‘শুনিয়া আনন্দে আসি,সীতাঠাকুরাণী হাসি,
বলিলেন মধুর-বচন।’’ রে !
আজ,–তিন-জানায় নির্জ্জনে বসি—ও,–কিসের কথা কইছ তোমরা
সুখের পাথারে সাঁতার দিছ—ও,–কিসের কথা কইছ তোমরা
কথা কইতে কইতে,–সুখের পাথারে সাঁতার দিছ—ও,–কিসের কথা কইছ তোমরা
এত সুখের কিসের কথা—একবার, আমি কি শুনতে পাব না
সীতাঠাকুরাণী,–‘‘বলিলেন মধুর-বচন। রে !
তা শুনি আনন্দ-মনে, মহোৎসবের বিধানে,
বলে কিছু শচীর নন্দন।।’’ রে !!
আ’মরি,–হৃদ্-কর্ণ-রসায়ন—অমিয়া-মাখান—বোলে
শুন ঠাকুরাণী সীতা, বৈষ্ণব আনিয়া হেথা,’’
এই,–কলিযুগের একমাত্র ধর্ম্ম—নাম,–সঙ্কীর্ত্তন-যজ্ঞ হবে
আমন্ত্রণ করিয়া যতনে।
যে বা গায় যে বাজায়, আমন্ত্রণ করি তায়,
পৃথক পৃথক জনে জনে।।
এত বলি গোরা-রায়, আজ্ঞা দিলা সরাকায়,
বৈষ্ণব করহ আমন্ত্রণে।
খোল, করতাল লৈয়া, অগুরু-চন্দন দিয়া,
পূর্ণঘট করহ স্থাপনে।।
আরোপণ করি কলা, তাহে বাঁধ ফুলমালা,
কীর্ত্তন-মণ্ডলী কুতূহলে।
মাল্য, চন্দন, গুয়া, ঘৃত, মধু, দধি, দিয়া,
খোল-মঙ্গল সন্ধ্যাকালে।।
শুনিয়া প্রভুর কথা,প্রীতে বিধি কৈল যথা,’’
কেমন গৌরের,–নাম-যজ্ঞ দেখ্ব বলে—আনন্দ আর ধরে না রে
নানা উপহার গন্ধবাসে।
সবে হরি হরি বলে’’,
পরমেশ্বর-দাস রস ভাষে।।’’
(৩)
কৃপা করি কর আগমন।’’
ঠাকুরের ঠাকুর—বৈষ্ণব-গোসাঞি
‘‘কৃপা করি কর আগমন।
তোমরা বৈষ্ণবগণ, মোর এই নিবেদন,
দৃষ্টি করি কর সমাপন।।’’
ওহে বৈষ্ণব-গোসাঞি,–‘দৃষ্টি করি কর সমাপন।।’’
এই,–নাম-সঙ্কীর্ত্তন-মহোৎসব তোমাদের,–কৃপা নৈলে হবে না হে
ওহে,–বৈষ্ণব-গোসাঞি—এস এস হে
কৃপা করি কাঙ্গালের ঘরে—এস এস হে
ওহে,–কাঙ্গালের ঠাকুর—এস এস হে
এ ত’,–তোমাদের প্রভুর কার্য্য—তোমাদের কর হে
‘‘করি এত নিবেদন, আনিল মহান্তগণ,
কীর্ত্তনের করে অধিবাস।
অনেক-ভাগ্যের ফলে, বৈষ্ণব আসিয়া মিলে,’’
ঠাকুর-বৈষ্ণবের আগমন—অল্প-ভাগ্যে হয় না
‘ঠাকুর-বৈষ্ণবের আগমন’—
গৃহে,–হরি নাম-সঙ্কীর্ত্তন—ঠাকুর-বৈষ্ণবের আগমন
কাল হবে কীর্ত্তন-বিলাস।।
শ্রীকৃষ্ণের লীলা-গুণ (গান), করিবেন আস্বাদন,’’
চিত্তদর্পম—মার্জ্জন হবে রে
দুর্ব্বাসনা-মালিন্য-দূরেতে যাবে রে
দুর্ব্বাসনা—মালিন্য’—
অনাদিকালের –দূর্ব্বাসনা-মালিন্য
দুর্ব্বাসনা-মালিন্য—দূরেতে যাবে রে
ভব-মহাদাবাগ্নি—নির্ব্বাপণ হবে রে
