শ্রীশ্রীনিত্যানন্দ-প্রভুর জন্মলীলা কীর্ত্তন

(মাঘী শুক্লা ত্রয়োদশী তিথি)

”শ্রীগুরু -প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।”
”ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।

”রাঢ়দেশ নাম, একচক্রা ধাম,”

যাইরে গ্রামের বালাই যাইরে

যে গ্রামে আমার, –প্রভুনিতাই বিহরিলা–যাইরে গ্রামের বালাই যাইরে

ধন্য, –রাঢ়দেশ একচক্রা ভূমি

যেথা, –প্রকট হল নিতাই-গুণমণি–ধন্য,–রাঢ়দেশ একচক্রা ভূমি

”রাঢ়দেশ নাম, একচক্রা ধাম,”
হাড়াইপণ্ডিত-ঘর।”

যাইরে ঘরের বালাই যাইরে

এক চাকায় হাড়াই-পণ্ডিতের ঘর–যাইরে ঘরের বালাই যাইরে
‘এক চাকায় হাড়াই-পণ্ডিত ঘর’–
যাতে,–জনমিলা নিতাই গুণধর–এক চাকায় হাড়াই-পণ্ডিতের ঘর
যাতে,–বিলসে গৌর-বিলাস-কলেবর–এক চাকায় হাড়াই-পণ্ডিতের ঘর

”শুভ মাঘমাসী, শুক্লা ত্রয়োদশী,”

মাস,–তিথির বালাই লয়ে মরি

মাঘী শুক্লা ত্রয়োদশী–মাস,–তিথির বালাই লয়ে মরি
যাতে উদিল নিতাই-শশী–মাস,–তিথির বালাই লয়ে মরি
‘যাতে উদিল নিতাই-শশী’–
একচাকা-আকাশে আসি–যাতে উদিল নিতাই-শশী
খণ্ডিতে পাপ-তমরাশি–যাতে উদিল নিতাই-শশী

সেই,–শুভ-তিথির বালাই যাই

যে আনিল প্রেমের মূরতি ধরায়–সেই, –শুভ-তিথির বালাই যাই

আজ জগতে দেখিল সবে

মাঘী শুক্লা-ত্রয়োদশীতে–আজ জগতে দেখিল সবে
যারে কেউ দেখে নাইরে’– আজ জগতে দেখিল সবে
ঘরে কেউ দেখে নাইরে
নামমাত্র শুনেছে–যারে কেউ দেখে নাইরে
‘নামমাত্র শুনেছে’–
মূরতিমন্ত গৌরপ্রেম-প্রকাশে–নামমাত্র শুনেছে

যারে কেউ দেখে নাইরে

”শুভ মাঘমাসী, শুক্লা-ত্রয়োদশী,
যাতে,–জনমিলা হলধর।।”

এবে, –অনুরাগে রাঙা হয়ে

ধবল ছিল ব্রজেতে –এবে,–অনুরাগে রাঙা হয়ে
শ্রীনিত্যানন্দরূপে–এবে,–অনুরাগে রাঙা হয়ে

”যাতে ,–জনমিলা হলধর।।
হাড়াই-পণ্ডিত, অতি হরষিত,
পুত্রমহোৎসব করে।”

আজ,–আনন্দ আর ধরে নারে

ভাগ্যবন্ত হাড়াই-পণ্ডিতের–আজ,–আনন্দ আর ধরে নারে
নিত্যানন্দ পেয়ে পুত্ররূপে–আজ,–আনন্দ আর ধরে নারে

”ধরণী মণ্ডল, করে টলমল,
আনন্দ নাহিক ধরে।।”

আনন্দ আর ধরে নারে

আজ,–ভাগ্যবতী-ধরণীর –আনন্দ আর ধরে নারে

আজ,–ধরণীর আনন্দ ভারি

নিতাই-গুণমণি বুকে ধরি’–আজ,–ধরণীর আনন্দে ভারি

ধরণী প্রেমে টলমল করে

প্রেমের,–মূরতি-নিতাই হৃদে ধরে–ধরণা প্রেমে টলমল করে

(মাতন)

”শান্তিপুর-নাথ, মনে হরষিত,
করি কিছু অনুমান,”

কারণ অনুসন্ধান করে

অকস্মাৎ-আনন্দের –কারণ অনুসন্ধান করে

সীতানাথ অনুমান করে

কে যেন বলে দিল প্রাণে–সীতানাথ অনুমান করে

”অন্তরে জানিল, এবে জনমিল,
কৃষ্ণের অগ্রজ রাম।।”

আগে জনমিলা রাম

পিছে পিছে আস্‌বে শ্যাম–আগে জনমিলা রাম
আয়োজন করতে খেলার উপাদান –আগে জনমিলা রাম
‘আয়োজন করিতে খেলার উপাদান’–
যাতে, –খেলতে পারে প্রাণারাম–আযোজন করিতে খেলার উপাদান

আগে জনমিলা রাম
খেলার ভূমি আগে এল

শ্রীনিত্যানন্দ সেবাবিগ্রহ–খেলার ভূমি আগে লে
নৈলে,–কোথা এসে খেল্‌বে বল–খেলার ভুমি আগে এল

আজ,–আনন্দ আর ধরে নারে

সীতানাথের অন্তরে –আজ,–আনন্দ আর ধরে নারে
আমার ডাক পৌঁচেছে জেনে–আজ, –আনন্দ আর ধরে নারে

ডাক বুঝি বেজেছে কাণে

‘নৈলে,–খেলার ভূমি আস্‌বে কেনে –ডাক বুঝি বেজেছে কাণে
‘নৈলে,–খেলার ভূমি আস্‌বে কেনে’–
খেলার সাধ যদিনা থাকে মনে–খেলার ভূমি আস্‌বে কেনে

