শ্রীশ্রীজগদ্বন্ধুসুন্দরের সূচক-কীর্ত্তন

(ভাদ্র-পূর্ণিমা তিথি)

‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই গৌর হরিবোল’’
‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।

‘‘জয় রে জয় রে জয়, প্রভু জগদ্বন্ধু জয়,
প্রেমদাতা পতিতপাবন।

আমার,–প্রভু জগদ্বন্ধু জয়

প্রেমদাতা পতিতপাবন—আমার,–প্রভু জগদ্বন্ধু জয়

[মাতন]

‘‘প্রেমদাতা পতিতপাবন।

আহা কি মোহন মূর্ত্তি,’’
যে দেখেছে তার অনুভব আছে

‘‘আহা কি মোহন-মূর্ত্তি, কাঞ্চন-বরণ-দ্যুতি,
সুখময় রসের সদন।।
রসে ঢর ঢর তনু, বিধি নিরমিল জনু,
ভবসিন্ধু মথিয়া নবনী।
না জানি,–ধাতা কতকাল বসি,’ গড়িল সে মুখশশী,
অপরূপ শ্রীঅঙ্গ-লাবণী।।
ধরা-ভাগ্যে প্রকটিলে, ডাহাপাড়া-গঙাকূলে,
ঘুচিল জীবের অমঙ্গল।
শুক্লপক্ষ-চন্দ্র-সম, বাড়ে রূপ-গুণ-ধর্ম্ম,
যে দেখে তাঁর নয়ন সফল।।’’

যে দেখেছে সে ভুলতে নারিছে

মোহন-মূরতি খানি—যে দেখেছে সে ভুলতে নারিছে
তার,–হৃদিপটে আঁকা আছে—যে দেখেছে সে ভুলতে নারিছে

মূর্ত্তি,–‘‘যে দেখে তার নয়ন সফল।।


জগচ্চন্দ্র পূর্ব্ব-নাম, পিতা,–দীননাথ ন্যায়রত্ন
মাতা-পতিব্রতা-শিরোমণি।
শিশুকাল হৈতে ভক্তি, সর্ব্বশাস্ত্র হৈল-স্ফূর্ত্তি
পৌগণ্ডে করিল নানা-লীলা।
নবীন-যৌবন-কালে, রূপ হেরি কাম ভুলে,
প্রবল-বৈরাগ্য জনমিলা।।
ব্রহ্মচর্য্য দৃঢ়ব্রত, করি’ করায় অবিরত,
কঠোর নিয়ম সদাচারে।
নদে ব্রজ উপাসনা, রাত্রিদিন অন্তর্ম্মনা,
‘রা’ ভাবিতে ধৈর্য পাশরে।।
শ্রী’রাধা’ নাম যদি শুনে, অচেতন সেইক্ষণে,
দিবানিশি ভাবে ডুবি’ রয়।
পরীক্ষা করিতে তাঁরে, দুষ্টলোক পদ্মা-নীরে,
লয়েছিল ভুলাইয়া নৌকায়।।
অতল-অতুল-জল, পদ্মাগর্ভ সে বিশাল,
তার মাঝে সবে মিলে বলে।
জয় জয় রাধা শ্যাম,’’

সকলে এক বুলি বলে

রাধা-নামে সুবলিত হয় জেনে—সকলে এক বুলি বলে

‘‘জয় জয় রাধা শ্যাম, শুনিয়া সে সুধানাম,
ঝাঁপ দিয়া পড়ে পদ্মাজলে।।’’

‘রাধা’ নামশুনে পাগল হয়ে

‘‘ঝাঁপ দিয়া পড়ে পদ্মা-জলে।।
তখন,–হারাইয়া সেই ধনে, কাঁদয়ে সে-সব-জনে,
হায় চির-অন্তর্দ্ধান হলে।’’

বুঝি আর দেখতে পাব না

চিতচোরা-বদন-খানি—বুঝি আর দেখতে পাব না

বলে,–‘‘হায় চির-অন্তর্দ্ধান হলে।
শুনি, সে ক্রন্দন-ধ্বনি, ক্ষমাশীল গুণমণি,
আচম্বিতে আসি’ দেখা দিলে।।’’