ত্রিতাপ-জ্বালা—দূরেতে যাবে রে
‘ত্রিতাপ-জ্বালা’—
আধ্যাত্মিক,–আধিদৈবিক, আধিভৌতিক—ত্রিতাপ-জ্বালা
আমরি,–ত্রিতাপ-জ্বালা-দূরেতে যাবে রে
সবর্ব অমঙ্গল–দূরে পালাবে রে
আর,–সকল-মঙ্গল—উদয় হবে রে
‘সকল-মঙ্গল’—
পরিপূণ,–কৃষ্ণ-প্রাপ্তির অনুকূল—সকল-মঙ্গল
‘সকল-মঙ্গল’
শ্রীকৃষ্ণনাম-গুণ-গানে—সকল-মঙ্গল
আ’মরি,–সকল-মঙ্গল—উদয় হবে রে
যত,–বহির্ম্মুখ-চিত্তবৃত্তি—উন্মুখ হবে রে
ভোগ-বাসনা হতে উঠে—উন্মুখ হবে রে
প্রাকৃত,–ভোগ-বাসনা হতে উঠে—উন্মুখ হবে রে
শ্রীকৃষ্ণ-পদে উন্মুখ হবে রে
কায়মনোবাক্যে কৃষ্ণ—অনুশীলন কর্বে
‘কায়মনোবাক্যে কৃষ্ণ’
সবর্ব-সাধন-শকতি পেয়ে—কায়মনোবাক্যে কৃষ্ণ
সবর্ব-সাধন-শকতি পেয়ে—অনুশীলন কর্বে
‘সবর্ব-সাধন-শকতি পেয়ে’—
শ্রীকৃষ্ণ-নাম-গুণ-গানে—সবর্ব-সাধন-শকতি পেয়ে
কায়মনোবাক্যে কৃষ্ণ—অনুশীলন করবে
সবর্বাত্মা—স্নিগ্ধ হবে রে
প্রেমামৃত-সিঞ্চনে’ – স্নিগ্ধ হবে রে
শ্রীকৃষ্ণ-নাম—গুণ-গানে—প্রেমামৃত-সিঞ্চনে
সর্ব্বাত্মা—স্নিগ্ধ হবে রে
এই,–প্রাকৃত-দেহাভিমান—দূরেতে যাবে রে
‘প্রাকৃত-দেহাভিমান’—
সংসার,–বন্ধনের একমাত্র কারণ—প্রাকৃত-দেহাভিমান
দারুণ-সংসার,–বন্ধনের একমাত্র কারণ—এই,–প্রাকৃত-দেহাভিমান।
এই,–প্রাকৃত-দেহাভিমান—দূরেতে যাবে রে
ভাব-ভূষণে—ভূষিত হবে রে
‘নানা-ভাব-ভূষণে’—
কম্প,অশ্রু, পুলকাদি—নানা-ভাব-ভূষণে
শ্রীকৃষ্ণ-নাম-গুণ-গানে—নানা-ভাব ভূষণে
আ’মরি,–ভূষিত হবে রে
নানা-ভাব-ভূষণে—ভূষিত হবে রে
গোপী-ভাবামৃতে—লুব্ধ হবে রে
শ্রীরাধাদাসী—অভিমান পাবে রে
‘শ্রীরাধাদাসী-অভিমান পাবে’—
কৃষ্ণ-নাম-গুণ-গানে—রাধাদাসী-অভিমান পাবে
শ্রীরাধাদাসী—অভিমান পাবে রে
শ্রীরাদাকৃষ্ণ—প্রাপ্তি হইবে রে
‘শ্রীরাধাকৃষ্ণ প্রাপ্তি হবে’—
ব্রজে গোপী-দেহ পেয়ে—রাধাকৃষ্ণ প্রাপ্তি হবে
যুগল,–সেবামৃত-রসে—ডুবে যে যাবে রে
যুগল,–সেবামৃত-সমুদ্রে—ডুবে যে যাবে রে
শ্রীগুরু-রূপাসখীর আনুগত্যে—ডুবে যে যাবে রে
পূরিবে সবার অভিলাষ।
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য-চন্দ্র, সকল-ভকতবৃন্দ,
গুণ গায় বৃন্দাবন-দাস।।’’
(৪)
সঙ্কীর্ত্তন,–অধিবাসে নদীয়ায় আনন্দের—পাথার বয়ে যায় রে
‘‘জয় জয় নবদ্বীপ মাঝ।
আজ,–গৌরাঙ্গ-আদেশ পাইয়া, ঠাকুর—অদ্বৈত যাইয়া,
করে খোল-মঙ্গলের সাজ।।’’রে !!