নৈলে ,–খেলার ভূমি আস্‌বে
কেনে ডাক নিশ্চয় বেজেছে কাণে
এবার খেলারু আস্‌বে আপনি

এই যে এল খেলার ভূমি–এবার খেলারু আস্‌বে আপনি

বিলাসী কি থাক্‌তে পারে

নিজ-বিলাস -ভূমি ছেড়ে –বিলাসী কি থাক্‌তে পারে

খেলার ভূমি এল,–এবার খেলারু আস্‌বে

খেলার,–ভুমি ছেড়ে কতক্ষণ থাক্‌বে–খেলার ভূমি এল,–

এবার খেলারু আস্‌বে
আমার প্রতিজ্ঞা এবার পূর্ণ হবে
সীতানাথের আনন্দ ধরে না

আমার,–বাসনা-পূরণের হল সূচনা–সীতানাথের আনন্দ ধরে না

এতদিনে সফল হল

আমার,–গঙ্গাজল তুলসী দেওয়া–এতদিনে সফল হল
‘আমার, –গঙ্গাজল তুলসী দেওয়া’–
অনশনে,–হা কৃষ্ণ বলে কেঁদে–আমার,–গঙ্গাজল তুলসী দেওয়া–এতদিনে

এতদিনে সফল হল
সীতানাথ গরজে গভীর

আনিলুঁ আইল বলবীর–সীতানাথ গরজে গভীর

(মাতন)

”বৈষ্ণবের মন, হৈল পরসন্ন,
আনন্দ-সাগরে ভাসে।”

আজ ,–আনন্দের আর সীমা নাইরে

‘যত,–ভক্তগণের আপন-আপন-মনে’–
কারণ কহে কিছু না জানে–যত,–ভক্তগণের আপন-আপন-মনে

আজ,–আনন্দের আর সীমা নাইরে
সবার মনে তাই আনন্দ

আজ,–আইলা প্রভু নিত্যানন্দ—সবার মনে তাই আনন্দ

(মাতন)

”দীন দুরাচার, বইব উদ্ধার,
কহে দুঃখী কৃষ্ণদাসে।।”

পতিতের দুঃখ দূরে গেল

পতিতের বন্ধু নিতাই এল–পতিতের দুঃখ দূরে গেল
‘পতিতের বন্ধু নিতাই এল’–
আর পতিতের ভয় কি বল–পতিতের বন্ধু নিতাই এল

পতিতের দুঃখ দুরে গেল

”আগে জনমিলা নিতাই-চাঁদ।”

আগে আমার নিতাই এল

খেলার ভূমি প্রস্তুত লাগি,–আগে আমার নিতাই এল
‘খেলার ভূমি প্রস্তুত লাগি’–
তার প্রিয় গোরাচাঁদের–খেলার ভূমি প্রস্তুত লাগি

নিতাই আইলা রাঢ়দেশে

রঙ্গভূমি প্রস্তুত -আশে’–
রঙ্গিয়া প্রাণগৌররের–রঙ্গভূমি প্রস্তুত-আশে

নিতাই আইলা রাঢ়দেশে
সেবাবিগ্রহ আগে আইলা চলে

সেব্য আসি খেল্‌বে বলে–সেবাবিগ্রহ আগে আইলা চলে

”আগে জনমিলা নিতাই-চাঁদ।
পাতিয়া করুণা অমিয়া-ফাঁদ।।
নারীগণ সবে দেখিতে যায়।”

স্বভাবেতে কেউ যায় নারে

নিতাই,–প্রাণে প্রাণে টানে সবারে–স্বভাবেতে কেউ যায় নারে

”সবারে করুণা -নয়নে চায়।।”

যার পানে চায় প্রেমে মাতায়

গৌর-প্রেমের মূরতি নিতাই –যার পানে চায় প্রেমে মাতায়

”দেখিয়া সে ঘরে আসিতে নারে।”

রূপ দেখি তার নয়ন ঝুরে

আমার, –নিতাইচাঁদের রূপ হেরে–রূপ দেখি তার নয়ন ঝুরে

ঘরের কথা ভুলে যায় রে

নিতাইচাঁদের বদন হেরে–ঘরের কথা ভুলে যায় রে

কি করে ঘরে আসবে বল

প্রাণ যে তাদের কেড়ে নিল–কি করে ঘরে আস্‌বে বল

এই ত ঘর মনে করে

নিতাইচাঁদের বদন হেরে—এই ত ঘর মনে করে
তাদের ঘর পর হয়ে যায় রে –এই ত ঘর মনে করে
ঘরে ফিরে যেতে মন না সরে–এই ত ঘর মনে করে

নিতাইচাঁদের স্বরূপ এই বটে

অনিত্য-ঘর পর করে–নিতাইচাঁদের স্বরূপ এই বটে

তার,-নিত্য-ঘরে বসতি হয় রে

তার দরশন যার ভাগ্যে ঘটে–তার,–নিত্য-ঘরে বসতি হয় রে

”রূপ হেরি’ তার নয়ন ঝুরে।।
দেখি’ সবে মনে বিচার করে।
এই কোন মহাপুরুষ বরে।।”

এ যে ঘর পর করে দিল

অশেষ -দুঃখের আকর-এ যে পর করে দিলে
একবার মৃদু হেসে চাইল–এ যে ঘর পর করে দিল

মহাপুরুষ না হলে পরে

কেন,–মন-প্রাণ আকর্ষণ করে–মহাপুরুষ না হলে পরে

এ নিশ্চয় মহাপুরুষ হবে

নৈলে কেন মন-প্রাণ আকর্ষণ করে–এ নিশ্চয় মহাপুরুষ হবে

”দেখিতে দেখিতে বাড়য়ে সাধ।”