নিজ,–প্রিয়গণের দুঃখ জেনে

‘‘আচম্বিতে আসি’ দেখা দিলে।।
মহাপুরুষের চিহ্ন, দেহে শোভে ভিন্ন ভিন্ন,
ভাবাবলি অঙ্গে শোভা পায়।
মহাভাগবতোত্তম, ভক্তিরসে সদা মগ্ন,
প্রেমদানে অবনী ভাসায়।।’’

বৃথা-কাল যায় না

নিরন্তর নাম-কীর্ত্তন করয়—বৃথা-কাল যাব না
‘নিরন্তর নাম-কীর্ত্তন করয়’—
গৌর-গোবিন্দ কথা—নিরন্তর নাম-কীর্ত্তন করয়

বৃথা-কাল যায় না

‘‘প্রেমদানে অবনী ভাসায়।।
সে-দেশের যত লোক, দেখি’ ভুলে দুঃখ-শোক,
সব ত্যজি’ আত্ম-সমর্পিলা।’’

সবাই পড়ে চরণ-তলে

আমায় দয়া কর বলে—সবাই পড়ে চরণ-তলে

অনুভবি-জনে বলে

তাঁর,–‘‘রূপ দেখি’ সবে ভোর, বলে আইলা চিতচোর,
কিবা প্রেমদাতা পুনঃ আইলা।।’’

কে করেছে একঠাঁই

তাঁর ‘রূপ’ দেখি বলে—কে করেছে একঠাঁই
সকল সৌন্দর্য্য আনি—কে করেছে একঠাঁই

বলে,–‘‘কিবা প্রেমদাতা পুনঃ আইলা।।
আহা কি কণ্ঠের ধ্বনি, কোকিলা লজ্জিত শুনি,’

যে শুনেছে তার অনুভব আছে

অমিয়া-মাখান-বোল—যে শুনেছে তার অনুভব আছে

‘‘আহা কি কণ্ঠের ধ্বনি, কোকিলা লজ্জিত শুনি,
ঢালে কিবা সুধাতরঙ্গিণী।
আহা সে-মধুর-হাসি, উগারে আমিয়া-রাশি,
কথা শুনে বিকায় পরাণী।।
প্রেমরস ঘনাবর্ত্ত, বিধাতা করি’ একত্র,
গড়ি’ কি পাঠাল ধরাতলে।
একবার যেই হেরে, তার মন-প্রাণ হরে,
ভাসে সদা সে প্রেমের হিল্লোলে।।
পাণ্ডিত্য-কবিত্ব-সার, প্রেমাবৃত-পারাবার
নদেলীলা ব্রজলীলা বর্ণে।
ভাবাবেশে মাতি চলে, ফুটে কি স্থল-কমলে,’’

চলে গেলে দেখে মনে হয়

বুঝি স্থল কমল ফুটল—চলে গেলে দেখে মনে হয়

‘‘কি আবেশ হরি-সঙ্কীর্ত্তনে।।
তার ভালবাসা-রীতি, অসীম গুণ-সম্পত্তি,
মনে হলে হৃদয় বিদরে।
মোর অধ্যয়নকালে, আকর্ষিয়া কৃপাবলে,’’

তারে,–দেখব বলে যাই নাই

লোক-সঙ্ঘট্ট দেখতে আসা—তারে,–দেখবে বলে যাই নাই

দূর হতে দেখতে পেলাম
অসংখ্য-লোক হয়েছে জড়

মুগ্ধ হয়ে দেখছে—অসংখ্য-লোক হয়েছে জড়

তারে কখনও,–দেখি নাই জানি নাই
অকস্মাৎ লোকসঙ্ঘাট্ট,–দেখব বলে গিয়েছিলাম

‘‘মোর অধ্যয়নকালে, আকর্ষিয়া কৃপাবলে,
ডুবাইল অমিয়া-পাথারে।।
তাঁরই বাৎসল্য-স্নেহ, সোহাগে লালিত দেহ,
তাঁহারই হৃদয় মন-প্রাণ।’’