সীতানাথ আমার,–‘‘করে খোল-মঙ্গলের-সাজ।।’’ রে ! !
আমার,–সীতানাথের অন্তরে—আজ,–আনন্দ আর ধরে না রে
সঞ্চিত-সাধ পূর্ণ দেখে—আজ,–আনন্দ আর ধরে না রে
বহুদিনের,–সঞ্চিত-সাধ পূর্ণ দেখে—আজ,–আনন্দ আর ধরে না রে
আমার,–গঙ্গাজন-তুলসী দেওয়া—এতদিনে সফল হল
অনশনে,–হা কৃষ্ণ বলে কাঁদার—এতদিনে সুফল ফল্ল
যার লাগি আমি কেঁদেছিলাম—গেল,–কলিজীবের দুঃখ গেল
এই যে,–তাপ-জুড়ান-নামের প্রচার হল—আর,–ত্রিতাপ-জ্বালায়
প্রেম-বন্যায় জগৎ ভাস্বে
কলিহত-জীবে পাবে
ব্রহ্মাদির,–সুদুর্ল্লভ-প্রেমধন—কলিহত-জীবে পাবে
কলিজীবের,–সৌভাগ্য স্মঙরি সীতানাথের—আনন্দ আর ধরে না রে
‘কলিজীবের,–সৌভাগ্য স্মঙরি’—
হবে,–অনর্পিত-প্রেমের অধিকারী—কলিজীবের সৌভাগ্য স্মঙরি
শান্তিপুরাধিপ-সীতানাথের মনে—আনন্দ আর ধরে না রে
শান্তি পাবে জগজনে—তাই,–আনন্দ আর ধরে না রে
হবে ব্রতের উদ্যাপন—তাইতে,–সীতানাথের আনন্দিত মন
পেয়ে,–অনশনে ক্রন্দনের ফল—প্রাণে পেয়েছে মহাবল
আমার,–ব্রত-উদ্যাপন হোলো—সবাই মিলে হরি বলো
সীতানাথ আমার,–‘‘করে খোল-মঙ্গলের সাজ।। রে; ;
আনিয়া বৈষ্ণব সব, হরিবোল কলরব,’’
শুভ-অধিবাসের আয়োজনে—আজ,–আনন্দ আর ধরে না রে
সবাই বলে হরিবোল—আজ,–উঠিল আনন্দ-রোল
মহোৎসবের করে অধিবাস রে !
আপনি নিতাই-ধন, দেই মালা-চন্দন,’’
আদরের মূরতি নিতাই বিনে –আদর আর কে বা জানে
আমার,–নিতাই বিনে আর কে জানে
শ্রীগৌরাঙ্গ-দাসের আদর—আমার,–নিতাই বিনে আর কে জানে
শ্রীবৈষ্ণব-ধাম—আমার নিত্যানন্দ-রাম
‘‘আপনি নিতাই-ধন, দেই মালা-চন্দন,
নিতাই আমার,–করে প্রিয়-বৈষ্ণব-সম্ভাষ।।’’ রে !!
নিতাই আমার,–চলে যেতে পড়ে ঢলে—এস,–ধর মালা পর বলে
অমিয়া—মাখান-বোলে—এস,–ধর মালা পর বলে
আমরি মৃদু হেসে,–অমিয়া-মাখান-বোলে—এস,–ধর মালা পর বলে
যেন,–শকতি জাগায়ে দিল—নিতাই-চাঁদের মালা পরাণ নয় রে
‘যেন,–শকতি জাগায়ে দিল’—
মাল্য-চন্দন পরাবার ছলে—যেন,–শকতি জাগায়ে দিল
নিতাই আমার,–‘‘করে প্রিয়-বৈষ্ণব-সম্ভাষ।। রে !!
অমনি,–‘‘গোবিন্দ মৃদঙ্গ লইয়া, বাজায় তাত্তা থৈয়া থৈয়া,’’
মাল্য-চন্দন পরাবার কালে—নিতাই-চাঁদের,–পরশে শকতি পাইয়া
অমনি,–‘‘গোবিন্দ মৃদঙ্গ লইয়া, বাজায় তাত্তা থৈয়া থৈয়া,
করতালে অদ্বৈত চপল।’’ রে !