আঁখি পালটিতে নারে

নিতাইচাঁদের বদন হেরে–আঁখি পালটিতে নারে

বিধাতারে নিন্দা করে
দারুণ বিধি সূজন জানে নারে
তারে কি দেয় দুটি নয়ন

যে দেখিবে নিতাই-বদন–তার কি দেয় দুটি নয়ন

বুঝি,–সে বিধি দেখে নাই গো

আনন্দ-কন্দ নিত্যানন্দ–বুঝি,–সে বিধি দেখে নাই গো
প্রেমের মূরতি নিতাই-চাঁদে –বুঝি,–সে বিধি দেখে নাই গো

দেখ্‌লে, –তার দিত না দু’টি নয়ন

যে দেখিবে,–অমিয়াধাম নিতাই-বদন–দেখ্‌লে,–তার দিত না দু’টি নয়ন

সবে দিল দু’টি আঁখি
তাতে আবার নিমিষ দিল
দেখে আশ মিটে না গো

যত দিখি পিয়াস বাড়ে তত–দেখে আশ মিটে না গো

কোটি আঁখি বাসনা করে

নিতাই-বদন হেরিবারে –কোটি আঁখি বাসনা করে

”ঘরে আসিবারে পড়য়ে বাধ।।”

কোথা ঘর আর কোথা আস্‌বে

প্রাণ যে টেনে নিয়েছে ঘরে– কোথা ঘর আর কোথা আস্‌বে

”মনে করি ইহায় হিয়ায় ধরি।”

যখন মনে হয় তখনি হেরি
যখনি সাধ হবে দেখ্‌ব খুলি’

হৃদয়-মন্দিরে রাখ্‌ব পুরি’– যখনি সাধ হবে দেখ্‌ব খুলি’

(মাতন )

”কিবা,–নয়নে কাজর করিয়া পরি।।”

ক্ষণেক দেখে আশ মিট্‌ছে না

আঁখির কাজর করে পরি–ক্ষণেক দেখে আশ মিট্‌ছে না

”কত পুণ্য কৈল ইহার মাতা।
এহেন নন্দন দিল বিধাতা ।।”

একচাকা-ইন্দু উদিল রে

পদ্মাবতী-গর্ভ-সিন্ধু হতে–একচাকা -ইন্দু উদিল রে

না জানি কত পুণও কৈল

ভাগ্যবতী পদ্মাবতী–না জানি কত পুণ্য কৈল
যার ফলে এহেন নন্দন পেল–না জানি কত পুণ্য কৈল

আমরা যদি সে ভাগ্য কর্‌তাম

এই নয়ন-মণি বুকে ধর্‌তাম–আমরা যদি সে ভাগ্য কর্‌তাম

”কহিতে কাহতে নয়ন দিয়া।
আনন্দের ধারা পড়ে বাহিয়া।।”

উথলিল আনন্দসিন্ধু

হেরি’ নিতাই-মুখ-ইন্দু–উথলিল আনন্দসিন্ধু

”কারু স্তন বাহি দুগ্ধ ঝরে।”

বাৎসল্য-রস উথলিল রে

একচাকার নারীগণের –বাৎসল্য-রস উথলিল রে
প্রেমের মূরতি নিতাই হেরে–বাৎসল্য-রস উথলিল রে

‘‘কেহ যায় তারে করিতে কোরে।।

একবার দাও গো আমার কোলে

ও পদ্মাবতী তোমার তনয়ে—একবার দাও গো আমার কোলে
কোলে করে জুড়াই হিয়ে—একবার দাও গো আমার কোলে

‘‘এ সব বিকার রমণীগণে।
শিবরাম আশা করয়ে মনে।।

কতদিনে আমার হবে

এত অনুরাগ নিতাই-চাঁদে—কতদিনে আমার হবে

(মাতন)

‘‘রাঢ় মাঝে একচাকা নামে আছে গ্রাম।’’

যাইরে গ্রামের বালাই যাইরে
সেই,–ভূমি-গ্রামের বালাই যাইরে

যেখানে আমার নিতাই অবতীর্ণ—সেই,–ভূমি—গ্রামের বালাই যাইরে

‘‘রাঢ়মাঝে একচাকা নামে আছে গ্রাম।
তাহে অবতীর্ণ নিত্যানন্দ বলরাম।।
হাড়াই-পণ্ডিত নাম শুদ্ধ বিপ্ররাজ।
মূলে সর্ব্বপিতা তানে কৈল পিতা ব্যাজ।।
মহা জয়জয়-ধ্বনি পুষ্প বরিষণ।
সঙ্গোপে দেবতাগণ করিলা তখন।।’’

প্রাণে প্রাণে বলে রে
রাঢ়ভূমির বালাই যাই

জনমিলা প্রেমদাতা নিতাই—রাঢ়ভূমি বালাই যাই

‘‘সঙ্গোপে দেবতাগণ করিলা তখন।।
কৃপাসিন্ধু ভক্তিদাতা শ্রীবৈষ্ণবধাম।
অবতীর্ণ হৈলা রাঢ়ে নিত্যানন্দ-রাম।।’’

বালাই লয়ে মরে যাই

শুক্লা-ত্রয়োদশী-তিথির—বলাই লয়ে মরে যাই
যাহে অবতীর্ণ নিতাই—বালাই লয়ে মরে যাই

‘‘অবতীর্ণ হৈলা রাঢ়ে নিত্যানন্দ-রাম।।
সেই দিন হৈতে রাঢ়মণ্ডল সকল।
পুনঃ পুনঃ বাড়িতে লাগিল সুমঙ্গল।।’’
‘‘ভুবন-আনন্দকন্দ, বলরাম নিত্যানন্দ,
অবতীর্ণ হৈলা কলিকালে।’’