নদীয়া ব্রজ দেখাল ভোগ করাল

সংসার-কূপ হতে তুলে—নদীয়া ব্রজ দেখাল ভোগ করাল
ভাবময় নদীয়া-পুরী—নদীয়া ব্রজ দেখাল ভোগ করাল

ব্রজবনে পাঠাইলা

নদীয়ার স্বরূপ ভোগ করায়ে—ব্রজবনে পাঠাইলা
‘নদীয়ার স্বরূপ ভোগ করায়ে’—
আবেশ-ভাবাবেশে-ময়—নদীয়ার স্বরূপ ভোগ করায়ে

ব্রজবনে পাঠাইলা
লীলা-রহস্য ভোগ করাল

নিগম-নিগূঢ়-মধুর-ব্রজ—লীলা-রহস্য ভোগ করাল
অনুকূল সঙ্গ দিয়া স্বভাব দিল—লীলা-রহস্য ভোগ করাল

প্রাকৃত এ-দেহ ভুলায়েছিল

লীলারসে ডুবাইয়ে—প্রাকৃত এ-দেহ ভুলায়েছিল

‘‘তাঁর মুঞি ক্রীতদাস, সেই পদ সদা-আশ,
সেই মোর ভজন সাধন।।
সঙরি’ তাঁহার কথা, হৃদয়ে বাড়য়ে ব্যথা,’’

প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠছে
কে মোরে পাঠাইত
কে আমায়,–ব্রজবনে পাঠাইবে

সংসার-কূপ হতে তুলে—কে আমায়,–ব্রজবনে পাঠাইবে

‘‘কে মোরে পাঠাবে বৃন্দাবনে।
কে জানে তোমার সঙ্গ, অল্পদিনে হবে ভঙ্গ,’’

দুঃখের কথা কারে বলব

‘‘কে জানে তোমার সঙ্গ, অল্পদিনে হবে ভঙ্গ,
ভাবিয়া না ছিনু যা স্বপনে।।
পরাণ-শারিকা বলে, কে ডাকিবে প্রেমস্বরে,’’

আর কি সে ডাক শুনতে পাব
আর কি,-আদর করে ডাকবে না

ওরে ও শারিকা বলে—আর কি,–আদর করে ডাকবে না

‘‘পরাণ-শারিকা বলে, কে ডাকিবে প্রেমস্বরে,
কেবা সঙ্গে লবে নদে-পুরে।
হরিসভায় সে মিলন, সে মহাপুরুষগণ
কৃপা যত কে বর্ণিতে পারে।।’’

সবার সঙ্গ দিয়েছিলে

সেইকালে যত গৌর-কৃপার মূর্ত্তি—সবার সঙ্গ দিয়েছিলে

বুঝি,–তিথি নক্ষত্র দিন এক হয়েছিল
সকল আসি’ মিলেছিলে

যেখানে আছে যত কৃপাশক্তি—সকলে আসি’ মিলেছিলে

একঠাঁই হয়েছিল

হরিসভায় গৌর-মূরতি দেখে’—একঠাঁই হয়েছিলে

সে সঙ্গ মোরে দিয়েছিলে

তেরশত-এক-সালে—সে সঙ্গ মোরে দিয়েছিলে

‘‘কৃপা যত কে বর্ণিতে পারে।।’’

অনায়াসে পেয়েছিলাম

প্রভু-জগদ্বন্ধু দরশন—অনায়াসে পেয়েছিলাম
মহাপুরুষগণের দরশন—অনায়াসে পেয়েছিলাম

সকলে দেখা দিয়েছিল

প্রাণের প্রভু বিজয়কৃষ্ণ—সকলে দেখা দিয়েছিল
হরিসভায় গৌরের কাছে—সকলে দেখা দিয়েছিল

কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে দেখা দিলেন

সগণে শ্রীপ্রেমানন্দ—কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে দেখা দিলেন

বহুদিন ভোগ হয়েছিল

সুখময়-সঙ্গ—বহুদিন ভোগ হয়েছিল
‘‘তোমা সনে ব্রজবনে’’

প্রাণ,–কেঁদে কেঁদে উঠছে

সুখময়-সঙ্গ-সঙরি’—প্রাণ,–কেঁদে উঠছে

‘‘তোমা-সনে ব্রজবনে, শ্রীকুণ্ড-গিরি-গোবর্দ্ধনে,’’