পেয়ে প্রাণ গৌরাঙ্গের আজ্ঞাবল—করতালে অদ্বৈত চপল
হরিদাস করে গান, শ্রীবাস ধরয়ে তান।
নাচে গোরা কীর্ত্তন-মঙ্গল।।’রে !!
শ্রীসঙ্কীর্ত্তন-অধিবাসে—ভুবন-মঙ্গল গৌর নাচে
শ্রীসঙ্কীর্ত্তন-সুলম্পট—নাচে রে গৌরাঙ্গ-নট
সঙ্কীর্ত্তন-রাস করি প্রকট—নাচে রে গৌরাঙ্গ-নট
সঙ্কীর্ত্তনে রাস করি প্রকট—নাচে রে গৌরাঙ্গ-নট
নব-নটবর-সাঝে—আমার,–রসরাজ-গৌরাঙ্গ নাচে
বিনোদ-নাটুয়া-কাছে—আমার,–রসরাজ-গৌরাঙ্গ নাচে
নিজ-পারিষদ্-গোপী-মাঝে—আমার,–রসরাজ-গৌরাঙ্গ নাচে
হেম-কিরণিয়া—আমার,–সোনার গৌরাঙ্গ নাচে
প্রেম-সরোবর-মাঝে—যেন,–সোনারই কমল নাচে
ভাব-হিল্লোল হেলে দুলে—যেন,–সোনারই কমল নাচে
বিংশতি-ভাব-হিল্লোলে—হেলে দুলে প্রাণ-গৌর নাচে
তাথৈয়া তাথৈয়া মৃদঙ্গ বাজে—হেলে দুলে প্রাণ-গৌর নাচে
হেলে দুলে প্রাণ-গৌর নাচে—আমার,–নিতাই নাচে কাছে কাছে
হেমদণ্ড-বাহু পসারিয়ে—নিতাই নাচে তার কাছে কাছে
মা তার,–হাতে হাতে সঁপে দিয়েছে—তাই, –নিতাই নাচে কাছে কাছে
‘মা তার,–হাতে হাতে সঁপে দিয়েছেঁ—
সঙ্কীর্ত্তন আসবার বেলা–মা তার,–হাতে হাতে সঁপে দিয়েছে
প্রাণ-গৌর ধুলায় পড়ে পাছে—দেখো নিতাই থেকো কাছে
প্রাণ-গৌর ঢলে পড়ে পাছে—তাই,–নিতাই নাচে কাছে কাছে
নিতাই বিনে কে ধরে আর
বিবর্ত্ত-বিলাস-রঙ্গ-ভার—নিতাই বিনে কে ধরে আর
ধরণীধর নিতাই বিনে—বিশ্বম্ভরে কে বা ধরে
বুকে ধরা গোরা পাছে পড়ে ধরায়—তাই,–কাছে নাচে সেবাবিগ্রহ নিতাই
সেতনু লুটাবে ধুলায়—তাই,–কাছে নাচে সেবাবিগ্রহ নিতাই
‘সে তনু লুটাবে ধূলায়’—
যা ধরিতে ভয়বাসি হিযায়—সে তনু লুটাবে ধূলায়
বুকে ধরা ধন ধূলায় পড়ে পাছে—তাই,–নিতাই নাচে কাছে কাছে
বুকের নিধি ধূলায় পড়ে পাছে—তাই,–নিতাই নাচে কাছে কাছে
ধরিবে নটনপর-গৌরহরি—নাচছে নিতাই বাহু-পসারি
গোরা,–রসের বদন-পানে চেয়ে—সম্মুখে অদ্বৈত নাচে
হুঙ্কার-গর্জ্জন করি—গরবে অদ্বৈত নাচে
আমি,–এনেছি এনেছি বলে—গরবে অদ্বৈত নাচে
আমি,–এনেছি এনেছি বলে—অদ্বৈত নাচে হেলে দুলে
‘আমি,–এনেছি এনেছি বলে’—
আয়,–আয় তোরা দেখে যা–আমি,–এনেছি এনেছি বলে
আয়,–আয় তোরা দেখে যা’—
নিকুঞ্জ-বিলাস-বৈভব—আয়,–আয় তোরা দেখে যা
আমার,–গৌরকৃতি মদনগোপাল—আয়,–আয় তোরা দেখে যা
গৌরের,–ভাব-অনুরূপ-স্বরূপ পেয়ে—সম্মুখে অদ্বৈত নাচে
মঞ্জরী-আবেশে—সম্মুখে অদ্বৈত নাচে