বলরাম নিত্যানন্দ

ভুবন-আনন্দ-কন্দ—বলরাম নিত্যানন্দ

‘‘অবতীর্ণ হৈলা কলিকালে।
ঘুচিল সকল দুঃখ, দেখিয়া ও-চাঁদ-মুখ,
ভাসে লোক আনন্দহিল্লোলে।।’’

জগজনের আনন্দ মনে

নিতাই-চাঁদের মুখ হেরে—জগজনের আনন্দ মনে

বাহির ভিতর আলো হল

আমার,–নিতাই-চাঁদের উদয়েতে—বাহির ভিতর আলো হল
জীবের পাপ-তম গেল—বাহির ভিতর আলো হল

ঘুচিল জীবের ভববন্ধ

দেখিয়া শ্রীনিত্যানন্দ—ঘুচিল জীবের ভববন্ধ

অভাব ঘুচে সেই স্বভাব জাগিল

যার অভাবে দুঃখ পেতেছিল—অভাব ঘুচে সে স্বভাব জাগিল

জীবের প্রাণে আশা জাগিল

আনন্দঘন ভোগ করিব—জীবের প্রাণে আশা জাগিল

‘‘জয় জয় নিত্যানন্দ-রাম।’’

প্রাণভরে জয় দাও ভাই

আনন্দকন্দ নিত্যানন্দ-রামের—প্রাণভরে জয় দাও ভাই

‘‘কনক-চম্পক কাঁতি, অঙ্গুলে চাঁদের পাঁতি,
রূপে জিতল কোটি কাম।।
ও-বদন-মণ্ডল দেখি,’ পূর্ণচন্দ্র কিসে লেখি,
দীঘল নয়ান ভাঙ ধনু।’’

করুণা-ভাণ্ডার জনু

দীঘল-নয়ান ভাঙ ধনু—করুণা-ভাণ্ডার জনু

অবিরত করুণা ঝরে

নিতাই-চাঁদের নয়ন-কোণ—অবিরত করুণা ঝরে

আমরি,–ও যেন কামের কামান

নিতাই-চাঁদের দীঘল-নয়ন—আমরি,–ও যেন কামের কামান

ও নয়ন নয় ত কামধনু
তারে হানে গৌর-প্রেমবাণ

একবার,–যার পানে ফেরায় নয়ান—তারে হানে গৌর-প্রেমবাণ

‘‘আজানু-লম্বিত ভুজ, তলথল পঙ্কজ,
কটি ক্ষীণ করি-অরি জনু।।’’

বুঝি,–মুঠিতে ধরা যায় গো

সিংহ জিনি কটি ক্ষীণ—বুঝি,–মুঠিতে ধরা যায় গো

ভয় হয় পাছে ভেঙ্গে পড়ে

ভাবভরে যখন দোলে—ভয় হয় পাছে ভেঙ্গে পড়ে

‘‘চরণ-কমল-তলে, ভকত-ভ্রমর বুলে,’’

ভকত-ভ্রমর বুলে

চরণ-কমল-মধু পানের তরে—ভকত-ভ্রমর বুলে
গৌর গুণ গুণ গুণ গুণ স্বরে—ভকত-ভ্রমর বুলে

‘‘আধ-বাণী অমিয়া প্রকাশ।’’

বাণী নয় যেন অমিয়া ঝরল

ষোলকলা-চাঁদ ফাটিল—বাণী নয় যেন অমিয়া ঝরল

আধ-বাণী অমিয়া প্রকাশ

গোরাভাবে গদগদ-ভাষ—আধ-বাণী অমিয়া প্রকাশ

‘‘ইহ কলিযুগ-জীবে, উদ্ধার হইল সবে,
কহে দীন দুঃখী কৃষ্ণদাস।।’’

আমার,–নিতাই আইলা একচাকাতে

কলিহত-জীবে উদ্ধারিতে—আমার,–নিতাই আইলা একচাকাতে

হা নিতাই প্রভু নিতাই
আজ তোমার আসবার দিন

হা নিতাই প্রাণ নিতাই—আজ তোমার আসবার দিন
হা,–প্রধানা-নাগরী নিতাই—আজ তোমার আসবার দিন
রাঢ়ে,–একচাকায় হাড়াই-পণ্ডিতের ঘরে—আজ তোমার আসবার দিন

তাই আগে এসেছিলে তুমি

তার সেবার বিগ্রহ তুমি—তাই আগে এসেছিলে তুমি
তারে,–সুখদিবার আয়োজন করবার লাগি—তাই আগে এসেছিলে তুমি
খেলারু,–খেলবে পেলে খেলার ভূমি—তাই আগে এসেছিলে তুমি

আমার প্রাণ গৌর আসবে
কোথায় বসবে কোথায় খেলবে
তাই,–আগে আইলে নিতাই তুমি

তার,–সেবার আয়োজন করবার লাগি’—তাই,–আগে আইলে নিতাই তুমি

তুমি,–এসেছিলে একচাকাতে

রাঢ়দেশে,–হাড়াই পণ্ডিতের ঘরে—তুমি,–এসেছিলে একচাকাতে
এই মাঘী শুক্লা ত্রয়োদশীতে—তুমি’—এসেছিলে একচাকাতে
কলিজীবে পরাগতি দিতে—তুমি’—এসেছিলে একচাকাতে
‘কলিজীবে পরাগতি দিতে’—
পরাভক্তি দান করে—কলিজীবে পরাগতি দিতে