আর কি দেখা পাব হে

প্রেমময়-কুসুম-সরোবরে—আর কি দেখা পাব হে

‘‘সেই সঙ্গে সে সুখ-বিলাস।
ব্রজরস গৌররস, নিঙ্গাড়ি তার নির্য্যাস,’’

কি বলব কৃপার কথা

প্রাণের ঠাকুর জগদ্বন্ধু—কি বলব কৃপা কথা

‘‘ব্রজরস গৌররস, নিঙ্গাড়ি তার নির্য্যাস,
পিয়াইলে মিটাইয়া আশ।।’’

আশ-মিটায়ে পান করালে

দেহ-স্মৃতি ঘুচাইয়ে—আশ-মিটায়ে পান করালে

‘‘পিয়াইলে মিটাইয়া আশ।।
শ্রীরাধাপদ-সুধারাশি, সে পদে করিলা দাসী,
গোরাপদে বাঁধি দিলা চিত।
তোমা-সঙ্গ হারাইলে, শতযুগ একতিলে,
কৈলে না হয় বিপরীত।।
দেখি তব চাঁদ-মুখ, জনক-জননী-সুখ,
সব ভুলি ছিনু তব কোলে।
হায় প্রভু কি করিলে, ফেলি’ মোরে অকালে,
দুঃখের সায়রে ডারি’ গেলে।।
আমার বিদায়-কালে, হায় পত্র লিখিলে।
কেমনে সহিব ত্যজিব রে।
সে লিপি পড়িয়া নিতি, বিদরে কঠিন ছাতি,
কেমনে বেঁচেছি সহ্য করে।।
সমর্পিলে যাঁর পাশে,’’

আমি,–তোমার সঙ্গ হারাইয়া
সে যে—তোমারই যে আনুগত্যে
সে যে,–নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল

সমর্পিলে যাঁর পাশে, তিঁহ গেলা অন্য-দেশে,
পহুঁ মোর শ্রীরাধারমণ।
আঁচলে মাণিক ছিল, কোন ছলে কেবা নিল,
দুঃখে প্রাণ করে আনচান।।
যদি হয় জন্ম পুনঃ, তোমা সঙ্গ পাই যেন,
নহে জন্ম বিফল আমার।
অন্ন-জল-বিষ খাই, মরিয়া নাহিক যাই,
মিছা দেহ বহি লাগে ভার।।
যে মোর মনের দুঃখ, করে বা দেখাব বল,
কে মুছাবে মোর আঁখি-জল।
হাহা প্রভু জগদ্বন্ধু, তুমি পতিতের বন্ধু,
দেখাইলে ও-পদ-কমল।।
এই,–ভাদ্র-পৌর্ণমাসী-দিনে, ছাড়ি গেলা মো অধমে,
এ-জগৎ আঁধার করিলে।
এ-দেহ অন্তিমকালে, শ্রীরাধারমণ-সঙ্গ মিলে,
দেখা দিয়া লইও নিজ-কোলে।।’’

প্রাণ,–জগদ্বন্ধু রাধারমণ

পাগল হয়ে করি কীর্ত্তন—প্রাণ,–জগদ্বন্দু রাধারমণ

দুঃখের কথা কারে বল্‌ব

‘যে আনিল প্রেমধন করুণা প্রচুর রে।
হেন প্রভু কোথা গেলা আচার্য্য-ঠাকুর রে।
কাঁহা মোর স্বরূপ রূপ কাঁহা সনাতন।
কাঁহা দাস রঘুনাথ শ্রীজীব জীবন।।
কাঁহা দাস ভট্টযুগ কাঁহা কবিরাজ।
এককালে কোথা গেলা গোরা নটরাজ।।’’