হয়ে,–ছায়ার মত অনুগত—গদাধর বাম-পাশে আছে
প্রাণ,–গৌর-নটন দেখছে—গদাধর বাম-পাশে আছে
‘প্রাণ,–গৌর-নটন দেখ্ছে’—
আমার,–বঁধু কেমন সেজেছে—প্রাণ,–গৌর-নটন দেখ্ছে
‘আমার,–বঁধু কেমন সেজেছে’—
গদা-রাধা দেখ্ছে—আমার,–বঁধু কেমন সেজেছে
গদা-রাধা মনে করিছে—আমার,–বঁধু কেমন সেজেছে
এ যে,–আশ-মিটান-লীলা রে
কখনও ত দেখে নাই
বঁধুর মাধুরী দেখেছে বটে—কিন্তু ,–কখনও ত’ দেখে নাই
আপনি,–বামে দাঁড়ালে কি মাধুরী—কখনও ত’ দেখে নাই
যুগল-মাধুরী—আস্বাদন ত’ হয় নাই
যারা সম্মুখে থাকে—তারাই ত’ যুগল হেরে
সখী আর মঞ্জরী—তারাই ত’ যুগল হেরে
তাদের মুখে সুখের বিকাশ দেখে—লভোৎপত্তি হয়েছিল বটে
যুগল-মাধুরী আস্বাদিতে-লোভোৎপত্তি হয়েছিল বটে
আস্বাদিছে গদা-কিশোরী
আমা-সনে,–মিলে বঁধূর কি মাধুরী—আস্বাদিছে গদা-কিশোরী
পুরাইতে অপূর্ণ-সাধা—তাইতে রাধা হল গদা
তাই,-গৌর-প্রিয় গদাধর—তাইতে বুঝি বলেছিল
গৌর তোমার পাদ-দর্শন—কোটি কোটি গোপীনাথ-সেবন
গোপীনাথ-মাধুরী কোটি-গুণিতে হলে—সে মাধুরী কোথা পাবে
যে মাধুরী রাধা-সনে মিল্লে—সে মাধুরী কোথা পাবে
গোপীনাথ হতে গৌরাঙ্গ-প্রতি—তাই তো গদাই-এর অধিক প্রীতি
গদাধর-প্রাণকিশোরী—আজ,–আস্বাদিছে যুগল-মাধুরী
অপূর্ণ-ভোগ-ভোগের আশে—গদাধর বাম-পাশে আছে
প্রাণগৌরাঙ্গের,–সঙ্কীর্ত্তন-শ্রম জানি—নরহরি চামর ঢুলাইছে
অনুরাগে ডগমগ হয়ে—নরহরি চামর ঢুলাইছে
গোরা-রসের বদন-পানে চেয়ে—নরহরি চামর ঢুলাইছে
মধুর-মধুর-রঙ্গ দেখ্ছে—নরহরি চামর ঢুলাইছে
বিলাস-বিবর্ত্ত-বিলাস-রঙ্গে–নাগরীর নাগরালি দেখছে
সঙ্কীর্ত্তন-রাস-রঙ্গে–নাগরীর নাগরালি দেখছে
নরহরি চামর ঢুলাইছে—তার,–দুনয়নে বারি ঝর্ছে
সেবা-অনুরাগে নরহরি-প্রেমধারায় ধিক্ মানিছে
আমি,–এখন তোরে চাই না—বলে,–দূরে যারে প্রেমবারি
গোরারসের,–বদন হেরি চামর কর—দূরে যারে প্রেমবারি [
নাগরালির মাধুরী হেরি—দূরে যা রে প্রেমবারি
আজ,–ঘিরে ঘিরে নাচ্ছে
শ্রীবাসাদি-ভক্তগণ—ঘিরে ঘিরে নাচ্ছে
মণ্ডলী-বন্ধন করি—ঘিরে ঘিরে নাচ্ছে
চারিদিকে ঘিরে পরিষদ্-আলি—তার,–মাঝে নাচ গোরা-বনমালী
দুই দুই পরিকর—তার,–মাঝে মাঝে গৌর নাচে
সঙ্কীর্ত্তনে রাস রচে—তার,–মাঝে মাঝে গৌর নাচে
নিজ,–পারিষদ্গোপী-মাঝে—আমার,–রসরাজ গৌরাঙ্গ নাচে
আমারই কাছে গৌর নাচে—সবাই মনে কর্ছে