তুমি—এসেছিলে একচাকাতে

কলিজীবে,–প্রেম দিতে গৌর দিতে—তুমি,–এসেছিলে একচাকাতে

তুমি,–আগে এলে রাঢ়দেশে

প্রাণ গৌর এল পিছে পিছে—তুমি,–আগে এলে রাঢ়দেশে

সাঙ্গোপাঙ্গে সবাই এল

ব্রজ পরিকর যত –সাঙ্গোপাঙ্গে সবাই এল

একে একে মিলিল সবে

এই মধুর নদীয়াতে—একে একে মিলিল সবে

তুমি,–আসিয়া মিলিলে কতদিনে

গোপনে,–নন্দন-আচার্য্যের ভবনে—তুমি,–আসিয়া মিলিলে কতদিনে

গৌর হলে পূর্ণকাম

পেয়ে,–তোমার নিত্যনন্দ রাম—গৌর হলেন পূর্ণকাম

আরম্ভিলেন নিজকার্য্য

নাম-সঙ্কীর্ত্তন যুগধর্ম্ম—আরম্ভিলেন নিজকার্য্য

তোমার দ্বারে তার সকল কার্য্য

শ্রীমুখে বলেছেন শচীসুত—তোমার দ্বারে তার সকল কার্য্য
তুমি-শ্রীসেবা বিগ্রহ—তোমার দ্বারে তার সকল কার্য্য

তুমি,–পূরাইলে চৈতন্যের কাম

বিশ্বভরি’ করি’ প্রেমদান—তুমি,–পূরাইলে চৈতন্যের কাম

(মাতন)
সেই একদিন আর এই একদিন
প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠছে
দেখিতে ত পাই নাই

সেই,–প্রেম-পুরুষোত্তম-লীলা—দেখিতে ত পাই নাই
স্থাবর-জঙ্গম,–প্রমোন্মত্তকারী লীলা—দেখিতে ত পাই নাই

নিশিদিশি জ্বলছে হিয়ায়

সেই,–লীলা-অদর্শন-শেল—নিশিদিশি জ্বলছে হিয়ায়

আশাপথ চেয়ে আছি

শ্রীমুখের কথা শুনি’—আশা পথ চেয়ে আছি

শ্রীমুখে বলেছেন শ্রীগুরুদেব

ত্রিকালসত্য তোমাদের লীলা—শ্রীমুখে বলেছেন শ্রীগুরুদেব

তাই নিবেদন করি
আজ্ঞা পালন হয় নাই তোমার
তোমাকেই ত দিয়েছেন ভার

প্রাণের প্রাণ গৌর আমার—তোমাকেই ত দিয়েছেন ভার
নিরজনে বসে কেঁদে কেঁদে—তোমাকেই ত দিয়েছেন ভার
তার,–বিশ্বম্ভর নাম পূর্ণ করবার—তোমাকেই ত দিয়েছেন ভার

প্রাণে প্রাণে জানে
সে পূর্ণ হবে সুনিশ্চিত

তোমা হতে তার অভিলাষ—পূর্ণ হবে সুনিশ্চিত

তাই তোমায় দিয়েছেন ভার
তোমায়,–আজ্ঞা দিয়ে হয়েছে খালাস

তার,–বিশ্বম্ভর নাম পূর্ণ করবার—তোমায়,–আজ্ঞা দয়ে হয়েছে খালাস

তোমারি ত সকল ভার

হা,–জগদগুরু নিত্যানন্দ—তোমারি ত সকল ভার
নাম-প্রেমে বিশ্ব ভরবার—তোমারি ত সকল ভার

তাই জানাই তোমার ঠাঁই
কৈ পূর্ণ হল কৈ
দেশবিদেশে ঘুরে দেখলাম

তোমার,–কৃপা ভোগ করবার লাগি—দেশবিদেশে ঘুরে দেখলাম
শ্রীগুরুদেবের কৃপা-প্রেরণায়—দেশবিদেশে ঘুরে দেখলাম

এখনও যে অনেক বাকী
বাকীর কথা কিবা বলবো
বিরুদ্ধ-স্বভাবে জগৎ পূর্ণ

নিজ নিজ,–স্বার্থ নিয়ে রণোমত্ত—বিরুদ্ধ—স্বভাবে জগৎ পূর্ণ

কেউ ত বুঝে নাই প্রাণে

গৌর,–পরতত্ত্ব-সীমা বলে—কেউ ত বুঝে নাই প্রাণে

কেউ ভজতে চায় না

তোমার প্রাণ গৌরহরি—কেউ ভজতে চায় না

তোমারি ত কাজ বটে

হা,–জগদ্‌গুরু নিত্যানন্দ—তোমারি ত কাজ বটে
যে না ভজে তারে ভজান—তোমারি ত কাজ বটে

(মাতন)
নামে যে কলঙ্ক হল

তোমার,–সঙ্কল্প যে ব্যর্থ হল—নামে যে কলঙ্ক হল
গৌর,–নাম-প্রেমে বিশ্ব ভরব—নামে যে কলঙ্ক হল

শুধ কেবল তোমার নয়
বিশ্বম্ভর নামে কলঙ্ক হল

তোমার প্রাণ গৌরহরির বিশ্বম্ভর নামে কলঙ্ক হল
কলিরাজের পীড়া ফলে—বিশ্বম্ভর নামে কলঙ্ক হল
‘কলিরাজের পীড়া ফলে’—
তোমার,–কলিজীবের উপরে—কলিরাজের পীড়া ফলে