কোথা লুকাইয়ে কর্‌ছ খেলা

এই মধুর-শ্রীনীলাচলে—কোথা লুকাইয়ে কর্‌ছ খেলা

আশ মিটায়ে নাচ্‌ছ

অপূর্ণ-বাসনা পূর্ণ হল—আশ মিটায়ে নাচছ
ঠাকুর,–হরিদাসে বুকে ধরে—আশ মিটায়ে নাচছ

সবে বলে একদিন নেচেছিলে

এখন বুঝি নাচ না—সবে বলে একদিন নেচেছিলে

ত্রিকাল-সত্য তোমার লীলা
এখনও ত’ নাচ্‌ছ

ত্রিকাল-সত্য-লীলা প্রকট করে—এখনও ত’ নাচ্‌ছ

তার নিদর্শন রেখেছ

এখনও যে নাচছ—তার নিদর্শন রেখেছ
ঠাকুর,–হরিসাদের সমাধি—তার নিদর্শন রেখেছ

নিশিদিশি প্রাণ কাঁদে

তোমার—অহৈতুকী-কৃপা সঙরি’—নিশিদিশি প্রাণ কাঁদে
ঠাকুর-হরিদাসের—সমাধি-সেবা দিলে তায়
মায়ার,–লাথি খাওয়া স্বভাব যার—ঠাকুর-হরিদাসের—সমাধি-সেবা দিলে তায়

শ্রীগুরু-সেবা দিলে তায়

যে,–নিশিদিশি মায়ার লাথি খায়—শ্রীগুরু-সেবা দিলে তায়

যাই,–তোমাদের কৃপার বলিহরি

হা,–জগদ্বন্ধু রাধারমণ—যাই,–তোমাদের কৃপার বলিহারি

বিষয়-বিষকূপ হতে তুলিলে

নিজ-গুণে কেশে ধরে—বিষয়-বিষকূপ হতে তুলিলে
ঠাকুর,–হরিহাসের সেবা দিলে—বিষয়-বিষকূপ হতে তুলিলে

হায় রে,–‘‘যখন গৌর নিত্যানন্দ, শ্রী—অদ্বৈতাদি ভক্তবৃন্দ,
নদীয়া-নগরে অবতার।


তখনে না হৈল জন্ম, এবে দেহে কিবা কর্ম্ম,
মিছা মাত্র বহি ফিরি ভার।।’’


——-


আহা,–‘‘শ্রীগৌরাঙ্গের সহচর,’’ইত্যাদি মহাজনী আক্ষেপ কীর্ত্তন।

নিশিদিশি কাঁদ রে

ওরে রে কৃতঘ্ন পরাণ—নিশিদিশি কাঁদ রে
সঙ্গ-সুখ সঙরিয়ে—নিশিদিশি কাঁদ রে
জগদ্‌গুরু জগদ্বন্ধুর—সঙ্গ-সুখ সঙরিয়ে
অযাচিত করুণা আর—সঙ্গ-সুখ সঙরিয়ে

নিশিদিশি কাঁদ রে
এমন বন্ধু আর কে আছে

পরম-করুণ শ্রীগুরুদেব বিনে—এমন বন্ধু আর কে আছে

প্রত্যক্ষ বুঝায়ে দিলে

অন্ধকূপ হতে তুলে এনে—প্রত্যক্ষ বুঝায়ে দিলে
গৌর-গোবিন্দ-ভজনে—প্রত্যক্ষ বুঝায়ে দিলে

শুধু-বুঝায়ে দেওয়া নয়
গৌর-গোবিন্দ ভজাইল

কৃপা-শক্তি প্রেরণ করে—গৌর–গোবিন্দ ভজাইল
সংসার-কূপ হতে তুলে—গৌর-গোবিন্দ ভজাইল

মধুর-নদীয়া দেখাইল

কৃপা-রজ্জু কেশে বেঁধে—মধুর-নদীয়া দেখাইল
প্রকট-স্বরূপ দেখাইল প্রাণে প্রাণে ভোগ করাল
নবদ্বীপের প্রকট-স্বরূপ—প্রাণে প্রাণে ভোগ করাল

ব্রজবনে পাঠাইল

নদীয়ার স্বরূপ দেখাইয়ে—ব্রজবনে পাঠাইল

যুগল-রহস্য জানাইল
ডুবায়ে দিল লীলারসে

অহৈতুকী-কৃপাবলে—ডুবায়ে দিল লীলারসে
যুগল,–রহস্য ভোগের স্বভাব জাগায়ে—ডুবায়ে দিল লীলারসে