ও,–‘‘গমন নটন-লীলা,’’
ওগো আমার,–চিতচোর প্রাণ-গৌরাঙ্গের-গমন নটন-লীলা
ওগো আমার,–রসরাস-গৌরাঙ্গ-নটের—গমন নটন-লীলা
ওগো আমার,–সঙ্কীর্ত্তন-সুলম্পটের-গমন নটন-লীল
ওগো আমার,–নদীয়া-বিনোদ-গৌরাঙ্গের—গমন নটন-লীলা
ওগো আমার,–প্রাণ-শচী-দুলালিয়ার—গমন নটন-লীলা
ওগো আমার,–সতীনাথের আনা নিধির—গমন নটন-লীলা
ওগো আমার,–গদাধরের প্রাণ-বঁধুয়ার—গমন নটন-লীলা
ওগো আমার,–শ্রিবাস-অঙ্গনের নাটুয়ার—গমন নটন-লীলা
ওগো আমার,–নরহরির চিতচোরের—গমন নটন-লীলা
ওগো আমার,–নিতাই-পাগল-করা গোরার—গমন নটন-লীলা
নাটুয়া-মূরতি গৌর আমার—চলে যেতে নেচে যেছে
প্রাণ-গৌরাঙ্গের,–নাটুয়া-মূরতি নটন-গতি—চলে যেতে নেচে যেছে
বুঝি,–নটনে ওর উৎপত্তি
কোন-দেশে কোন-নিগূঢ়-খেলায়—বুঝি,–নটনে ওর উৎপত্তি
আমার গোরা,–ভাবে ভরা রসে গড়া—তাই,–চলে যেতে নেচে যায়
ও,–‘‘গমন নটন-লীলা, বচন সঙ্গীত-কলা,’’
রসের গোরা চিতচোরা,–চলে যেতে নেচে যেছে—সঙ্গীতেতে কথা কইছে
ওগো আমার,–রসের গোরা চিতচোরা-সঙ্গীতেতে কথা কইছে
পঞ্চম-রাগ জিনি—যেন,–কতশত-কোকিল কূহরিছে
যেন,–অমিয়া-সিন্ধু উথলিছে
জগৎ অমৃতময় কর্বে বলে—যেন,–অমিয়া-সিন্ধু উথলিছে
ওগো আমার,–গৌরহরি হরি বলিছে—যেন,–অমিয়া-সিন্ধু উথলিছে
আমার,–রসময়-গৌরাঙ্গ-রায়-চল্তে নাচে বল্তে গায়
কে যেন নাচায় কে যেন বলায়—আপনি কি নাচে গায়
মনে হয় শ্রীগুরু-প্রেরণায়—বুঝি ওরে নাচায় গাওয়ায়
বিলাস-বিবর্ত-বিলাস-রঙ্গে—বুঝি ওরে নাচায় গাওয়ায়
বিলাস-রঙ্গের উঠেছে তুফান—তারই বিকাশে নটন গান
‘‘মধুর-চাহনি আকর্ষণ।’’
একবার,–হরি বলে যার পানে চাইছে—তারই আঁখি-মন হরিছে
হরি বলে যার পানে চাইছে’—
আমার,–রসের গোরা নেচে নেচে—হরি বলে যার পানে চাইছে
ও ত’ হরি বলা নয় গো
বলে কয়ে করছে চুরি
চিতচোর গৌরহরি-বলে কয়ে কর্ছে চুরি
স্বভাব জাগায়ে হানিছে বাণ—ও ত’ চাওয়া নয় শর-সন্ধান
হরি বলে যার পানে চাইছে—সে অমনি ঢলে পড়িছে
ভাবতে অবশ হয়ে—সে অমনি ঢলে পড়িছে
চাহনিতে বাণ হেনেছে—তাই,–সে অম্নি ঢলে পড়িছে
তাইতে অবশ হয়ে—সে অমনি ঢলে পড়িছে
আমার,–ভাবনিধি যার পানে চাইছে—সে,–ভাবাবেশে ঢলে পড়িছে
কায়-মনে গোরা-পদে বিকাইছে—জীবন-যৌবন সঁপে দিয়েছে
চাহনিতে কি মধুর-রঙ্গ—অপরূপ গৌরাঙ্গ-রঙ্গ
হরি বলে নয়ন-বাণাঘাতে—মধুর-রঙ্গে মাতাল জগতে