বিশ্বম্ভর-নামে কলঙ্ক হল
ঘুচাও নামের কালিমা ঘুচাও

ও,–কলিপাবন অবতার—ঘুচাও নামের কালিমা ঘুচাও

দুঃখের কথা জানাই তোমাকে

জীবের,–দুঃখে দুঃখী আর কে আছে—দুঃখের কথা জানাই তোমাকে

বড় ব্যথা পেতেছি প্রাণে

সব বিপরীত দেখে’—বড় ব্যথা পেতেছি প্রাণে

কৈ,–শমন ভয় কোথা গেল

তোমার,–হাতে ধরে গৌর বলেছিল—কৈ,–শমন ভয় কোথা গেল

মৃত্যু ভয়ে ভীত সবে

তোমার গৌরের প্রেমা ভুলে—মৃত্যু ভয়ে ভীত সবে

একবার দেখ চেয়ে

তোমার কলিজীব-পানে—একবার দেখ চেয়ে
‘আর,–গৌর লয়ে থেকো না মেতে—একবার দেখ চেয়ে
আর,–গৌর লয়ে তেকো না মেতে’—
তোমার সঙ্কল্প ভুলে—আর,–গৌর লয়ে থেকো না মেতে

একবার দেখ চেয়ে
তোমার প্রাণ কি কাঁদছে না

এই,–উচ্ছৃখল জগৎ দেখে—তোমার প্রাণ কি কাঁদছে না

তোমার আসা কি উচিত নয়

জগতের এই দুর্দ্দশা দেখে—তোমার আসা কি উচিত নয়

তেমনি করে এস সঙ্গী-সাথে

জীবের দুঃখ ঘুচাইতে—তেমনি করে এস সঙ্গী সাথে
অভিরাম গৌরীদাস আদি করে—তেমনি করে এস সঙ্গী-সাথে
বাকী শোধ করবার তরে—তেমনি করে এস সঙ্গী-সাথে

আর তোমায় বলব না

পাপ-তাপ নাও বলে—আর তোমায় বলব না

এই নিবেদন শ্রীচরণে
আমরা ত তোমারি বটে

যদিও হই ম্বতন্তরী—আমরা ত তোমারি বটে

স্বভাব ত আছে আমাদের

পাপ-তাপ ভোগ করা—স্বভাব ত আছে আমাদের

কুড়ায়ে লয়ে দাও আমাদের

জগজীবের পাপতাপ—কুড়ায়ে লয়ে দাও আমাদের
আমরা সব যাব নরকে—কুড়ালে লয়ে দাও আমাদের

তেমনি করে এস হে

আর তোমার আসবার দিন—তেমনি করে এস হে
কোথাও যাও নাই জানি প্রাণে—তেমনি করে এস হে
আর থেকো না লুকায়ে—তেমনি করে এস হে

একচাকায় আসলে হবে না
প্রতিহৃদে এস হে

কলিহত পতিত-জীবের—প্রতিহৃদে এস হে

জগৎ হোক নিত্যানন্দ

হিয়ায় ধরে তোমার পরদ্বন্দ্ব—জগৎ হোক নিত্যানন্দ

জীবের আবরণ সরায়ে দাও

মহা,–আবরণে পড়েছে তাদের হৃদয়—জীবের আবরণ সরায়ে দাও

তাদের,–আনন্দ-সত্তা জাগায়ে দাও

তুমি ত তাদের সত্তা—তাদের,–আনন্দ-সত্তা জাগায়ে দাও
‘তুমি ত তাদের সত্তা’—
ও আনন্দঘন নিতাই আমার—তুমি ত তাদের সত্তা

তাদের,–আনন্দ-সত্তা জাগায়ে দাও
কেন পাবে নিরানন্দ

জীব হয় আনন্দ-কণ—কেন পাবে নিরানন্দ
ঘুচায়ে দাও সকল দ্বন্দ্ব—কেন পাবে নিরানন্দ দাও

ঝগড়া মিটায়ে দাও

জগৎ শান্ত করে দাও—দাও ঝগড়া মিটায়ে দাও

দ্বেষ হিংসা যাক ভুলে

সবাই,–একপ্রভুর দাস জেনে—দ্বেষ হিংসা যাক্‌ ভুলে

সকল অভাব লও কেড়ে

কহিহত-জীব মন্দ হেরে—সকল অভাব লও কেড়ে
বাহু পসারি হিয়ায় ধরে—সকল অভাব লও কেড়ে
দুর্ব্বাসনা কপট কুটিনাটি—সকল অভাব লও কেড়ে
মহা,–স্বভাবেতে জোর করে—সকল অভার নও কেড়ে

পুত্রের অঙ্গে কোঁড়া হলে
মা,–মানে না ত কাঁদবে বলে

পুত্রের ফোঁড়া টিপলে পরে—মা,–মানে না ত কাঁদবে বলে

জোর করে ফোঁড়া গালে

তার গলা টিপে ধরে –জোর করে ফোঁড়া গালে

তেমনি করে দূর কর

দুর্ব্বাসনা-কপট-কুটিনাটী—তেমনি করে দূর কর
জগজীবের হৃদয় হতে—তেমনি করে দূর করে

পুরুষকার ঘুচায়ে দাও

দৈবের আশ্রয় দাও—পুরুষকার ঘুচায়ে দাও

অভাব ঘুচায়ে স্বভাব জাগাও
ভজুক গৌর-পরমদেরায়

দৈব দৃষ্টি পেয়ে সবাই—ভজুক গৌর-পরমদেবায়

সবাই হোক এক বোল

বলুক—গৌরহরি হরিবোল–সবাই হোক এক বোল

করুক গৌরগুণ গান

জগজীব হয়ে এক প্রাণ—করুক গৌরগুণ গান

সবাই কাঁদুক হা গৌর বলি’

ভাই ভাই করুক কোলাকুলি—সবাই কাঁদুক হা গৌর বলি’