বাহ্য-স্মৃতি-দূর কৈল

যুগল,–লীলারসে ডুবায়ে দিল—বাহ্য-স্মৃতি-দূর কৈল

প্রাণ কেঁদে উঠছে

সেই,–কৃপার কথা সঙরিয়ে—প্রাণ কেঁদে উঠছে

আর কি আমি পাব না

সেই সুখময়-সঙ্গ—আর কি আমি পাব না
‘সেই সুখময়-সঙ্গ’—
শ্রীরাধাকুণ্ড-তীরে—সেই সুখময়-সঙ্গ
দাসগোস্বামীর সমাধিতে –সেই সুখময়-সঙ্গ

আর কি আমি পাব না

কুসুম-সরোবরে সেই সুখময় সঙ্গ—আরি কি আমি পাব না

প্রসঙ্গ কি করাবে না

প্রতি-নিশায় রাসলীলা—প্রসঙ্গ কি করাবে না

নিশিদিশি জ্বলছে হিয়ায়

সেই লীলা-অদর্শন-শেল—নিশিদিশি জ্বলছে হিয়ায়

জুড়াইবার আর উপায় নাই

একমাত্র নামাশ্রয় বিনে—জুড়াইবার আর উপায় নাই

প্রাণভরে গাও রে

ওরে রে নিলাজ পরাণ—প্রাণভরে গাও রে

‘‘যদি বন্ধু না হত, কি মেনে হইত,
কেমনে ধরিতু দে।
সংসার-কূপ হতে, টানিয়া তুলিয়া,
নদীয়া দেখাত কে।।
নদীয়ার প্রকট, স্বরূপ দেখাইয়া,
ব্রজে পাঠাইত কেবা।
কেবা জানাইত, যুগল-মাধুরী,
সে লীলায় ডুবাত কেব।।’’

প্রাণভরে গাও রে
জয় নিত্যানন্দ রাম

জয় জয় জয় জগদ্‌গুরু—জয় নিত্যানন্দ রাম
জগতের একমাত্র বন্ধু—জয় নিত্যানন্দ রাম
জয়,–জগদ্‌গুরু জগদ্বন্ধু—জয় নিত্যানন্দ রাম

প্রাণভরে গাও ভাই

শ্রীগুরু-গৌরগণের নাম—প্রাণভরে গাও ভাই
জগদ্‌গুরু নিত্যানন্দ নাম—প্রাণভরে গাও ভাই

জয় জগদ্বন্ধু রাধারমণ

রামহরি ঠাকুর রাধারমণ—হা,–প্রাণের প্রাম জগদ্বন্ধু

[মাতন]
হা,–প্রাণের প্রাণ জগদ্বন্ধু

এই কৃপা কর দুজনে
জগদ্বন্ধু রাধারমণ—এই কৃপা কর দুজনে

যেন,–নিশিদিশি থাকি মেতে

যতদিন বেঁচে থাকি পৃথিবীতে—যেন,–নিশিদিশি থাকি মেতে
নিতাই-গৌর-নাম গানে—যেন,–নিশিদিশি থাকি মেতে

এই কৃপা কর সবে

যতদিন এ-দেহে প্রাণ থাকে—এই কৃপা কর সবে

এই কৃপা কর হে

পরম-করুণ শ্রীগুরু-স্বরূপ—এই কৃপা কর হে

যেন,–প্রাণভরে গাইতে পারি

তোমাদের,–কৃপা-সঙ্গ সঙরি’—যেন,–প্রাণভরে গাইতে পারি
তোমাদের,–কৃপাদত্ত-নামাবলী—যেন,–প্রাণভরে গাইতে পারি
ভাই ভাই একপ্রাণে—যেন,–প্রাণভরে গাইতে পারি

যেন,—কণ্ঠহার হয়ে থাকে

তোমাদের,–কৃপাদত্ত-নামাবলী—যেন,–কণ্ঠহার হয়ে থাকে

পাগল হয়ে বেড়াইব

তোমাদের,–কৃপাদত্ত নাম গানে—পাগল হয়ে বেড়াইব

যারে দেখি তারে বলি

‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
গৌরহরি-বোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।।
‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।।’’

—–০—–



অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