ভোগ-লালসা জেগে উঠেছে—তাহাতে নয়ন-বাণ হানিছে
স্বভাব জাগায় নদীয়া-বধুর—গোরা চাহনি কি বা মধুর
বাহু পসারি করছে কোলে
বাণ-সন্ধানে যে পড়্ছে ঢলে—বাহু পসারি কর্ছে কোলে
অমারা,–রসরাজ-গৌরাঙ্গ নাচে
তারে,–বাহু পসারি হৃদে ধরি—আমার,–রসরাজ-গৌরাঙ্গ নাচে
আমার,–বিলাসি-গৌরাঙ্গ নাচে
জগজীবে রসবরষিয়ে—আমার,–বিলাসি-গৌরাঙ্গ নাচে
যে,–ঢলে পড়ে তার বুকে ধরে—আমার,–বিলাসি-গৌরাঙ্গ নাচে
কীর্ত্তন,–কেলিরস-তৎপর—নাচে,–গৌরাঙ্গ নাগর-বর
রস-কেলি-কল্লোলে—নাচে,–রসের গোরা হেলে দুলে
‘‘মধুর-চাহনি আকর্ষণ।’’
ও,–‘‘রঙ্গ বিনে নাহি অঙ্গ,’’
আমার,–রঙ্গিয়া প্রাণ-গৌরাঙ্গের—প্রতি অঙ্গ রঙ্গে গড়া
আমার,–অনঙ্গ মোহন-গৌরাঙ্গের—প্রতি অঙ্গ রঙ্গে গড়া
রঙ্গের মন্দির গোরার—প্রতি অঙ্গ রঙ্গে গড়া
‘রঙ্গের মন্দির গোরা’—
বিলাস-বিবর্ত্ত-বিলাস—রঙ্গের মন্দির গোরা
নবীন-কামের কোঁড়া—রঙ্গের মন্দির গোরা
বুঝি,–রঙ্গেতে ওর উৎপত্তি—দেখে—মনে হয় ঐ মূরতি
রাস-কেলি হতে যেরূপ প্রকট—তাই,–প্রতি অঙ্গে বিকাশ কেলিরস
কেলি-রঙ্গ-রসপুর—আমরি কি মূরতি মধুর
গৌরের কোন অঙ্গে,–যার দৃষ্টি হয় নিপতিত—সে,–কেলিরসে হয় নিমজ্জিত
বিশেষ-অঙ্গের অপেক্ষা না করে—আমার গৌরের,–প্রতি অঙ্গ রঙ্গ করে
রঙ্গ ছাড়া রইতে নারে—প্রতি অঙ্গ রঙ্গ করে
নিরন্তর রঙ্গ করা—উহার ত’ ঐ স্বভাব
যমুনা-পুলিন-বনে—রঙ্গ-আশা মিটে নাই গো
এসেছে,–রঙ্গ-সাধ মিটাইতে—তাই, এসেছে সুরধুনী—পুলিনে
জগজীবের স্বভাব জাগাইয়ে—তাই, এসেছে সুরধুনী-পুলিনে
আজ,–সঙ্কীর্ত্তন-রাসরঙ্গে—বিশ্বম্ভর-নাম পূর্ণ কর্ছে
স্বভাব জাগায়ে রঙ্গ করছে—বিশ্বম্ভর-নাম-পূর্ণ করছে
‘স্বভাব জাগায়ে রঙ্গ করেছে’—
স্থাবর-জঙ্গম,–গুল্ম-লতা-পশু-পাখীর—স্বভাব জাগায়ে রঙ্গ কর্ছে
অপূর্ণ-সাধ পূর্ণ করছে—স্বভাব জাগায়ে রঙ্গ করছে
সঙ্কীর্ত্তন—রাস রঙ্গে—বুঝি,–স্বভাব জাগাতে এসেছে এবার
ভাবে বিভাবিত হয়ে রাধার—বুঝি,–স্বভাব জাগাতে এসেছে এবার
অখিল-ভুবনবাসীর—বুঝি,–স্বভাব জাগাতে এসেছে এবার
সঙ্কীর্ত্তন-রাস,–রঙ্গভূমি-নদীয়ায়—বুঝি,–স্বভাব জাগাতে এসেছে এবার
দেখেলে স্বভাব জেগে উঠে
স্বরূপ-জাগান গোরা-স্বরূপে—দেখ্লে স্বভাব জেগে উঠে
দেখ্লে স্বভাব জেগে উঠে—আপনি কাছে আসে ছুটে
ভোগীকে ভোগ দিবার আশে—আপনি কাছে আসে ছুটে