আশা কি পূরণ হবে না

ও আমার নিতাই সোণা—আশা কি পূরণ হবে না
এই একমাত্র বাসনা—আশা কি পূরণ হবে না

কোন দুঃখ নাই আমাদের

প্রকট লীলা দেখতে না পেয়ে—কোন দুঃখ নাই আমাদের
নিজ-অযোগ্যতা জেনে—কোন দুঃখ নাই আমাদের

কোন গুণে তার দেখা পাব

সে যে,–রূপ সনাতনের সাধনের ধন—কোন গুণে তার দেখা পাব
সে যে,–দাসরঘুনাথের সাধ্যনিধি—কোন গুণে তার দেখা পাব
দুর্ব্বাসনার কিঙ্কর মোরা—কোন গুণে তার দেখা পাব
কপটতার মূরতি মোরা—কোন গুণে তার দেখা পাব
অভিমানের খনি মোরা—কোন গুণে তার দেখা পাব

চাই না তোমার গৌর চাই না

গৌর পাবার অধিকার নাই—চাই না তোমার গৌর চাই না

বড়ই আশা প্রাণে জেগে আছে

ত্রিকালসত্য লীলা জেনে—বড় আশা প্রাণে জেগে আছে
একবার দেখব—বলে—বড় আশা প্রাণে জেগে আছে

একবার দেখতে সাধ
গৌর,–নামপ্রেমে মাতবে সবে

আত্ম-পর ভুলে গিযে—গৌর,–নামপ্রেমে মাতবে সবে

যেখানে যাব দেখতে পাব
স্বভাব-অনুরাগে বলছে সবে

পরস্পর গলা ধরে—স্বভাব-অনুরাগে বলছে সবে
ম্লেচ্ছ-যবনাদি করে—স্বভাব-অনুরাগে বলছে সবে

‘‘দণ্ডে দণ্ডে তিলে তিলে, গোরারূপ না হেরিলে,
মরমে মরিয়া যেন থাকি।
সাধ হয় নিরন্তর, হেমকান্তি কলেবর,
সতত হিয়ার মাঝে রাখি।।
তিলেক না দেখি তায়, পাঁজর ধরিয়া যায়,
ধৈরয ধরিতে নাহি পারি।
অনুরাগের ডুরি দিয়া, অন্তরে কি করে সিয়া,
না জানি তার কতই ধার ধারি।।
সুরধুনীর কুলে গিয়া, কুল দিব ভাসাইয়া,
অনল জ্বালিয়া দিব লাজে।
গৌরাঙ্গ সম্মুখে করি, হেরিব নয়ন-ভরি,
দিন যায় মিছামিছি কাজে।।’’

পূরাও মোদের এই বাসনা

ও,–জগদ্‌গুরু নিতাই আমার—পূরাও মোদের এই বাসনা
জগদভরি,–দেখব গৌরপ্রেমের কান্না—পূরাও মোদের এই বাসনা

(মাতন)
বিভোর হেয় আছ কি হে

তোমার প্রাণগৌর লয়ে—বিভোর হয়ে আছ কি হে
স্বকর্ম্ম কি গেছ ভুলে—বিভোর হয়ে আছ কি হে

কথা যে কৈছ না
আর কার কাছে যাব
প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠ্‌ছে

আজ এই স্থানে বসে—প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠছে
আর এক স্মৃতি উদয় হয়ে—প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠেছে

এসেছিলেন এই উদ্যানে

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—এসেছিলেন এই উদ্যানে
নিত্যানন্দ—আবির্ভাব দিনে—এসেছিলেন এই উদ্যানে
প্রিয়গণ সঙ্গে লয়ে—এসেছিলেন এই উদ্যানে
শ্রীনিত্যানন্দ-জন্মোৎসব করিতে—এসেছিলেন এই উদ্যানে

আজ একবার এস হে

হা,–পরমকরুণ শ্রীগুরুদেব—আজ একবার এস হে
তোমার প্রভুর জন্মোৎসব করিতে—আজ একবার এস হে

আমরা কিছুই জানি না

তোমার প্রভুর আদর—আমরা কিছুই জানি না

তেমনি করে এস হে

নাম-প্রসঙ্গে এই উদ্যানে—তেমনি করে এস হে

নিশ্চয় এসেছে তুমি

তোমার ত্রিকালসত্য লীলায়—নিশ্চয় এসেছ তুমি
তোমার প্রভু নিতাই লয়ে—নিশ্চয় এসেছ তুমি

তাই দেখতে পাই না

আমাদের প্রেমনেত্র নাই—তাই দেখতে পাই না

একবার দেখাবে কি

শ্রীললিতা দিদিমণি—একবার দেখাবে কি

হঠাৎ গুপ্ত হয়েছে

কিছুই না বলে কয়ে—হঠাৎ গুপ্ত হয়েছ

তাই গুপ্ত হয়েছ

বাধা দিয়েছি বলে—তাই গুপ্ত হয়েছ
‘বাধা দিয়েছি বলে’—
তোমার শ্রীগুরু-সেবায়—বাধা দিয়েছি বলে

তাই গুপ্ত হয়েছ
গোপনেতে ভোগ করিছ

হঠাৎ গুপ্ত হয়েছ—গোপনেতে ভোগ করিছ
নিত্যানন্দ,–জন্মোৎসবে শ্রীগুরু-বিহার—গোপনেতে ভোগ করিছ