ভোগী তখন রস লুটে—আপনি কাছে আসে ছুটে
‘‘রঙ্গ বিনে নাহি অঙ্গ, ভাব বিনে নাহি সঙ্গ,’’
আমার,–ভাবনিধি প্রাণ গৌরাঙ্গ—অভাবের সঙ্গ করে না
অভাবে থাকা দেখ্তে পারে না—অভাবের সঙ্গ করে না
এ যে ওর জাত-স্বভাব-অভাবের সঙ্গ করে না
ও-মা ওর কি গরজ বালাই—স্বভাব জাগায়ে করে সঙ্গ
অন্তরঙ্গ-ভাবুক-সঙ্গে—নিশিদিশি ভাব-প্রসঙ্গ
কম্প, অশ্রু, পুলকাদি—ভাব-ভূষণে ভূষিত অঙ্গ
ও-যে কেলি রঙ্গের বিকাশ—ও-ত’ নয় অষ্ট-সাত্ত্বিক
আ’মরি,–‘‘রসময় দেহের গঠন।।’’
আরে আরে আরে আমার—গৌর কিশোর-বর
আরে আমার চিতচোর—গৌর কিশোর-বর
রসে তনু ঢর ঢর—গৌর কিশোর-বর
অখিল-মরম-চোর—গৌর কিশোর-বর
শ্রীনবদ্বীপ-পুরন্দর—গৌর কিশোর-বর
অভিনব নাগর-বর
চিতচোর গৌর-কিশোর—অভিনব নাগর-বর
এক,–নব-রসের মুরতি ধরেছে—অভিনব নাগর-বর
মহাভাব-রসের সম্মিলনে—অভিনব নাগর-বর
‘‘নাচে গোরা কীর্ত্তন-মঙ্গল।। রে !!
চৌদিকে বৈষ্ণবগণ, হরি বলে ঘনে ঘন,’’
বয়ে যায় গৌর-প্রেমের পাথার
বয়ে যায় মধুর-রসের পাথার
সঙ্কীর্ত্তন,–অধিবাসে নদীয়ায়—রয়ে যায় মধুর-রসের পাথার
যত,–ভক্ত-হংস-চক্রবাক তায়—সুখেতে দিতেছে সাঁতার
নিতাই-তরঙ্গে নেচে নেচে—সুখেতে দিতেছে সাঁতার
‘নিতাই-তরঙ্গে নেচে নেচে’—
করুণা-বাতাসে হেলে দুলে—নিতাই-তরঙ্গে নেচে নেচে [মাতন]
আমরি,–সুখেতে দিতেছে সাঁতার
আমরি,–গোরা-রস-বক্ষ-বিহার—সুখেতে দিতেছে সাঁতার
কাল হবে কীর্ত্তন-মহোৎসব।’’ রে !
নিশি-পরভাতে,–নাম যজ্ঞ দেখব বলে—সবে হরি হরি বলে
কেমন গৌরের নাম-যজ্ঞ—নয়ন-ভরে দেখ্ব মোরা
বংশী বলে দেহ জয়-বর।।’’ রে !!
আমার,–দয়ানিধি-সীতানাথের—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
আমার,–নিতাই-গৌর-সীতানাথেব-প্রাণভরে জয় দাও ভাই
‘নিতাই, গৌর, সীতানাথ’—
তিন প্রভু, এক তনু-মন—নিতাই, গৌর, সীতানাথ
নিতাই, গৌর, সীতনাথ
জয় রে জয় রে জয়—নিতাই, গৌর, সীতানাথ
হোতা, যজ্ঞেশ্বর, যজমান—নিতাই, গৌর, সীতানাথ
ভিনু ভিনু দেহ একই পরাণ—নিতাই গৌর, সীতানাথ
তাতে নিতাই-তরঙ্গ জয়—জয়,–গৌরাঙ্গ-প্রেমসিন্ধু জয়
অদ্বৈত-করুণা-বাতাস জয়—জয়,–গৌরাঙ্গ-প্রেমসিন্ধু জয়
জয়,–গদাধর, শ্রীনিবাস—জয়,–নিতাই, গৌর সীতানাথ
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’ [মাতন]
শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।।