আমাদের দেখাও গো

সম্বন্ধ ধরে ডেকে—আমাদের দেখাও গো

একবার দেখা দাও

তোমার সর্ব্বস্ব-গুরুদেবে লয়ে—একবার দেখা দাও
নিত্যানন্দ-জন্মোৎসবে—একবার দেখা দাও

একটি কথা বলবো

আমরা,–অপরাধী দুঃখ দিব না—একটি কথা বলবো

দুঃখ ত দিব না

স্বতন্তরী অপরাধী—দুঃখ ত দিব না

এই নিবেদন করব
শুধু থেকো না আনন্দে মেতে

তোমার,–প্রভু নিতাই-জন্মোৎসবে—শুধু থেকো না আনন্দে মেতে
তুমি একবার ডাকো গো
আমাদের ব্যথার ব্যথী হয়ে—তুমি একবার ডাকো গো

আমাদের ব্যথা জান
তুমি প্রাণ যে জ্বলে গেল

জগতে দেখি সব বিপর্য্যয়—প্রাণ যে জ্বলে গেল

তুমি একদিন কেঁদেছিলে

নরকের চিত্র দেখে’—তুমি একদিন কেঁদেছিলে

অভিমান করে বলেছিলে
হা নিতাই কোথা আছ হে
পতিত পড়ে নরকেতে

পতিত-পাবন তুমি থাকতে—পতিত পড়ে নরকেতে

ভাবাবেশে বলেছিলে
যদি আমায় উদ্ধারিতে চাও

আগে,–নাম-প্রেমে জগৎ মাতাও—যদি আমায় উদ্ধারিতে চাও

সে কথা কি মনে নাই
সে কি কেবল কথার কথা
তেমনি করে বল গো

তোমার প্রভু নিতাইচাঁদে—তেমনি করে বল হে

আমাদের হয়ে একবার বল
বুঝতে ত পারলাম না

‘তার,–কর্ণে প্রবেশ করল কি না—বুঝতে ত পারলাম না
‘তার কর্ণে প্রবেশ করল কি না’—
আমাদের কাতর প্রার্থনা—তার,–কর্ণে প্রবেশ করল কি না

বুঝতে ত পারলাম না
তুমি বললে শুনবে সে

তুমি,–আমাদের হয়ে বল তারে,–তুমি বলবে শুনবে সে

এই কথা বল নিতাইচাঁদে
কে এ জগতে তোমার পর

তোমার প্রভু বিশ্বম্ভর—কে এ জগতে তোমার পর

সবাই ত তোমার বটে

ভজুক বা না ভজুক—সবাই ত তোমার বটে
কি হিন্দু কি যবন—সবাই তা তোমার বটে
পরিচয় দিক না কেন যে বলে—সবাই ত তোমার বটে
নামে মাত্র ভিন্ন হয়েছে—সবাই ত তোমার বটে

সবাই তোমার প্রভুর কিঙ্কর

তোমার প্রভু বিশ্বম্ভর—সবাই তোমার প্রভু কিঙ্কর
তুমি কারে ছাড়বে বল—সবাই তোমার প্রভুর কিঙ্কর

সবাই,–তোমার হয়ে দুঃখ পায়

এ কোথায় দেখা যায়—সবাই,–তোমার হয়ে দুঃখ পায়

হা,–নিতাই তুমি প্রেমানন্দ সুখী

আর,–তোমার কলিজীব বড়ই দুঃখী—হা,–নিতাই তুমি প্রেমানন্দ সুখী
আর,–তোমার কলিজীব বড়ই দুঃখী—হা,–নিতাই তুমি প্রেমানন্দ সুখী

ঘুচাও তাদের দুঃখ ঘুচাও

আনন্দময় করে দাও—ঘুচাও তাদের দুঃখ ঘুচাও

গৌর-প্রেমে মাতুক সবাই

হিয়ায় ধরে নিতাই তোমার—গৌর-প্রেমে মাতুক সবাই

জগভরি’ উঠুক রোল

গৌরহরি হরিবোল—জগভরি’ উঠুক রোল

একপ্রাণ করে দাও

নিত্যানন্দ-শক্তি সঞ্চারিয়ে—একপ্রাণ করে দাও

সবাই হউক সুখী

পরস্পর পরস্পরের সুখে—সবাই হউক সুখী

ভাই ভাই কোলে করুক

তোমার,–নিতাইচাঁদের শক্তি পেয়ে—ভাই ভাই কোলে করুক

এক প্রাণ করে দাও

গৌর,–নাম-প্রেমে জগৎ মাতুক—এক প্রাণ করে দাও

প্রাণে প্রাণে সবাই বলুক
প্রাণে প্রাণে গান করুক

পরস্পর হিয়ায় ধরে—প্রাণে প্রাণে গান করুক

এই,–প্রার্থনা জানাও নিতাইচাঁদে

গৌর,–নামময় জগৎ দেখে—এই,–প্রার্থনা জানাও নিতাইচাঁদে

আমরা গিয়া লুটিব সবে

জগজীবের চরণে—আমরা গিয়া লুটিব সবে

প্রার্থনা করব কাতরে

তাদের চরণে পড়ে—প্রার্থনা করব কাতরে

এ কৃপা কর গো
যেন নামে থাকি মাতি

শ্রীগুরুচরণে রাখি রতি—যেন নামে থাকি মাতি

যেন,–প্রাণভরে গান করি

শ্রীগুরুদত্ত নামাবলী—যেন,–প্রাণভরে গান করি

যারে দেখি তারে বলি

‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’

প্রাণভরে গাও ভাই
জয় নিত্যানন্দরাম

অখিল আনন্দময়—জয় নিত্যানন্দরাম
আমার,–পাগলা প্রভুর প্রাণারাম—জয় নিত্যানন্দরাম
জীবে,–গৌর ভজায়ে কর পূর্ণকাম—জয় নিত্যানন্দ

জয় প্রভু নিত্যানন্দ

ভুবন আনন্দ কন্দ—জয় প্রভু নিত্যানন্দ

‘‘গৌরহরি বোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।।’’



অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